নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমাপ্রেমী । ট্র্যাভেলার । বইপোকা । রন্ধনশিল্পী

আলভী রহমান শোভন

খাই, দাই, ব্লগ লিখি ।

আলভী রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপুদের ঈদ ড্রেসের নাম বিবর্তন – আনারকলি টু কিরণমালা ( ইহা একটি গবেষণামূলক লুল পোস্ট)

২৮ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২১



গবেষণাধর্মী এই পোস্টটিতে আনারকলি থেকে শুরু করে কিরণমালা পর্যন্ত ব্যাপ্তি হলেও প্রয়োজনের তাগিদে আমাদের আরেকটু পেছনে যেতে হবে।

২০০১ সালের কথা। স্টার প্লাসে নতুন এক সিরিয়ালের আগমন ঘটে। নাম তার ‘কাসৌটি জিন্দাগি কি’। অল্প কয়দিনের ব্যবধানে ভারতে এটি জনপ্রিয় হয়। সেই সাথে বাংলাদেশেও তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এটি। ঠিক সেই বছরের ঈদেই আপু থেকে শুরু করে আন্টি পর্যায় পর্যন্ত সবার ঈদের পোশাকের সাথে নতুন নাম ট্যাগ লাগিয়ে দেয় বাংলাদেশের পোশাক বিক্রেতা ভাইজানেরা। কাসৌটি জিন্দাগি কি শাড়ি, কাসৌটি জিন্দাগি কি কামিজ, কাসৌটি জিন্দাগি কি স্কাট….আরও কত কি ! সিরিয়ালের সাথে সাথে পোশাকগুলোর বিক্রিও বেড়ে যায় দেদারছে, যদিও পোশাকগুলোতে এমন কোন ভিন্নতাও ছিল না। সিরিয়ালের প্রধান নারী চরিত্র প্রেরনাকে যদিও সব সময় শিফন শাড়ি এবং জর্জেটের সেলোয়ার - কামিজ পরতে দেখা যেত কিন্তু বাংলাদেশী পোশাক বিক্রেতা ভাইজানেরা সূতি, লিলেন, জর্জেট, কাতান সব কিছুতেই ‘কাসৌটি জিন্দাগি কি’ ট্যাগ লাগিয়ে দেন।

২০০২ সাল। সে বছর বলিউডে মুক্তি পায় পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’ নামের ছবিটি। আর সে বছরের ঈদে বাংলাদেশে একটু জমকালো ভারী ধরণের গহনার সাথে ট্যাগ দেওয়া হয় ‘দেবদাস’। দেবদাস ঝুমকা, দেবদাস পায়েল, দেবদাস নোজ পিন। দেবদাস মেহেদীও বের হয়েছিল যতদূর মনে পড়ে। কিন্তু একটা ব্যাপার বোধগম্য হল না। দেবদাস কবে গয়না পরা শুরু করলো? হাতে মেহেদীই না কবে দিয়েছিল? দেবদাস ছবির প্রধান দুই নারী চরিত্র পার্বতী কিংবা চন্দ্রমুখীর নামে গয়না – মেহেদীর নাম দিলেও কথা ছিল।

২০০৩ সালের কথা বলি। স্টার প্লাসের আরেক সিরিয়াল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যার নাম ‘কুমকুম’। সে বছরের ঈদের পোশাক আর গয়নার সাথেও যে কুমকুম ট্যাগ লাগানো হয় সেটা তো আর বলতে হবে না।

এবার আরেকটু পেছনে যাই আমরা। ১৯৬০ সাল। বলিউডে সে বছর মুক্তি পায় সুপার ডুপার হিট ছবি ‘মুঘল-ই-আজম। ছবিতে রাজপুত্র সেলিমের প্রেমিকা থাকে আনারকলি। সাদাকালো ছবিটি ২০০৮ সালে রঙিন করে মুক্তি দেওয়া হয়। আর এই ছবিতে আনারকলি চরিত্রের নর্তকীর ঘাগরা নতুন করে ভারত এবং বাংলাদেশের ফ্যাশনে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে এই পোশাকই প্রবল জনপ্রিয়তা পায়।

আগের বছর না হয় আনারকলি আসলো। এবার ২০০৯ সালের ঈদে কি আসবে? এবারের ঈদেও আনারকলিই ছিল তবে নাম ছিল ভিন্ন – ‘মাসাককলি’। ২০০৯ সালে বলিউডে সোনাম কাপুর অভিনীত ‘দিল্লী- ৬’ নামের ছবিটি মুক্তি পায়, যেখানে ‘মাসাককলি’ শিরোনামের একটি গানও ছিল। আর সেই গানের শিরোনামেই ২০০৯ সালের ঈদের ট্রেন্ডি পোশাকের নাম হয়ে গেল। যদিও পুরো সিনেমা জুড়ে সোনামকে সেলোয়ার - কামিজ এবং স্কাট-টপস পরতে দেখা গেছে। ঘাগরা কিংবা আনারকলির টিকিও খুঁজে পেলাম না সোনামের পরনে।

যাই হোক, আনারকলি আর মাসাককলির ভীরে আপুদের অন্য পোশাকের ভিন্ন নামের যখন খরা চলছিল তখন এগিয়ে এল জীবন মানে জি বাংলা খ্যাত চ্যানেলের ‘রাশি’ সিরিয়ালটি। সিরিয়ালের রাশি চরিত্রের নামের সাথে মিল রেখে শাড়ি – গয়না বের হয় ২০১০ সালের দিকে। এমনকি সিরিয়ালের ভিলেন রাশির শাশুড়ির নামেও শাড়ি বের হয় আন্টিদের জন্য।

২০১১ সালে আসে ‘খুশি ড্রেস’। এই ড্রেস পরলে আপুদের মন খুশি হয়ে যাবে তা কিন্তু না। আসলে স্টার প্লাসে প্রচারিত সিরিয়াল ‘ইস পেয়ার কো ক্যা নাম দু’ সিরিয়ালের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রের নাম খুশি। আর তার নামের সাথে মিল রেখেই এই পোশাক। পোশাকের প্যাটার্ন কিন্তু সেই একই। আনারকলির ভিন্ন নাম আর কি !

খুশি ড্রেস নিয়ে আপুরা মেতে ছিল প্রায় তিন বছর। তারপর ২০১৪ সালের ঈদে এল ‘পাখি ড্রেস’। স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ সিরিয়ালের কেন্দ্রীয় চরিত্র পাখির নামে এই পোশাক। আসলে হিন্দি সিরিয়াল ‘ইস পেয়ার কো ক্যা নাম দু’ এর বাংলা ভার্সনই কিন্তু এই ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ সিরিয়ালটি। এই এক পাখি ড্রেসের জন্য কত জন জীবনও দিয়ে দিল।

গত ঈদ পর্যন্ত পাখি ড্রেস নিয়েই মাতামাতি ছিল। তবে এবারের ঈদে অর্থাৎ ২০১৬ সালের নতুন সংযোজন ‘কিরণমালা ড্রেস’। স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘কিরণমালা’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই নাম। যদিও সিরিয়ালে দেখা যায় কিরণমালা ২৪/৭ লেহেঙ্গা পরে থাকে। কিন্তু ঈদের কিরণমালা ড্রেসটা লেহেঙ্গা টাইপের কিছু নয়। সেই পুরনো আনারকলিই। তবে আমার মনে হয় এবারের ড্রেসের নামখানা কিরণের নামে না হয়ে সিরিয়ালের ভিলেন ‘রাক্ষসী রানী কটকটি’ হলেই বেশী ভালো হত। এমনিতেও কিরণ ভাবীর চেয়ে কটকটি আপুনিকে আমার বেশী ট্রেন্ডি মনে হয়েছে।

যেহেতু এটা একটি গবেষণামূলক পোস্ট সেহেতু হাইপোথিসিসটা খুবই জরুরী। অর্থাৎ ভবিষ্যতের কিছু ব্যাপার নিয়েও আমাকে অনুমান করে রাখতে হবে আপুদের আপকামিং ড্রেসের নামের ব্যাপারে। সর্বশেষ পাওয়া খবর থেকে জানা গেল স্টার জলসার ‘পটলকুমার গানওয়ালা’ নামের সিরিয়ালটি বর্তমানে বেশী জনপ্রিয়। তাই ধরে নেওয়াই যায় যে ২০১৭ সালের ঈদের পোশাকের নাম হতে পারে ‘পটলকলি’। ইতোমধ্যে ‘পটলকুমার একটিভ গোল্ড মেহেদী’ বের হয়েছে। তাই 'পটল ঝুমকা' কিংবা 'পটল পায়েল' নামে গয়নাও যদি বের হয় তবুও অবাক হওয়ার কিছু নেই এতে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩

মিঃ অলিম্পিক বলেছেন: অতপর গবেষণায় এটাই প্রমানিত হইলো সিরিয়াল গুলি যত পরিচিত হপে ততবারেই কিচু ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ততই লাভবান হইবে......

২৮ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ঠিক ধরেছেন ! ;)

২| ২৮ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: হুজুগে বলে যে একটা শব্দ আছে সেটার বাস্তব প্রয়োগ । খারাপ না।

২৮ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৪

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ;)

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৫

গেম চেঞ্জার বলেছেন: ডেড়েস নিল চিলে...... ;) B-)

২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:১০

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: হিহিহি ! ;)

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

কালনী নদী বলেছেন: এসব রহস্যের জট জানার অনেক আগ্রহ ছিল। সুন্দর লেখা। প্লাস।

২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:১০

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাইয়ু ! :)

৫| ০৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২৫

কালনী নদী বলেছেন: ঈদ মোবারক।

১১ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৫২

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: হি হি হি ! ঈদ মুবারাক, ভাইয়ু ! :) ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.