নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমাপ্রেমী । ট্র্যাভেলার । বইপোকা । রন্ধনশিল্পী

আলভী রহমান শোভন

খাই, দাই, ব্লগ লিখি ।

আলভী রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কক্সবাজার ডায়েরি – ০২ : মহেশখালীর হাতছানি

২৬ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৭







কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহেশখালী দ্বীপে যেতে হয় কক্সবাজার থেকে ট্রলার অথবা স্পীড বোটে করে। দেখার মত রয়েছে আদিনাথ মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, লোকনাথ মন্দির, লবণ ক্ষেত এবং পানের বরজ।

আদিনাথ মন্দির



আদিনাথ মন্দিরের গোড়াপত্তন কয়েক হাজার বৎসর পূর্বে ত্রেতাযুগে। এর একটি ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে যা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ, রামায়ণ, পুরাণ ও ঐতিহাসিকদের বর্ণনা থেকে জানা যায়। ত্রেতাযুগে রাম-রাবণের যুদ্ধের কথা ধর্মগ্রন্থে পাওয়া যায়। রাবণ লঙ্কা যুদ্ধে রামের সঙ্গে জয়লাভের জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে অমরত্ব বর প্রার্থনা করেন। মহাদেব এসময় কৈলাসে ধ্যানমগ্ন ছিলেন। তিনি রাবণের আরধনায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে অভীষ্ট সাধনে বর দান করেন এবং শর্ত দেন শিবরূপী উর্ধমুখী শিবলিঙ্গ কে কৈলাস হতে বহন করে লঙ্কায় নিয়ে যেতে হবে এবং পথিমধ্যে কোথাও রাখা যাবে না। যদি রাখা হয় তবে মহাদেব সেই স্থানেই অবস্থান নেবেন এবং রাবণের অভীষ্ট সাধন হবেনা। শর্তানুসারে রাবণ শিবলিঙ্গ বহন করে লঙ্কার উদ্দেশ্য গমন করেন তবে পথিমধ্যে প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদনের লক্ষ্যে বর্তমান মহেশখালীর মৈনাক পর্বতে থামতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে শর্তানুসারে রাবণ শিবলিঙ্গ পূনরায় উঠাতে ব্যর্থ হন এবং মহাদেব এই মৈনাক শিখরেই অবস্থান গ্রহণ করেন।



শ্রী শ্রী আদিনাথ এর আবিস্কার সর্ম্পকে স্থানীয়ভাবে একটি জনশ্রুতি রয়েছে। এলাকাবাসীর মতানুসারে এই তীর্থ আবিস্কৃত এবং মর্যাদা পায় নূর মোহাম্মদ শিকদার নামক একজন সচ্ছল মুসলিম ধর্মালম্বীর মাধ্যমে। তিনি লক্ষ্য করেন তার একটি গাভী হঠাৎ দুগ্ধদান বন্ধ করে। এ ঘটনায় তিনি রাখালের উপর সন্ধিহান হন। রাখাল বিষয়টির কারণ অণুসন্ধানে রাত্রি বেলায় গোয়ালঘরে গাভীটিকে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেখতে পায় গাভীটি গোয়ালঘর হতে বের হয়ে একটি কাল পাথরের উপর দাড়ায় এবং গাভীর স্তন হতে আপনা আপনি ঐ পাথরে দুধ পড়তে থাকে। দুধ পড়া শেষ হলে গাভীটি পূনরায় গোয়ালঘরে চলে যায়। রাখাল বিষয়টি নূর মোহাম্মদ শিকদার কে জানালে তিনি গুরুত্ব না দিয়ে গাভীটি বড় মহেশখালী নামক স্থানে সরিয়ে রাখেন। একদিন শিকদার স্বপ্নাদেশ পান গাভীটিকে সরিয়ে রাখলেও তার দুধ দেওয়া বন্ধ হবে না বরং সেখানে তাকে একটি মন্দির নির্মাণ ও হিন্দু জমিদারদের পুজোদানের বিষয়ে বলতে হবে। স্বপ্নানুসারে শিকদার সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের মতানুসারে আদিনাথ মন্দিরই একমাত্র মন্দির যা, মুসলিম ধর্মালম্বী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত।









মূল আদিনাথ ও অষ্টাভূজা মন্দিরের পাশেই ভৈরব ও রাধা গোবিন্দ এর মন্দির রয়েছে।

রাখাইন পাড়া বৌদ্ধ মন্দির









মহেশখালীতে অনেক দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম শতাব্দীর পুরানো ঐতিহাসিক বড় রাখাইন পাড়া বৌদ্ধ মন্দির। মূল মন্দির আনুমানিক প্রায় ২৮৩ বৎসর পূর্বে নির্মিত হয়। পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন অনুসারে মন্দিরের সংস্কার এবং মেরামত কাজ করা হয়।







সর্বশেষ গত ২০০৪ সালে ডিসেম্বর মাসের ০৭ তারিখে বর্তমান মন্দিরটি পূনঃনির্মাণ করা হয়। বড় পিতলের মুর্তিটি ১০১ বৎসর পূর্বের। এটি বাংলাদেশের মধ্যে ২য় বৃহত্তম বৌদ্ধমুর্তি, দায়ক স্বর্গীয় উ থৈংঅংক্য এবং দায়িকা স্বর্গীয় দো নেং ওয়ে স্থাপন করেন।



সীমা মন্দিরের দাঁড়ানো মুর্তি সম্পূর্ণ একটি গাছকে খোদাই করে বানানো। বিরল এই মুর্তিটি আনুমানিক প্রায় ১১২ বৎসর পূর্বে স্থাপন করা হয়। গাছের খোদাই করা আর কোন বৌদ্ধমুর্তি বাংলাদেশে নেই।





এ ছাড়াও এখানে রয়েছে ন্যাশনাল পিছ প্যাগোডা, কো না ওয়াং প্যাকোডা (রাশি চক্রের প্যাকোডা)।



মুং জা লিংদা ধর্মীয় পুকুর - গৌতম বুদ্ধ বৌদ্ধত্ব লাভের পর ০৭ টি পূণ্য স্থানে ০৭ দিন করে ধ্যানেরত ছিলেন। তিনি ৬ষ্ঠ সপ্তাহ অতিবাহিতকালে এই মুং জা লিংদা পুকুরে ধ্যানমগ্ন থাকাকালীন প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়। এই সময় গৌতম বুদ্ধের দেহটিকে ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য নাগরাজ নিজ দেহকে আশ্রম তৈরী করে গৌতম বুদ্ধের মস্তকের উপর ফণা আকৃতি করে এক সপ্তাহ ব্যাপি অবস্থান করেছিলেন। এ থেকে গৌতম বুদ্ধের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর রাখাইনরা মুং জা লিংদা পুকুরে বর্ষাব্রত পালন করে থাকেন।

লোকনাথ মন্দির -







লবণ ক্ষেত



রাখাইন নারী পোশাক বিক্রেতা



মহেশখালীর স্বর্গীয় সৌন্দর্য













মহেশখালীর সেই বিখ্যাত পানের খিলি



আগের পোস্ট - কক্সবাজার ডায়েরি – ০১ : মনমাতানো হিমছড়ি

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২

শিরনামহীন বাক্য বলেছেন: অনেক অজানা কিছু জানা গেল।

২৬ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:০৮

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: :)

২| ২৬ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০

শাহিন-৯৯ বলেছেন: আমার কেউ ফ্রি নিলেও আর মহেশখালী যাব না।

২৬ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:১০

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু মহেশখালীর ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে শিউরে উঠি আমি। :)

৩| ২৬ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:১৫

নিশাত১২৩ বলেছেন: কি সুন্দর মহেশখালী । মুগ্ধ হয়েছি দেখে । ++++

২৬ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:২৮

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ছবি ব্লগ থেকে ঘুরে যাবার জন্য। :)

৪| ২৭ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:১১

ধ্রুবক আলো বলেছেন: ছবি ব্লগ ভালো লাগলো।

২৭ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়ু। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.