![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তখন সবে প্রাইমারী স্কুলে ৪র্থ শ্রেণীতে উঠেছি। যতদূর মনে পড়ে সে ১৯৮৭ সালের কথা। ক্লাসের ফাষ্ট বয়! লেখা পড়ায় অদ্বীতিয়! সবচেয়ে কাছের বন্ধু সেকেন্ড বয়! এখনকার যুগে এটা অসম্ভব। বাবা সরকারী চাকুরে, সেই সুবাদে সিরাজগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত(!) উপজেলা তাড়াশ’এ পোষ্টিং। প্রেমের কথা বলবার আগে আনুসাঙ্গিক কিছু কথা বলে নেয়া ভালো। এতে করে সেই সময়ের প্রেক্ষাপটটা বুঝাতে আমার জন্য সহজ হবে। তখন ব্যাঙের ছাতার মতন কিন্ডার বাগান বিদ্যালয় ছিল না! ভাল স্কুল ছিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। পলিথিনের ব্যাগের আবির্ভাব ঘটলো! আমরা সেই ব্যাগ যোগার করে, তাতে বই ভরে স্কুলে যেতাম দুই হ্যান্ডেলের মধ্যে দুহাত ভরে! থকনকার দিনের ব্যাকপ্যাক! স্কুলে মিলিটারি এসে বড় বড় ড্রামে গুড়ো দুধ গুলিয়ে বাচ্চাদের খেতে দিত। স্কুলের স্যারদেরকে জমের মতন ভয় পেতাম! অবশ্য বড় কর্মকর্তার ছেলে হিসাবে বদমায়েশী করলেও কপালে বেতের ঘাঁ তেমন পড়তো না! তার উপর আবার ১ রোল! এসব স্মৃতির কথা এখন থাক, আসল ঘটনায় আসি! আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটি একটু দুরন্ত ও ইচড়ে পাকা প্রকৃতির ছিল! (রাজন, তোকে খুব মিস করছি রে!) তো, সেই রাজন একদিন এসে বলল, ‘‘দোস্ত, আমি ভালবাসা করছি”। আমি হা করে তাকিয়ে থাকলাম! তখোনো বুঝে উঠিনি আসলে ভালোবাসা কি বস্তু! খায় না মাথায় দেয়! ও আমাকে নিয়ে স্কুলের পাশের কাঠাল চাঁপা গাছে চড়ে বসল বিষয়টা বোঝানোর গুরুদায়িত্ব নিয়ে। ওই গাছটা ছিল আমাদের দুজনের একান্ত আড্ডার স্থান।
অবশেষে বিত্তান্ত জানা গেল! আমাদের স্কুলেরই ৩য় শ্রেণীর এক কিশোরী যার নাম যতদূর মনে পড়ে ‘নদী’ অথবা ‘দীনা’ ছিল। তো, তারই প্রেমে পড়েছেন আমার একমাত্র করিৎকর্মা বন্ধুটি। প্রেম সম্পর্কে তিনি ধারনা পেয়েছেন সাদা কালো ন্যাশনাল টেলিভিশনে দেখা কিছু নাটক ও সিনেমার মাধ্যমে! সেই ধারনা এখন আমার মাঝে স্থানান্তর করবার গুরু দায়িত্ব তার ঘাড়ে বর্তেছে! নাটক বা সিনেমা আমিও দেখেছি কিন্তু এই বিষয়টা কখনো মাথা|য়ই ঢোকেনি! নিজেকে বড্ড গাধা শ্রেণীর মানুষ বলে মনে হতে শুরু করল। রাজনের প্রেমের অগ্রগতি ইর্ষনীয়! বালিকা কিছুই জানে না! বালিকাটির বাড়ীর সামনে প্রধান সড়কে একটি মাইল ফলক এর উপর বিকালে দুজন গিয়ে বসে থাকতাম এবং নানাবিধ বিষয়ে গল্প হতো। বিষয়গুলোর মধে| বলাই বাহুল| নারী শরীর বিষয়টিই প্রাধাণ্য পেত বেশী। এবং যথারীতি এ বিষয়েও আমার চাইতে রাজনের রোল এগিয়ে! নিজের রোল নং ২ মনে হতে লাগলো। সবসময় মনে হতো রাজন কত মেধাবী! কত জানে। আর আমি গাধার মতন বই খাতার গবুরে পোকা!
অবশেষে কিছুদিন যেতে আমারও বোধদয় হলো এবং মনে হলো আমারও একটা প্রেম থাকলে মন্দ হয় না! যথারীতি এ দায়িত্বটিও আমার বন্ধুবর রাজন স্বইচ্ছায় নিজের করে নিলেন।
বালিকা খোঁজা শুরু হয়ে গেল। অবশেষে পাওয়া গেল তার খোঁজ। আমাদের স্কুলেরই একজন তার নাম শাপলা। সেই সুন্দরী আবার আমার চাইতে এক ক্লাস উপরে পড়েন (৫ম শ্রেণী)! কি আর করা! অবশেষে রাজি হলাম। প্রেমিকাকে কিছু বলতে সাহস হয় না। শুধু টিফিন পিরিয়ডে আশে পাশে ঘুরাঘুরি করি। মাঝে মাঝে তিনি জানতে চান কিছু চাই কিনা!
আমি আমতা আমতা করে বলি ‘‘না এমনি, কিছু না”।
‘‘না, কোন সমস্যা থাকলে বল। তোমার তো আবার লেখা পড়া নিয়ে সমস্যা হবার কথা নয়!”
এভাবে চলছিল বেশ। তাকে দেখতে ভাল লাগত, এটুকুতেই ছিল এই প্রেমের অগ্রগতি। মাস কয়েক পর, কেন যেন মনে হতে লাগল, মেয়েটি কিছু একটা টের পেয়েছে। কেমন যে একটা চাহনি! ঠিক বোঝানো সম্ভব নয়, একেবারে বোম্বেটে চাহনি! আমাদের ক্লাসে এসে নানা অজুহাতে আমার কাছে আসে, একটু ছুয়ে দেয়, হেসে কথা বলে। এতেই যেন আমার হয়ে গেল!
একবার আমাদের পরীক্ষা চলছে, ওদের পরীক্ষা বিকালে হলেও একটু আগে ভাগেই উনি এসে পড়েছেন স্কুলে। আমাদের রুমে ঢুকে, কাছে এসে দাড়ালেন বেন্চ এর কিনারে। একটু নুয়ে পড়ে কানের কাছে এসে জানচে চাইলেন সব ঠিক ঠাক পারছি কিনা। তার গাল একটু ছুয়ে গেল আমার কানের লতি। ভেজা চুলে কিসের যেন এক অদ্ভুত গন্ধ। আমার কাপা গলায় উত্তর শুনে সে চলে গেল। আমার আর তেম কিছু লেখা হলো না। অংক পরীক্ষা, শেষে জ্যামিতির কিছু একটা লেখা বাদ ছিল। বহু চেষ্টা করেও আর লিখতে পারলাম না সহজ বিষয়টি। পরে এনিয়ে হেড স্যারের কথা শুনতে হয়েছিল, ‘‘তোমার মতন একটা মেধাবী ছাত্রের পক্ষে এরকম উত্তর কিভাবে লেখা সম্ভব? ত্রিভুজের চারটি বাহু! এমন কথা জীবনে এই প্রথম কোন ছাত্রের কাছ থেকে জানলাম! বিষয়টা তোমার বাবাকে জানাতেই হচ্ছে।” হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। জানতাম বাবা কিছু বলবেন না। যথারীতি তাই হলো। সেদিন সন্ধ্যায় বাবা বললেন, ‘‘কি রে, মন কোথায় থাকে? সারাদিন নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে পড়ে থাকলেই কি বিজ্ঞানী হওয়া যায়? তার জন্য আগে লেখা পড়াটা মনোজোগ দিয়ে করতে হবে।”
এই ছিল বাবার প্রতিক্রিয়া। আর মায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘বোম্বেটের মতন তোমার ছেলে সারাদিন বন জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। একটু শাসন কর।”
বাবার উত্তর, ‘‘শাসন করলাম তো!”
আর আমার অবস্থা - তার সেই চুলের গন্ধটা আজও মাঝে মাঝে আমার নাকে ভেসে আসে!
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৪
সফটওয়্যার বলেছেন:
৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: আহসান২০২০ ! শাপলা এখন কোথায় সেটা জানা নেই। তবে অন্য কারো শয্যা পাশে যে তিনি ফুটেছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ফুটে এতদিনে ঝরেও গিয়ে থাকতে পারেন!
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮
ইয়ার শরীফ বলেছেন: মজা পাইলাম >>
মনে হইল কিছু কথা আপনার লেখা পরে
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৫
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ইয়ার শরীফ সবাইকে শৈশবের কিছু কথা মনে করিয়ে দেওয়াই এই লেখোর উদ্দেশ্য। ধন্যবাদ আমার কাচা হাতের লেখাটি পড়ে মন্তব্য করবার জন্য।
৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৯
কালো ঘোড়ার আরোহী বলেছেন: মজা পেলাম। জটিল!
আমারও থ্রি-ফোর এ পড়াকালীন একটা প্রেমের ঘটনা আছে! তবে আমি সাহস করে বলে ফেলেছিলাম!!! নীরব সাড়াও পেয়েছিলাম!!
আপনার লেখাগুলো চমৎকার।
৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৬
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ধন্যবাদ কালো ঘোড়ার সাদা মনের অরোহী। আসলে সকলের জীবনেই শৈশবে এমন প্রেম আসে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বালিকার বয়স বালকের চাইতে একটু বেশী হয়! আপনিও লিখে ফেলুন। আপনার লেখাটিও অনেক সুন্দর হবে জানি।
৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৮
ইন্সিত বলেছেন: আহারে সেইসব দিনগুলোর কথা মনে করাইয়া দিলেন।
অসম্ভব ভালো লেখাটার জন্য ++++++++++++++++++
৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৫
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ধন্যবাদ ইন্সিত। আপনার লেখাগুলোও ভালো। আশা করি আপনার কাছথেকে আরও সুন্দর সুন্দর লেখা আমরা পাবো।
১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
নেংটি ইদুর বলেছেন: বড় পাকনা আছিলেন
১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: নেংটি ইদুর পাকনা একটু ছিলাম।!!!
১২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫
মাক্স বলেছেন: মজার ঘটনা
১৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩০
htusar বলেছেন: মজা পেলাম।
১৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৯
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: আমার ব্লগের সকল পাঠককে ধন্যবাদ ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
১৫| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৫৭
সাদনান সারওয়াত বলেছেন: লল বস কেলাস ফোর
মাথাই নষ্ট
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২১
আহসান২০২০ বলেছেন: লুল রে লুল। চুলের গন্ধে মাতাল। শাপলা কি এখন আপনার খাটে ফোটে, না অন্য কারও খাটে?