নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

:):):)(:(:(:হাসু মামা

:):):)(:(:(:হাসু মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

এগুলো একটি জিহাদের পথ ছেড়ে দেয়া নারীর কথা

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮


বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ তরুণী তানিয়া জর্জেলাসের আমেরিকান স্বামী জন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন,এই দম্পতিদের পরিচয় হয়েছিল অনলাইনে। ইসলাম মতাদর্শ নিয়ে তাদের মনের এবং মতের মিলের কারনেই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেছিল। স্বামীর সঙ্গে তিনি চলে গিয়েছিলেন সিরিয়াতে। বছর দশেকের মত তানিয়া ইসলামী চরমপন্থা অনুসরণ করে এসেছেন।তানিয়ার স্বামী ছিলেন ইসলামিক স্টেটের একজন শীর্ষস্থানীয় সদস্য । তানিয়া তার মতাদর্শের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৯০ দশকের শেষদিকে তানিয়া উত্তর লন্ডনের হ্যারো এলাকায় একটি স্কুলে পড়তেন। মধ্যবিত্ত সে এলাকায় নানা দেশের নানা বর্ণের মানুষেরা বসবাস করেন।

বিবিসির এশিয়ান নেটওয়ার্কের প্রতিবেদক বলছেন তানিয়া ছিলেন আর পাঁচটা স্কুল কিশোরীর মতই। তার সেসময়ের বন্ধুরা বলেছেন তানিয়া ধর্ম নিয়ে তেমন মাথা ঘামাতেন না। অথবা রাজনীতি নিয়েও তার কোন উৎসাহ ছিল না। কিন্তু সবকিছু হঠাৎ করে বদলে গেল তানিয়ার যখন ১৭বছর বয়স,তানিয়া তখন ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি তখন আর হ্যারোর তানিয়া হয়ে থাকতে চাননি, তিনি তখন চেয়েছেন একটা নতুন পরিচয়। তিনি তখন চেয়েছিলেন একজন ধার্মিক মানুষ হতে। তিনি তখন চাননি লোকে ভাবুক তিনি হালকা মেজাজের মেয়ে, সহজেই যার সঙ্গে ফস্টিনস্টি করা যায়। তানিয়া বলেন জন তার জীবনটাকে নতুন করে দেখতে শিখিয়েছিলেন।

তানিয়ার নিজে মুখে বলা কথাঃ

আমাকে সে দিক নির্দেশনা দিয়েছিল, আমি অনুভব করতে শিখেছিলাম যে সমাজে আমার স্থান কোথায়। আমি কোন সম্প্রদায়ের, কোন সমাজের অংশ। সে সময় বয়স যখন তার ২০ কোঠায় গোড়ার দিকে তখন তানিয়া বেশ কিছু ইসলামী উগ্রপন্থী দলের সঙ্গে মেলামেশা করেছিলেন। তারা তার চিন্তাধারাকে বদলে দিয়েছিল। তারা তাকে বিশ্বকে ভিন্ন চোখে দেখতে শিখিয়েছিল।

যে ভাবে তানিয়াকে সে পথে নেয়া হলঃ
ওরা আমাদের অত্যাচার নির্যাতনের ভয়াবহ সব ছবি দেখাতো। সেগুলো আমাদের মন জুড়ে থাকতো, বিশেষ করে সেগুলো আমায় ভীষণ পীড়া দিতো। যেমন স্রেব্রেনিৎসার গণহত্যার চিত্র। মনে হতো আমরা সবাই অপরাধী। অপরাধকে সমর্থন করছি। মনে হতো আমাদের সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের একটা কর্তব্য আছে। সেটাই ছিল জিহাদ। তানিয়া তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি সেসময় আল কায়েদা, তালেবান বা যারাই মুসলমানদের সম্মান এবং মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট ছিল তাদের প্রতিই আকৃষ্ট হয়েছেন। লন্ডনে ৭ই জুলাই ২০০৫ এর জঙ্গী হামলায় মারা গিয়েছিল তারই স্কুলের সহপাঠী বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত সাহারা ইসলাম। তানিয়া বলেছেন এত কম বয়সে তার বান্ধবীর অকালমৃত্যু তাকে ব্যথিত করেছিল। কিন্তু তারপরেও তিনি ওই হামলাকে সমর্থন করেছিলেন। নিরীহ মুসলিম আর নিরীহ অমুসলিম জিহাদের জন্য যে কারও মৃত্যুই সঙ্গত। এটাই পথ তখন সেটাই সঠিক যুক্তি বলে মনে হতো আমাদের কাছে। তার স্বামী জন জর্জেলাসকে তার মনে হয়েছে আকর্ষণীয়, বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ, প্রকৃত বন্ধু যার সঙ্গে চরমপন্থী মূল্যবোধ, তিনি শেয়ার করেছেন। তানিয়া তখন চেয়েছিলেন তার সন্তানদের তিনি এমনভাবে বড় করবেন যাতে তারা মুজাহেদীন বাহিনীতে যোগদানের উপযুক্ত হয়ে ওঠে। খেলাফত আন্দোলনে এটাই তানিয়ার অবদান বলে তানিয়া মনে করতেন।

২০১১ সালে আরব অভ্যূত্থানের পর জন এবং তানিয়া বাচ্চাদের নিয়ে মিশরে যান। জন মনে করেছিলেন ছেলেদের জিহাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত করার জন্য মিশরই ছিল আসল জায়গা। কিন্তু তানিয়া বলছেন সেসময়ই এই মতাদর্শকে সমর্থন করার ব্যাপারে তার মনে প্রথম সন্দেহ দেখা দেয়। একদিন আমার একটা ছেলে স্কুল থেকে ফিরে আমাকে একটা গ্রেনেড দেখাল। গ্রেনেডটা লাইভ ছিল না। কিন্তু আমার মাথা গরম হয়ে গেল। আমি রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে জনকে তাড়া করে গেলাম। বললাম আমার ছেলেদের হাতে বন্দুক আর গ্রেনেড আমি দেখতে চাইনা। তাদের ওসব জিনিসের ধারেকাছে দেখতে চাইনা। ২০১৩ সালে জন তার পরিবার নিয়ে সিরিয়ায় যান। তানিয়ার গর্ভে তখন তাদের চতুর্থ সন্তান। সিরিয়ায় তারা সেনাবাহিনীর পরিত্যক্ত ভবনে থাকতেন। প্রতিরাতে গোলাগুলি আর যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে আমার বিবাহিত জীবন তখন ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। জনকে আমি বলেছিলাম আমি ছেলেদের নিয়ে সিরিয়া থেকে চলে যেতে চাই। জন আপত্তি করেনি। বুলেট, চোরাগোপ্তা হামলা, গোলাগুলির মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া গলে শরণার্থীদের সঙ্গে পালিয়ে যেতে আমাকে সাহায্য করেছিল জন। তখন সিরিয়ায় আইএসের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে শেষ পর্যায়ের লড়াই চলছে। তানিয়া বলেন জন বলেছিল তাকে শেষ অবধি লড়তে হবে। তিনি ফিরতে চান না। তার শেষ কথা ছিল আমার এবং সন্তানদের প্রতি তিনি যা করেছেন তার জন্য তিনি দু:খিত। এক বছর পর্যন্ত জনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তানিয়া জানে না এরপর জনের ভাগ্যে কি ঘটেছিল। হয়ত জন মারাই গেছে। তানিয়া এখন থাকেন আমেরিকার টেক্সাসে। ২০১৫ সালে তিনি নতুন জীবনসঙ্গী খুঁজে নিয়েছেন। তার নাম ক্রেগ।

বাচ্চাদের অভিভাবকত্ব তিনি পাননি। জনের বাবা মা এখন বাচ্চাদের মানুষ করছেন। বাচ্চারা আমেরিকায় নতুন জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তারা ভাল আছে।ইসলামের বাইরেও যে জানার অন্যান্য জগত আছে সেটাই আমি আবিষ্কারের চেষ্টা করছি। আমার জীবনের মূল্যবান দশটা বছর আমি নষ্ট করেছি। ভুলপথে নিজেকে চালিত করেছি। আমি সংসার হারিয়েছি, সন্তানদের হারিয়েছি। তাই আমি চেষ্টা করছি যেন অন্য মেয়েরাও আমার মত ভুল না করে। আমার চিন্তার স্বাধীনতা আমি ফিরে পেয়েছি। তানিয়া জর্জেলাস বলেন জিহাদী না হয়েও ইসলামী মূল্যবোধকে যে সমুন্নত রাখা যায় সে কথাটাই তিনি অন্যদের বোঝাতে কাজ করছেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সংগ্রহ অনলাইন পত্রিকা

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

শামচুল হক বলেছেন: মানুষের জীবনে ভুল ডিসিশনই ভুল পথে নেয়।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছে তানিয়ার ভাষ্য থেকে।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:০২

জাহাঙ্গীর কবীর নয়ন বলেছেন: মুসলমানেরা যতদিন না তাদের 'জিহাদ' শব্দের সঠিক ব্যাখ্যা বের করবে, ততদিন এরকম সাধারণ মুসলমান পথভ্রষ্ট হতেই থাকবে। যতদিন না ওয়াজী হুজুরেরা তাদের ওয়াজে সব ধর্মের মানুষের প্রতি সম্প্রীতির বাণী প্রচার করবেন, মুসলমান জঙ্গিবাদকে ঘৃণা না করে সম্মানের চোখেই দেখবে।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সহমত।

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২০

তপোবণ বলেছেন: ধর্মের এজেন্টরা সর্বদা ব্যবসায়িক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। মানুষকে ভুল পথে চালিত করাকে তারা ঈমানের অংশ মনে করেন। কাল হেলিকপ্টারে করে একজন পীর এসে নামলেন। রাতভর ওয়াজ হলো। মাইকের প্রচন্ড গগণবিদারি আওয়াজে ঘুমের বারোটা বাজলো। শুনলাম যেসব মুসলমান ঈদে মিলাদুন্নবী করেনা মানেনা তারা ডাইরেক্ট কাফের এবং তাদের স্ত্রী তালাক হয়ে যায়।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৭

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: :(

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২৩

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ কেবল পথভ্রষ্টদেরই কাজ!!


ওনাকে আলোর ভূবনে স্বাগতম!:)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: তানিয়াকে আলোর ভূবনে স্বাগতম!:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.