![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খারাপ মানুষ দেখেছ? কই আমিতো দেখতে পাই না। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিতে খারাপ বলে কিছু নেই, সবই আপেক্ষিক।
লিনা চোখ কচলাতে কচলাতে একটা খাম নিয়ে এলো। এসে বলে, আম্মু আপু তোমাকে এটা দিতে বলেছে। লিপি জিজ্ঞেস করে, কি এটা? মুখে বিরক্তির ভাব নিয়ে হাই তুলতে তুলতে লিনা বলল, জানি নাহ, তোমার মেয়েকেই জিজ্ঞেস কর না। একটু আগে মাত্র ঘুমিয়েছি...
লিপি খামটা খুলতেই গোলাপের কয়েকটা পাপড়ি দেখতে পায়। ভিতরে একটা ভাঁজ করা কাগজ। কাগজে লেখার প্রথম লাইনটা ঘষামাজা করে কাটা দেওয়া। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে সেখানে লেখা ছিল I love you Ammu. এরপর যা লেখা তা হল, আমি তোমায় খুব ভালবাসি আম্মু, বিরিয়ানী রান্না করে খাওয়াবে?-সারা
লিপি সামান্য রাগের ভাব নিয়ে ডাকে সারা, এই সারা কলেজ থেকে এসেই পাগলামী শুরু করেছ? যাও তাড়াতাড়ি পড়তে বোস।
সারা এতক্ষণ দরজার আড়ালে দাড়িয়ে মার চিঠি পড়া দেখছিল। এখন তার মুখে হাসির খঁই ফুটছে।
উপরে উপরে রাগ দেখালেও লিপি কিন্তু মোটেও রাগ করেনি। বরং মনে অদ্ভূত রকমের এক শিহরণ জেগেছে। এ এক অন্য ধরনের মাতৃত্তের অনুভূতি, যা শুধু মায়েরাই বুঝে। কিন্তু লিপি ভেবে পেলনা প্রথমে ইংরেজি কেটে পরে বাংলায় লিখেছে কেন?
হয়ত সারা চায়নি মায়ের প্রতি তার এই ভালবাসা বিদেশী কোন ভাষায় প্রকাশ করতে। আর আমরা যত সহজে I love you কথাটা বলতে পারি তত সহজে আমি তোমাকে ভালবাসি বলতে পারি না।
লিপি তার মেয়ের ছেলেমানুষি দেখে মনে মনে হাসে।
আজ বিরিয়ানী রান্না করতে গিয়ে পাঁচ বছর আগের ওই কথা গুলো লিপির মনে পড়ছে। লিপি বুকের বাপাশে কেমন যেন চিনচিন ব্যাথা অনুভব করে। চোখ দিয়ে পানি এসেও আবার আটকে যায়। তেইশ বছর ধরে যেই বাড়িটা সারার নিজের বাড়ি, আজ থেকে সেটা তার বাপের বাড়ি হয়ে যাবে! কথাটি তার বিশ্বাস হতে চায় না। কিন্তু সে নিজেও ছাব্বিশ বছর আগে নিজের ঠিকানা লিখতে গেলে লিখত জেলা-টাঙ্গাইল, আর গত ছাব্বিশ বছর ধরে সে লিখে আসছে জেলা-মানিকগঞ্জ। লিপি মানতেই চায় না, মনে হয় সব যেন স্বপ্ন একটু পর তার ঘুম ভেঙে দেখবে সেই হাসিখুশি খুনসুটিতে মাতানো ছোট্ট সারা।
হ্যাঁ, আজ সারার বিয়ে। স্বপ্ন নয় বাস্তবেই আজ তার বিয়ে। লাল বেনারসিতে বউ সেজে পাশের ঘরে বসে আছে। ভাবতেই অবাক লাগে আর কখনো সারা লিপির সাথে ছেলেমানুষী করবে না। আর বিরিয়ানী খাবার জন্য সে মাকে ভালবাসি বলে চিঠি লিখবে না। বুকের ভিতর শূন্যতা অনুভব করে লিপি। সেই শূন্যতা ক্রমেই অসীমের দিকে ধাবমান। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় লিপির। চশমার আড়ালে লিপির চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি ঝরে।
বিয়ে বাড়িতে বিভিন্ন রীতিসিদ্ধ খাবারের আয়োজন থাকলেও লিপি আজ একা একা বিরিয়ানী রান্না করছে। বিরিয়ানী যে সারা প্রিয় খাবার ছিল! আমাদের বাবা মা যে আমাদের ভালবাসে এটা তারা কখনো মুখে বলে না, তেমনি লিপিও তার মেয়েকে বলতে পারেনি। কিন্তু কেন যেন গভীর মমতায় সে মনের অজান্তেই আজ বিরিয়ানী রান্না করতে রান্না ঘরে চলে এসেছে। সারা মাঝে মাঝেই নানান পাগলামী করে লিপির কাছে বিরিয়ানী খেতে চাইত। সেই দিন গুলো যেন লিপির চোখের সামনে চকচক করে ভেসে আসে। চোখ দিয়ে পানি পড়ে আর বুকের ভেতরের শূন্যতা চরমে পৌছে যায়।
হঠাৎ লাফাতে লাফাতে লিনা রান্না ঘরে হাজির।
-আম্মু বর এসেছে, বর এসেছে...
ছবিসূত্র: গুগোল
২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৫
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই অনুপ্রেরণা দেবার জন্য। হয়ত আপনার এই মন্তব্যটি আপনার কাছে অনেক ছোট কিন্তু আমার কাছে এটি অসীম অনুপ্রেরণা দেবার জন্যে যথেষ্ট।
২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
এখওয়ানআখী বলেছেন: এত অল্প বয়সে জীবনকে এত ভালভাবে খুঁটিয়ে দেখা------চমৎকার। তুমি বাপু বাজিমাত করবেই
২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪৮
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ওমেরা ভাই এবং আপনার মন্তব্যে আমার চোখে পানি চলে এসেছে! আবেগ ধরে রাখতে পারছি না। কি বলে যে আপনাদের মন্তব্যের উত্তর করব ভেবে পাইনা।
আমি ছোট মানুষ সবে মাত্র ইন্টার পরিক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে, রেজাল্টের পর মায়ের ইচ্ছা বুয়েটে পড়ব, কিন্তু আমার ইচ্ছা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে তাকে একজন লেখকের মা বানাব। দোয়া করবেন যেন সৃষ্টিকর্তা সেই সুযোগ দেয়
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি মন ছুয়ে গেল।
২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১২
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ রাজিব ভাই, আপনাদের একেকটি মন্তব্য আমার জন্য অনুপ্রেরণা।
৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ভাল লাগলো পড়ে; পোস্টে +++
২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:৩৭
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ কাউসার ভাই।
৫| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪
সিনথিয়া আফরিন বলেছেন: গভীর আবেগ ঘন ।
৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪৭
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: আমি কম বয়সী একজন ছেলে হলেও মায়ের এই আবেগটুকু একটু বুঝার চেষ্টা করেছি আরকি।
৬| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: আপেক্ষিক মানুষ ,
এভাবেই মানুষের ঠিকানা বদলে বদলে যায় ।
তাৎক্ষনিক ভাবে খুব সামান্য একটি বিষয় মনে হলেও তার ভেতর যে গভীর ক্রন্দন লুকিয়ে আছে , সে কান্নার শব্দ খু্ব মুন্সীয়ানার সাথে তুলে ধরেছেন।
লাইকড ।
৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৫১
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ জী এস ভাই।
আসলে এটাই বাস্তবতা, যা বিশেষ করে মেয়েরা মেনে নিতে একরকম বাধ্য হয় বলা যায়। এক ঠিকানা ছে অন্য ঠিকানায় পারি জমানো, এসব ভাবলে মেয়েজাতির প্রতি আপনা আপনি সম্মান জাগে মনে।
৭| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫০
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালবাসা অনুভবের বিষয়। ভালবাসা সবাই ভালবাসে, সবাই অনুভব করে, কিন্তু সবাই প্রকাশ করতে পারেনা। কিন্তু সব ভালবাসাই হৃদয় ছুঁয়ে যায়, কখনো কখনো অনুরণন তুলে যায়।
কবি জাহিদ অনিক এর অবকাশ কবিতায় আপনি যে মন্তব্যটি করেছেন (৪ নং), তা আমার খুব ভাল লেগেছে। সেখানে আমার মন্তব্যেও আমি সে কথা উল্লেখ করেছি। আশাকরি, একবার সময়ও করে আমার মন্তব্যটি দেখে আসবেন।
১৭ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:২৩
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার।
অনেক ভাল লাগল যে কবি জাহিদ অনিকের কবিতায় আমার করা মন্তব্য আপনার ভাল লেগেছে। আপনার মন্তব্য আমি পড়েছি, আপনার ব্যপারে কিছু বলব না কারন আপনি একজন হেবিওয়েট ব্লগার।
৮| ১৭ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:১৫
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সুন্দর লেখা......
লেখালেখি চালিয়ে যান। আপনার হবে.......
বিয়ে হলে মেয়েরা আপনজন ছেড়ে যায়। তার আপনজনেরা বলে, "যেতে নাহি দিব হায়..... "
১৭ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:২৮
আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে তো আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ আর্কিওপটেরিক্স ভাই। লেখার ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে অনেক খুশি হব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩০
ওমেরা বলেছেন: সবে মাত্র আঠার তবু মায়ের আবেগটা সুন্দর ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন ,আপনি তো অনেক বড় লেখক হবে । আরো আরো বেশী বেশী লেখেন ।