নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক হওয়ার ক্ষুদ্র ইচ্ছা মাঝে মাঝেই মনের ভিতর সুড়সুড়ি দেয়। তাই মাঝে মাঝে লিখতে চেষ্টা করি। তবে সামুতে লেখা বা মন্তব্য করায় বড়ই অনিয়মিত। তবে নিয়মিত হবার চেষ্টা করছি। পেশায় আমি একজন ছাত্র। দেশের কোন একটা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার মধ্যে আছি।

আপেক্ষিক মানুষ

খারাপ মানুষ দেখেছ? কই আমিতো দেখতে পাই না। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিতে খারাপ বলে কিছু নেই, সবই আপেক্ষিক।

আপেক্ষিক মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি নক্ষত্রের মৃত্যু ও একটি ব্ল্যাক হোলের জন্ম।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

মেসিয়ার-৮৭ গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাক হোল যা ১০ এপ্রিল, ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেন।

যদি প্রশ্ন করা হয় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব থেকে রহস্যময় জিনিসটা কি? অনেকেই সোজা সাপ্টা উত্তর দেবেন ভাই ব্ল্যাক হোল।

এখন যদি কেউ বলে, অতশত বিজ্ঞানের সমীকরণ-হিসেব নিকেশ বুঝি না বাপু কালা গর্ত জিনিসটা কি একটু সহজ করে বুঝাও।
-ওকে ভাই চলো আজ সহজ করে বুঝি ব্ল্যাক হোলের মাথা-মুন্ডু।

ভাই সোজা কথায় বলতে ব্ল্যাক হোল হল মরে যাওয়া নক্ষত্র। নক্ষত্র মরে গেলে ব্ল্যাক হোল হয়।

এখন একটু বাঁকা কথায় আসি। ব্ল্যাক হোলের জন্ম নিয়ে জানতে গেলে নক্ষত্র কিভাবে মারা যায় তা জানা গেলেই তো হয়ে গেল। চলুন জেনে আসি নক্ষত্র কিভাবে মারা যায়।

একটি নক্ষত্রের উপাদান প্রধানত হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম। নক্ষত্র বেঁচে থাকে দুটি কারনে-পারমাণবিক বিস্ফোরণ আর মহাকর্ষ বা গ্রাভিটি।

নক্ষত্রের ভিতরে হাইড্রোজেনের ক্রমাগত নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রোজেন হিলিয়ামে পরিনত হয়। নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার কারনে হয় পারমাণবিক বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণে সৃষ্ট শক্তি দ্বারা নক্ষত্র জ্বলতে থাকে। আর আমরা তো হিরশিমা আর নাগাসাকির ঘটনায় জানিই যে পারমাণবিক বিস্ফোরণে কি পরিমাণ রেডিয়েশন হয়।এই রেডিয়েশন বাহিরের দিকে প্রচণ্ড বল প্রয়োগ করে ফলে নক্ষত্রের সব হাইড্রোজেন বাইরে ছড়িয়ে পড়তে চায়। কিন্তু নক্ষত্রের ভিতরে এত পরিমাণ হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম গ্যাসের ভরের কারনে নক্ষত্রের নিজের একটা গ্র‍্যাভিটি তৈরি হয় যা সমস্ত হাইড্রজেন আর হিলিয়ামকে কেন্দ্রের দিকে টানে। এর ফলে দুটি পরস্পর বিপরীত দিকে বলের সৃষ্টি হয়। একারনে নক্ষত্রের সব হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম এক জায়গায় থেকে ঘুরতে থাকে। আর এই বিস্ফোরণে প্রচুর আলো তৈরি হয় যাকে আমরা পৃথিবীতে বসে দেখি মিটিমিটি তারা জ্বলছে। আমাদের সূর্যেও কিন্তু একই ক্রিয়া বিক্রিয়া হয়।

কিন্তু কথা হল এই প্রবল বিক্রিয়ার ফলে যখন সকল হাইড্রোজেনের মজুত শেষ হয়ে যায় তখন কি হবে? তখন এই পারমাণবিক বিক্রিয়া ও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে রেডিয়েশন ও বন্ধ হয়ে যায়। আগে বলেছিলাম এই রেডিয়েশনের ফলে বাহিরের দিকে একটি বল তৈরি হয়, যা হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম গ্যাসকে বাহিরের দিকে ঠেলে দেয়। কিন্তু রেডিয়েশনে বন্ধ হবার পর তো এই বাহিরের দিকের বল আর রইল না। বিস্ফোরণ বন্ধতো তো শক্তি উৎপাদন বন্ধ। শক্তি উৎপাদন বন্ধ তো আলো উৎপাদন বন্ধ। ফলে বেচারা নক্ষত্রের কি হবে? সে তো মারা যাবে।

নক্ষত্র মারা যাবার পর শুধু একটি বল থাকে যা হল গ্রাভিটি, যা সকল হাইড্রোজেন আর হিলিয়ামকে কেন্দ্রের দিকে টানে। কেন্দ্রে দিকে এত বল দ্বারা টানে যে নক্ষত্রের কেন্দ্রের আয়তনই শূন্য করে দেয়। কিন্তু এই শূন্য আয়তনে আবার ঘনত্ব হয় অসীম। যাকে বলে সিঙ্গুলারিটি।

এখন বেচারা নক্ষত্র তো মৃত তার তো আর কোন আলো থাকবে না। আর আলো না থাকার কারণে নক্ষত্রটি পুরো কাল রুপ ধারন করে। এই কাল নক্ষত্রটিকেই বলা হয় আমাদের সবার প্রিয় ব্ল্যাক হোল ওরফে কৃষ্ণ গহ্বর ওরফে কালা গর্ত।

অসীম ঘনত্বের কারনে এর গ্রাভিটি বেড়ে যায়। বেড়ে যায় বলতে খুব বেশি বেড়ে যায়। এত বেড়ে যায় যে তার আসে পাশে যা কিছু আছে সব খেতে শুরু করে মানে নিজের ভিতর টেনে নিতে শুরু করে। সব কিছু টেনে নেয় এমনকি আলোকেও ছাড় দেয় না বিন্দু মাত্রও। আলোকেও খেয়ে ফেলে হারামজাদা (দুঃখিত, এটি আদরের গালি)।

এখন যদি বলি যেকোন নক্ষত্র হলেই কি তাহলে ব্ল্যাক হোল হবে? উত্তরটা সহজ ভাষায় 'না'। কারন আমাদের বাঙ্গালী গনিতবিদ সুব্রাহমানিয়ান চন্দ্র শেখর অংক কষে বলে গেছেন কোন নক্ষত্রকে ব্ল্যাক হোল হতে হলে তার ভর অবশ্যই আমাদের সূর্যের ভরের দেড় গুনের বেশি হতে হবে। সূর্যের ভরের দেড় গুন পর্যন্ত ভরকে একটি লিমিট ধরা হয় যা চন্দ্র শেখর লিমিট নামে পরিচিত।

অর্থাৎ কোন নক্ষত্রের ভর যদি চন্দ্রশেখর লিমিটের বেশি হয় তা মরে গেল হবে ব্ল্যাক হোল। আর যদি সমান বা কম হয় তাহলে হবে হোয়াইট ড্রাফট।

আর এভাবেই একটি নক্ষত্রের মৃত্যু আর একটি ব্ল্যাক হোলের জন্ম হয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: বিশ্বব্রমান্ডে ব্ল্যাক হোলের চেয়ে রহস্যময় বেশি মানূষের মন।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:২৬

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: রাজিব ভাই ভাল আছেন। মাঝে অনেকদিন সামুতে আস হয়নি।

আর হ্যাঁ ভাই আপনার সাথে সহমত।

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:২৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: খুব সহজ এবং সাবলীলভাবে বুঝিয়েছেন নক্ষত্রের মৃত্যু এবং ব্ল্যাকহোল সৃষ্টির কথা | পোস্টটি ভালো লাগলো |

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ২:২৯

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:৩৪

আঁধার রাত বলেছেন: তার মানে হচ্ছে সূর্য্য কখনও ব্ল্যাক হোল হবে না।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: নাহ্ সেই সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৪১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

০৩ রা মে, ২০১৯ রাত ৮:৪৯

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৫৭

অয়ন নাজমুল বলেছেন: ব্ল্যাক হোল নিয়ে অনেকতো লিখলেন। হোয়াইট ডোয়ার্ফ বা শ্বেত বামন নিয়েও আরো দু চার লাইন লিখলে পারতেন।

০৩ রা মে, ২০১৯ রাত ৮:৪৮

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: লিখব ভাই ইনশা-আল্লাহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.