নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক হওয়ার ক্ষুদ্র ইচ্ছা মাঝে মাঝেই মনের ভিতর সুড়সুড়ি দেয়। তাই মাঝে মাঝে লিখতে চেষ্টা করি। তবে সামুতে লেখা বা মন্তব্য করায় বড়ই অনিয়মিত। তবে নিয়মিত হবার চেষ্টা করছি। পেশায় আমি একজন ছাত্র। দেশের কোন একটা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার মধ্যে আছি।

আপেক্ষিক মানুষ

খারাপ মানুষ দেখেছ? কই আমিতো দেখতে পাই না। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিতে খারাপ বলে কিছু নেই, সবই আপেক্ষিক।

আপেক্ষিক মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় পাখি গুলো এখন আর দেখি না!

২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:৩৫


দোয়েল

আমাদের বাড়ি উঠানে ছিল কুমড়ো গাছ। বাঁশ আর বাঁশের কঞ্চি দিয়ে উঁচু বিশাল মাচার উপর গাছ ছড়িয়ে থাকত আর কুমড়ো গুলো ঝুলে থাকত। কত দোয়েল পাখি আসত ওই মাচায়। বাঁশের চিকন কঞ্চিতে বসে থাকত, ছোট ছোট পোকা-মাকড় খেত। আমার ফুপাতো ভাই তপু ছিল খুব ত্যাদড়। একদিন বারান্দায় বসে মেজ ফুপু ওকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল। আমি ডুমুর ফল আর আম পাতা দিয়ে বানানো গাড়ি নিয়ে খেলছিলাম। হঠাৎ তপু একটা কঞ্চি নিয়ে বসিয়ে দিল এক ঘা দোয়েল পাখিটার মাথায়। এত সুন্দর একটা সাদা-কাল রংয়ের লেজ খাড়া পাখিটা নিচে পড়ে গেল! বড় ঘরের বারান্দায় ছিল ছোট ফুপু, দৌড়ে আসল। পাখিটাকে হাতে তুলে নিল, মাথায় পানি দিল। আমার চোখ ছলছল করছিল পাখিটার জন্য...

টিয়া

এই পাখিটার জন্য কিনা করেছি। আকাশ দিয়ে ঝাকে ঝাকে উড়ে যেত টিয়া পাখি গুলো, টিটি শব্দ করে। বড় কাকা আর্মিতে ছিল, ছুটিতে বাড়ি আসলে বলত উঠানে লাল পাকা মরিচ ছিটিয়ে রাখলে নাকি টিয়া পাখি গুলো মরিচ খেতে উঠানে নেমে আসে। কত মরিচ ছিটিয়ে বসে থেকেছি, ওরা আসেনি! একদিন নানু বাড়ি থেকে এলাকার ছেলেদের সাথে দুই গ্রাম পরে একটা বোস বাড়ি আছে সেখানে গিয়েছিলাম টিয়া পাখির বাচ্চার সন্ধানে। বোসরা যুদ্ধের সময় ইন্ডিয়া চলে গিয়েছিল। তাদের বাগান বাড়িটাকে এলাকার সবাই বোস বাড়ি বলে। বোসরা যাবার পর থেকে এখন পর্যন্ত সেটি একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। নাড়িকেল গাছে ছিল টিয়ার বাসা, একজন গাছে উঠছিল আর আমি নিচে দাঁড়িয়ে; আনন্দে আমায় পায়কে। কিন্তু ছেলেটি যখন নারিকেল গাছে অর্ধেক উঠেছে তখন ধুলায় চারদিক ভরে গেল, কাল বৈশাখি চলে এসেছিল! তখন সবাই যে যার মত দৌড়। আমিও দৌড় দিলাম। ঝড়ের সাথে যুদ্ধ করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসায় এসেছিলাম। বাজে সঙ্গে মিশেছি আর ঝড়ের মধ্যে এতদূর গেছি কাউকে না বলে তাই আম্মু কি মারটাই না মেরেছিল!



টুনটুনি

আহ ছোট্ট একটা কারিগর পাখি। কি সুন্দর তার দেহের গঠন, কি সুন্দর তার বাসা! আমাদের বাড়ির পাশে একটা পুরানো ভাঙ্গা মন্দির ছিল, সেটার পাশে ছিল অনেক গুলো খসখসি গাছ (খসখসি গাছের শুদ্ধ নাম আমি জানি না। উপরের ছবিতে টুনটুনির যে বাসাটি রয়েছে ওটাও খসখসি গাছে করা। এটার পাতা খসখসে, আর পাতা দিয়ে গ্রামে পাঙ্গাস মাছের আইশ ছাড়ানো হয়)। মাঝে মাঝেই দেখতাম খসখসি গাছে মা টুনটুনি পাখি মুখে তুলার মত কিছু একটা নিয়ে কি যেন খুজছে। একটু পরেই দেখতাম খসখসির দুটো পাতা সুন্দর করে সেলাই করে জোড়া লাগানো। দেখতে অসাধারণ লাগত! চার-পাঁচ ঘন্টা পর দেখতাম দুটো পাতা গোল করে সেলাই করে বানানো একটি বাসা। ভিতরে খড়কুটো আর তুলা দিয়ে গোল করে বানানো গদিতে মা টুনটুনি বসে আছে। দুদিন পর দেখতাম বাসায় দুটো ধূসর ছোট্ট ডিম। কি সুন্দর দেখতে!

তবে ক্লাশ সেভেনে থাকতে আমার স্কুলের আর আব্বুর অফিসের সুবিধার জন্য দাদা বাড়ি ছেড়ে মফস্বলে চলে আসি। তারপর ছিলাম ঢাকায় কলেজের পড়ার জন্য। আপাতত আছি রাজশাহীর রুয়েটে। তবে বাড়ি আসলেই দাদা বাড়ি যাই নিয়মিত কিন্তু প্রিয় পাখি গুলো এখন দেখি না!

বি.দ্র: ছবি গুলো গুগোল থেকে নিয়েছি।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমাদের বাচ্চাদের শিখানো হয়নি: পাখীর বাসায় হাত দেয়া যাবে না, ডিম ধরা যাবে না, বাচ্চা নেয়া যাবে না; তাই পাকী শেষ! অবশ্য ধানের জমি ও অন্য ফসলে দেয়া বিষাক্ত ঔষধ পাখীকে নির্মুল করেছে।

২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:২৪

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: তবে আমার মনে হয় গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েরা পাখির ছানা নেয়ার জন্য পাখি গুলো বিলুপ্ত হয়নি, হয়েছে জমিতে বিষাক্ত কিটনাশক দেবার জন্য। তার সাথে বায়ু দূষন, শব্দ দূষন তো আছেই। আবার অনেকেই বন্দুক হাতে পাখি শিকার করে।

২| ২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৪৬

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: পরিবেশ বিপর্যয়ের সাথে বিভিন্ন প্রাকৃতিক এলিমেন্ট যেমনঃ পাখি, পোকামাকড়, ব্যাঙ এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যা আরো ভয়াবহ অবস্থার দিকে নির্দেশ করে। আবাদি জমির কীটনাশক, সার, মোবাইল টাওয়ার, নির্বিচারে গাছ কাটার কারনে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখিসহ ছোটখাট জীবদের খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। একটা সময় হয়তো আসবে, পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙবে না আমাদের !

গ্রামে তো ভালোই আছে, শহরের অবস্থা হাজার গুণ খারাপ !

পোস্টটা পড়ে গ্রামের এক টুকরো দিন মনে পড়ে গেল।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:৪১

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: কৃত্রিমতার ভিড়ে প্রকৃতিকে হারারো ঠিক নয়। আমাদের প্রকৃতি সংরক্ষণে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৩

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: গ্রামের অবস্থাও যে খুব ভাল তা নয়, পাখি গুলো এখন গ্রামে দেখাই যায় না, আগে প্রতিদিন ঝাকে ঝাকে টিয়া উড়ে যেত, গাছে গাছে দোয়েল ছিল, আর আশেপাশে সব জায়গাতেই টুনটুনির বাসা দেখা যেত, এখন হারিয়ে গেছে সব।

৩| ২৫ শে মে, ২০১৯ সকাল ৮:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ভাগ্য ভালো। আমার বাসার বারান্দা থেকে প্রায়ই দোয়েল পাখি দেখ। উড়ে আসে, কিচির মিচির করে। তারপর চলে যায়।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৫

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ভাল লাগল রাজিব ভাই, প্রকৃতিকে একটু হলেও কাছে থেকে অনুভব করতে পারছেন।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:০৮

হাসান রাজু বলেছেন: রাজীব নুর ভাই, আপনি কি ঢাকার বাসার বারান্দার কথা বলছেন ? আর বারান্দায় এসে কিচির মিচির করে থাকলে নিশ্চিত থাকুন সেটা দোয়েলের সাজে চড়ুই ছিল।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৫

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: হেহেহে... দোয়েলও হতে পারে।

৫| ২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:০৩

নীলপরি বলেছেন: পাখী আমার খুব ভালো লাগে । লেখা পড়ে খারাপ লাগলো । ঠিকই লিখেছেন ।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:১১

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: প্রকৃতির সৌন্দর্য এমন ভাবে হারিয়ে যেতে দেয়া উচিৎ নয়।

৬| ২৫ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার ছোট ছোট অনুভূতিগুলো পড়ে ভালো লাগলো। শুকনো লঙ্কা দিয়ে টিয়া পাখি ধরার ফাঁদ আমরা ছোটবেলায় প্রয়োগ করেছি। তবে ধানের শীষ ছড়িয়ে কবুতর ও ঘুঘু ধরতে পারলেও টিয়া পাখি কোনদিন ধরতে পারেনি।

ছবিগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে।

শুভকামনা জানবেন।

২৭ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তবের জন্য।

৭| ২৬ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:৪৮

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: পাখি ও পাখিদের কথা,ভালো লেগেছে।

২৭ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৬

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৮| ২৬ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: শহুরে ছেলেমেয়েরা আর কিছুদিন পর মোটেই পাখি দেখবে না। আপনি ঠিকই বলেছেন, পাখিদের জন্য গ্রামীন জনপদও এখন অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে।
পাখিদের কথা পড়ে ভাল লাগলো। আমি যেখানে থাকি, সেখানে এখনো কিছু গাছপালা থাকায় পাখি দেখতে পাই। বসন্ত চলে গেছে অনেকদিন আগে। এখনো এই রোযার মাসেও সেদিন ফযরের সময় কোকিলের ডাক শুনতে পেলাম। আমার বারান্দায় সকালে উঠে পাখিদের জন্য কিছু খাবার ও জল দিয়ে রাখি। একটু পরেই শুনতে পাই ওদের কিচির মিচির। চড়ুই, বুলবুলি আর শালিক পাখি আসে আমার বারান্দায়। সামনের বড় বড় গাছগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া পাখি বসা দেখি। দোয়েলও দেখি। তবে ওরা আমার বারান্দায় আসেনা।

২৭ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অনেক ভাল লাগল যে আপনিও একজন পাখি প্রেমিক, এরকম সবাই হলে আমাদের পৃথিবীটা আজ কতই না সুন্দর হত। পাখিদের রক্ষায় সবার এগিয়ে আসা উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.