নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনজনদের উচিৎ কথা শোনার অভ্যাস কম, কিন্তু বেয়াদব বলার অভ্যাস বেশি। ফলাফল- আমি বেয়াদব।

আমি আলী বলছি

একজন সন্তান। একজন ভাই। একজন বন্ধু। একজন স্বামী। একজন বাবা। একজন মানুষ।

আমি আলী বলছি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তন্নি

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫১

-আপু প্রতি রাতেই ঘুমে কথা বলে।ওর পটপটানির জ্বালায় আমার ঘুমা আসেনা।

বিরক্ত ভঙ্গিতে আবিদ তার বাবা অমিত সাহেব কে কথাটা বলে টিভি দেখতে বসে গেলো।আবিদের ১০ম শ্রেনী পড়ুয়া বড় বোন তন্নির সমস্যা হলো সে ঘুমের ঘোরে কথা বলে।

বেশ কয়েকবার ডাক্তার দেখিয়েও লাভ হয়নি।বরং সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।প্রথম দিকে সাময়িক কথা বললেও এখন প্রায় সাড়া রাতই বলে।

তন্নির এই সমস্যা নিয়ে সবার মাথা ব্যাথা থাকলেও তন্নির নেই।

আবিদের মুখে এমন বাক্য প্রায় প্রতিদিন অমিত সাহেবকে শুনতে হচ্ছে গত ৫-৬ মাস।

অমিত সাহেব ছেলের মাথায় হাত দিয়ে চুল এলোমেলো করে নিজের কক্ষে গিয়ে চিন্তিত মুখে খাটের উপর বসলেন।

অমিত সাহেবের স্ত্রী নাজমা বেগম প্রশ্ন করলেন-

-কি হয়েছে?

-তন্নির রাতের সমস্যাটা বেড়েই চলেছে।

-কি করবে আর,ডাক্তার দেখালে,তাবিজ কবজ লাগালে,আর কি করবে তুমি....।



অমিত সাহেব কিছু না বলে চুপ করে রইলেন।



পরদিন সকালে তন্নি স্কুল থেকে ফিরে ব্যাগ টেবিলে রেখে ওয়াস রুমে গেলো ফ্রেস হতে।আবিদের একটা অভ্যাস হলো চুপিচুপি তার বোনের ব্যাগ চেক করা।যতবার ই সে চেক করেছে আবিদ দামি চকলেট পেয়েছে।চকলেট আবিদ খেয়ে ফেল্লেও তন্নি কাওকে কিছু বলেনা।খোজ নেয়ারও চেষ্টা করেনা চকলেট গেলো কই।

প্রতিদিনের ন্যায় আজও আবিদ বোনের ব্যাগ চেক করলো।তবে আজ সে কোন চকলেট পায়নি।কিন্তু যে বস্তু সে পেয়েছে,ঐ বস্তু হাতে নিয়ে তার গা থরথর করে কাপতে লাগলো।

আবিদ এদিক ওদিক না তাকিয়ে সোজা চলে গেলো মায়ের ঘরে।আবিদ কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না,বস্তুটা মায়ের হাতে তুলে দিলো।

-এটা কোথায় পেলি?

-আপুর ব্যাগে।

-তোর আপু কই?

-ওয়াস রুমে।



নাজমা বেগমের গা আবিদের চেয়ে বেশি কাপছে।

কিছুই ভাবতে পারছেন না তিনি।

ফোন দিলেন অমিত সাহেব কে।

-হ্যালো

-হ্যা,বলো।

-এক্ষনি একবার বাসায় এসো।



তন্নি এর মধ্যে ফ্রেস হয়ে ড্রেস পাল্টে রেস্ট নিচ্ছে।তার ব্যাগে প্রাপ্ত বস্তু নিয়ে যে বাসায় কি হচ্ছে সে ব্যাপারে কিছুই জানেনা সে।কারন সে প্রতিদিন ঐ বস্তুটা বিশেষ স্থানে রাখে,যে স্থান থেকে ঐ বস্তু কারো হাতে যাবার সুযোগ নেই।আজ সেই বস্তু যে ভুলে ব্যাগে রেখেছে সেটাই ভুলে গেছে তন্নি।

৩০ মিনিটের মধ্যে অমিত সাহেব বাসায় চলে এলেন।

এসেই স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন-কি হয়েছে? নাজমা বেগম একটা দামি মোবাইল ফোন অমিত সাহেবের দিকে বারিয়ে দিয়ে বললেন-তন্নির ব্যাগে পাওয়া গেছে।

অমিত সাহেব মোবাইলটা হাতে নিয়ে ডাকলেন তন্নিকে।

তন্নি আসা মাত্রই অমিত সাহেব প্রশ্ন করলেন-এটা কি?

বাবার হাতে মোবাইল ফোনটা দেখে তন্নি একপ্রকার বরফে জমা আইসের মত শক্ত হয়ে গেছে

-কি এটা?কোত্থেকে এসেছে?

-আব্বু

-এটা কোথায় পেয়েছিস?

-আমাকে একজন দিয়েছে,আমি নিতে চাইনি।

-কখন নিয়েছিস এটা,কে দিয়েছে,কেন দিয়েছে সব সত্য সত্য বল।

-রাসেদ নামের একটা ছেলে দিয়েছে ৬ মাস হবে।

-কেন দিয়েছে?

-রাতে ওর সাথে কথা বলার জন্য।

-মানে তুই রাতে ঘুমের ঘোরে কথা বলতি না?

-না।

-ফোনে কথা বলতি?

-হ্যা.....



আর কিছু বলতে পারছেননা অমিত সাহেব।চুপ হয়ে বসে পরলেন চেয়ারে।ওনার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।

তন্নির মা তন্নিকে জিজ্ঞাসা করলো-তোকে যে ঔষধ দেয়া হতো সেগুলো কি করতি?

উত্তরে তন্নি বললো ফেলে দিতাম।

বরফ জমা আইসের মত এবার শক্ত হয়েগেছেন নাজমা বেগম।

কি শুনছেন এসব.....................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.