![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সন্তান। একজন ভাই। একজন বন্ধু। একজন স্বামী। একজন বাবা। একজন মানুষ।
অমিত সাহেবের স্ত্রী কোন দিন স্বামির অফিস ফেরার অপেক্ষায় থাকেন না।তিনি থাকেন টিভি সিরিয়াল আর আবিদকে নিয়ে।
কিন্তু আজ তিনি টিভি সিরিয়াল বা আবিদকে নিয়ে নেই।আজ তিনি অধিক আগ্রহ নিয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছেন।ঘড়ির দিকে খানিক বাদে তাকাচ্ছেন আর বলছেন-"এখনো আসছেনা কেন?"
আবিদকে প্রতি সন্ধ্যায় বই ধরিয়ে টেবিলে বসালেও আজ তাকে তার সব খেলনা দিয়ে খলতে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
অমিত সাহেব প্রতিদিনের ন্যায় আজো ঠিক সন্ধ্যা ৭ টায় ফিরেছেন।কোন দিন তার স্ত্রীর মুখে যে প্রশ্ন শোনে নি সেই প্রশ্নই প্রথমে শোনলেন-"এত দেড়ি করলে কেন?"
প্রশ্ন শোনে অবাক হয়ে উত্তর দিলেন-
-প্রতিদিনতো এ সময়ই ফিরি।কেন,কি হয়েছে?
-হয়েছে অনেক কিছু, আসো,বসো,বলছি।
-সব ঠিক আছেতো? তোমাকে এত অস্থির লাগছে কেনো।
-আমাদের পাশের বাসার রিয়া আছেনা,রিয়া।
-হ্যা,কি হয়েছে রিয়ার?
-কি হয়নি বলো।
-ধুর,যা বলার ডাইরেক্ট বলো।
-এইডস হয়েছেগো,এইডস।
-কি বলছো এসব?
-সত্যি বলছি,পুরো মহল্লা হয়েছে।
খানিক চুপ থেকে "আসছি " বলে উঠে দাঁড়ালেন অমিত সাহেব।সাথে সাথে স্ত্রী প্রশ্ন করলেন-
-যাচ্ছো কোথায়?
-রিয়ার বাবার সাথে কথা বলবো।
-নেই,কেউ নেই।
-কেনো....! কোথায় ওরা?
-দুপুরে জানা-জানি হয়েছে,বিকেলেই দরজায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে।
-বাজে বকবেনা,পালিয়েছে কি?
-বাজে বকছি?আমার কথা তোমার বাজে লাগছে? যাও,মহল্লার কাকে জিজ্ঞাসা করবে জিজ্ঞাসা করো,সবাই এক কথাই বলবে।
স্ত্রীর কথা বলার নষ্ট যন্ত্র থামানো কঠিন অমিত সাহেব ভালো করেই জানেন।
ফ্রেস না হয়েই "আসছি" বলে দরজার দিকে আগালেন।
আবারো স্ত্রীর সেই একই প্রশ্ন-যাচ্ছো কোথায়?
এবার উত্তর না দিয়েই বের হয়ে গেলেন।
রিয়া ভালো মেয়ে।মহল্লার সবচেয়ে ভদ্র মেয়ে।পর্দাশীল মেয়ে।মেধাবি মেয়ে।বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে। স্কুল,কলেজ বা ভার্সিটি ভর্তি পর্যন্ত তার নামে কেউ দু কথা বলতে পারেনি।রিয়ার কি করে এইডস হতে পারে।অমিত সাহেব তার স্ত্রীর কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। আবার অবিশ্বাস করবেন সে সুযোগও নেই।রিয়ারা পালিয়েছে।
অমিত সাহেব রিয়াকে খুব পছন্দ করেন, পছন্দ করেন রিয়ার বাবাকেও।এমন ভদ্র ফ্যামিলি তিনি দ্বিতীয়টি দেখেন নি।
মুঠো ফোন বের করেই রিয়ার বাবাকে কল দিলেন অমিত সাহেব।
মোবাইল বন্ধ।অমিত সাহেবের সন্দেহ,দুশ্চিন্তা দুটোই বাড়ছে।
রিয়ার মায়ের নাম্বারে কল দিতেই কল ঢুকলো।ওপাশ থেকে কান্না জড়িত কন্ঠে প্রশ্ন শোনা গেলো-
-হ্যালো,কে?
-ভাবি,আমি আবিদের আব্বু,অমিত।
-ভাই সাহেব,কেমন আছেন?
-আমি ভালো,রিয়ার বাবাকে দেয়া যাবে?
-ধরুন,দিচ্ছি।
কয়েক সেকেন্ড পর ওপাশ থেকে।
-হ্যালো।
-রফিক সাহেব,আমি........
-অমিত ভাই,আপনার কন্ঠ চিনেছি,বলুন।
-আমি আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাই।আছেন কোথায় আপনি?
-নিউ মার্কেটের পাশে বোনের বাসায়।
-কোন অসুবিধা না হলে আমি এখনি আসতে চাচ্ছি।
-আসুন,আমি লোকেশন বলছি।
৩০ মিনিটের মধ্যে অমিত সাহেব রফিক সাহেবের বোনের বাসায় উপস্থিত হলেন।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সাত পাঁচ না ভেবে রফিক সাহেবকে প্রশ্ন করলেন-"রিয়ার কি হয়েছে?"
প্রশ্ন শোনে খুব স্বাভাবিক ভাবেই রফিক সাহেব উত্তর দিলেন-"এইডস"
রফিক সাহেবের স্বাভাবিক অবস্থা দেখে অমিত সাহেব সামান্য ধাক্কা খেলেন।
সংকোচ করতে করতে বললে-"একটু বিস্তারিত বলা যায় কি?"
রফিক সাহেবের মুখে মেয়ের এইডস হবার কারনের ব্যাখ্যা শোনে অমিত সাহেব আকাশ থেকে পরলেন।
"রিয়া ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছিলো।বাসে উঠতে গিয়ে পরে গিয়েছিলো,গুরুতর আহত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি করানো হলো। ইমার্জেন্সি রক্তের দরকার।মেডিকেল থেকেই রক্তের ব্যবস্থা করা হলো।কোন রূপ পরীক্ষা ছাড়াই সেই রক্ত রিয়ার শরীরে প্রবেশ করানো হলো।তখন রক্ত পরীক্ষার কথা মাথায় ই আসেনি।সেই রক্তে HIV ভাইরাস ছিলো"
অমিত সাহেব কিছু না বলেই উঠে দাঁড়ালেন।বেড় হতে গিয়ে দরজার সামনে গিয়ে থামলেন।
রফিক সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললেন-আমি গাড়ি ডাকছি,ভাবি আর রিয়াকে নিয়ে রেডি হন,আপনারা আমার সাথে এখন মহল্লায় ফিরে যাবেন"।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: এমনটাই কাম্য +
ভালো থাকবেন
৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪২
আমি আলী বলছি বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
আমি আলী বলছি বলেছেন: ধন্যবাদ