![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসাদুজ্জামান লিটন, সাংবাদিকতা ভালোবাসি আর ভালোবাসা থেকে একটু শিখছি ও করার জন্য চেষ্টা করছি।
ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন মদের বারের আড়ালে নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে খোদ বার কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন উপেক্ষা করে লাইসেন্সবিহীন মদ বিক্রি করছেন সমাজের অপ্রাপ্তবয়স্ক যুবক-যুবতীদের কাছে। মদের বারে পতিতাবৃত্তি ও অবৈধ ভাবে মদ বিক্রি রোধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ।
ঢাকার বিভিন্ন মদের বারের আড়ালে, কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ইশারায় অবৈধ মাদক ও দেহ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে— এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শহরের বেশ কিছু মদের বারে অভিযান পরিচালনা করেন এবং অভিযোগের সত্যতা পান। পরবর্তীতে, এসব অবৈধ মাদক কেনাবেচা ও পতিতাবৃত্তিতে সহায়তা করার অপরাধে বেশ কয়েকজন বার কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরার বিভিন্ন সেক্টরে গড়ে ওঠা অধিকাংশ বারে দেশি মদ কেরু বিক্রির অনুমতি নিয়ে বিক্রি করছে বিদেশি বিভিন্ন ধরনের মদ। যদিও আইন অনুযায়ী মদের বার গুলোতে লাইসেন্সে উল্লেখিত দেশি মদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষ কিছু মদ বিক্রি করার নিয়ম। এখানেই শেষ নয় মদ ব্যাবসায় জড়িত বার মালিক কতৃপক্ষের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বারে আগত যৌন কর্মীদের দিয়ে দেহব্যবসার মতো অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তরার কিংফিশার ও কোরিয়ান ক্লাবে অভিজাত শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ‘ভিআইপি রুম’ রাখা হয়েছে, এই সব রুমে বসে মদ্যপান ও অবৈধ যৌনাচার করতে রুমের ভাড়া গুনতে হচ্ছে ২-৪ হাজার টাকা। যেখানে গোপনে পতিতাবৃত্তি সহ অবৈধ লেনদেন চলে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোরের সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত। এসব কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত থাকেন বারের কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, “আমি কয়েকবার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ১০ নম্বর সেক্টরের কোরিয়ান ক্লাবে গিয়েছিলাম। পরে ঐ ক্লাবের কর্মচারী রাকিব আমাদের সার্ভিস দেওয়ার সময় বিনোদন এর জন্য কোন মেয়ে লাগলে তাঁকে জানাতে বলেন। তাঁর কথায় বুঝতে পারি, এখানে শুধু মদ পরিবেশনই নয়, গোপনে দেহ ব্যবসাও চলে।”
সম্প্রতি র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকার বনানী, গুলশান, উত্তরা ও মোহাম্মদপুর এলাকার কয়েকটি অভিজাত বারে দেহ ব্যবসার প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযানে বারের ম্যানেজার, ওয়েটারসহ বেশ কয়েকজন দালাল ও যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা বেশ কিছুদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখি। নিশ্চিত হওয়ার পরই অভিযান পরিচালনা করি।”
তবে, বার মালিকদের অনেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, স্থানীয়দের অভিযোগ— প্রশাসনের কিছু অসাধু সদস্যদের ম্যানেজ করেই মদ বারের আড়ালে এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত বারগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং অবৈধ কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিয়মিত পরিদর্শন করা জরুরি।
রাজধানীর বারগুলোতে দেহ ব্যবসার মতো অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করতে সাধারণ জনগণেরও সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। যুবসমাজ ও সমাজের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মদের বারে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত নারীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং লাইসেন্সবিহীন মদ বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। চলমান…
©somewhere in net ltd.