নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল ছেলে আমি,আমাই ভাল থাকতে দাও।

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান

একটা নির্দিষ্ট ভালবাসা ছিল,তা হারিয়ে ফেলেছি।এখন আর কোন কিছুর প্রতি ভালবাসা মনে জাগে না।

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃখের কথা

২২ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৭

বাসার পাশের ছোট্ট মাঠটাতে একটা জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছিল।

জায়ান্ট স্ক্রিনটা এখনও আছে। কিন্তু খেলা নেই।

গাপটিল ডাবল সেঞ্চুরি করছেন, গেইল ঝড় তুলছেন, ম্যাক্সওয়েল হতভম্ব করছেন; অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডে খেলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জায়ান্ট স্ক্রিনটাতে আর কোনো খেলা নেই।

স্ক্রিনের সামনে বিরান ভূমিতে রোদের মধ্যে ব্যাট সামনে নিয়ে ছোট্ট একটা ছেলে বসেছিল। আমি জানতাম উত্তরটা, তারপরও আস্তে আস্তে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, `খেলা চলছে না কেন? খেলা দেখো না!‘

ছেলেটা একটু রাগ হয়েই যেন আমার দিকে তাকালো, `খেলা! আর কীসের খেলা? যেভাবে আমাদের হারায়ে দিলো!‘

হ্যা, দুই দিন পার হয়ে আসার পরও এই `হারায়ে দেওয়া‘র শোক-ক্ষোভ দূর হয়নি আমাদের। শুধু জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে বসে থাকা ছেলেটি নয়, বাংলাদেশের কোটি মানুষ এখনও এই রাগ-ক্ষোভ বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উত্তর খুজে না পেয়ে পরষ্পরকেই এখনও প্রশ্ন করে চলেছেন, `এভাবে কেন হারিয়ে দিলো আমাদের!‘

আমার অনেক বন্ধু অবশ্য অবাক হচ্ছেন।

এইসব বন্ধুর মধ্যে কিছু পন্ডিত আছেন, কিছু দেউলিয়া আছেন, কিছু নির্বোধ আছেন। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, দুটো `ভুল সিদ্ধান্ত‘ কি করে বাংলাদেশকে শতাধিক রানে ম্যাচ হারালো? দশ-পনেরো রানে হারলে তারা না হয় বুঝতে পারতেন; কিন্তু এতো বড় ব্যবধানে হারের পর তাদের মাথায় ঢুকছে না যে, বাংলাদেশকে `হারিয়ে দেওয়া‘ হলো কিভাবে।

আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এক রানে হারলেও এরা অনেক কিছু বুঝতে পারবেন না কখনো। এরা কখনোই বুঝতে পারবেন না যে, ভারত জিততে দেয় না, জিততে দেয়নি।

তারপরও এদের জন্য দুটো কথা একটু বলা দরকার মনে হয়।

বাংলাদেশের বিপক্ষে যে দুটো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে; হ্যা, আমি ইচ্ছা করেই দেওয়া হয়েছে বলে মনে করি; সে দুটো সিদ্ধান্তই খুব পরিকল্পিতভাবে একটা দলের মনোবল শেষ করে দেওয়ার মতো করে টাইমিং করে দেওয়া হয়েছে।

রুবেলের বলে রোহিত শর্মার আউটা মনে করে দেখেন।

বলটাকে `নো-বল‘ বলে ঘোষনা করার পরের বলগুলো দেখেছিলেন? ছেলেগুলো খেলাতেই ছিল না খানিকটা সময়। পরের বলেই রোহিত শর্মা ক্যাচ দিলো। সাকিব ধরলেন না। এরপর অন্তত পাচ-ছয়টা চার ফিল্ডারদের আশপাশ থেকে বের হয়ে গেল। মাশরাফি প্রাণান্ত চেষ্টা করেও কয়েকটা ওভার সময় লেগেছে ফিল্ডারদের খেলায় ফেরাতে।

আমাদের ক্রিকেটারগুলো স্রেফ মহামানব বলে এরপরও খেলায় ফিরে এসেছি।

আবার যখন আমরা ব্যাট হাতে ঘুরতে শুরু করেছি। টূর্নামেন্ট জুড়ে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানটি যখন খেলা ঘোরাচ্ছেন, তখনই আবার আম্পায়ার খেল দেখালেন। আর কীভাবে লড়াই করা চলে?

আপনি যদি কোথাও যুদ্ধ করতে গিয়ে টের পান, সেই যুদ্ধের কলকাঠি অন্য কোথাও থেকে নাড়া হচ্ছে, ফলাফল ঠিক হয়ে আছে; আপনার শরীর-মন যুদ্ধে থাকবে না। যুদ্ধের কথা বাদ দিন। সামান্য পরীক্ষার হলে গিয়ে যদি জানতে পারেন, সতীর্থরা ফাস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিচ্ছে; আপনি যা পারেন, তাও লিখতে পারবেন না।

এটাই হলো সমস্যা।

ভারত ৩০২ রান করেছিল, সেটা ব্যাপার না। ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ এর চেয়ে বেশী রানও করতে পারতো। আবার আমি এটাও বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেমন ছন্দে ছিলেন, ভারতীয় বোলিংয়ের বিপক্ষে অন্তত ৩১০ রান পর্যন্ত তারা তাড়া করে জেতার শক্তি রাখেন।

কিন্তু তাড়াটা করবে কে? তাড়া করতে তো খেলা হতে হয়।

সে খেলা তো আমাদের জায়ান্ট স্ক্রিনের মতো বন্ধ হয়ে ছিলো। খেলা চলছিলো আইসিসির টেবিলে।

কতোটা নগ্ন খেলা হলে আইসিসির সভাপতি হয়েও আমাদের মোস্তফা কামাল সাহেব রাগে ক্ষোভে এটাকে `ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল‘ বলে চিৎকার করে ওঠেন!

কামাল ভাই ইচ্ছে করে হোক, অনিচ্ছেতে হোক; একটা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন।

এতো সম্মানীয় একটা মানুষ যৌক্তিক কথা বলে নিজেরই সংগঠনের কেরানীর দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

কোথাকার কোন ডেভ রিচার্ডসন, পদে যে কেরানী ছাড়া কিছু নয়, সে সভাপতিকে আইন দেখালো। আমরাও আইন জানি। আমরাও জানি, সভাপতি নিজের সংগঠনের বিপক্ষে কথা বলতে পারেন না। কিন্তু এটা কোন আইন যে, আম্পায়াররা যাই করুন কথা বলা যাবে না!

আইন দেখাবেন না রিচার্ডসন সাহেব।

বিশ্বের সেরা পাচ আম্পায়ার-রেফারি ২০০৭ ফাইনালে সামান্য ভুল করেছিলেন বলে আপনারা এক বছর ধরে তাদের শাস্তি দিয়েছেন। অকথ্য কথা বলেছেন। কিছুই ভুলিনি আমরা। আইন সে সময় ছিলো না?

আজ কামাল ভাই একটা লড়াই শুরু করেছেন।

প্রিয় কামাল ভাই, এই লড়াই বন্ধ করা চলবে না। এটা আপনার অস্তিত্বের লড়াই, বাংলাদেশের ক্রিকেটের অস্তিত্বের লড়াই, দুনিয়া জুড়ে ক্রিকেট খেলার অস্তিত্বের লড়াই। হয়তো এই লড়াইয়ে আপনি কাউকে পাশে পাবেন না। হয়তো হারুন লরগাত বা রানাতুঙ্গার দূরবর্তী সমর্থন পেতেও পারেন।

সে সমর্থন পান আর নাই পান, লড়াই চালিয়ে যাবেন প্লিজ।

আপনি হেরে গেলেও ক্ষতি নেই। আমরা জানি, ওরা জিততে দেবে না। আপনাকেও আমরা ক্রিকেটারদের মতোই সম্বর্ধনা দেবো। আপনি লড়াই চালিয়ে যান।

কিছুতেই নিয়তির হাতে লড়াই ছেড়ে দিয়ে আসবেন না।

এক বন্ধু অসহায় হয়ে লিখেছেন, ‘আর কিছু না হোক ইতিহাস মনে রাখবে, আমরা জিতেছিলাম।’

আমি বলেছিলাম-স্যরি। স্যরি। ইতিহাস লেখে আইসিসি, ভারত, ইংল্যান্ড। ইতিহাসে লেখে রামপক্ষ; তাই রামায়ন হয়। ইতিহাসে এই জুলুমের কথা কখনোই লেখা থাকবে না। তা হলে ভারত গতবার কী নেক্কারজনকভাবে বিশ্বকাপ জিতেছে, তা লেখা থাকতো। ভারতকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলতে কারোরই তো লজ্জা লাগে না। তাহলে কিসের ইতিহাস! এই ধরণের কান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে বহু বহু হয়েছে। কোনোটাই ইতিহাসে নাই। আছে শুধু জয়ীদের গপ্প।

হ্যা, আরেকটা গল্প লেখা থাকে-লড়াইয়ের গল্প। সে গল্পটা নিজেদেরই লিখতে হয়।

আসেন, সেই গল্পটা লিখে রাখি, কামাল ভাই।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭

মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: খুব অসাধারণ লিখেছেন ভ্রাতা।

২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫১

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্‌ খুশি হলাম।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৪

দুরন্ত শাহিন বলেছেন: মন্তব্য লেখার ধন্যবাদ!

২৯ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান বলেছেন: সেম ইউ

২৯ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

মুহাম্মদ রেজাউল হাসান বলেছেন: সেম ইউ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.