নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমা পাগল। সিনেমায় খাই, সিনেমায় ঘুমাই, সিনেমায় পড়ি, সিনেমায় স্বপ্ন দেখি। জীবন সিনেমাময়।

লেখাজোকা শামীম

গল্প লেখার নেশা আমার আশৈশব। মাধ্যমগুলো বদলে গেছে সময়ে সময়ে - কখনও গল্প, কখনও উপন্যাস, কখনও নাটক, কখনও চলচ্চিত্র কিংবা কখনও টিভি নাটক। যে মাধ্যমেই কাজ করি না কেন, একই কাজ করেছি - গল্প বলেছি। আমি আজন্ম গল্পকার - এক সাদামাটা গল্পকার। মুঠোফোন : ০১৯১২৫৭৭১৮৭. বৈদ্যুতিক চিঠি : [email protected]ফেসবুক : http://www.facebook.com/shajahanshamim.scriptwriterদৃষ্টি আকর্ষণ : আমার নিজের লেখা সাহিত্যকর্ম যেমন উপন্যাস ও নাটক - যা এই ব্লগে পোস্ট করেছি, তার সর্ব স্বত্ব সংরক্ষিত। আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া এসবের কিছুই কোনো মাধ্যমে পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না।

লেখাজোকা শামীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সততা থাকে চর্চায়, সদুপদেশে নয়

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০১

প্রজেক্ট ওয়ালেট ড্রপ কাহিনী পড়ে বহু আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। এই ঘটনাটি আমি কেবল একটি মানুষের ঘটনা বলে মনে করি, এর মাধ্যমে পুরো মানব জাতি বা বিশেষ কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে বিবেচনা না করার অনুরোধ জানাই। একটা মানুষ অসৎ হওয়ার জন্য তার পরিবার, সমাজ ও পরিবেশ হয়তো দায়ী, কিন্তু সবচেয়ে বড় দায়ী সে নিজে। কেউ অসৎ না হতে চাইলে কেউ তাকে অসৎ বানাতে পারে না।



গল্পটা যেহেতু অসৎ মানুষের, সঙ্গত কারণেই আমি তার পরিচয় লুকাচ্ছি। কেবল ঘটনাটা বলে যাচ্ছি। কারো চরিত্র হনন আমার উদ্দেশ্য না।



ভূমিকা শেষ করে মূল ঘটনায় আসা যাক।



অনেক আগে আমি একটা অফিসে চাকুরি করতাম। বড় অফিস । অনেক লোকজন চাকুরি করে। অফিসটার বড় বৈশিষ্ট্য হল, ওখানে নামাজের সময় বড় জামাত হয়। সহকর্মীরা সবাই এক সাথে নামাজ পড়ি। আমার ইমিডিয়েট বস নামাজের ইমামতি করেন।



নামাজের পরে তিনি কিছু বিষয় নিয়ে ওয়াজ করতেন। বিশেষত আসরের পরে বেশ খানিকটা সময় ধরে তার বয়ান শুনতাম আমরা। ভালোই লাগত। লোকটা অনেক কিছুই জানত।



বিশেষত মালিক উপস্থিত থাকলে উনি মালিককে খুশি করার জন্য বয়ানে কর্মচারীদের দায়িত্ব ও সততা সম্পর্কে বলতেন। এ বিষয়টা আমার বিরক্ত লাগত।



কারণ অফিসটায় কোন নিয়ম কানুনের বালাই ছিল না। বেতন সময় মতো হতো না। বছরের পর বছর কাজ করার পরও সামান্য বেতন বাড়ত না। ঈদে কোন বোনাস দেয়া হত না। সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা ছিল কাজের সময় নিয়ে । সকাল ৯টায় ঢুকতে হত। কখন ছাড়া পাওয়া যাবে, তার কোন ঠিক ঠিকানা ছিল না। আমার মনে আছে কখনও এশার নামাজ না পড়ে ছাড়া পাইনি। প্রায় সময়ই রাত ১১ টা পর্যন্ত কাজ করতাম। ৪ ওয়াক্ত নামাজই ওখানে পড়তে হত।



যাগগে, এ সব কারণে আমি ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিরক্ত ছিলাম। আমার ইমিডিয়েট বস চামচামি করতেন। তিনি মালিকের সামনে হাত কচলাতেন। তার এই চামচামির কারণে তাকে আমি পছন্দ করতাম না।



এক দিন একাউন্টস ডিপার্টমেন্ট থেকে বেতন নেয়ার সময় আমাকে ১০০ টাকা বেশি দিয়ে ফেলল ওরা। আমি টাকাটা ফেরত দিলাম। একাউন্টসের ছেলেটি বলল, ভাই, আপনি ভালো লোক। অন্য কেউ হলে টাকাটা ফেরত দিত না।



আমার তখনই মাথায় কুবুদ্ধিটা এল। আচ্ছা, আমার ইমিডিয়েট বস তো নামাজের পর সততা নিয়ে অনেক ওয়াজ করে। উনারে ১০০ টাকা বেশি দিলে কি উনি ফেরত দিবেন ?



একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের ছেলেটার সাথে বুদ্ধি করলাম। তাকে জানালাম, এই ১০০ টাকা আমি দেব। বাড়তি ১০০ টাকাটা আমার ইমিডিয়েট বস ফেরত দেয় কিনা সেটা দেখার জন্য ওই ছেলেটিও উৎসাহী হয়ে উঠল।



সে দিন বিকেলে আমার ইমিডিয়েট বসের ডাক পড়ল একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে। তিনি একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে গেলেন। আমি একটা অফিসিয়াল ফাইল নিয়ে অনর্থক ওখানে গেলাম। তিনি টাকা নিলেন। গুনলেন। বেতন রেজিস্ট্রারে সই করলেন এবং বেরিয়ে চলে গেলেন।



আমি ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'টাকাটা দিয়েছেন ?'

'দিলাম তো ভাই। উনি তো টাকা গুনলেন। আমি নিজে উনার সঙ্গে গুনলাম। ১০০ টাকা বেশি হল। কিন্তু উনি ফেরত না দিয়ে চলে গেলেন।



আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। ভাবলাম, হয়তো উনি খেয়াল করেন নি। আগামীকাল নিশ্চয়ই ফেরত দেবেন। কিন্তু না, উনি আর টাকাটা ফেরত দেন নি।



এই ঘটনা থেকে একটা বড় শিক্ষা হল আমার - কে সৎ সেটা তার কথাবার্তায় বোঝা সম্ভব না, বোঝা সম্ভব তার কাজে বা চর্চায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: এরকম মানুষ অনেক আছে, মুখে বলে ভালো ভালো কথা , কাজের বেলায় নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছু থাকে না, বিবেক , ধর্ম, নীতি তখন কাজ করে না।ভালো থাকবেন।

২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

খাটাস বলেছেন: মুখে এক আর অন্তরে আরেক- আমাদের মাঝে এমন মানুষ ই বেশি। নিজেকেই ঠিক করতে পারছি কিনা তাঁর ই ঠিক নাই।
শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.