নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমা পাগল। সিনেমায় খাই, সিনেমায় ঘুমাই, সিনেমায় পড়ি, সিনেমায় স্বপ্ন দেখি। জীবন সিনেমাময়।

লেখাজোকা শামীম

গল্প লেখার নেশা আমার আশৈশব। মাধ্যমগুলো বদলে গেছে সময়ে সময়ে - কখনও গল্প, কখনও উপন্যাস, কখনও নাটক, কখনও চলচ্চিত্র কিংবা কখনও টিভি নাটক। যে মাধ্যমেই কাজ করি না কেন, একই কাজ করেছি - গল্প বলেছি। আমি আজন্ম গল্পকার - এক সাদামাটা গল্পকার। মুঠোফোন : ০১৯১২৫৭৭১৮৭. বৈদ্যুতিক চিঠি : [email protected]ফেসবুক : http://www.facebook.com/shajahanshamim.scriptwriterদৃষ্টি আকর্ষণ : আমার নিজের লেখা সাহিত্যকর্ম যেমন উপন্যাস ও নাটক - যা এই ব্লগে পোস্ট করেছি, তার সর্ব স্বত্ব সংরক্ষিত। আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া এসবের কিছুই কোনো মাধ্যমে পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না।

লেখাজোকা শামীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্কুল শিক্ষকদের প্রতি আমাদের কোন সামাজিক দায়িত্ব আছে কি ?

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:০১





আমাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করার অভ্যাস নাই। আমরা মনে করি, সামাজিক দায়িত্ব মানে হল দান করা বা ভিক্ষা দেয়া। দান বা ভিক্ষার বাইরেও সামাজিক দায়িত্ব আছে।
করোনা হওয়ার পর আমরা বুঝতে পারলাম, আমরা আসলে কোন হাসপাতাল গড়িনি। ঢাকার বাইরে কোন হাসপাতালই করোনা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না। আমরা আরও দেখলাম, বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালগুলো মূলত হাসপাতাল নয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
করোনার মতো কোন জরুরী সমস্যা যদি শিক্ষাখাতে দেখা দেয়, আমরা দেখব, আমরা আসলে স্কুল কলেজও গড়িনি তেমন একটা। বেসরকারী খাতে যে স্কুল কলেজগুলো গড়া হয়েছ সেগুলোর বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়।
আগে মানুষ ধনী হলে এলাকার মানুষের জন্য স্কুল কলেজ বা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করত। সম্পূর্ণ সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে মানুষের উপকারের জন্য ধনকুবেররা এই সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতেন। এখন ধনকুবেররা দেশের বাইরে টাকা পাচার করেন। স্ত্রী বা বাচ্চাদের কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা আমেরিকায় রাখেন। দেশ থেকে টাকা উপার্জন করেন এবং বিদেশে খরচ করেন।
এই রকম সামাজিক বাস্তবতায় আমাদের পর্যাপ্ত স্কুল কলেজ কখনও ছিল না, এখনও নেই। সরকারী স্কুল কলেজ আরও কম।
মূল প্রসঙ্গে আসি।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর স্কুল কলেজ বন্ধ। কবে খুলবে কেউ জানে না। স্কুল কলেজ বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই স্কুল কলেজে ছাত্র বেতন দেয়াও বন্ধ। এবং আরও বেশি স্বাভাবিকভাবে সরকারী স্কুল কলেজ ছাড়া অন্যান্য স্কুল কলেজের শিক্ষকদের বেতনও বন্ধ।
আমাদের সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত শ্রেণী হল স্কুল শিক্ষক। সামাজিকভাবে তাদের কোন সম্মান নাই। মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য আমরা বিসিএস অফিসার খুঁজি , স্কুল শিক্ষক খুঁজি না।
যাই হোক, একজন স্কুল শিক্ষকের আয় খুব সীমিত। এ কারণে স্কুলের বাইরেও তাকে টিউশনি করতে হয়। কেউ কেউ কোচিং সেন্টার চালান। কোচিং সেন্টার চালানোর মতো বিষয় সবাই পড়ান না। তাদের কোচিং থেকে আয় করার সুযোগ নাই।
করোনার কারণে স্কুল কলেজের পাশাপাশি টিউশনি বা কোচিংও বন্ধ। ফলে শিক্ষকদের আয় করার সব রাস্তা বন্ধ।
কোন কোন স্কুল কলেজ অনলাইনে ক্লাস চালু করেছে। কিন্তু আমি যতটুকু জানি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস নেয়াটাকে পছন্দ করেন না। অন্য দিকে, অনেক শিক্ষক অনলাইনে ক্লাস নিতে অভ্যস্ত নন। এমনকি অনেকে ভালোভাবে ফেসবুকও চালাতে পারেন না।
তবে বাঙালি সমাজের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য জানি। এরা অনলাইনে সানি লিওনের ভিডিও ঠিকই খুঁজে বের করতে পারে, কিন্তু প্রয়োজনীয় কোন তথ্য গুগল করে বের করতে পারে না। হাতে স্মার্ট ফোন থাকলেও তারা নিজেরা এই জায়গায় স্মার্ট না।
যাই হোক, ছাত্র বেতন বন্ধ। শিক্ষকদের বেতনও বন্ধ। অন্য কোনভাবে আয়ের ব্যবস্থাও নাই। এই লোকগুলো কিভাবে বাড়ি ভাড়া দিবে ? খাবে কী ?
এই অবস্থায় অনেক বেসরকারী স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষকের চাকুরি চলে গেছে। আমরা দেখেছি, উপায় না পেয়ে অনেক শিক্ষক হকারি করতে শুরু করেছেন। পেশা বদল করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন অনেকে।
অভিভাবকদের সামাজিক দায়িত্ব এখানে ছিল। কিন্তু তারা সেই সামাজিক দায়িত্ব পালন করবেন না। তারা স্কুলের বেতন দেবেন না। বরং আমি পরিষ্কার জানি, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল বহু অভিভাবক স্কুল খোলার পর ছাত্র বেতন মওকুফ বা কমানোর জন্য দরখাস্ত করবেন। ফলে স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা।
করোনা না হলে আমরা ঠিকই স্কুল কলেজের বেতন দিতাম। করোনার জন্য এখন বেশির ভাগ মানুষের আয় রোজগার বন্ধ নয়। কিন্তু কেউ স্কুলের বেতন দেবে না।
একটা স্কুল বা কলেজ গড়া সহজ নয়। আজ যদি আপনার সন্তানের স্কুলটা বন্ধ হয়ে যায়, কয় দিন পর আপনিই বিপদে পড়বেন। ছেলে মেয়েদের পড়ানোর জন্য স্কুল কলেজ খুঁজে পাবেন না। সুতরাং আমরা ভিক্ষা বা দান নয়, নিজের দায়িত্বটা পালন করি। স্কুল কলেজের জমে থাকা বেতনগুলো আমরা পরিশোধ করে দিই। স্কুল কলেজগুলো টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। আমরা কি স্কুল শিক্ষকদের প্রতি আরও বেশি মানবিক হতে পারি না ?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: একটা বাস্তবচিত্র তুলে ধরেছেন। এটা খুব দুঃখজনক এবং মর্মস্পর্শী যে, একজন শিক্ষককে অসহায় অবস্থায় হকারের কাজ করতে হচ্ছে। করোনায় স্কুল-কলেজ বন্ধ হলেও যারা অবস্থাপন্ন, তাদের উদ্যোগী হয়ে নিয়মিত বেতন পরিশোধ করা উচিত। এলাকার সচ্ছল, ধনিক শ্রেণির উচিত, পর্যাপ্ত অর্থ-সহায়ত দিয়ে স্কুল-কলেজের ফান্ড বৃদ্ধি করা। ম্যানেজিং কমিটিকেও এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। যে-কোনো উপায়েই হোক, শিক্ষকরা যেন মানবেতর জীবনযাপন না করেন, সেটা সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ, সবারই দেখা উচিত। নইলে, এদের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন ও প্রভাব ছাত্রদের উপর পড়বে।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমাদের দেশে রাষ্ট্র যারা চালায় তারা তেলো মাথায় তেল দেয়। যাদের মাথায় তেল একদমই নেই তাদের দেখার সময় নাই সরকারের। এটা অতি দুঃখজনক ব্যাপার। সরকারের শিক্ষকদের সমস্যায় এগিয়ে আসা উচিত। তবে এটাও সত্য কিছু শিক্ষক শিক্ষাকে পণ্য বানাচ্ছেন। তবে এরা সংখ্যায় অবশ্য বেশী না।

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:২৮

ফুয়াদের বাপ বলেছেন: খুবই যুঁতসই সমসাময়িক একটা বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছেন। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমে ব্যাবসায় পরিনত হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। করোনার কারনে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর করুন চিত্র পরিলক্ষিত। বিশষ করি স্কুল-কলেজ গুলো বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা সহযোগী-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্ডেনগুলোতো চাকুরীরত শিক্ষদের অবস্থা বেগতিক। স্কুল থেকে যে বেতন দেয় তা দিয়ে তার ঘরভাড়া দেওয়াই মুশকিল। টিউশন ছিল তাদের মূল উপার্জন স্থল। করোনার কারনে বাড়িতে গিয়ে কিংবা কোচিংয়ে এসে পড়াবে/পড়বে এই পরিবেশ এখন আর নাই। তাই, জমানো টাকা শেষ প্রায় ক্ষুধার চিৎকার দেবার অপেক্ষায় আছে এই লেভেলের শিক্ষকরা।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:২০

সাইন বোর্ড বলেছেন: বেসরকারী স্কুলের প্রায় সব শিক্ষকই খুব কষ্টে আছে । এই বিষয়টা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে্ আমিও একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম । নিচে লিংক দিলাম, পড়ে দেখতে পারেন ।

https://www.somewhereinblog.net/blog/SignBoard/30303040

৫| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: চমতকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। খুব সুন্দর সাজানো গুছানো লেখা। এরকম লেখা ব্লগে বেশি আসা দরকার।

৬| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমরা কেউ মাষ্টার মশাইয়ের কথা ভাবি না । পড়ালেখা শেষ করে সভ্য সমাজে বাস করি

৭| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি স্হানীয় সরকারের লোকজনের সাথে কথা বলে দেখেন কিছু একটা করা যায় কিনা।

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন:
এদেশে বেসরকারী শিক্ষকদের কথা কেউ ভাবে না ।শিক্ষকদের যে পরিবার আছে তাদের বউ বাচ্চা আছে একথা ভাবার সময় কারো নেই। ইতিমধ্যে অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষক পেশা বদল করেছে। কতদিকে অকারণ প্রনোদনা। এই নাকি শিক্ষাবান্ধব সরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.