নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর মৃত্যু ঘটুক শূধু তৃনলতাগুলো বেড়ে উঠুক , ছুয়ে দিক নীল আকাশের ভ্রান্ত সীমানা ।
পাশাপাশি তিনটি টীনের ঘর লাগালাগি ভাবে আছে । সামনে সংকীর্ণ উঠান । উঠানের একদিকে একটি
খড়ের ছাউনি দেওয়া কুড়েঘর । রান্নার কাজে ব্যাবহার করা হইলেও এ বাড়ীর সবচেয়ে বয়স্ক মহিলা
জমিলা বানু এই ঘরেই থাকেন । সেই ঘরের পিছনে বিশাল এক কদম গাছ । গাছভরতি কদম ফুল । সেই
গাছের নিচেই খেলা করতেছে দুইটি শিশু সবুর এবং তুলি । কত আর বয়স হবে ৫ কি ৬ । বাড়ির
চারপাশে কাদা ভরতি থাকলেও এই কদম গাছের তলায় কখনো কাদা হয় না । তাই এখানেই তাদের
প্রতিদিনের খেলার আসর বসে । তাদের এই খেলার সাথী এবং তাদের গুরু হচ্ছে একজন । পরী । একটি
চঞ্চল মেয়ে । সারাদিন কত কি না করে বেড়ায় । এইতো কিছুক্ষন আগেই পাশে বাশবাগান থেকে পাতা
কুড়িয়ে আনলো এসে গোসল করে মায়ের সাথে রান্নায় বসেছে । এরই মধ্যে সবুর আর তুলি তাকে
একবার ডেকে গেছে ।
রান্না বান্না শেষ করে সে তাদের সাথে মাটির খেলনা হাড়িপাতিল নিয়ে ঘরসংসার করা খেলছিলো । কে
জানে তাকে হয়তো আর খেলতে হবেনা এইম খেলা কারন তার সামনে সত্যিকারের ঘরসংসার অপেক্ষা
করছে । অথচ কতই আর বয়স হয়েছে ? এই ১১ ...।। ক্লাস ৫ পড়া একটা মেয়ের বয়স ১১ এর বেশি
হবার কথা নয় ।। পড়ীর বাবা কুদ্দুস মিয়া রিকশা চালায় । রিকশা চালিয়ে পরিবার ভালোই চলে । এর
মধ্যে ঘটক তার মেয়ের জন্য সমন্ধ এনেছেন ।ছেলের নাম রহিম । ছেলের বাপের ৫ বিঘা জমি আছে ।
ছেলে চাসবাস করে খায় । পরী অবশ্য কোন বাধা দেয় নাই বিয়েতে । যে মেয়ে খেলার ছলে হাড়িপাতিল
নিয়ে খেলে সে আবার বিয়ের কি বুঝবে ? কুদ্দুস মিয়াও এরকম ভালো পাত্রকে হাতছাড়া করতে চায় নাই
।
যদিও এলাকার অনেক লোক বাধা করেছিলো এই বিয়েটা না দিতে কিন্তু কুদ্দুস তা মানে নাই । এইতো
সেদিন পরীর হেডস্যার বলল
--- কুদ্দুস মিয়া তোমার মেয়ে পড়াশুনায় ভালও তাছাড়া তার বয়স অনেক কম , এই বয়সে কি বিয়ে না
দিলেই নয় ?
--স্যার আমরা গরিব মানুষ । মাইয়া ঘরে থাকা মানে বোঝা । এইডাপার করাইতে পাইরলেই বাচি ।
---- দেখ তোমার মেয়ের বিয়া টা দিও না । শেষে তোমার মেয়েরই সমস্যা হবে ।
এই কথা শোনার পর কুদ্দুস মিয়া হন হন করে সেখান থেকে বের হয়ে গেল । আস্তে করে হেডস্যার কে
গালিও দিলো সে । যদিও তা উনার কান পর্যন্ত যায় নাই ।
আসার পথে এলাকার স্বাস্থ কর্মী মাজেদা বেগম এর সাথে কুদ্দুস এর দেখা । মাজেদা বেগমকে কুদ্দুস
মিয়া খুব সম্মান করে । কিন্তু আজকে উনি যখন বলল পরীর বিয়া না দিতে তখন কুদ্দুস মিয়া উনার
উপরও করা মেজাজ দেখাইয়া যান । মনে মনে উনাকেও গালি দেয় ।
অনেকের নিষেধ করা সত্ত্বেও পরীর বিয়ে দিলেন ।
বিয়া পর্যন্ত পরী কিছুই বুঝে উঠে নাই । যখন সবাই তাকে এক এক করে বিদায় দিয়ে রিকশায় তুলে
দিলো তখন পরীর আবেগ আর আটকে থাকেনি । তার কাছে মনে হইছিলো তাকে যেন বেচে দেওয়া
হলো কোন এক অজানা লোকের কাছে অজানা কোন এক জায়গায় ।
সেদিন সারারাত কাঁদলো পরী । তার নব স্বামীর ভালোবাসা তার কাচা মনে নির্যাতন মনে হইছিলো । এবং
সেটাই স্বাভাবিক ।
যার ফলে পরের তিনদিন হাস্পাতালে থাকতে হলো তাকে । এরপর আর সে শ্বসুর বাড়িতে থাকে নাই ।
অনেক কান্নাকাটি করে বাপের বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু বিবাহিত মেয়ে ঘরে রাখা ঠিক মনে করে নাই
কুদ্দুস মিয়া । তাই অনেক বুঝিয়ে আবার পাঠিয়ে দেয় । এভাবে একটি বছর কেটে যায় পরীর আর
স্বামীর ভালোবাসাকে নির্যাতন মনে হয় না। কিন্তু ইদানিং তার তলপেটে একধরনের অসহ্য ব্যাথা
অনুভব করছে ।
এভাবে কিছুদিন যাবার পর হঠাত পরী অনুভব করলো তার পেয়াট আগের চেয়ে অনেক ভারী মনে হচ্ছে
, এবং তার আদর যত্নও অনেক বেরে গেছে । এভাবেই নিজের অজান্তেই শিশু পরী আরেক শিশুকে
নিজের ভিতর বহন করতেছিলো ।
হঠাত একদিন প্রচন্ড ব্যাথায় আর্তচিৎকার দিয়ে উঠে । সবাই এসে পরে এলাকার সব বয়স্ক মহিলারা
আসে । পুরা দুইঘন্টা অসহ্য যন্ত্রনার পর পরী একটী ছোট্ট পরীর জন্ম দেয় । এদিকে সদ্য জন্ম নেওয়া
শিশু নিয়ে যখন সবাই উৎফুল্ল পরী তখনো অজ্ঞান । অনেক্ষন পর্যন্ত জ্ঞান না ফেরায় পরীকে নিয়ে
যাওয়া হয় হাসপাতালে । সেখানে তিনদিন থাকার পর পরী চলে যায় না ফেরার দেশে । ডাক্তারী রিপোর্টে
মৃত্যুর কারন অতিরিক্ত রক্তক্ষরন !!!!
২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৪
অমিত বসুনিয়া বলেছেন: রংপুর ভাইয়া । আপনাকে ধন্যবাদ
২| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৩
অমিত বসুনিয়া বলেছেন: রংপুর ভাইয়া
৩| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৭
এহসান সাবির বলেছেন: পরীরা এই ভাবেই হারিয়ে যায়.....
পড়ীর বাবা কুদ্দুস মিয়া রিকশা চালায়
২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:২৮
অমিত বসুনিয়া বলেছেন: হুম এটাই নিয়তি সব পরীদের
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:২৬
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ
বসুনিয়ার বাড়ি কোথায়?