নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্নে সমুদ্র পারি দেওয়া ছেলেটি জেগে উঠে দেখে সে মাত্র বিছানার এপাশ ফিরে ওপাশে শুয়েছে মাত্র

অমিত বসুনিয়া

পৃথিবীর মৃত্যু ঘটুক শূধু তৃনলতাগুলো বেড়ে উঠুক , ছুয়ে দিক নীল আকাশের ভ্রান্ত সীমানা ।

অমিত বসুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

Amarboi.com। শুন্য থেকে শিখরে, বাংলাদেশের সফল ওয়েবসাইট গুলো। (টিউন -2)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:০৯

হ্যাল্লো ব্লগার ভাই বোন ... আবার আসলাম নিয়ে দেশের আরেক টি সাইটের ফাউন্ডারের সাক্ষাতকার নিয়ে। এটা আমার সিরিজ পোস্ট এর ২য় পার্ট। আমার এই সিরিজ এর প্রথম পোস্ট টি পড়ুন।

Bissoy.com। শুন্য থেকে শিখরে, বাংলাদেশের সফল ওয়েবসাইট গুলো। (টিউন -১)

আজকে আপনাদের সাথে আনছি আমার বই ডট কম এর ফাউন্ডার জনাব রিটন খান কে

১। আপনার প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাস/ ঘটনা বলুন ?

সাক্ষাৎকারটি যেহেতু আমারবই সাইটের জন্য তাই আমার ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে আলোচনা অন্য একদিন করা যাবে।

২।আমার বই ডট কমের শুরুটা কিভাবে হলো?


শুরুটা আনুমানিক ২০১১ সালের আগস্ট মাসের দিকে। কোন পরিকল্পনা নিয়ে নয়, বরং আমার নিজের সংগ্রহের বইগুলো অনলাইনে এক জায়গায় রাখার সুবিধার্থেই আমারবই.কম সাইটটি করা। আর সেকারনেই নামটিও আমি পছন্দ করেছিলাম “আমারবই”, যেখানে শুধুমাত্র আমার বইগুলি ছিল। আজ তো সেটা সবার। দেখুন আমাদের দেশে আদর্শলিপির পরে যে বইটি প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রির হাতে টেক্সটবই হিসেবে দেওয়া হয় সেই বইটির নামও “আমারবই”। তাই অনলাইন লাইব্রেরি হিসেবে এর চেয়ে ভালো নাম সেই মূহুর্তে আমার মাথায় আসেনি।

৩। অন্য সব টপিক থাকতে বই বিষয়ক সাইট বানানোর চিন্তাটা কিভাবে আসলো ?

আসলে আমি নেশার মতো বই পড়ি, এবং পড়াতেও অনেক পছন্দ করি। কিন্তু ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বই পড়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। বই এমন একটা মাধ্যম যা পড়তে হলে সম্পুর্ণ মনোযোগের প্রয়োজন হয়। আমরা যেমন গান শুনতে শুনতে বা টিভি দেখতে দেখতে অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু বইয়ের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। পড়ালেখা বা পেশার কারনে অনেকে নিজের জন্মভূমি থেকে অনেক দূরে থাকেন। এই সকলের কথা চিন্তা করেই আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা যা আমার একান্তই আমারবই ছিল সেটা সবার সাথে ভাগাভাগির চিন্তাতেই বইয়ের সাইট করা।

৪। বাংলাদেশের ওয়েবসাইট জগতে আমার বই ডট কমের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে আমাদের বলুন।

সেটা পাঠক ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি কিছু টেকনিকাল কথা বলি। বাংলাদেশের প্রথম সারির হাজারটা সাইটের মধ্যে “আমারবই.কম” একটি। এখন পর্যন্ত ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই চার বছরে সাইটি পরিদর্শন করা হয়েছে ১ কোটি ৩ লক্ষবার। এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শুরুর দিকে সাইটে প্রতিদিনের ভিজিটর ছিল ৪০০/৫০০ এখন সেটা দাঁড়িয়েছে গড়ে প্রতিদিন ২০ হাজার। আমার কাছে মনে হয় ইন্টারনেটে নানান ধরনের আকর্ষণ থাকলেও বইয়ের সাইটের জন্য এটি একটি বিশাল এচিভমেন্ট। ফেসবুকে আমারবই.কম এর পাতাটিও বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। তাছাড়া আমরা গত বছর থেকে একটি গ্রুপ করেছি বইয়ের হাট নামে সেখানেও সদস্য সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার সদস্য রয়েছে।

৫। আপনাদের সাইটের টোট্যাল স্টাফ কজন ?


সামগ্রিক ভাবে বলতে গেলে আমারবই.কম এর কোন স্টাফ নেই আবার সবাই স্টাফ। কারন যারাই অল্পবিস্তর সাথে আছেন সবাই বনের মোষ তাড়াচ্ছেন। সাইট পরিচালনায় সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হয়েছে। অর্থাৎ কোন ধরনের মেইনটেনেন্স এর প্রয়োজন হয় না। তারপরেও যেটুকু সময় দিতে হয় সাইটের পেছনে তার সবটা আমি দিতে পারি না। বই দিয়ে অনেকেই সাহায্য করছেন। আর আমাদের বইয়ের হাট গ্রুপের আডমিন রয়েছেন আমি ছাড়া আরো তিনজন। রাসেল (ঢাকা), পল্লব সরকার শিশির (ঢাকা) ও মলয় দেবনাথ (কলকাতা)।

৬। আচ্ছা যেহেতু আপনারা পিডিএফ বানাচ্ছেন কপিরাইট প্রব্লেম করে না ? আপনি কি কখনো কপিরাইট জনিত সমস্যায় পড়েছিলেন ?

দেখুন আমাদের দেশে কপিরাইট আইনটি আধুনিক নয়, তাই এর নানান রকম ফাঁক রয়েছে। সেই তর্ক বাদ দিয়ে বলি, হ্যা অনেক সমস্যায় পড়েছি। যেহেতু আমাদের সাইটে বলাই আছে কোন বই নিয়ে লেখক বা প্রকাশকের আপত্তি থাকলে আমাদের জানাতে পারেন তাহলে সেটি আমরা সরিয়ে নেবো। আমরা আনন্দ পাবলিকেশন থেকে কিছু কিছু বইয়ের ক্ষেত্রে ইমেইল পেয়েছি, এবং সেই মতো ব্যাবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বইয়ের এই প্রচারনায় প্রকাশকেরা লাভবান হচ্ছেন বিধায় অভিযোগ কম পাচ্ছি। একটা বিষয় পরিস্কার করে বলি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রকাশক বা লেখকের হয়ে অনেকেই ওকালতি করতে আসেন, তাদের অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সাথে নেই না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, লেখক নিজে বই দিচ্ছেন। দেখুন ফ্রি'তে মুভি কিন্তু আমরা সবাই দেখি। পরিচালকদের আপত্তি থাকলে তারা আপত্তি জানাবে, যারা হলে গিয়ে ছবি দেখে তারা তো না। বই বের হওয়ার সাথে সাথে কেউ বই পিডিএফ করুক সেটা কেউ চায় না। আমি প্রকাশনীর সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি জানি তিনশ বই ছাপানোর পরে কেউ আবার বই ছাপে না। আমি অনেক পুরাতন বইয়ের জন্য প্রকাশনীগুলো'তে গিয়েছি সেখানে স্পষ্ট করে বলে দেয় বই আর ছাপা হবে না। বাংলাদেশের বেশির ভাগ বই দ্বিতীয় সংস্করণ হয় না। তাহলে উপায় এই পিডিএফ। তবে হ্যা বই পিডিএফ করা অপরাধ কিন্তু তার থেকে বড় অপরাধ তো ভোক্তার কাছে বই পৌছে দিতে না পারা। ঢাকার বাহিরে বসে কেউ কিন্তু ভাল কোন বই পায় না। ঐ হুমায়ুন, জাফর স্যার পর্যন্তই শেষ।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল বই বের হওয়ার এক বছরের মধ্যে বই পিডিএফ না করা। কারণ আমরা খুব খারাপ পাঠক যারা বইয়ের পেছনে টাকা খরচ করতে চাই না। তাই বছর খানেক গেলে বই বের করলে কোন সমস্যা দেখি না। কারণ বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ তো আসবে না। প্রথম বছর বই পিডিএফ করার পক্ষে না কারণ প্রকাশনীর পুঁজি লগ্নি থাকে, প্রকাশনী তো এমনিতেই মরা ঘোড়া এখন তাই প্রথম মাসেই কেউ পিডিএফ বের করলে আসলে লেখকও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বই পিডিএফ করা যেমন অন্যায় তেমন টরেন্টে সিনেমা দেখাও অন্যায়। কিন্তু যেহেতু আমরা নেট থেকে বই নামাই কিন্তু বই পড়ি না সেহেতু বই নিয়ে এতো কথা। আমরা নেট থেকে পড়তে বাধ্য হই রাষ্ট্রীয় ও প্রকাশনীর সিস্টেমের কারণে। লাইব্রেরীগুলো তো বই শূন্য তাহলে কী নীতি মেনে মুর্খ থাকব?

৭। আপনার সাইটের কোন জিনিসটার প্রতি আপনি বেশি গুরুত্ত্ব দেন ?

বিষয়বস্তু। ভালো বই। বই মানেই যে সব ভালো তা কিন্তু না। আমি বিশেষ করে সেই সকল বই দেওয়ার পক্ষে যা আরো ১০টি বই পড়তে আপনাকে উৎসাহিত করবে। এছাড়া কিছু বই পত্রিকা এখনো শুধুমাত্র পাঠকপ্রিয়তার জন্য দিয়ে যাচ্ছি যা অচিরেই কমিয়ে আনা হবে। ইতিমধ্যে অনেক বই ও পত্রিকা যা মননকে তেমন পরিশালিত করে না তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং এই কার্য্যক্রম এখনো চলছে।

৮।(একটু খাপছাড়া প্রশ্ন) আপনি কি কাউকে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেন বা ভাবছেন ?


না। আমি বই পড়ানোর জন্য এসেছি তাই এই জাতীয় সাইট যত হবে তত পাঠকদের জন্য মঙ্গল। আর এটা তো কোন ব্যবসা নয় যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা থাকবে।

৯। আচ্ছা সাইট নিয়ে ভবিষ্যত প্লান কি ? মানে আমরা তো প্রথমে দেখেছি প্রিমিয়াম মেম্বার টাইপ একটা কিছু ছিলো আর এখন পুরোটাই ফ্রি। সামনে কি আরো কোন নতুন ফিচার যোগ হতে যাচ্ছে ?

প্রথম দিকে সাইটে কিছু পেইড মেম্বার ছিলেন তারা আমাদের বই কেনার অর্থের জোগান দিতেন। যেহেতু সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে, আমরা দেশের এবং বিদেশের অনেক মানুষের কাছ থেকে প্রচুর বই পাচ্ছি তাই সাইটটি এখন উন্মুক্ত। নতুন ফিচারের মধ্যে সাইটে এখন বইয়ের পাশাপাশি নানান ধরনের লেখাও প্রকাশিত হচ্ছে। যেমন ধরেন, কোন বইয়ের নির্বাচিত কিছু অংশ, বা কারও প্রবন্ধ, বা কবিতা ইত্যাদি। সামনে পিডিএফ এর পাশাপাশি বাংলা বইয়ের ইপাব করার কাজ চলছে। আরো কিছু ফিচার নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে যা সময় মতো সাইটে ঘোষনা দেওয়া হবে। আগাম কিছু আর জানাতে চাইছি না।

১০। নতুন যারা বই নিয়ে কাজ করছে বা করতে চায় তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কি ?

পরামর্শের কিছু নাই। তবে উদ্দেশ্যটি পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন

১১। বই পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

আমি নিজেও একজন পড়ুয়া। তাই পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু বলার নেই। আমি নিজে মনে করি প্রতিটি মানুষের জীবনটাই হলো একটি বই। এখনকার কিশোর-তরুণেরা ফেসবুকে যতটা না সময় ব্যায় করে তার ১০শতাংশ সময় বই পড়ার পেছনে ব্যায় করে না। অনেকেই হতাশ। কিন্তু আমি বেশ আশাবাদী, এই স্ট্যাটাস, সেলফিবাজ ছেলেমেয়েদের যদি একটু বইবাজ করা যায় ক্ষতি কি। সেই কাজটাই করছে আমারবই.কম।

কমেন্টে আপনাদের অনুভুতি জানান । এরপর আরো ভালো কিছু আসছে ইনশাল্লাহ ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯

শুভ্রা হক বলেছেন: দারুণ। খুব ভালো লাগলো। আমি নিজেও "আমার বই ডট কম " থেকে অনেক বই নামিয়ে পড়েছি। রিটন খানের সাথে যোগাযোগের নাম্বার বা ই -মেইল ঠিকানাটা কি আমাকে দেওয়া যাবে। আমার এক পরিচিত লেখক কিছু বই দিতে চেয়েছিলেন, সেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতাম ।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪৬

অমিত বসুনিয়া বলেছেন: আপু আমারবই এর মত অতো বড় না হলেও আমার নিজের একটি সাইট আছে পিডিএফ বইয়ের । কেউ বই দিতে চাইলে আমাকে দিতে পারেন আমি প্রকাশ করে দিবো । আর রিটন ভাই এর ফোন নাম্বার আমার কাছে নাই তবে উনার ইমেইল আছে , উনাকে জিজ্ঞেস করে তারপর দেই ? :)

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৬

শুভ্রা হক বলেছেন: ঠিক আছে, ই মেইল আইডি টাই দিন । ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.