নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর মৃত্যু ঘটুক শূধু তৃনলতাগুলো বেড়ে উঠুক , ছুয়ে দিক নীল আকাশের ভ্রান্ত সীমানা ।
আখতার হোসেন ভবিষ্যত জনপ্রিয় লেখক .........
থাকেন শহর থেকে দূরে পদ্মা নদীর এক্কেবারে পাড় ঘেষে । নদীর ঢেউয়ের শব্দে নাকি তার লেখার এনার্জি তিনগুন বেড়ে যায় । উনাকে ভবিষ্যৎ জনপ্রিয় লেখক বলার কারন , এখন পর্যন্ত একটা বই ও প্রকাশিত হয় নাই । উনার সাফল্য হচ্ছে প্রতিনিয়ত নতুন কোন প্রকাশকের কাছে যাওয়া এবং তাদের কাছ থেকে বিশাল বস্তা ভর্তি প্রশংসার বাণী শোনা পর্যন্ত । মাঝে মাঝে এই বস্তা এত ভারী হয়ে যা যে সেটা বহন করতে না পেরে আখতার সাহেব ওখানেই রেখে আসেন । এভাবেই দিন কাটছিলো ...... সে সারাদিন লেখে , দিনে একবার প্রকাশকের কাছে যায় আর তাদের দেওয়া প্রশংসার বস্তা পিঠে বয়ে বাড়ি ফিরে । ক্লান্ত বদনে আবার লিখতে বসে । আর ওদিকে পদ্মার পাড় ভাঙ্গতে ভাঙতে তার এক মাত্র ঘরের কিনারায় এসে পৌছায় যদিও সেটা আখতার সাহেবের নজরে পড়েনি । এক রাতে ......
কুপি জ্বালিয়ে সে লিখতেছিল । হঠাত তার ঘরের কোনাটা হেলে গেলো ।
বিস্ফোরিত চোখে সেদিকে তাকালো । যে জিনিস টা সে দেখতে পেলো সেটা জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত কখনোই ছিলো । পদ্মা তার ঘরে চিরদিনের জন্য অতিথি হতে ঢুকতেছে । ঢুকেই প্রথমে গ্রাস করলো আখতার সাহেবের ঘরের কোণায় থাকা আলমারি কে । যেখানে ভর্তি আছে তার ২০ ধরে লেখা উপন্যাস, গল্প এর পান্ডুলিপি । এতদিন যা সযতনে রাখা ছিলো কোন এক সময় সেগুলো প্রকাশ হবে সেই মিথ্যে আশায় । তার আলমারি ধীরে ধীরে ডুবছে সেই সাথে ডুবছে তার ২০ বছরের সাহিত্য কর্ম । আর আখতার সাহেব দিগবিদ্বিক শুন্য হয়ে নির্বাক পাথরের মত সেদিকে তাকিয়ে আছে .........
তিন দিন পর .........
রহিম মিয়া আর তার ছেলে সালাম কারেন্ট জাল ফেলে পদ্মার বুকে মাছ ধরতেছিলো । হঠাৎ তার নৌকা ধাক্কা খায় একটা শক্ত কিছুর সাথে । নৌকার ধাক্কা খাওয়া অংশের দিকে সালাম তাকিয়ে দেখে একটি আলমারি ।
- আব্বা এই দ্যাখ একটা আলমারি ।
- হয়তো ! বড়লোকের বাড়ির আলমারি হবার পারে , চল পাড়ে নিয়া যাই ।
- কেমন করি ?
- ঐ নৌকার নঙ্গরটা ( নোঙর ) টা দিয়া আটকে ধর ।
অনেক কস্টে বাপ ছেলে মিলে আলমারি সমেত নৌকার পাড়ে নিয়ে আসলো । এসে দেখে আলমারিতে একটা কাসার প্লেট , একটা মাটির আধাগলা গ্লাস আর পুরো আলমারি ভর্তি কাগজ যা পানিতে ভিজে এক্কেবারে নস্ট হয়ে গিয়েছে ।
- আব্বা এই কাগজ গুলা কি করবো ?
- যা বাড়ি নিয়া যা । তোর মা ডালি বানার জন্যে কাগজ চাছিলো এইগুলা দিয়া বানাবার ক ।
অতঃপর আখতার সাহেবের সাহিত্য কর্ম স্থান পেলো রহিম মিয়ার বাড়িতে একটি ধান চাল রাখা ডালির বেশে ।আর আখতার সাহেব ও কখনো কোন প্রকাশকের কাছে যায় নি । প্রকাশক খুজে পেয়েছে নতুন এক লেখক । ভবিষ্যৎ জনপ্রিয় লেখক । প্রতিদিন বস্তা ভর্তি প্রশংসা তুলে দিচ্ছে তার ঘাড়ে ।
#নামহীন_বালকের_কর্ম
©somewhere in net ltd.