নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একদিন সবকিছু গল্প হয়ে যায়...

আহমাদ মোস্তফা কামাল

জন্ম : ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৬৯; মানিকগঞ্জ। পৌষের কোনো এক বৃষ্টিভেজা মধ্যরাতে এদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম হয়েছিলো আমার, মায়ের কাছে শুনেছি। হঠাৎ বৃষ্টির সেই শীতের রাতে আঁতুর ঘরে মার পাশে দাইমা নামক আমার অ-দেখা এক মহিলা ছাড়া আর কেউ ছিলো না। উঠোনে রেখে দেয়া প্রয়োজনীয় সাংসারিক অনুষঙ্গ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে দাইমা বাইরে গেলে প্রায়ান্ধকার ঘরে জন্ম হয়েছিলো আমার। জন্মেই দেখেছিলাম, আমার চারপাশে কেউ নেই- মা ছাড়া। আজ, এই এতদিন পর- আমার চারপাশে সহস্র মানুষের ভিড়- তবু মার কাছে ফিরতেই ভালো লাগে আমার। যোগাযোগ : [email protected] [email protected]

আহমাদ মোস্তফা কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যবিত্তের পরিচয়চিহ্ন ০৪

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:৩৯

এই সুযোগে মধ্যবিত্তের জন্ম-বৃত্তান্ত এবং বিকাশের ঘটনাটিও জেনে নেয়া যেতে পারে। কারা এরা, এলোই-বা কোত্থেকে? একথা সবাই জানেন যে, বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে মধ্যসত্ত্বভোগীরাই এই শ্রেণীর জন্ম দিয়েছিলো যারা কখনো উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকতো না, অথচ উৎপাদক ও ভোক্তার মাঝখানে থেকে সুবিধা লুটে নিতো (অর্থাৎ মধ্যবিত্তের জন্মই একটা সুবিধাভোগী শ্রেণী হিসেবে), এবং এই অঞ্চলে এই শ্রেণীর জন্ম ও প্রাথমিক বিকাশ ঘটে মূলত হিন্দুদের মধ্যে।



এখন অবশ্য সে চিত্রটি আর নেই। আগের দিনের মধ্যসত্ত্বভোগী মধ্যবিত্তের সঙ্গে আজকের দিনের একজন চাকরিজীবী মধ্যবিত্তের তুলনাই চলে না। এমনকি চাকরিজীবী লোকটিকে ঠিক মধ্যসত্ত্বভোগীও বলা যায় না। সে-ও ভোক্তারই দলে। অতএব উদ্ভবকালের মধ্যবিত্তের সংজ্ঞা এখন আর নেই।



তাহলে এদেশের মুসলমান মধ্যবিত্ত এলো কোত্থেকে? বাংলাদেশে এই শ্রেণীর জন্ম একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। '৪০-এর দশকে দেশভাগের ফলে হিন্দু মধ্যবিত্তরা দেশত্যাগ করলে নানা ক্ষেত্রেই একটি শূন্যতা তৈরি হয় এবং বাঙালি মুসলমানরা ব্যাপারটাকে গ্রহণ করে একটি সুযোগ হিসেবে। নিরক্ষর কৃষকরা তাদের সন্তানদেরকে স্কুল-কলেজে পাঠাতে শুরু করেন। তাদের আশা ছিলো - এই সন্তান শিক্ষিত হয়ে চাকরি বাকরি করবে - 'বড় অফিসার' হবে, 'ভদ্রলোক' হবে। তাদের সেই আশা পূরণও হয়েছিলো, কিন্তু সমস্যা বাঁধলো অন্য জায়গায়। কৃষকের সন্তান হঠাৎ করে ভদ্রলোকে পরিণত হলে এবং মধ্যবিত্তের জীবনযাপন শুরু করলে তাদের পক্ষে পিতৃপরিচয়টিই একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো। কারণ বাপ-মা-ভাইবোন বা অন্য আত্নীয়স্বজন তাদের 'মর্যাদা' কমায় বৈ বাড়ায় না। ফলে পিতৃ-মাতৃকুলের সঙ্গে তারা একটি ইচ্ছেকৃত দূরত্ব তৈরি করে নিলো। কৃষকের সন্তানেরা চাকরি-বাকরি করে ভদ্রলোক হবার চেষ্টা করেছিলো এবং যথাসম্ভব দ্রুত নিজেদের শরীর থেকে মাটির গন্ধ মুছে ফেলতে চেয়েছিলো। কিন্তু এই কাজে তারা পুরোপুরি সফল হয়েছিলো তা বলা যাবে না। যতই চেষ্টা করুক না কেন, হাজার হলেও মা-বাপ, তাদেরকে একেবারে অস্বীকার তো করা যায় না! তবে এই মধ্যবিত্তদের প্রথম প্রজন্ম নানাবিধ কারণে নিজেদের অতীতকে পুরোপুরি অস্বীকার না করতে পারলেও, দ্বিতীয় প্রজন্ম তা অনেকখানিই করেছিলো এবং তৃতীয় প্রজন্মে এসে এই অস্বীকৃতি পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তারা ভুলেই গেছে যে তাদের পূর্বপুরুষ কোনো একসময় কৃষক ছিলো। অর্থাৎ একজন কৃষকের পুত্র ভদ্রলোকে পরিণত হবার পর নিজের বাপ-মাকে অস্বীকার না করতে পারলেও, তার পুত্র অর্থাৎ ওই কৃষকের নাতির জন্য তার দাদাকে অস্বীকার করাটা খুব বেশি অসম্ভব নয়। তবে আফটার অল দাদা তো, তাই পুরোপুরি অস্বীকার সে করে না, কিন্তু তার পুত্র অর্থাৎ ঐ কৃষকের পৌপুত্রের জন্য কৃষকের অস্তিত্ব স্বীকার করবার কোনো প্রয়োজনই নেই। আমাদের দেশে এই ঘটনাটিই ঘটেছে। ৩/৪ পুরুষ ধরে শিক্ষিত-মধ্যবিত্ত পরিবারের কাউকে খুব শক্ত করে ধরে আপনি যদি জেরা করতে থাকেন, তাহলে তারা একসময় হয়তো স্বীকার করবে যে, তাদের কোনো এক পূর্বপুরুষ গ্রামে বাস করতেন বটে, তবে তিনি মোটেই কৃষক ছিলেন না, ছিলেন জমিদার! একসময় যেমন মুসলমান সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকজন দাবি করতেন যে, তাদের পূর্বপুরুষরা আরব থেকে এসেছেন - এই দাবিটিও সেরকম। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠবে সবার পূর্বপুরুষই যদি জমিদার ছিলো তাহলে কৃষক ছিলো কে? কিংবা বাংলাদেশে মোট জমিদারের সংখ্যাই-বা কত ছিলো? কতই-বা ছিলো মুসলমান জমিদারের সংখ্যা?



১৪/১৫ বছর আগেও আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন অন্তত ৫০% ছাত্র আসতো গ্রাম থেকে - মূলত কৃষক পরিবার থেকে। কিন্তু পারতপক্ষে তারা সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করতো না, প্রসঙ্গ উঠে গেলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতো, নাছোড়বান্দার মতো কেউ লেগে থাকলে স্বীকার করতো বটে যে সে গ্রাম থেকেই এসেছে - কিন্তু সেখানে তার বাবা বিশাল ভূ-সম্পত্তির মালিক। ঘনিষ্ট বন্ধুরা ছাড়া কেউ আসল সত্যটা জানতে পারতো না। এই অবস্থা এখনও চলছে। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ ছাত্রই গ্রাম থেকে আসে, কিন্তু সেটা তারা স্বীকার করে না। এ অবস্থায় আপনি যদি এ নিয়ে সেখানে জরিপ চালান, তাহলে নিশ্চিতভাবেই ভুল এবং বিভ্রান্তিকর ফলাফল পাবেন। আর আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এইসব পরিসংখ্যানজাত ফলাফলের ওপরই সবসময় নির্ভর করেন এবং পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেন। জনজীবনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন এই শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের হাতে পড়ে আমাদের চিন্তার জগৎটি কেমন যেন একপেশে তত্ত্বনির্ভর-পরিসংখ্যাননির্ভর-বইনির্ভর হয়ে পড়েছে; যার ফলে আসল সত্য কোনোদিনই আমাদের জানা হয়ে ওঠে না। যাহোক, দেখা যাচ্ছে - মধ্যবিত্তরা, কিংবা মধ্যবিত্ত হবার প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে এমন লোকেরা নিজেদের শেকড়কে অস্বীকার করতে চায় - এটি মধ্যবিত্তদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। যেমন, আমাদের মধ্যবিত্তরা ভুলে গেছে তাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন এদেশের খেটে খাওয়া মানুষদেরই একজন। আর ভুলে গেছে বলেই নিম্নবিত্তদের সম্বন্ধে অত্যন্ত নিচু ধারণা পোষণ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়।



আগের পর্বগুলোর লিংক :



মধ্যবিত্তের পরিচয়চিহ্ন ০১

Click This Link



মধ্যবিত্তের পরিচয়চিহ্ন ০২

Click This Link



মধ্যবিত্তের পরিচয়চিহ্ন ০৩

Click This Link

মন্তব্য ৪৫ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৪৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:৪৫

রাঙা মীয়া বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম ।
''তাহলে তারা একসময় হয়তো স্বীকার করবে যে, তাদের কোনো এক পূর্বপুরুষ গ্রামে বাস করতেন বটে, তবে তিনি মোটেই কৃষক ছিলেন না, ছিলেন জমিদার!'' হাহাহা । কঠিন সহমত।

পোস্টের শেষের বৈশিষ্ট সবচাইতে বেশী প্রবল।আপনি যথার্থ বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে জটিল একটি বিষয়ে সুপাঠ্য বিশ্লেষনের জন্য ।

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:০৫

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সবগুলো পর্ব পড়ার জন্য। আশা করি বাকি দুটো পর্বেও আপনাকে পাঠক হিসেবে পাবো।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:৫৫

একরামুল হক শামীম বলেছেন:
"এদেশের মুসলমান মধ্যবিত্ত এলো কোত্থেকে?"

এই অংশে আপনার পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

"১৪/১৫ বছর আগেও আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন অন্তত ৫০% ছাত্র আসতো গ্রাম থেকে - মূলত কৃষক পরিবার থেকে। কিন্তু পারতপক্ষে তারা সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করতো না, প্রসঙ্গ উঠে গেলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতো, নাছোড়বান্দার মতো কেউ লেগে থাকলে স্বীকার করতো বটে যে সে গ্রাম থেকেই এসেছে - কিন্তু সেখানে তার বাবা বিশাল ভূ-সম্পত্তির মালিক।"

এখনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগ শিক্ষার্থী গ্রাম থেকে আসছে। তবে আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়নি যে, গ্রাম থেকে আসছে অথচ স্বীকার করছে না।
যেমন আমি বলতে পারি, আমি গ্রামের কৃষক পরিবার থেকে এসেছি। তবে আমার দাদা কৃষক হলেও আব্বু চাকরী করছেন। তাই বলে কেউ যদি দাদার কথা জিজ্ঞেস করে আমি সেই কৃষক পরিচয়টা অস্বীকারটা করবো না।

"দেখা যাচ্ছে - মধ্যবিত্তরা, কিংবা মধ্যবিত্ত হবার প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে এমন লোকেরা নিজেদের শেকড়কে অস্বীকার করতে চায় - এটি মধ্যবিত্তদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য।"

আমার ছোট্ট দ্বিমত আছে এই অংশটার সঙ্গে। মধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে এমন লোকেরা নিজেদের শেকড়কে ভুলে না কিংবা অস্বীকার করতে চায় না কয়েকটা ব্যতিক্রম ছাড়া। আমার পর্যবেক্ষণ হলো- মধ্যবিত্ত এই মানুষগুলো যখন উচ্চবিত্ত হয়ে উঠে তখন দুয়েকটা ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সবাই নিজের শেকড়কে ভুলে যেতে চায়।


ধারবাহিকটা কি শেষ হয়ে গেল? চারটা পর্বই পড়লাম। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার লেখাটার জন্য।





২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১৩

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ শামীম। আমি যে সময়ের কথা বলেছি, ওই সময় হাতে গোনা কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া কেউই স্বীকার করতে চাইতো না, যে, তাদের পূর্বপুরুষ কৃষক ছিলেন। এখন যদি অবস্থা পাল্টে থাকে তাহলে সেটি নিঃসন্দেহে শুভ লক্ষণ। আত্নপরিচয় ভুলে গিয়ে নিজের অবস্থান সঠিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
আমি বলেছি- 'মধ্যবিত্তরা, কিংবা মধ্যবিত্ত হবার প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে এমন লোকেরা নিজেদের শেকড়কে অস্বীকার করতে চায়'। করতে চায় বটে, কিন্তু পেরে ওঠে না। উচ্চবিত্তরা সেটা পারে বা করে। এই বিষয়ে আমিও আপনার সঙ্গে একমত।

না, লেখাটা এখনও শেষ হয়নি। আরো দুটো পর্ব আছে। :(
ছোট ছোট পর্বে দিতে হচ্ছে তো, এত বড় লেখা শেষ করতে সময় লাগছে। :( :(

আপনাকে আবারও ধন্যবাদ সবগুলো পর্ব পড়ার জন্য।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:০৯

তারিক টুকু বলেছেন: ৩/৪ পুরুষ ধরে শিক্ষিত-মধ্যবিত্ত পরিবারের কাউকে খুব শক্ত করে ধরে আপনি যদি জেরা করতে থাকেন, তাহলে তারা একসময় হয়তো স্বীকার করবে যে, তাদের কোনো এক পূর্বপুরুষ গ্রামে বাস করতেন বটে, তবে তিনি মোটেই কৃষক ছিলেন না, ছিলেন জমিদার!


-আড্ডার মধ্যে মধ্যবিত্ত চেনার এটা সবচেয়ে বড় উপায়।

১৪/১৫ বছর আগেও আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন অন্তত ৫০% ছাত্র আসতো গ্রাম থেকে - মূলত কৃষক পরিবার থেকে। কিন্তু পারতপক্ষে তারা সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করতো না, প্রসঙ্গ উঠে গেলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতো, নাছোড়বান্দার মতো কেউ লেগে থাকলে স্বীকার করতো বটে যে সে গ্রাম থেকেই এসেছে - কিন্তু সেখানে তার বাবা বিশাল ভূ-সম্পত্তির মালিক।

--ভালো অভিজ্ঞতা।

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১৪

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ টুকু।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১০

আরিফ জেবতিক বলেছেন: পড়ে যাচ্ছি । সিরিজ শেষ হওয়ার পরে মন্তব্য করা যাবে ।

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১৬

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: সিরিজ শেষ হওয়ার পরে আপনার মন্তব্য বিশেষভাবে প্রত্যাশা করছি।

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১০

সাইফুর বলেছেন: মন্তব্য করার সাহস করছিনা...তবে পড়লাম

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: :( :( :( সাহস পাচ্ছেন না কেন, বুঝলাম না! :( :( :(

৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:১৮

বিবর্তনবাদী বলেছেন: পড়লাম। খানিকটা ভিন্ন মত পোষণ করব।

একমাত্র আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন যারা তারা ছাড়া অন্যরা (যারা পরিশ্রেমের মাধ্যমে উপরে উঠেছেন) মনে হ্য় না তাদের পরিচয় অস্বীকার করেন। আমার বাবা উচ্চ পদস্থ ব্যাংকার, আমার দাদা খাদ্য বিভাগে কেরানী ছিলেন, তার বাবা গ্রামের কৃষক ছিলেন, স্বীকার করতে কোন বাঁধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কোন বন্ধুকে বা শিক্ষকেও তার গ্রামের পরিচয় লুকোতে দেখি নি, বরং গর্ব সহকারে প্রকাশ করে থাকেন।


খুব সম্ভবত আপনি বলতে চাচ্ছেন, গ্রাম বাংলার কৃষক পর্যায় থেকে উঠে আসা আজকের মধ্যবিত্ত এখন আর সেই মূলটাকে অনুভব করে না। যদি তাই হয়, তবে অবশ্যই একমত। তবে সেটা উপস্থাপনের যুক্তি গুলো বোধ হয় অন্য রকম হতে পারত।


পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ এবং +

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৪৬

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ভিন্নমতটি জানতে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আমি উদাহরণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেছি বলে সব উদাহরণ বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক হয়ে গেলে সমস্যা। মধ্যবিত্ত সমাজের সবাই তো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়! এই বাইরেও যে বিপুল সংখ্যক মধ্যবিত্ত আছে, তাদের মধ্যে আমি অস্বীকারের প্রবণতাই অধিকমাত্রায় দেখেছি। আপনি বা শামীম অস্বীকার করবেন না, সেটা তো স্বাভাবিক। আপনারা আপনাদের সমসাময়িকদের চেয়ে চিন্তাভাবনায় অগ্রগামী। কিন্তু সবাই কি এরকমই। আপনাকে এবং শামীমকে একটা কমন প্রশ্ন করা যায়। আপনারা কি হলে থাকেন নাকি বাসায়? যদি হলে থেকে থাকেন তাহলে আপনার ঘনিষ্ট বন্ধু ছাড়া অন্যদের অরিজিন জানার চেষ্টা করে দেখতে পারেন (হলে না থাকলেও সেই চেষ্টাটা করা সম্ভব), আপনারা একটা ইঙ্গিত পেয়ে যাবেন।

অবশ্য, আপনাদের কথা অনুযায়ী এটাই যদি এখন সাধারণ প্রবণতা হয়ে থাকে (নিজের অরিজিন অস্বীকার না করা), তাহলে সেটা খুবই শুভ লক্ষণ।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বরাবরের মতো সঙ্গে থাকার জন্য।

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৩২

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: "আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এইসব পরিসংখ্যানজাত ফলাফলের ওপরই সবসময় নির্ভর করেন এবং পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেন। জনজীবনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন এই শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের হাতে পড়ে আমাদের চিন্তার জগৎটি কেমন যেন একপেশে তত্ত্বনির্ভর-পরিসংখ্যাননির্ভর-বইনির্ভর হয়ে পড়েছে; যার ফলে আসল সত্য কোনোদিনই আমাদের জানা হয়ে ওঠে না।"

চরম সত্য একটি কথা। আমাদের বুদ্ধিজীবী ঘরে কোণে বই নিয়ে বসে বুদ্ধি খাটায়। মানুষের মাঝে গিয়ে তাদের মন-মানসিকতা বুঝে কোনো পরিসংখ্যান করেন না।
তবে আপনি যে বললেন মধ্যবিত্তের কেউ স্বিকার করতে চায়না যে তাদের পূর্ব পুরুষ কৃষক ছিলেন। এটা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক তবে সব ক্ষেত্রে নয়। যেমন, আমার বাবার একজন বন্ধু আছেন। তিনি সচিব ছিলেন। তিনি আমাদের এবং ওনার সন্তানদের প্রায় একটা কথা বলতেন। সেটা হচ্ছে, আমার বাবা, বর্গা খাটতেন। নিজেদের কোনো জমি ছিল না। অন্যের জমিতে কাজ করতেন। আমি সেই বাবার সন্তান। আমাদের জমির মালিক আমার আই.এস.সির রেজাল্ট দেখে আমাকে একটা ঘড়ি গিফট করেছিলেন। সেই ঘড়ি আমি ৩০ টাকা দিয়ে বিক্রি করে ঢাকা শহরে আসি। সেই শহরের সর্বোচ্চ সরকারী অফিসের বলতে গেলে সর্বোচ্চ চেয়ারে আমি বসি।

এই কথাগুলো বলার সময় তিনি ইমোশনাল ভাবে বললেও তিনি কিন্তু গর্ব নিয়ে কথাগুলো বলেন। তিনি বোঝাতে চান, একটা অন্ধকার জায়গা থেকে তিনি আজ এই পজিশানে এসেছেন। কিন্তু আমরা আলোতে থেকেও কিছু করতে পারছি না।

তাই মধ্যবিত্তরা খুবই আবেগপ্রবণ আমি মনে করি। তারা যতো কিছুই হোক নিজের শেকড়কে কখনো ভুলতে পারে না।

তবে আপনার লেখা আমার যথেষ্ট ভালো লেগেছে। আপনা অনেক বক্তব্য আছে যা আমি কখনো ভেবেও দেখিনি। কিন্তু তা সঠিক।
শুভেচ্ছা রইলো।

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৫৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: বিচ্ছিন্ন উদাহরণ দিয়ে একটা গোষ্ঠীকে চেনা যায় না। ব্যতিক্রম তো ব্যতিক্রমই। আমি এ দেশের প্রথম সারির একজন শিল্পপতিকে (নাম বললেই চিনবে, তার ধনসম্পদের কোনো হিসাব-নিকেশ নেই!) বলতে শুনেছি - 'ছোটবেলায় আমি পান্তাভাত আর পেঁপে সেদ্ধ খেয়ে দিন কাটিয়েছি! একবেলার বেশি গরম ভাত কপালে জুটতো না!' তিনি এই কথা বলেন ঠিকই, কিন্তু তার জীবনাচরণের কোথাও এই ব্যাপারটা মনে রাখার কোনো চিহ্ন চোখে পড়ে না। আমার কাছে মনে হয়েছে, তার এই কথাটির মধ্যে এক ধরনের প্রচ্ছন্ন গৌরববোধ আছে। অনেকটা এরকম : দ্যাখো, আমি কোত্থেকে কোথায় এসেছি! এই ধরনের স্বীকারোক্তিও সন্দেহের সুযোগ করে দেয়! এতই যদি মনে থাকে, তাহলে যে শ্রেণী থেকে তারা উঠে এসেছেন সেই শ্রেণীর জন্য তারা কিছু করেন না কেন?

তোমাকে ধন্যবাদ সবগুলো পর্ব পড়ার জন্য।

৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৫২

সিহাব চৌধুরী বলেছেন:
অসামান্য বিশ্লেষণ । চমৎকার হচ্ছে ।

তবে, ফিউডালিজমের পতনের পর অনেক কৃষকসন্তান ও নিজেদের ক্ষয়ে যাওয়া জমিদার বংশধর বলে পরিচয় দিত । যারা এক পর্যায়ে মধ্যবিত্ত হয়েছেন, কেউ কেউ আবার উচ্চ বিত্তও হয়েছেন । সুতরাং শিকড় অস্বীকারের দায় টা শুধু মধ্যবিত্তদের দেয়াটা অনুচিত । এটা খুব স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তি - নিজের অপ্রীতিকর অতীতকে ধামাচাপ দেয়া ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৪১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: 'এটা খুব স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তি - নিজের অপ্রীতিকর অতীতকে ধামাচাপ দেয়া' - আপনার এই কথাটির সঙ্গে আমি একমত। কিন্তু - 'আমাদের পূর্বপুরুষ কৃষক/শ্রমজীবী ছিলেন' - এই বিষয়টি কারো কারো কাছে অপ্রীতিকর মনে হয় কেন, সেটাই আমি বুঝতে পারি না!

আমি কিন্তু মধ্যবিত্তের কাঁধে কোনো দায় চাপাচ্ছি না। যেমন ভাবে এই শ্রেণীটিকে আমি দেখেছি, তারই উপস্থাপন এই লেখা। বিষয় যেহেতু মধ্যবিত্ত, তাই মূল ফোকাসটা মধ্যবিত্তের দিকেই। অন্যদের কথা খুব একটা বলার সুযোগ হচ্ছে না।

আপনাকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

৯| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৪৭

নরাধম বলেছেন: এইপর্বটা সবচেয়ে ভাল লেগেছে। অনেক কটু সত্য উঠে এসেছে।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৪২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো লাগা জানানোর জন্য।

১০| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৫৮

একরামুল হক শামীম বলেছেন:
লেখক বলেছেন: বিচ্ছিন্ন উদাহরণ দিয়ে একটা গোষ্ঠীকে চেনা যায় না। ব্যতিক্রম তো ব্যতিক্রমই। আমি এ দেশের প্রথম সারির একজন শিল্পপতিকে (নাম বললেই চিনবে, তার ধনসম্পদের কোনো হিসাব-নিকেশ নেই!) বলতে শুনেছি - 'ছোটবেলায় আমি পান্তাভাত আর পেঁপে সেদ্ধ খেয়ে দিন কাটিয়েছি! একবেলার বেশি গরম ভাত কপালে জুটতো না!' তিনি এই কথা বলেন ঠিকই, কিন্তু তার জীবনাচরণের কোথাও এই ব্যাপারটা মনে রাখার কোনো চিহ্ন চোখে পড়ে না। আমার কাছে মনে হয়েছে, তার এই কথাটির মধ্যে এক ধরনের প্রচ্ছন্ন গৌরববোধ আছে। অনেকটা এরকম : দ্যাখো, আমি কোত্থেকে কোথায় এসেছি! এই ধরনের স্বীকারোক্তিও সন্দেহের সুযোগ করে দেয়! এতই যদি মনে থাকে, তাহলে যে শ্রেণী থেকে তারা উঠে এসেছেন সেই শ্রেণীর জন্য তারা কিছু করেন না কেন?



আপনার এই পর্যবেক্ষণটা দারুন। আমারও একই কথা - এতই যদি মনে থাকে, তাহলে যে শ্রেণী থেকে তারা উঠে এসেছেন সেই শ্রেণীর জন্য তারা কিছু করেন না কেন?

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: কে দেবে জবাব? :( ;) :(

১১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:০০

ফারহান দাউদ বলেছেন: সবার পূর্বপুরুষই যদি জমিদার ছিলো তাহলে কৃষক ছিলো কে?
এইবারে মজা পেয়েছি।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৩১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যে আমিও মজা পেয়েছি। :)

১২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৫

দোদূল্যমান বলেছেন: একজন বাঙালির মধ্যবিত্তের সীমানায় অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে সমাজের যে কোন বিত্তস্তর থেকে-- তা সে ওপর থেকেই হোক আর নিচ থেকেই হোক।

বাঙালি মধ্যবিত্তের স্বত্তা অস্বীকার করার যে প্রবৃত্তি লেখক বিশ্লষণ করলেন, সেটা আমি মনে করি মধ্যবিত্তের নয়; আসলে বাঙালি জাতিরই জেনেটিক সূত্রে প্রাপ্ত এক বৈশিষ্ট্য।

লেখাটির গাথুনি সত্যিই সাবলীল। ধন্যবাদ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:৫০

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন:
'মধ্যবিত্তের সীমানায় অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে সমাজের যে কোন বিত্তস্তর থেকে-- তা সে ওপর থেকেই হোক আর নিচ থেকেই হোক' - তা পারে বটে, তবে বাংলাদেশের বর্তমান মধ্যবিত্তের জন্ম হয়েছে নিম্নবিত্ত থেকেই।

অস্বীকার করার ব্যাপারটা জেনেটিক কী না, সেটি নিয়ে ভাববার অবকাশ আছে।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

১৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:০৭

ফারুক আহসান বলেছেন: হুমম । অনেকটাই একমত আপনার পর্যবেক্ষণের সাথে । তবে বুদ্ধিজীবিদের যে বেশ একহাত নিলেন সেটা নিয়া কিঞ্চিৎ দ্বিমত আছে ।

মানুষের জীবনকাল এবং সুযোগের তুলনায়, পৃথিবীর সমস্যাগুলার ব্যাপ্তি অনেক বড় । একারনে একাডেমিক বিশ্লেষনে শেষ পর্যন্ত পরিসংখ্যানিক উপাত্ত ছাড়া আলোচনা করার উপায় থাকে না । সর্বোচ্চ কয়টা মধ্যবিত্তকে দেখা সম্ভব একজন বুদ্ধিজীবির পুরা জীবনে । যতটাই হোক, একটা সাধারন ট্রেন্ড বের করতে পারার মত নয়।

আর ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতাকে একাডেমিক স্বিদ্ধান্তে আনা কিন্তু সহজ কাজ নয় । তত্ত ও তথ্যের কঠিন সব পরীক্ষায় পার পাওয়ার পরই একজনের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা সামগ্রিক জ্ঞানে পরিনত হবে । কিন্তু ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা যেহেতু সবসময়ই স্থান-কাল-পাত্র সাপেক্ষ হয়, সেহেতু অনেকেই একটা জিনিস ফিল করেও সেটাকে জোর গলায় বই-পুস্তকে বলে যেতে পারেন না ।

আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়েই তো দেখলেন, বেশ কয়েকজন ভিন্ন অভিজ্ঞতার ব্যাপার নিয়ে আসলেন।

বুদ্ধিজীবিদের অনেকেরই হয়ত সেরকম জানাশোনা আছে, ব্যাক্তিগত পর্যায়ে, কিন্তু তত্ত দেয়ার মত জোরালো নয় হয়ত বা । ঢালাওভাবে তাদের দোষারোপ করাটা ঠিক নয় ।


চালিয়ে যান সাথে আছি ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:১১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার কথাগুলো খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

বুদ্ধিজীবীদের একহাত নিইনি, একটি বিশেষ ধরনের 'বুদ্ধিজীবী'দের কথা বলেছি যারা পরিসংখ্যান ছাড়া কিছু বোঝেন না! আমি বুদ্ধিজীবীদের কাছে সেইরকম প্রজ্ঞা আশা করি, - পরিসংখ্যান ছাড়াই কেবলমাত্র নিজস্ব উপলব্ধি দিয়েই এমন সব মন্তব্য করবেন যা অন্য সবাইকে আলোকিত করবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের কথা মনে পড়ছে। রাজ্জাক স্যার লেখেননি কখনো, (তাঁর একটি মাত্র বক্তৃতা বই হিসেবে পাওয়ার যায় - 'বাংলাদেশ : জাতির অবস্থা।' তাঁর প্রজ্ঞা বোঝার জন্য এই একটি বই-ই যথেষ্ঠ।), কিন্তু যে কথাগুলো বলতেন সেগুলো এতটাই প্রজ্ঞার পরিচয় দিতো যে, বিস্ময়াভিভূত হয়ে যেতে হতো। একটা উদাহরণ দেই। তিনি বলতেন, "একটা সমাজের অবস্থা বুঝতে হলে দুটো জিনিস দেখা দরকার - ১. কাঁচা বাজার (কী খায়, বোঝার জন্য) ২. বইয়ের দোকান (কী পড়ে, বোঝার জন্য)।" তিনি তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তুরস্কের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন : "ওখানকার বইয়ের দোকানে, কোরান শরীফ আর মার্কসের রচনাবলী একই তাকে পাশাপাশি রাখা হয়! যে সমাজের পাঠকরা এই দুটো গ্রন্থ পাশাপাশি রেখে পড়ে, সেই সমাজে যে টেনশন থাকবে, সেটা বোঝার জন্য খুব বেশি জ্ঞানী হতে হয় না!" (স্মৃতি থেকে লিখলাম, সামান্য এদিক-ওদিক হতে পারে, মূলভাবটি এরকমই।)
রাজ্জাক স্যার কিন্তু তুরস্কের পুরো সমাজ বিশ্লেষণ করেননি, কিন্তু একটি ঘটনা থেকে তিনি একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। এটাকে আমি প্রজ্ঞা বলি। 'জ্ঞান' (নলেজ) আর 'প্রজ্ঞা' (উইশডম) এক জিনিস নয়। আমাদের বুদ্ধিজীবীরা জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান নন। ব্যাপারটা আমাকে কষ্ট দেয়।

আপনাকে আবারও অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

১৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:২১

ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: তারমানে দুইটা শ্রেণী পেলাম। এক. যারা স্বীকার করতে কুণ্ঠা বোধ করেন যে তাদের প্রপিতামহেরা কৃষক ছিলেন। আর দুই. যারা এটা নিয়ে গর্ববোধ করেন, কিন্তু সেই উচ্চতায় উঠে শিকড়ের পরিচর্যা করার কোনও চেষ্টাই করেন না।

আপনার বাকি দুইটা পর্বের জন্যেও অপেক্ষা রইলো।

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৫

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: না, দুটো শ্রেণী নয়। একই শ্রেণীর, ভিন্ন মানসিকতার। এক শ্রেণীভূক্ত সব মানুষের মনও একইরকম হবার কোনো কারণ নেই! এটা সেইরকম ব্যাপার।

আপনার জন্য শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ, ভালোবাসা।

১৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৯

ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: জ্ঞান ও প্রজ্ঞাসংক্রান্ত কথাগুলো দাগ কাটলো মনে। আর একটা আফসোস হলো মনে, আমরা কবে ওমন প্রজ্ঞা অর্জন করবো?

৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৩২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: যাক, অন্তত একজন ভবিষ্যত প্রজ্ঞাবানের মনে দাগ কাটাতে পারলো কথাগুলো।

[সম্ভব হলে রাজ্জাক স্যারের বইটা, এবং সরদার ফজলুল করিমের নেয়া স্যারের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ব্ইটা পড়ে নেবেন। তাঁকে নিয়ে আরেকটা বইও পড়ে মজা পাবেন - আহমদ ছফার 'যদ্যপি আমার গুরু।']

১৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:০৩

তারার হাসি বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ, ধন্যবাদ আপনাকে এই উদ্যোগ নেবার জন্য।

৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৩৪

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সঙ্গে থাকবার জন্য।

১৭| ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:৪৫

ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: আহমদ ছফা'র বইটি সংগ্রহে আছে। মাঝে মাঝে পড়ি আর আফসোস হয় (উপরের আফসোস-টাই!)। তবে মনে হয় গুরুর জ্যোতিতে অন্ধ শিষ্যের লেখা পড়ছি। রাজ্জাক স্যারকে আরো ভালোভাবে বুঝার জন্যে একটু অপ্রতুলও মনে হয়। অন্য বইদুটো জোগাড় করে নিব নিশ্চিত। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!:)

[ভবিষ্যতে সম্ভবত আমি খুব ক্লিশে প্রথাগত কিছু একটায় পরিণত হবো। আপনি আমাকে বাৎসল্য-স্নেহে মাথায় তুলছেন!:)]

৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:১৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আহমদ ছফা'র বইটি নিয়ে আপনার মতামত যথার্থ। সেজন্যই ওটাকে 'মজার' বই বলেছি। ;)

"ভবিষ্যতে সম্ভবত আমি খুব ক্লিশে প্রথাগত কিছু একটায় পরিণত হবো। আপনি আমাকে বাৎসল্য-স্নেহে মাথায় তুলছেন" - ধরে নিচ্ছি কথাগুলো আপনি বিনয় করে বলেছেন। তারপরও কিছু কথা বলা যায়। পৃথিবী জুড়ে মানুষের জন্য 'ক্লিশে' এবং 'প্রথাগত' হবার সব ফাঁদই পাতা আছে। পুঁজির দৌরাত্ন্য, কর্পোরেট কালচার, সামাজিক-পারিবারিক পরিমণ্ডল ইত্যাদি মানুষকে কেবলই প্রথাগত হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ জোগায়। সেই ফাঁদে পা দিয়ে বহু প্রতিভাবান মানুষ হারিয়ে যায়। কিন্তু সবকিছুর পরও কিছু মানুষ নিজেদের স্বাতন্ত্র্য, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা নিয়ে স্বমহিমায় টিকে থাকে। বলাবাহুল্য, এর জন্য তাকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়, নিজের সঙ্গে যেমন তেমনি সমগ্র পরিপার্শ্বের সঙ্গেও। আপনার মধ্যে সম্ভাবনা আছে প্রথাগত জীবনের বাইরে যাবার, যাবেন কী না সেটা আপনারই সিদ্ধান্ত।

বাৎসল্য-স্নেহে মাথায়যখন তুলছিই, তখন মাথায়ই থাকুন। নিচে না নামলেই সুখি হবো।

১৮| ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:৩০

অরণ্যচারী বলেছেন: নিরক্ষর কৃষকরা তাদের সন্তানদেরকে স্কুল-কলেজে পাঠাতে শুরু করেন। তাদের আশা ছিলো - এই সন্তান শিক্ষিত হয়ে চাকরি বাকরি করবে - 'বড় অফিসার' হবে, 'ভদ্রলোক' হবে। তাদের সেই আশা পূরণও হয়েছিলো, কিন্তু সমস্যা বাঁধলো অন্য জায়গায়। কৃষকের সন্তান হঠাৎ করে ভদ্রলোকে পরিণত হলে এবং মধ্যবিত্তের জীবনযাপন শুরু করলে তাদের পক্ষে পিতৃপরিচয়টিই একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো। কারণ বাপ-মা-ভাইবোন বা অন্য আত্নীয়স্বজন তাদের 'মর্যাদা' কমায় বৈ বাড়ায় না।

প্রসঙ্গের একটু বাইরে যেতে চাই। প্রশ্নটা হল : শিক্ষাটা কী? যে শিক্ষা নিজের শিকড়ের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তোলে তাকে কি শিক্ষা বলা যায়?

আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের উদাহরণ দিয়েছেন। বর্তমানে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমি বলতে পারি পরিস্থতির তেমন পরিবর্তন হয় নি। এখনও আমার সহপাঠীরা নিজেদের অতীত নিয়ে সবসময় যেন কিছুটা বিব্রত থাকে। হয়ত আমি সেই সৌভাগ্যবানদের একজন যাকে পরিবার থেকে আত্মপরিচয় গোপন করার শিক্ষাটি দেওয়া হয় নি। আমি নির্দ্বিধায় আমার পিতার কষ্টের সেই দিনগুলোর কথা (তাঁর মুখেই শোনা) অন্যদের বলতে পারি। আমার দাদা একজন সাধারণ কৃষক ছিলেন, কোন জমিদার বা মহাজন নয় এবং তা আমাকে গর্বিত করে।

৫ম পর্ব পড়া শুরু করলাম।

৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:২৪

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতার কথাটি শেয়ার করার জন্য অজস্র ধন্যবাদ। শামীম ও বিবর্তনবাদীর অভিজ্ঞতা শুনে মনে হয়েছিল, অবস্থা হয়তো পাল্টেছে, কেবল আমিই কোনো খবর রাখছি না। আপনার কথাগুলো হয়তো তাদেরকেও ভাবাবে।

শিক্ষা মানুষকে নিজের শেকড় অস্বীকার করতে শেখায় না। অন্তত শেখানোর কথা নয়। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এ্যাকাডেমিক শিক্ষা ব্যাপারটা মানুষকে জনবিচ্ছিন্ন-শেকড়চ্যুত করে তুলছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যে বড় ধরনের গলদ আছে সে ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু গলদটা এখনও পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করে উঠতে পারিনি।

আপনার পরিবারের কথা শুনে আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে গেল। শুভেচ্ছা নিন। ভালো থাকুন।

১৯| ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:০৪

তপন বাগচী বলেছেন: কামাল, আপনার স্বাদু গদ্যের প্রশংসা করি। অনেক জটিল তত্ত্ব এমনকি বিজ্ঞানের জটিল প্রসঙ্গও আপনি সরল করে বোঝাতে পারেন। এনিয়ে সংশয় নেই। আপনাকে ধন্যবাদ। এই লেখাটি নিয়ে আপনার কিছু প্রশ্ন জাগছে।
আপনি লিখেছেন, 'তাহলে এদেশের মুসলমান মধ্যবিত্ত এলো কোত্থেকে? ... '৪০-এর দশকে দেশভাগের ফলে হিন্দু মধ্যবিত্তরা দেশত্যাগ করলে নানা ক্ষেত্রেই একটি শূন্যতা তৈরি হয় এবং বাঙালি মুসলমানরা ব্যাপারটাকে গ্রহণ করে একটি সুযোগ হিসেবে।'

প্রশ্ন ১। তাহলে ৪৭-এর আগে কি মুসলমান মধ্যবিত্ত ছিল না? আমরা তার আগেও তো মুসলমান মধ্যবিত্তের সন্ধান পাই, যারা জমিদারি, তালুকদারি, শিকদারি, মজুমদারির অধিকার পেয়েছিল। এঁদের কি মধ্যবিত্ত বলা যাবে না? নাকি তারা উচ্চবিত্ত?

আপনি বলেছেন, 'একজন কৃষকের পুত্র ভদ্রলোকে পরিণত হবার পর নিজের বাপ-মাকে অস্বীকার না করতে পারলেও, তার পুত্র অর্থাৎ ওই কৃষকের নাতির জন্য তার দাদাকে অস্বীকার করাটা খুব বেশি অসম্ভব নয়। তবে আফটার অল দাদা তো, তাই পুরোপুরি অস্বীকার সে করে না, কিন্তু তার পুত্র অর্থাৎ ঐ কৃষকের পৌপুত্রের জন্য কৃষকের অস্তিত্ব স্বীকার করবার কোনো প্রয়োজনই নেই। আমাদের দেশে এই ঘটনাটিই ঘটেছে।'
চমৎকার পর্যবেক্ষণ। কিন্তু আমার প্রশ্ন আছে।
প্রশ্ন ২। এই ঘটনা হিন্দুদের ক্ষেত্রেও ঘটার কথা। তাদের তো ৪ পুরুষের বেশিকাল ধরেই মধ্যবিত্তের আচরণ করার কথা। অর্থাৎ মুসলমানদের চেয়ে তাদের অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার কথা। যদি না হয় তবে একই জল-হাওয়ায় বেড়ে-ওঠা হিন্দু ও মধ্যবিত্তের আচরণের এই ফারাক ঘটার ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?

আপনি বলেছেন, '১৪/১৫ বছর আগেও আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন অন্তত ৫০% ছাত্র আসতো গ্রাম থেকে - মূলত কৃষক পরিবার থেকে। কিন্তু পারতপক্ষে তারা সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করতো না, প্রসঙ্গ উঠে গেলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতো, নাছোড়বান্দার মতো কেউ লেগে থাকলে স্বীকার করতো বটে যে সে গ্রাম থেকেই এসেছে - কিন্তু সেখানে তার বাবা বিশাল ভূ-সম্পত্তির মালিক। ঘনিষ্ট বন্ধুরা ছাড়া কেউ আসল সত্যটা জানতে পারতো না। এই অবস্থা এখনও চলছে।'

মন্তব্য : আমিও আপনার সমকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। এবং আপনার প্রায় দ্বিগুণ সময় 'হল'-এ অবস্থান করেছি। কেবল হিন্দু হল নয়, রাজনীতির কারণে মুসলিম হলেও বন্ধুবান্ধব ছিল, এবং ঘনিষ্ঠ মেলামেশা ছিল। কিন্তু পরিবারের প্রসঙ্গ এড়েয়ে যাওয়ার ঘটনা এমন তীব্রভাবে আমার পর্যবেক্ষণে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাম থেকে আসা এবং অন্য শহর থেকে আসা শিক্ষার্থীরাই মূলত 'হল'-এ থাকে। কেউ কেউ শহরে এসে বখে গেছে। কিন্তু কৃষক পরিবার বা দরিদ্র পরিবার কিংবা হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসাকে গর্বের হিসেবেও উল্লেখ করতে দেখেছি। টিউশনি করে টাকা উপার্জন করে নিজের খরচ মিটিয়ে বাড়িতে টাকা পাঠানোর গর্ব অনুভব করতে দেখেছি আমার হিন্দু-মুসলিম বন্ধুদের। তাই আপনার পর্যবেক্ষণের চেয়ে আমার পর্যবেক্ষণের পার্থক্য প্রকাশ করছি।

০১ লা নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১:৪৯

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ তপনদা।

আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলি :

প্রশ্ন ১ : '৪৭-এর আগেও মুসলমান মধ্যবিত্ত ছিলো, কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে খুবই অল্প এবং শ্রেণীচরিত্রের দিক থেকে খানিকটা সামন্তীয়। যারা জমিদারি, তালুকদারি, শিকদারি, মজুমদারির অধিকার পেয়েছিল, তাদেরকে তখনকার প্রেক্ষাপটে অন্তত মধ্যবিত্ত বলা যায় না।

প্রশ্ন ২ : বাংলা অঞ্চলে মুসলমান মধ্যবিত্তের চেয়ে অন্তত একশ বছর আগে হিন্দু মধ্যবিত্ত গড়ে উঠেছে। একটা শ্রেণী যখন একশ বছর ধরে ধীরে ধীরে নিজেদেরকে থিতু করে নেয়, তখন অনেক খারাপ বৈশিষ্ট্য ঝেড়ে ফেলতে পারে। হিন্দু মধ্যবিত্তদের বেলায় তেমনটি ঘটেছে। তবে এখনও যারা নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত হচ্ছে, তাদের আচরণ মুসলমানদের কাছাকাছি হবার কথা। এখানে ধর্ম কোনো ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে না, করে শ্রেণীচরিত্র।

আপনার শেষের মন্তব্যের ব্যাপারে বলি : মূল লেখায়ই আমি বলেছি - 'ঘনিষ্ট বন্ধুরা ছাড়া কেউ আসল সত্যটা জানতে পারতো না'। অর্থাৎ ঘনিষ্ট বন্ধুরা আসল ব্যাপারটা জানতো। যেমনটি আপনি আপনার বন্ধুদেরটা জেনেছেন বা আমি আমার বন্ধুদেরটা জানতাম। তবে এই বন্ধুদেরকেই অপরিচিত মানুষের কাছে নিজেদের ভুলভাবে পরিচয় দিতে দেখেছি আমি। অবশ্য যারা একটু অগ্রসর চিন্তার ছিলো, তারা এমনটি ঘটতো না।

আমার অভিজ্ঞতা বিচিত্র। বন্ধুত্ব হবার আগে হয়তো জানতাম তার বাড়ি কোনো মফস্বল শহরে, কিন্তু বন্ধু হবার পর জানলাম, শহরে নয়, প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি। সেসব বন্ধুর বাড়িতে আমি গিয়েছিও। তারচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার ছিলো - বন্ধু ছাড়া অন্য কেউ জিজ্ঞেস করলে অধিকাংশ ছেলেই (তাদের সবাই আমার বন্ধু নয়) একটু আমতা আমতা করে মিথ্যে/ভুল পরিচয় দিতো। সামগ্রিক প্রবণতাটা এমনই ছিলো। বন্ধুদের সত্য পরিচয় জেনে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করতে চাইলে হবে না। বন্ধু তো বন্ধুই। বন্ধুর কোন বিষয়টিই বা অজানা থাকে আমাদের?

একদিন এ নিয়ে মজার মজার গল্প বলা যাবে আপনাকে।

ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা নিন।

২০| ০৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:২০

তপন বাগচী বলেছেন: আপনার জবাবের যুক্তিগুলো গ্রহণযোগ্য। তবে আভিজ্ঞতা তো আলাদা হবেই। কিংবা একই ঘটনার ভিন্ন স্বাদ লাভের ব্যাপার তো আছেই। ধন্যবাদ ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য। মধ্যবিত্তের বিকাশ নিয়ে আমিও ভেবেছি। কিন্তু সূত্রাবদ্ধ করতে পারি না।
'বাংলঅ একাডেমী পুরস্কার' পাওয়া এক লেখককে বলতে শুনলাম শরিয়তুল্লাহ হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। আমি বললাম না উনি খাজনাদানকারী প্রজাদের পক্ষে আন্দোলন করেছেন। তার আন্দোলন তাই খাজনা আদায়কারী জমিদারদের বিরুদ্ধে গেছে। এখন ধর্ম ফ্যাক্টর নয়। শাসক ও শাসিতের ব্যাপার। উনি মানলেন না। মজার ব্যাপার হলো শরিয়তুল্লাহ যে জমিদারদের বিরুদ্ধে লাঠি নিয়ে এগিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে হিন্দুও ছিল মুসলিমও ছিল। তারপরেও আমার বক্তব্য তিনি মেনে নিলেন না। এই রকম অভিজ্ঞতাও তো আছে।
একদনি চুটিয়ে আড্ডা দেয়া যাবে। ধন্যবাদ।

০৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ২:১৩

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: যে-কোনো আলোচনায় প্রয়োজনে/অপ্রয়োজনে, প্রাসঙ্গিক/অপ্রাঙ্গিকভাবে ধর্মকে টেনে আনা এক জটিল সাম্প্রদায়িক ব্যাধি। আপনি যে অভিজ্ঞতার কথা বললেন, সেটি তারই একটা উদাহরণ। যিনিই এগুলো করেন, বুঝে নেবেন তিনি হিন্দু/মুসলমান/বৌদ্ধ/খ্রিস্টান/ইহুদি এইসব পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠতে পারেননি।

অনেকদিন ধরে আড্ডা হচ্ছে না! এত বস্ত থাকি আজকাল!! আপনি কেমন আছেন?

২১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:০৬

তপন বাগচী বলেছেন: কীসের ব্যস্ততা আপনার? নিশ্চয়ই লেখালেখির। তাহলে আরো ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। তাতে আমাদের আড্ডার ক্ষতি হলেও আখেরে জাতির লাভ।

২২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:৪৫

বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: ভালো বলেছেন

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৩

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: থ্যাংকস বিমা।

২৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৩:১৯

শূন্য আরণ্যক বলেছেন: চমৎকার লাগলো .........

যারা নিজেদের অতিত স্বীকার করতে পারে না তাদের মানসিকতার উন্নতি হোক ........

আমার দাদা একজন বিস্কুট বিক্রেতা ছিলেন ---এর আগে চাষাবাদ করতেন --
পরিশ্রম করে বড় হওয়ার মাঝে খারাপ কিছু নেই --

পরবর্তি কিস্তি গুলো পড়ছি ~~~~~~~~~``

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৬

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন:
"যারা নিজেদের অতিত স্বীকার করতে পারে না তাদের মানসিকতার উন্নতি হোক ........পরিশ্রম করে বড় হওয়ার মাঝে খারাপ কিছু নেই --"

আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.