নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিন্টুর নগর সংবাদ

কোন পরিচয় চান

মিন্টুর নগর সংবাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৩৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীর দখলে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:০২



পলাতক ৩৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীর দখলে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডপার্শ্ববর্তী দেশ কিংবা কারাগারে থেকেও নীরব চাঁদাবাজি করছে মোস্ট ওয়ান্টেড শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে ৩৮ পলাতক দুর্ধর্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসী ভারতে বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে জীবন যাপন করছে। সেখানে বসেই এরা ঢাকার বড় ধরনের দরপত্র ছিনিয়ে নেয়াসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। এদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা ঢাকা থেকে চাঁদাবাজির যে টাকা পাঠায়, তা দিয়েই চলছে তাদের বিলাসবহুল জীবন। অনেক ব্যবসায়ী ভয়ে সরাসরি ভারতে নির্দিষ্ট সন্ত্রাসীকে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের অনেকেই ১০ থেকে ১৫টি ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে বাংলাদেশে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে। একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত বছরের ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। এ সময় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের তালিকা বিনিময় হয়। এ সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে ৪১ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামের তালিকা ভারতের গোয়েন্দা টিমের হাতে তুলে দেয়া হয়। এর আগে তালিকাটি পুলিশ সদর দফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, ওই তালিকায় নাম থাকা তিন সন্ত্রাসী ইতিমধ্যে মারা গেছেন। একই তালিকায় নাম থাকা সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ সম্প্রতি ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন। এদিকে কয়েক মাস আগে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকেও বিজিবির পক্ষ থেকে এসব সন্ত্রাসীর একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। বিএসএফকে তালিকা ধরে এসব সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে দেশে পাঠাতে অনুরোধ করেছে বিজিবি।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের ঘটনায় অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী নূর হোসেনের পাশাপাশি ভারতে পালিয়ে থাকা ও সেখানকার কারাগারে বন্দি সন্ত্রাসীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নূর হোসেনসহ কয়েক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে শিগগিরই ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, শাহাদাৎ, মুকুল, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জিসানসহ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা দেশের বাইরে থেকে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের অনুসারী সন্ত্রাসীদের দিয়ে বড় ধরনের দরপত্রসহ নিয়ন্ত্রণসহ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। র‌্যাব-পুলিশকে বিষয়টি জানাতেও অনেক ব্যবসায়ী ভয় পান। ভারতে পালিয়ে থাকা কিংবা কারাগারে থাকা এসব দাগী সন্ত্রাসী সেখানে বসেই বাংলাদেশের অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু র‌্যাব ও ডিবির আতঙ্কে তারা সুবিধা করতে পারছে না। এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযোগ পাওয়া গেলেও দেশের বাইরে থাকায় তাদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না।

সন্ত্রাসীরা কে কোথায়: সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘ তদন্তের পর ভারতে পালিয়ে থাকা ৩৮ সন্ত্রাসীর অবস্থান শনাক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করে র‌্যাব। র‌্যাবের ওই তালিকায় দেখা গেছে, ৮টি হত্যা মামলাসহ ১৬টি মামলার আসামি মিরপুরের শাহাদত হোসেনের বর্তমান অবস্থান মুর্শিদাবাদ। ভারতীয় ৭টি মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে দেশে চাঁদাবাজি করছেন। ৪টি হত্যা মামলার আসামি আমিনুল ইসলাম মুকুল ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছেন। নয়াটোলার জিসান ওরফে মন্টু আছেন কলকাতায়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮টি হত্যা মামলা। এর আগে তিনি দুবাই ছিলেন। সেখানে তার নিজের ফ্ল্যাটও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ওয়ারেন্ট আছে।

আগরতলায় আছেন হত্যাসহ ১৩ মামলার আসামি শাহীন সিকদার। চট্টগ্রামের খন্দকার তানভির ইসলাম ওরফে জয় আছেন কলকাতায়। ৮টি হত্যাসহ ২৫ মামলার আসামি মোহাম্মদুপরের নবী হোসেন আছেন আলীপুর জেলে। অন্য সন্ত্রাসীদের মধ্যে ৬ মামলার আসামি আনিসুর রহমান লিটন আছে বনগাঁওয়ের সাতাবাওর এলাকার ভিবায়। অমল কৃষ্ণ মণ্ডলও আছেন বনগাঁওয়ে। তার বিরুদ্ধে ৩টি হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে। তৌফিকুল আলম খান ওরফে পিয়াল খানও আছেন বনগাঁওয়ে। ৮ মামলার আসামি তিনি। ত্রিপুরাতে অবস্থান করছেন মামুনুর রশীদ মামুন। ৪টি হত্যাসহ ১৭টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাঝেমধ্যে তিনি বাংলাদেশে আসেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, কলকাতায় অবস্থান করছেন পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ ও শামীম আহমেদ ওরফে আগা শামীম। পুরস্কার ঘোষিত অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী খন্দকার তানভিরুল ইসলাম জয় স্থায়ী ঘাঁটি গেড়েছেন কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায়। নিজে বাড়ি কিনে সেখানেই ৫-৬ বছর ধরে অবস্থান করছেন এই সন্ত্রাসী।

এদিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসিন্দা শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ বসবাস করতেন মুর্শিদাবাদ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গত রোববার বিকেলে ভারত থেকে বাংলাদেশের পুলিশকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। এছাড়া নদীয়ার করিমপুর থানার বকসীপুরে থাকেন চরমপন্থি নেতা এনামুল হক এনা। তারও নিজের বাড়ি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৫টি হত্যাসহ ৯টি মামলা। চট্টগ্রামের নুরুল আলম প্রকাশ ওরফে এতিম প্রকাশ থাকেন কলকাতায়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি হত্যাসহ ১৬টি মামলা। এর বাইরে মনু থাকেন শিলিগুড়ি, মাসুদ থাকেন আগরতলা ও পুরস্কার ঘোষিত অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাস রয়েছেন কলকাতায়।

অপরদিকে সন্ত্রাসী শাহী ওরফে রুমী, নরোত্তম সাহা ওরফে আশিক, কালু, চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সুনীল কান্তি দে, গৌতম চন্দ্র শীল ওরফে গৌতম চেয়ারম্যান, চপল, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, বাবু ওরফে মিরপুর বাবু, মিন্টু, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী হারিছ আহমেদ, আতাউর রহমান আতা, হালিম, জাফর আহমেদ ওরফে মানিক, কালাচাঁন ওরফে চাঁন, মিনহাজ উদ্দিন ওরফে দুখু, সিদ্দিক, তৈমুর, মোর্শেদ খান, রাজিব দত্ত ওরফে প্রকাশ, সাজ্জাদ খান, শহিদুল ইসলাম ও ইব্রাহিম খলিলের ভারতের অবস্থানের ঠিকানা শনাক্ত করেছে র‌্যাব।

এ বিষয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান মানবকণ্ঠকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউই এখন আর দেশে নেই। সবারই অবস্থান সীমান্তের ওপারে। এসব সন্ত্রাসীর নাম ব্যবহার করে মাঝেমধ্যে কিছু চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। এসব সন্ত্রাসীর কর্মকাণ্ডের দিকে র‌্যাবের নজরদারি রয়েছে।

একই বিষয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে। সন্ত্রাসীরা কোনোক্রমে দেশে এলে র‌্যাবের গোয়েন্দা জালে আটকা পড়বেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.