নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিদেশী সংস্কৃতি ছেড়ে আপন শিকর চেনার চেষ্টা করি......

আমু

আমি একজন সাধারণ মানুষ। বই পড়ার ইচ্ছে আগে থেকেই কিন্তু সময় এর অভাবে বই নিয়ে বসা হয় না। কিন্তু অনলাইন এ থাকা হয় তাই ব্লগ এ কিছু সময় দেয়া এতে অনেক কিছু পড়া ও জানা হয়ে যায়।

আমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামদানি কথন ৪

০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:২৯

জামদানি কথন ১,২,৩ এর পর জামদানি কথন এর ৪ নাম্বার লেখার উদ্দেশ্য নিয়ে আজ লেখা শুরু করলাম।
জামদানি কথন ১,২,৩ লেখার পর অনেক এ বলেছেন যে খুব ভাল হয়েছে চালিয়ে যান, আরও জামদানি সম্পর্কে লিখুন। আমরা সাধারন ক্রেতা যাতে ভাল জামদানি চিনতে পারি সে ব্যপারে আমাদের সামনে তুলে ধরুন। আবার ঠিক এর উল্টোটাও শুনেছি যে ক্রেতাদের এত কিছু জানিয়ে কি লাভ? তারা জামদানি কেনার দরকার কিনবে, এত বিঝুয়ে কি হবে? আপনি বুঝাতে থাকেন আমরা আমাদের মত বিক্রি করতে থাকি।
এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেছেন যে কারা চায় না সাধারন ক্রেতা পর্যন্ত আসল কথাগুলো পৌঁছাক। আসলে জামদানি নিয়ে আমি ব্যবসা শুরু করেছি শুধু আমার লাভ এর আসায় না। সাথে সাথে অরিজিনাল তাঁতিদের যাতে কিছু লাভ হয় সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি। যদি অরিজিনাল তাঁতিরা এই পেশা ছেড়ে চলে যান তাহলে এই জামদানি হারিয়ে যেতে খুব বেশী সময় লাগবে না মসলিন এর মত।
আমাদের দেশে অনেক বড় বড় ফ্যাশন হাউজ আছেন যারা অনেক বেশী প্রতিষ্ঠিত। তারা মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে যেভাবে খুশি ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তারা এক কথায় সাধারন ক্রেতাদের সাথে প্রতারনা করছেন। এখন যদি আমি তাদের নাম বলা শুরু করি আপনারাই আমাকে উল্টা ভুল বুঝবেন এবং বলবেন আমি মিথ্যা বলছি। তারা যে আপনাদের সাথে কিভাবে প্রতারনা করছেন তা আজ তুলে ধরব।
বর্তমানে ৩ ধরনের জামদানি শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। যেটি আমি আমার জামদানি কথন ২ লেখায় বলেছিলাম এবং এর সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছিলাম।এখন বিস্তারিত বলি সেগুলো সম্পর্কে।
১. মেশিন এর জামদানিঃ বর্তমানে মার্কেটে সবচেয়ে কম দামে যে জামদানি গুলো পাওয়া যাচ্ছে আপনি নিশ্চিন্তে ধরে নিবেন যে এগুলো মেশিন এর তৈরি।এগুলো সম্পূর্ণ মেশিনে তৈরি হয়ে থাকে। একজন তাঁতি একাই ২ দিনে একটি শাড়ি তৈরি করে থাকেন।যেখানে হাফ সিল্ক জামদানি তৈরিতে ২ জন তাঁতির ৭ দিন সময় লেগে থাকে কমপক্ষে। মেশিনে বানানো জামদানির দাম সবচেয়ে কম হয়ে থাকে। সাধারনত ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন। কেউ কেউ এই মেশিন জামদানিকে হাফ সিল্ক বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।
২. নাইলন এর জামদানিঃ বর্তমানে বড় বড় ফ্যাশন হাউজ এবং বড় বড় জামদানি অনলাইন শপ অথবা মার্কেটের দোকান গুলোতে সবচেয়ে বেশী বিক্রি হচ্ছে এই জামদানি গুলো। জামদানি বলতে মূলত বর্তমানে ক্রেতাদেরকে এই শারিটিকেই জামদানি বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। শাড়িটি জামদানি কিন্তু বিক্রেতারা এটিকে হাফ সিল্ক (রেশমি) জামদানি বলে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা জামদানি শাড়ি না চেনার ফলে এবং কন দামে পাচ্ছেন বলে এই জামদানিগুলোকে লুফে নিচ্ছেন খুব। কিন্তু বেশী দিন ব্যবহার করতে না পারার ফলে জামদানির প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলছেন অনেক এ। সাধারণত ১৫০০ থেকে ৭০০০/৮০০০ টাকায় এই জামদানিগুলো বিক্রি করে থাকেন।
৩ কটন (সূতী) জামদানিঃ জামদানি মূলত ২ প্রকারের মাঝে সূতী জামদানি একটি। জামদানি শাড়িগুলো সূতী কাপরের উপর খুব সুন্দর ভাবে তাঁতিরা নকশা করে থাকেন। যারা হাফ সিল্ক পরতে সাচ্ছন্দবোধ করেন না তারা অনেকে সূতী জামদানি পরে থাকেন। এই জামদানি শাড়িগুলো সাধারনত ৩০০০ থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে।
৪. হাফ সিল্ক (রেশমি) ঃ জামদানি শাড়ি বলতে আমরা মূলত যেটি বুঝে থাকি বা ক্রেতারা যেটি খুজে থাকেন সেটিই সচ্ছে হাফ সিল্ক এর জামদানি। একটি জামদানি তৈরিতে ২ জন তাঁতির ৭ দিন থেকে ৩০ দিন এমনকি ২/৩ মাস সময় ও লেগে যায়। এই জামদানি শাড়িগুলোর নামেই যে যভাবে পারছে মেশিন এবং নাইলনের জামদানিগুলো বিক্রি করে যাচ্ছেন। এতে লাভবান হচ্ছেন বিক্রেতা এবং মেশিন এর জামদানি তৈরি কারিগরেরা। কিন্তু ঠকে চলেছেন ক্রেতা এবং অরিজিনাল হাতে বোনা জামদানি তাঁতিরা। এই জামদানি সাধারনত ২৫০০ থেকে শুরু করে ৪০০০০/৫০০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়ে থাকে।

এখন আসি মূল কথায়। যদিও উপরের ৪টি শাড়িই জামদানি শাড়ি কিন্তু আমার কথা হচ্ছে আমরা যারা জামদানি শাড়ি ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করছি আমরা কেন সত্যি বলে বিক্রি করতে পারি না? আমরা কেন ক্রেতাদের বুঝাতে ভয় পাই যে কোনটা কি শাড়ি। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ক্রেতাদেরকে সঠিক তথ্য দেয়া ক্রেতা তার পছন্দ এবং বাজেট অনুসারে যেটি ভাল লাগবে সেটি কিনে নিবেন।
আমাদের বড় বড় দোকান মালিক এবং ফ্যাশন হাউজ মালিকদের ইদানিং দেখছি মেশিন এর জামদানিগুলোকে নানা ধরনের মডিফিকেশন করে হাফ সিল্ক নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। জামদানি নিয়ে নতুন কিছু করছেন খুব ভাল জিনিষ। আমিও তাতে সাধুবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আপনারা সত্যি কথা বলে কেন বিক্রি করছেন না প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও??
আমার এ লেখার আসল কথাই হচ্ছে যে ক্রেতাদের সত্যি বলেই তাদের জামদানি সম্পর্কে ধারনা দিয়েই জামদানি বিক্রি করুন। এতে ক্রেতারাও সত্যিটা যেনেই কিনল এবং মেশিন ও আসল হাঁতে নকশা করা তাতিরাও বেঁচে গেল। সর্বোপরি জামদানি শিল্পটা ই বেঁচে যাক। জামদানি নিয়ে আমরা আবার ও বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াই।
জামদানি শাড়ি বুঝে শুনে কেনা বেচা করুন, জামদানি শিল্পটাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩৫

এস আলভী বলেছেন: অনেক প্রতিক্ষার পর ফ্রন্টপেইজ একসেস দেওয়ায় ব্লগ কর্তৃপক্ষকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আপনার লেখায় আমি আজ প্রথম মন্তব্য করার সুযোগ পেয়ে গর্ব বোধ করছি।
নতুন ব্লগার হিসাবে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

জেকলেট বলেছেন: সুন্দর ও তথ্যপূ্র্ন পোস্ট।

হাফ সিল্ক ও নাইলন এর জামদানি আলাদা চিনব কেমনে???

৩| ১২ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:১৭

আমু বলেছেন: জামদানি শাড়ি চেনার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। সেগুলো নিয়ে পরের পোষ্ট এ লিখব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.