নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বন্দি কারাগারে

আমি বন্দি কারাগারে

আমি বন্দি

আমি বন্দি কারাগারে

আমি বন্দি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক টান সিগারেটের ধোয়ায় একটি জীবন

২৫ শে মে, ২০১৫ সকাল ৭:০৩

১।
বরিশাইল্লা লিটন । ওর ভাল নাম ছিল লিটন । দেশের বাড়ি বরিশালে থাকায় অনেকে বরিশাইল্লা লিটন বলে ডাকতো ।
সেই ছোট বেলা থেকে লিটন শহরে আছে । ওর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন ওর বাবা মৃত্যুর দেশে পাড়ি জমান । লিটনকে আর তার দুবছরে ছোট বোন বেণুকে নিয়ে মা কুলছুম বেগম মহল্লার মানুষের বাসায় কাজ করে জীবন সংগ্রামে লেগে যান ।
বাবা মরে যাওয়ায় লিটন লেখা পড়ার জন্য স্কুলে যেতে পারলো না । অভাবি সংসার মা বোন মিলিয়ে তাদের তিনজনের ছোট সংসার ।
লিটনকে মহল্লার লালু ভাই খুব আদর করতেন । লালু ভাই ছিলেন ঐ মহল্লার একজন নেতা । লিটনকে বলতে গেলে ওর নাম শেখান
থেকে শুরু করে ওযে দু এক কলম একটু আকটু লেখতে জানে তা সবই লালু ভাই শিখাইয়া দিছে ।
আস্তে আস্তে লিটন বড় হলো । লিটন এখন মহল্লায় অনেক নেতাদের আদরের ছোট নেতা লিটন বলে খেতাব পেলেন ।
লিটন এখন পরিপূর্ণ কর্মী ছেলেও হয়ে গেলেন । এখন আর ওর মাকে কষ্ট করে মানুষের বাসায় ছেলে মেয়ের চিন্তা করে কাজ করতে হয় না । লিটন ভাল ইনকামই করেন । তাদের সংসার চালিয়ে গত কয়েক বছরে বরিশাল তাদের গ্রামে বাড়ির জন্য কিছু জমি ও খেতের কিছু জমিজামা কিনেছে । লিটন এখন স্বপ্ন দেখে
ওখানে বাড়ি করবে লিটন বোন বেণুকে একটি ভাল পাত্র দেখে তার হাতে তুলে দেওয়া তার পর সে বিয়ে করবে,সংসারি হবে । লিটনের ছোট বোন বেণু সেও এখন আর সেই ছোট্রটি নেই,সেও
এখন দেখতে শুন্তে বেশ বড় ও বিয়ের লাইক হইয়া গেছে ।
লিটনের মা তার এখন ভাবনা মেয়ে বেণুকে একটি ভাল ছেলে দেখে তার হাতে মেয়েটিকে তুলে দিতে পারলে আর লিটনের জন্য একটি সুন্দর পুতুলের মতন বউ আনা । মা বসে ভাবেন মেয়েকে আগে এ বছর বিয়ে দেব । তার পর নতুন বাড়ি হবে তার
সাথে ছেলের জন্য নতুন বউ আনবো । সে দিন লিটনের ছুটির দিন ছিল দুপুরে খেতে বসে লিটন বেণুকে দেখতে না পেয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করলো তার কথা । মা বললো ও একটু ওর পাশের বাসায়
বান্ধবী রিতুগো বাসায় গেছে । লিটন মাকে বললো মা দেখতে দেখতে আজ কতটা বছর পার হয়ে গেল বাবা মারা গেছে । বেণুও
আজ কত বড় হয়েগেছে ওর জন্য একটি ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দিতে হবে । মা বললো হ রে বাবা লিটন তোর চাচাত ভাই মনিরের
লেইগা হেরা বেণুরে চায় তুই কি কছ ? লিটন বললো মা তুমিই আমাগো বাবা তুমি আমাগো মা তুমি যা ভাল মনে কর তাই কর ।
হরে বাবা বেণুরে বিয়া দিয়ে তোর বউ ঘরে তুলতে পারলেই আমার তোদের প্রতি কর্তব্য শেষ । হের পরে আমি মরে গেলেও আর কোন কষ্ট থাকব না ।
২।
লিটনের মা তার চাচারে আসার জন্য সংবাদ দিল । কয়েক দিন বাদে লিটনের চাচা ঢাকায় আসল । লিটনের মা তার সাথে কথা বলে দিন তারিখ ঠিক করল । সামনের মাসে শেষ জুন্মার দিবা যেয়ে রাত্রে শুভ কাজ সম্পন্য করা হবে ।
রাতেই চাচা বাড়ি চলে গেল লিটন চাচাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে তার কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে রাত প্রায় বারটা বাজতে চলছে । লিটন বাসায় যাওয়ার আগে তাদের মহল্লায় একটি চায়ের দোকান আছে ও প্রায়দিন বসে বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করে সে চায়ের দোকানে । সে দিনও প্রতিদিনের মত ওখানে বসে চা খেতেছিল,এমন সময় মহল্লার ছোট ভাই নুরুল সাহেবের ছেলে সুমন এসে দোকান থেকে একটি সিগারেট নিল । সিগারেট নিয়ে সুমন লিটনের সামনে তা টান দিয়ে ধোয়া ছাড়ল । লিটন ওকে বললো কিরে সুমন বড় হয়ে গেছ না বড় ভাইদের সামনে সিগারেট টানতেছর ।
সুমন লিটনকে বললো কি হয়ছে মিয়া সিগারেট খাইছি । এত
সিনিয়ার সিনিয়ার করেন ক্যা সিনিয়ার হইছেন দেইখা কি একেবারে গোটা দেশ কিনে ফেলছেন নাক ?
সুমন ভালো হইতেছে না কিন্তু কেন লিটন কি করবি ? বলতেই
লিটন সুমনকে একটি চর দিল ।
পাশে আর দু চারজন ছিল তারাও সুমনরে ধমক দিয়ে বাড়িতে পাঠাইয়া দিল । লিটনকে বুঝাইয়া বাসায় পাঠাইয়া দিলেন । লিটন
বাসায় চলে গেল । পরদিন লিটন বেশ দূরের একটি কাজে গেলেন ।
কাজ শেষ করে আসতে লিটনের অনেক রাত্র হয়েগেল । ঐ দিনও লিটন সেই চায়ের দোকানে বসে এক কাপ চা খেলেন কিছু সময় বসে আড্ডা দিলেন ।
দোকানের মালিক দোকান বন্ধ করলেন লিটনও উঠে হাতা শুরু করলেন বাসার দিকে । বাসার কাছাকাছি যেতেই লিটনকে কে যেন পিছন থেকে তার মাথায় একটি আঘাত করল । লিটন বললো কে কে বলতেই আবার তার গারে ওপর আঘাত । এবার লিটন অনেক কষ্ট হলেও পিছু ফিরল সে দেখে সুমন ও তার চার পাঁচজন বন্ধু । লিটন সুমন বলে চিৎকার দিয়ে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করে, ততক্ষনে লিটনের শরীরে কয়েকটি চাপটি ও মাথায় দুটি চাপটির কোপ পড়ে । লিটন মাটিতে শুয়ে পড়ে তার গলা থেকে আস্তে আস্তে কয়েক বার কে আছ আমায় বাঁচাও কে আছ আমায় বাঁচাও । সুমন বলে তোর সিনিয়ার গীরি আজ এখানেই শেষ । লিটনের চোখ দুটি ক্রমসো অন্ধকার হয়ে আছে । লিটনের চোখদুটি বন্ধ হয়ে যায় ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪

বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: আসাধারণ লেখা । ভালোলাগলো পড়ে গল্পটি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.