![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমাকে একটি নতুন সকাল এনে দিবো ...
চতুর্থ পর্বের পর...
২০০৪ সালের প্রথম দিকেই শারীরিক সমস্যায় পড়ি , এবং দীর্ঘ চার বছর ভোগার পর ২০০৭ সালের শেষের দিকে একটা একটা করে সমস্যার সমাধান হতে থাকে । প্রথমে হয় পেট ব্যাথার সমাধান।
এর আগে ডাক্তারের চিকিৎসায় যখন কাজ হচ্ছিলো না তখন কিছুদিন হোমিও চিকিৎসা করাই , তারপর কবিরাজের পরামর্শে কয়েকটি হাতের আঙ্গুলে আংটি নেই । দুর্বলতার জন্য ডায়বেটিকস টেস্ট করি । কিন্তু না কিছুতেই কিছু হচ্ছিলো না ।
অবশেষে একজনের পরামর্শে একদিন জয়দেবপুরে যাই হামদর্দ চিকিৎসা কেন্দ্রে । সব কাহিনী খুলে বলি । তারা আমাকে বেশ কিছু ঔষধ দেয় । ঔষধ গুলি কিছু দিন খাবার পর আমার মনে হয় অন্য সমস্যা গুলি না কমলেও আমার পেটের ব্যথা অনেকটা কমে গেছে। তার পর আস্তে আস্তে পেটের সমস্যা বলতে গেলে ভালোই হয়ে যায় । তবে একটা ঔষধ এখনও খেয়ে যাচ্ছি এবং সুস্থ আছি। ঔষধের নাম সফূফ মোইয়া ।
পেটের সমস্যা ভালো হবার পর বাকি থাকলো ঘুম ও দুর্বলতা সমস্য । তবে একটা সমস্যা সমাধান হওয়াতেই মনে অনেক বল পাই । নিউরোমেডিসিন ডাক্তার যখন ঘুমের সমাধান করতে পারছিলো না তখন একদিন গেলাম মানসিক ডাক্তারের কাছে ।এটা ২০০৭ সালের মাঝা মাঝি । প্রফেসর ডাক্তার, আমাকে ভালো করে না দেখেই দুইটি ঔষধ লিখে দেয় । একটি মিরটাজাপাইন গ্রুপের , আর একটি কিজানি ছিলো ।
সন্ধার সময় ঔষধ খাই , কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ৯ টার আগেই আমার চোখে ঘুম চলে আসে । ঘুম কি ঘুম, বেদুর ঘুম । যেখানে ডবল ঘুমের ঔষধ খেয়েও রাত ২ - ৩ টা পর্যন্ত ছটফট করেছি । তারপর ঘুম আসলেও হালকা ঘুম আসতো সেখানে ৯ টার মধ্যেই এমন জম ঘুম, খুশিতে আমার মনটা ভরে যায় ।
পরের দিন বিকাল বেলাতেই আমার মনটা খুশি খুশি লাগে যে আজও বেদুর ঘুম হবে । সত্যিই তাই । এক মাসের মধ্যে আমার দুর্বলতাও কমে যায় । আলহামদুলিল্লাহ !
একদিন বাড়ি থেকে ফোন আসে, বলে একটি পুরাতন সমন্ধ নতুন করে এসেছে । প্রায় এক বছর আগে আমরা একটি মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম, মেয়ে পক্ষও আমাদের বাড়ি ঘর দেখে গেছে । তারপর মেয়ের লেখাপড়ার কথা বলে (আসলে মেয়ে কিছুটা কম রাজী ছিলো) সম্পর্কটা আর আগাই নাই ।
এক বছর পর তারা আবার ঘটকের মাধ্যমে খবর পাঠায়। যেহেতু এক বছর আগে দেখেছিলাম তাই মেয়ের চেহারা অনেকটা মনে নেই। তাছাড়া আমরা দেখেছিলাম রাতের বেলা আর মেয়েটা কিছুটা কলো ছিলো তবে বেশ লম্বা । দেখতে প্রায় আমার সমান সমান মনে হয় ।
যাই হোক মেয়েটাকে আবার দেখতে চাই। অবিভাবকরা বললো আমরা তো দেখেছিলামই তাই নতুন করে শুধু ছেলে আর মেয়েই দেখা করুক । অবশেষে ঠিক হলো মেয়ে যেহেতু ময়মনসিংহ মমিননেছাতে পড়ে কজেই সেখানেই দেখা করুক । একদিন গাজীপুর থেকে ছুটলাম ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে । এর আগে ফোনে দু-এক দিন পাত্রীর সাথে কথা হয় ।
টাঙ্গাইল বস স্টেন্ডএ তাদের সাথে আমার দেখা হয় । পাত্রীর সাথে ছিলো তার বড় আপা । তিনি ময়মনসিংহ হয়ে শশুর বড়ি যাচ্ছিলেন , যাবার সময় পাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে যান । আপার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুজনে হাঁটতে হাঁটতে গেলাম ব্রহ্মপুত্র নদের ধারে ।
হবু বউকে দেখে তো আমি টাসকি খাইলাম। এক বছর আগে যখন তাকে দেখেছিলাম তখন ছিলো রাতের বেলা , শীতের সিজন, আর আমরা হুট করে গিয়েছিলাম বলে তার পরনে ছিলো সাধারণ বাসায় পড়া জামা । কিন্তু আজকে তাকে রানীর মত লাগছে , কমলা রং এর জামার সাথে বিকেলের রোদে তার গায়ের রং ঝলমল করছে । যখন অসুস্থ ছিলাম তখন দেখতে কত পচা মেয়েকেও বিয়ে করতে রাজি ছিলাম মনে হতেই মনটা আরো হবু বউ এর প্রতি দ্বিগুন ভালোলাগায় ভরে গেলো ।
অপর দিকে হবু বউ এক বছর আগে যখন আমি অসুস্থ ছিলাম শারিরিক ও মানসিক ভবে তখন দেখতে যেমন ছিলাম তেমন কল্পনা করে বসে আছে । কিন্তু বর্তমানে আমার শারিরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখে তো সে খুশিতে নয়খানা (আটখানা+আরো একখানা)
আমরা একটি গাছের ছায়ায় বসলাম । অল্প কিছু কথা হলো কিন্তু মনে মনে হলো অনেক কথা যার প্রকাশ আমাদের দুজনেরই চোখে মুখে প্রকাশ পাচ্ছিলো । আমি ব্যাগে কিছু খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম তাকে খেতে বললাম সে কিছু খেলো না । আমি খেলাম , সেই সকালে খেয়ে বের হয়েছি এবং প্রায় ৩-৪ ঘন্টা জার্নি করে এসেছি ।
আমি ব্যাগে ক্যামেরা নিয়ে ছিলাম । ছবি তুলার কথা বলে তার কয়েক মিনিট ভিডিও করে রাখলাম । আর তাকে দিলাম কয়েকদিন আগে তুলা আমার কয়েকটি ছবির মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ছবিটি । তাকে একটা ব্যাসলেট গিফ্ট করলাম যেটা আমি আগেই প্লান করে কিনেছিলাম । আর দিলাম কয়েকটি চকলেট ।
যেহেতু আমাকে সেদিনই ঢাকায় ফিরতে হবে তাই দ্রুত তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসে চড়লাম । বাসে বসে মনের ভালোলাগা মিশিয়ে তাকে কয়েকটা এসএমএস লিখলাম।(আমার এসএমএস গুলিই নাকি তাকে ঘায়েল করেছিলো) এসএমএস লিখার সময় খেয়াল করলাম আমার মোবাইলের চার্জ কমে আসছে । এবং তার কিছু খন পরে বন্ধই হয়ে গেলো ।
রাস্তায় জ্যাম থাকার কারনে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগলো ঢাকায় পৌঁছতে । ঐদিকে আমার হবু বউ মোবাইল বন্ধ পেয়ে রাজ্যের কু-চিন্তা কু-ভাবনা তার মাথায় ভির করতে থাকে।আর আমি ম্যাস এ ফিরেও খুশিতে মোবাইল চার্জ দেবার কথা ভুলে যাই । অবশেষে আমার বউ থাকতে না পেরে শশুরকে বিষয়টা জানায় এবং তার অনুরোধেই শশুর মশাই আমাদের বাড়িতে ফোন দেয় এবং ঘটনাটা বলে আমার আরো নাম্বার আছে কিনা জানতে চায় । বাড়ি থেকে আমাকে ট্রায় করেও বন্ধ পায় এবং তাদের জানায় আমার আর কোনো নাম্বার নেই।
এরই মধ্যে আমার মোবাইল খানা অন করি । অন করার সাথে সাথে বাড়ি থেকে ও শশুর বাড়ি থেকে এক সাথে কল আসে । একটা ইনকামিং আর একটা ওয়েটিং । তাদের সাথে কথা বলে বিষয়টার গভীরতা আঁচ করতে পারি । এবং শুনতে পাই এরই মধ্য আমার বউ নাকি তার কপাল নিয়ে কয়েকটি মন্তব্য করে ফেলেছে । আর বুঝতে পারি এই আমি আর সেই আমি (ব্যাচলর) নাই...
চলবে......
আগের পর্বগুলি -
পর্ব এক
পর্ব দুই
পর্ব তিন
পর্ব চার
১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
আপনার মত পাঠক পেলে চলবে ইনশাআল্লাহ!
২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
দি সুফি বলেছেন: ভালো লাগল।
চালিয়ে যান।
১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
ধন্যবাদ !
চালিয়ে যাবার ইচ্ছা আছে !!!
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
আদম_ বলেছেন: বাহ মজা তো। প্রিয়তে। চলুক চলুক।