নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসা প্রসঙ্গে

০৬ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১২

আমি যাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসি তার বিরুদ্ধে নিন্দা গেয়ে কোন নিন্দুক আমার সামান্যতম ভালবাসাও পেতে পারবে না। স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির আর সৃষ্টির সাথে সৃষ্টির ভালবাসার শক্তি কখনই সমান নয়। এটা ঠিক প্রকৃত ভালবাসা ভালবাসাই।এটা কেড়েও নেয়া যায়না, ফেলেও দেয়া যায়না। হৃদয় থেকে উৎসারিত ভালবাসা আর বাইরে থেকে উৎসারিত ভালবাসার রুপ ভিন্ন। যে স্রষ্টার প্রেমের সাগরে সাতার কাটে সৃষ্টির প্রেমও তার কাছে অফুরন্ত প্রাণশক্তি সৃষ্টির এক প্রেরণাদায়ক উপাদান।



খাঁটি ভালবাসা স্বর্গ থেকে আসা এক পবিত্র অনুভূতি; যার জাগতিক বস্তুগত কোন বিনিময়ই যথার্থ হতে পারে না। আপনি তীব্রভাবে পিপাসার্ত অবস্থায় সঙ্গীতের সুরালো ঝংকারেও যখন বিরক্ত হন; তখন যে আপনার পিপাসা নিবারণে সুপেয় খাবার পানি সরবরাহ করে নি:সন্দেহে আপনি তার ওপর সন্তুষ্ট হন। যে আপনার জীবনকে স্বার্থক ও অর্থবহ রাখার প্রয়োজনীয় আয়োজন আপনার চাওয়ার আগেই করে রেখেছেন তার অস্তিত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও কৃতজ্ঞতা জানানোতো সাধারণ সৌজন্যতার পর্যারয়েও পরে।



যেই ভালবাসা হৃষ্টপুষ্ট মানিব্যাগ, ব্যাংক ব্যালেন্স, গাড়ি বাড়ির দ্বারা অর্জন করা যায়; মন লাগেনা, হৃদয়ের আবেগ লাগে না- সেই ভালবাসা প্রকৃত ভালবাসা নয়।যাকে ভালবাসতেই হবে তার দোষ খুঁজে কি লাভ? মনে রাখতে হবে, যে তীব্রভাবে ভালবাসতে পারে বৃহত্তর কোন ত্যাগ তার পক্ষেই করা সম্ভব।ভালথাকার জন্যে ভালবাসা যতটা জরুরী, ভালবাসার জন্যে ভালথাকা ততটা জরুরী নয়।ভালবাসার সক্ষমতা যখন ভুলে যেতে পারার অক্ষমতা হয়- ভালবাসা তখনই স্বার্থক হয়ে ওঠে।



খাঁটি প্রেমিক তিনিই যার মাঝে প্রেমানুভূতি সার্বক্ষণিক বিরাজমান; প্রেমপূর্ণ আবেগ তৈরির জন্যে আলাদা কোন আয়োজন করতে হয় না। নিজের চেয়েও প্রিয় কারো প্রেমেই সব মুহব্বতকে তুচ্ছ করে নিজেকে নিবেদন করা যায়। যখন আপনি কাউকে নিজের চেয়েও বেশি পেয়ার করবেন, কোন এক দুর্বার আকর্ষণ আপনাকে তাড়িত করে তার কাছাকাছি নিয়ে যাবে।তখন আপনাকে দেখলেই অন্যরা বুঝে ফেলবে আপনি কারো প্রেমে পড়েছেন, মুখের কিংবা কলমের ভাষার দরকার হবে না। যতদিন আপনার ভেতরে প্রেমভাবের উদয় হওয়া সত্ত্বেও তা লুকায়ে রাখা সম্ভবপর হবে ততদিন আপনি প্রেমের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করেন নি।



দুটি সৃষ্টি কিংবা শিল্পকর্মের মধ্যকার আন্ত:সম্পর্ক আর স্রষ্টা-সৃষ্টি কিংবা শিল্পী-শিল্পকর্মের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কের ভিন্নতা না বুঝে ভালবাসা পরিমাপের যৌক্তিক কোন মাপকাঠি দাঁড় করানো যাবে না।কবির আবেগ অনুভূতি ও পাঠকের আবেগ অনুভূতির মাত্রার ক্ষেত্রে যেমন ভিন্নতা থাকতে পারে, শিল্পীর চোখে দেখা শিল্পের শৈল্পিক সৌন্দর্য আর সাধারণ দর্শকের চোখে দেখা শিল্পী সংক্রান্ত ধারণাও শিল্পকর্মের শৈল্পিক সৌন্দর্যর অনুধাবনের ক্ষেত্রে তেমন ভিন্নতা থাকতে পারে।ফলে পরিপূর্ণ রুপ দেখতে চাইলে শুধু সৃষ্টির চোখে স্রষ্টা কিংবা সৃষ্টিকে দেখা যথেষ্ট নয়; স্রষ্টার চোখে সৃষ্টি ও স্রষ্টাকে দেখা শিখতে হবে।



বিশ্বাসগত ভিন্নতা থাকলে উপলব্ধিগত ভিন্নতা থাকবেই। নাস্তিকের চর্মচক্ষু আর আস্তিকের চর্মচক্ষু একই তবে অন্তর্চক্ষুর ভিন্নতার কারণে উভয়ের দেখার একই অর্থ বহন না করাটাই স্বাভাবিক।যুক্তি পেলে আপনি মুক্তি নাও পেতে পারেন কিন্তু মুক্তির স্বাদ পেলে অবশ্যই যুক্তির সন্ধান মিলবে। ফলে যুক্তির চেয়ে মুক্তি বড়।



ভাললাগা থেকে যে ভালবাসা হয় সেই ভালবাসা স্থায়ী নাও হতে পারে তবে ভালবাসা থেকে ভাললাগা হলে তা অবশ্যই স্থায়ী হবে।ভাললাগা নয় ভালবাসাটাই মুখ্য হওয়া উচিৎ। ভাললাগার জগতের চেয়ে ভালবাসার জগত বেশি কার্যওকর।ভালবাসার জগতে অন্যকে হারিয়ে নিজেকে বিজয়ী করার মানসিকতা নেই, অন্যকে পেছনে ঠেলার প্রতিযোগিতা নেই; অন্যকে এগিয়ে দিয়ে নিজেকে সুখি ভাবার মানসিকতা আছে।



স্রষ্টার সত্যিকারের প্রেমিক কোন সৃষ্টিকেই ঘৃণা করতে পারে না। ফলে ভালবাসাটা যতবেশি শক্তিশালী হতে থাকে সংকীর্ণতা ততই বেশি দূরে চলে যেতে থাকে।ভালবাসা পবিত্র তাই পবিত্র ভালবাসা অপবিত্র মানুষের দ্বারা হয়না।ভালবাসা যেখানে যতবেশি বিনিময়যোগ্য সেখানে ভালবাসার ভিত্তি ততবেশি নড়বড়ে।খাঁটি ভালবাসা এজগতের অতি সস্তা ও সহজলভ্য কিছু নয়; ভীষণ মূল্যবান-সবচেয়ে দামি। ভালবাসাবোধ আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্যে সর্বশ্রেষ্ট উপহার।



হৃদয়ের আকুলতা ও ব্যাকুলতা যখন পবিত্র ভালবাসার সক্রিয়তা ও ব্যাপকতাকে নিশ্চিত করার দিকে এগিয়ে যায় তখন প্রেম নদীও প্রেম সাগরে রুপান্তরিত হয়।হৃদয়ের ভালবাসার ঢেউ জগতে পড়তে হবে, জগতের ভালবাসার ঢেউ হৃদয়ে পড়াটাই যথেষ্ট নয়। হৃদয় না জাগলে জগৎ জাগবে না।এটাও অবশ্য অস্বীকার করা যাবে না যে, ব্যক্তিক শুদ্ধতাও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে ত্রুটিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থায়। অন্তর যদি আলোকিত হয় সে আলো নিভে যাবে-এমন কোন আশংকা নেই।



কেউ যদি বলে- আমার ভালবাসা হৃদয়কে অশান্ত করেছে, মনের অস্থিরতাকে বৃদ্ধি করেছে; তাকে জানাতে হবে- এটা ভালবাসা নয় মোহ। প্রকৃত ভালবাসা- বিবেককে পরিচ্ছন্ন করে, হিম্মত বাড়ায়। আত্মমর্যােদাবোধ, অপরের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও সম্মানবোধে ব্যক্তিত্ববানের পরিচায়ক আর অহংবোধে রুচিহীনতা ও পশ্চাদপদতার নামান্তর। ভালবাসা পূর্ণতা থেকে সুন্দর কিছু সৃষ্টি হয় আর ভালবাসা শূণ্যতা থেকে সুন্দর কিছু ধ্বংস হয়ে অসুন্দর কিছু সৃষ্টি হয়।



সব আশক-তো আর সমান নয়।ভালবাসার কয়েকটি পর্যাৃয় আছে। ১. ভালবাসা থেকে কিছু পেতে চায়। কিছু পাবার আকাংখা থাকে। হৃদয়ঘটিত না হয়ে প্রয়োজন পূরণ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপার থাকে। যেমন- আমার সম্পদ বাড়ায়ে দাও, জ্ঞান বাড়ায়ে দাও, বিপদ দূর করে দাও-ইত্যাদি। ২.শুধুই ভালবাসা পেতে চায়। ভালবাসা ছাড়া অন্য কিছু প্রত্যাশা করে না। যেমন-তোমার কাছে কিছুই চাইনা শুধু আমার ওপর রাজি খুশি থাকো। তোমার সন্তুষ্টি ছাড়া আমি আর কিছুই চাই না। ৩. ভালবাসা নিয়ে কিছু দিতে চায়। যেমন-তোমার সন্তোষ চাই। এর বিনিময়ে তুমি যত কষ্ট দিবে দাও, যা নিবে নাও। ৪.ভালবাসা দিতে চায়। নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মাঝেই সুখ খুঁজে।যেমন- আমি সহ আমার সবই তোমার। তুমি যা ইচ্ছা করো । আমি সব উজার করে দিতে পারি।তুমিই আমার সব, আমার জন্যে যথেষ্ট।আমি কিছুই চাইনা আমিতো তোমার জন্যেই। আমাকে নাও।



ভালবাসার স্থায়িত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। যখন কোন সসীম অন্য আরেকটি সসীমকে ভালবাসে তখন সেই ভালবাসাটা অসীম হয়ে ওঠতে পারে আবার নাও ওঠতে পারে। সসীমের ভালবাসা কেবল অসীমের সংস্পর্শ পেলেই অসীম হয়ে ওঠতে পারে। একটি নশ্বর আরেকটি নশ্বরের সাথে মিলে কোন অবিনশ্বরের জন্ম দিতে পারে না। তবে সসীমের অস্তিত্বের বিলয় মানেই তার ভালবাসার অস্তিত্বহীনতা নয়। আর হ্যাঁ! ভালবাসাটা যখন সসীমের আর অসীমের মধ্যে হবে তখন তা দ্বিধাহীনভাবে অসীম।



স্রষ্টাকে ভালবাসা যায়না সৃষ্টিকে না ভালবেসে। ফলে যারা শুধু সৃষ্টির প্রেমে দেওয়ানা হয়েছেন তারা ভালবাসারে বোধের ক্ষেত্রে কখনই যারা সৃষ্টি ও স্রষ্টাকে ভালবেসেছেন তাদের সমক্ষতা অর্জন করতে পারবেন না। কারণ শুধু সৃষ্টির প্রেমিকদের ভালবাসার পরিসর সীমিত, সাধ্য ও বোধ সীমিত আর স্রষ্টার প্রেমিকদের ভালবাসার পরিসর বিস্তৃত, সীমান্তহীন। বিশালতায় মুগ্ধ প্রেমিক ক্ষুদ্র থেকেও যেমন বিশালত্বের সন্ধান পেয়ে বড়ত্ব লাভ করতে পারেন তেমনি কোন শক্তিশালী উন্নততর সৃষ্টি ভালবাসাকে ক্ষুদ্রতা ও নীঁচুতার মাঝে আবদ্ধ করে দুর্বল থেকেও দুর্বলতর হয়ে যেতে পারেন।



অনেকক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে যে, যারা ভালবেসেছেন তারা বিদায় নিয়েছেন, একজগত থেকে আরেক জগতে হারিয়ে গেছেন কিন্তু তাদের ভালবাসা অমরত্ব লাভ করেছে।অভিনেতা নেই অভিনয়টা আছে, লেখক নেই লেখাটা আছে, বক্তা নেই বক্তৃতাটা আছে, শিল্পী নেই শিল্পকর্মটা আছে- বহুদিন, বহুমাস, বহুবছর ধরে, যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী।অন্তরের ভালবাসাটা কর্মে প্রকাশ পেলেই তা গতিশীল ও জীবন্ত হয়ে ওঠতে পারে।আযানের প্রতি নজরুলের প্রেমময় দরদ আর মসজিদের প্রতি তার ভালবাসার টান “মসজিদের পাশে আমায় কবর দিও ভাই’- বুঝতে জীবিত নজরুলের চেয়েও মৃত নজরুল বেশি শক্তিশালী।



এমন হতে পারে যেই মানুষটি ভালবেসেছে তার ভালবাসাটা সুন্দরের উজ্জল উপমা হয়ে, প্রেমের স্পন্দন জাগানোর মাধ্যম হয়ে টিকে আছে অথচ মানুষটি সময়ের ব্যবধানে দুর্বল হয়ে গেছেন, তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে গেছে, অথবা তিনি ইহজগত থেকে পরজগতে পাড়ি জমিয়েছেন। এমন হতে পারে যে প্রেমিকের ভালবাসাটা অনুপ্রেরণার শ্রেষ্ট দৃষ্টান্ত হয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে অথচ সেই প্রেমিক এখন ভালবাসার জগত ছেড়ে কোন মোহের জগতের বাসিন্দা হয়েছেন। ফলে ভালবাসাটা নিজেই শক্তিশালী, প্রেমই দীর্ঘস্থায়ী।



প্রশ্ন হতে পারে ভালবাসার স্বরুপ কি এবং এর কোন রুপ আছে কিনা?এর নির্দিষ্ট কোন রুপ, বৈশিষ্ট, আকৃতি নেই। ভালবাসার ধরণ, মাত্রা, কার্যিকারিতা, ক্ষমতা সবই নির্ভর করে যাদের মধ্যে ভালবাসার উৎপত্তি তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও বুঝাপড়ার ওপর।কেউ দেশের প্রেমে জীবন দিয়েছেন, কেউ মানবপ্রেমে নির্বাসিত হয়েছেন, কেউ জ্ঞানের প্রেমে পরে পুড়ে মরেছেন।এখন যিনি স্রষ্টার প্রেমে শহীদ হয়েছেন আর যিনি জরিনার প্রেমে পাগল হয়েছেন-দু’জনের প্রেম দুটি ভিন্নধারায় প্রবাহিত।কারো প্রেমতো নিজের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে, কারো প্রেম নিজেকে ছাড়িয়ে অন্য বিশেষ কারো মাঝে কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়, কারো প্রেম ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ ছাড়িয়ে জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, কারো প্রেম তার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পড়িমন্ডলে বিস্তৃত হয়। এই যে ভালবাসার বিভিন্ন মাত্রা, পরিসর, বিস্তৃতিগত ভিন্নতা এটি নির্ভর করছে প্রেমিকের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাধারা, জ্ঞানগত পরিসর, জীবন জগৎ সংক্রান্ত ধারণা ও বিশ্বাসের ওপর।



ভালবাসার ধরণ ও মাত্রার ভিন্নতা যারা প্রেমে পড়েছেন তাদের আচার-আচরণ ও ব্যবহারেও ভিন্নতা আনে। যিনি টাকা ভালবাসেন আর জ্ঞান ভালবাসেন দু’জনের জীবন যাপন প্রণালী কি একই রকম হবে? হবে না।তেমনি যিনি শুধু তার নিজেকে ভালবাসেন তার কর্মকান্ড, যার ভালবাসা তার পরিবারের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ তার জীবন সংগ্রাম, যার ভালবাসা সৈষ্টা রপর্যুন্ত বিস্তৃত তার কাজকর্ম, যার ভালবাসা তার নিজ দেশ ও জাতিকে ঘীরে তার তৎপরতা, যার ভালবাসা বিশ্বমানবতার পরিসরে ছড়িয়ে গেছে তার কর্মপ্রচেষ্টা কি একই রকম হবে? কখনোই নয়।ভিন্নধর্মী ভালবাসা থেকে ভিন্নধর্মী প্রয়াসই লক্ষ্য করা যাবে।



এই পৃথিবী শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের কাছ থেকে ভাল যা কিছু পেয়েছে তার সবই মানুষের ভালবাসার বোধ থেকে উৎসারিত আর অকল্যাণকর সবকিছু “ঘৃণাবোধ’ ও “হিংসাবোধ’ ও লোভ থেকে উৎসারিত।যাকে ভালবাসা যায় না তার জন্যে জীবন দেয়া যায় না।যাকে বিশ্বাস করা যায় না তার জন্যে ত্যাগ স্বীকার করা যায় না।ফলে ভালবাসা মানেই অফুরন্ত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন, প্রত্যয়দীপ্ত অভিব্যক্তি, সুন্দরের মিলনমেলা, গড়ার আনন্দ, সৌন্দর্যউময় প্রদীপ্ত আভার দৃষ্টিনন্দন প্রতিফলন,সৃষ্টির নব উল্লাস।যে কাকে ভালবাসতে হবে জানে, কিভাবে ভালবাসা দিতে হয় জানে,প্রকৃত ভালবাসার অর্থ বুঝে-সে নিষ্ঠুর বাস্তবতায় বাস করেও ভালবাসার স্বর্গসুখ অনুভব করতে পারে, ভালবাসার স্বর্গপথ রচনায় ভুমিকা রাখতে পারে।



অনেকে বলতে পারেন-জগতে এত প্রসঙ্গ থাকতে ভালবাসা বিষয়ে আমার এত কথা কেন? চোখ বন্ধ করে একটু ভেবো দেখুন তো এমন একটা পৃথিবীর কথা যেখানে কেউ কাউকে ভালবাসেনা, মায়া মমতাহীন এক শুষ্ক পরিবেশ।লোভ-স্বার্থপরতা-কামনা-মোহে মানুষের ইন্দ্রিয়ানুভূতিগুলো পাপাসক্ত হয়ে পড়লে জগতটা নরক হয়ে যাবে। যার ভালবাসা প্রিয়সীর কালোচোখ আর মিষ্টি হাসির মধ্যেই সীমাবব্ধ সেতো প্রিয়সীকে হারালে আত্মহত্যা করবে।যার ভালবাসা দেশের পরিসরে সীমাবব্ধ সেতো ইরাকে মানুষের রক্তের সাগর বয়ে গেলেও বাংলাদেশে বসে কাঁদবেনা। জাপানে ভুমিকম্পে হাজারও মানুষের অস্তিত্বের বিলয় ঘটলেও যে তার পরিবারের বাইরে ভাবেনা তার কিইবা আসে যায়। সৌদি আরবের যে ধনাঢ্য ব্যক্তি মুসলমান ছাড়া অন্যদের কাফের মনে করে শত্রু ভাবে তাকে কি ইথিওপিয়ার দুর্ভিক্ষে অভুক্ত মৃত বিধর্মী মানুষের কংকাল কিংবা হাড্ডিসার দেহের অসহায় মানুষের করুণ চাহনি –বিলাসী যিন্দেগী যাপন থেকে ফিরাতে পারবে? তাই ভালবাসতে শিখুন, ভালবাসা দিতে শিখুন; তবে শান্তিময় হয়ে ওঠবে জমিন।



আসুন! আমরা খাঁটি প্রেমিক হই, প্রাণখুলে ভালবাসি। প্রেমরসে জীবন ভরি, প্রেমের বন্ধনে জগৎ গড়ি। হৃদয় মন উজার করে ভালবাসতে পারলে প্রেমময় পৃথিবী গড়া যাবে।স্বপ্ন দেখি এমন পৃথিবীর যেখানে শুধু ভালবাসা থাকবে, থাকবেনা হিংসা-ঘৃণা। নব সৃষ্টির আনন্দ থাকবে, গড়ার প্রেরণা ও মানবিক উল্লাস থাকবে, প্রশান্তির হাসি থাকবে; থাকবে না অশান্তি-অন্যায়। ভালবাসার জয় হোক।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:২১

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: হাউকাউ

২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:২২

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: " খাঁটি ভালবাসা স্বর্গ থেকে আসা এক পবিত্র অনুভূতি; যার জাগতিক বস্তুগত কোন বিনিময়ই যথার্থ হতে পারে না। "

-প্রলাপ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.