নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লাজুক আনন

অলস প্রকৃতির ধার্মিক

লাজুক আনন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সে আজো আসেনি...

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫০

১৯৯৩ সালের কথা ।
সবে এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষা শেষ প্রাক্টিক্যাল সহ। বন্ধু বারিক ও আমি প্রস্তাব করলাম কোথাও বেড়াতে যাওয়া যাক। যে বলা সেই কাজ। একদিন বাড়ির অবিভাবকদের পারমিশন নিয়ে প্রস্তুত হলাম বেড়ানোর জন্য।স্থান কুষ্টিয়ায় আমার মেঝ ভাবীর বাপের বাড়ী। ওদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের উপকন্ঠে ।

আমি আর বারিক চুয়াডাঙ্গা রেলষ্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে কুষ্টিয়া যাচ্ছি।প্রচণ্ড ভীড়। বেশিরভাগ লোকই টিকেট না কেটে ট্রেনে চড়ায় অভ্যস্ত।তবে বর্তমানে অনেক ভালো । প্রায় সবাই টিকেট কাটে । আমরা নবীন যাত্রী হিসাবে টিকেট কেটেই রওনা হলাম। ভালোয় ভালোয় আত্নীয় বাড়ী পৌছে গেলাম।ওখানে দুই দিন থেকে বিভিন্ন স্থান দেখলাম। তাঁর মধ্যে রেইন উইক বাধ,লালন শাহ'র মাজার, গড়াই নদী ইত্যাদি। দুইদিন পর আমরা গেলাম কুষ্টিয়া পলিটেকনিক কলেজে যেখানে আমাদের সিনিয়র জিল্লুর ভাই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতেন। তাঁর হোষ্টেলে আমরা একদিন কাটালাম। মশারি খাটিয়ে শুয়েছিলাম তারপরও মশারা কি মজা করেই না আমাদের রক্ত চুষে খেয়েছিল তা এখনও মনে আছে।

জিল্লুর ভাইয়ের ওখান থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বাড়ীর পথে কুষ্টিয়া ষ্টেশনে আসলাম ট্রেন ধরার জন্য। অপেক্ষার প্রহর শেষ করে অবশেষে ট্রেন আসলো। ভিড়ের ভিতর উঠার ঝামেলায় পড়ে বারিক দ্রুত উঠার জন্য অন্য বগিতে উঠতে চেষ্টা করলো। আমি একটি বগিতে উঠতে যাচ্ছি হঠাৎ মনে হলো আমার প্যাণ্টের হিপ পকেটে কারো হাতের উষ্ণ উপস্থিতি।

আমি না তাকিয়েই খপ করে তাঁর হাতটা ধরে ফেললাম।তাকিয়ে দেখি পকেটমার। জীবনে শুধু শুনেছিলাম পকেটমারের কথা। কিন্তু কখনো দেখিনি। বিশ্বয়ে থ খেয়ে গেলাম।কি করতে হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। শুনতাম পকেটমার ধরে লোকজন খুব পিটুনি দেয়। কিন্তু আমার আশেপাশের লোকজন জানছে পকেটমার কিন্তু কেঊ কিছু বলছে না। আমিও কিছু বলতে সাহস পাচ্ছি না। বন্ধু বারিক অন্য বগিতে থাকায় তাকেও কাছে পাচ্ছি না। এসব ভাবতে ভাবতে ট্রেনে উঠে পড়লাম পকেটমারকে ধরে নিয়ে। আশেপাশের সবাই আমাকে খুব বাহবা দিচ্ছে। পিকুউলিয়ার বলছে।আমার বাড়ী কোথায় জিজ্ঞাসা করছে।

আমি ভাবছি নতুন জায়গা যদি পকেটমারকে মারলে ওদের সাঙ্গপাঙ্গরা যদি উলটো আমাকে ধরে মার দেয়। তাই ভাবছি যদি নিজ শহরে নিতে পারি তাহলে হয়তো ভালোমতো মারতে পারবো।

এভাবে আসতে আসতে ট্রেন জগতি ছেড়ে পোড়াদাহ ষ্টেশনে এসে থামলো।এতোক্ষন পকেটমার কোনো কথা বলেনি। ভয়ে জবুথবু হয়ে ছিল।পোড়াদাহ ষ্টেশনে ট্রেন থামার পরে ও আমার সাথে প্রথম কথা বলল-

ভাই আমি নীচে নেমে একটি সিগারেট কিনে আনি?
আমিও একটু ভেবেচিন্তে খুব মুডের সাথে বললাম-
হ্যাঁ যান। চলে আসবেন তাড়াতাড়ি।

পকেটমার এমন সুযোগ হাতছাড়া করে কখনও?
পকেটমার সিগারেট কিনতে যাওয়ার পরে বন্ধু বারিকের দেখা পেলাম। ওকে ঘটনা খুলে বললাম। আরো বললাম সিগারেট কিনতে গেছে এখনি চলে আসবে।

পকেটমার ছাড়া পেলে কখনো আসে! বারিকের উক্তি।

আমি ততোধিক দূঢ়তার সাথে বললাম, না সে বলে গেছে সিগারেট কিনেই চলে আসবে......

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.