![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এ এক ভয়ংকর খেলা, কবিতার রাশান রোলেট- যিনি সবচে ভালো পদ লিখবেন তাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলা হবে। আমার হাতে কলম কম্পমান সবচে সুন্দর পদ এসে গেছে আমার মুঠোয়।
আর দশজন সাধারন বাঙ্গালীর মত আমিও আমার ছুটির অবসর সময়টা ঘরের কোন কোণে কিংবা পাড়ায় মহল্লায় বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা মেরেই কাটিয়ে দিতে পছন্দ করি। রবীন্দ্রনাথের ‘দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু’ তো দূরের কথা ঘরের কাছের ‘একটি ধানের শীষের ওপর একটি শিশিরবিন্দু’ ও কখনো সেভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করি নাই। সেই আমি ভার্সিটিতে এসে দুর্ভাগ্য কিংবা সোভাগ্য বশতঃ কিছু দুষ্ট বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে কিভাবে যেন সুদূর বান্দরবান থেকে ঘুরে এলাম!
বান্দরবান! সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। জন্মের পর থেকেই চট্টগ্রামে থাকি। কিন্তু তারপরেও কেন যেন এই জায়গাটাতে আমার পদধূলি দিয়ে আসা হয় নাই। কক্সবাজার যাওয়াটা যদিও ডালভাত হয়ে গেছে মেলা আগেই, কিন্তু দুর্গম হবার কারণেই সম্ভবত বান্দরবানে একটা ট্যুরের কথা মনে হয় কেউ আমলে নিতে চায়না। তাই জীবনের আঠারো বসন্ত নিরামিষ ভাবে কাটিয়ে অবশেষে বন্ধু প্রসেনজিতের পাল্লায় পড়ে ঢাকা থেকে বান্দরবানে যাওয়ার বিশাল এক প্ল্যানে শামিল হলাম। হায়, তখনো যদি বুঝতাম, কি ভয়ঙ্কর, ক্লান্তিকর একটা পরিকল্পনাতেই না অংশ নিচ্ছি!!
ঠিক হল আমরা ৬ জন যাব। আমি, আমদের রাংগামাটির বন্ধু চমক (বেচারা পাহাড়ি, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় বড় হয়েছে),নরসিংদীর রাহাত আর অনঘ, লক্ষীপুরের শিপন, আর ফরিদপুরের প্রসেঞ্জিত। জানলাম ৭ দিন থাকার জন্য মোটামুটি ৮০০০ টাকা খরচ পড়বে। খরচের ব্যাপারে সর্বোচ্চ কৃপণতা দেখানো হবে যেহেতু সবাইই ছাত্র। এতে কারোই কোন আপত্তি ছিলোনা। এর আগে শুধু প্রসেনজিতই একবার বান্দরবান থেকে ঘুরে এসেছে। তবে ও শুধু বান্দরবান শহরের স্পট গুলোই কাভার করতে পেরেছিলো। বর্ষাকাল ছিলো বলে বগালেকটা ঘুরে আস্তে পারেনি। তাই বারবার বেশ জোর দিয়ে বলছিলো যে এবার অবশ্যই আমাদের কেওকারাডং, তাজিংডং , বগালেক ঘুরে আসতে হবে। তার সাথে যোগ করবো বড় পাথর আর নাফাখুম, বাংলাদেশের জলপ্রপাত! আমি মুখে তেমন কিছু না বললেও মনে মনে বলছিলাম, শালা তুমি একবার ঘুরে এসে এতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে এত জায়গা ঘুরে আসার কথা বলছো, বাকি আমরা যারা শহুরে ঘরকূণো মানুষ তাদের শেষ পর্যন্ত এতো আগ্রহ থাকবে তো?
বান্দরবানে অনেক ঠান্ডা থাকবে, এইরকম মনে করে রওনা হবার একদিন আগে ৩০ ডিসেম্বরে বসুন্ধরা গেলাম। শীতের কাপড় চোপড়, হাত মোজা, কানটুপি, মাফলার জোগাড় করতে করতে ৫০০০ টাকা বেরিয়ে গেল। ভালো বিপদে পড়লাম। কারন, এমনি তেই মাসের শেষ। টিউশনির বেতন পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই, বাবা, চাচা, মামারা আছে বলে ভরসা। কিন্তু তারপরেও টাকা পয়সার টানাটানি পড়ে যাবে বুঝতে পারছিলাম। পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে শেষে ঠান্ডায় জমে মরে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে হলোনা। তাই কিছু খরচ করতেই হল। শপিং করে বাসায় যাওয়ার পর দেখি পকেটে আছে মোটে ৫০০০ টাকা। জরুরী ভিত্তিতে মামার বাসায় গিয়ে লজ্জার মাথা খেয়ে আরো ৩০০০ টাকা যোগাড় করলাম। অবশেষে সব হ্যাপা পার করার পর ৩১ ডিসেম্বরের রাত আসলো। সময়মত কলাবাগান পৌছুলাম। দেখলাম চমক আর শিপন ছাড়া বাকি সবাই আমার আগেই উপস্থিত। সামনে সম্পুর্ণ অজানা অচেনা একটা জায়গায় যাওয়ার কথা বার্তা হচ্ছে। কিন্তু আমার মাথায় তখনো টাকা পয়সার চিন্তা ভাবনা। সম্পুর্ন ব্রেক ইভেন পয়েন্টে বান্দরবান যাচ্ছি। প্রসেঞ্জিত বারবার করে বলেছিল হিসাবের বাইরে কিছু টাকা আনতে। কিন্তু কি আর করা! ভরসা একটাই, আশা করছি পাহাড়ের মাঝখানে আমার ব্যালেন্স ফুরিয়ে গেলে বন্ধুরা নিশ্চই আমাকে ওখানে ফেলে চলে আসবেনা!
প্রায় ১০ দিনের একটা ট্যুর ছিল আমাদের। তাই একপোস্টে সব লেখা আর সম্ভব না। বাকি অংশ রাতেই পোস্ট করি। এখন পোস্টের সাথে ফাও হিসেবে কিছু ছবি নেন।
সাংগু নদী। এই নদীর আসল সৌন্দর্য্য সামনের পোস্ট গুলোতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
সকল ছবি কৃতজ্ঞতাঃ Prosenjit Chatterjee Tanu
(চলবে)
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫
অনন্ত আরেফিন বলেছেন: আমাদের ভ্রমণ্টা তো অনেক বড় ছিলো, গাইড নেয়া লেগেছেই। সে কথা পরে আসছে।
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৮
বোকামন বলেছেন: আফনে কোনডা ভাই
৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৩
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: বর্ননা দারুন লাগলো। আমরা বছর দুই আগে বগালেক, কেওক্রাডং ট্যুর দিয়ে এসেছিলাম। জীবনের সব চে স্মরনীয় ট্যুর। পরের পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।
৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০৯
অনন্ত আরেফিন বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্যে
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪
এম আর ইকবাল বলেছেন: বেড়াতে গেলে গাইড খুব দরকার । অন্যথায় অনেক কিছু দেখা বাদ পড়ে যায় । স্হানীয় ছেণলমেয়েরা গাইড হতে পারে । কারণ আমি বান্দরবান গেছি, স্বপরিবার । সন্ধায় চলে এসেছি । মেঘলা গেটের উল্টাদিকে একটা রেষ্টুরেণ্ট আছে, বেশ খোলামেলা , গাড়ী রাখার জায়গাটাও ভাল , সামনে ফাকা মাঠে কিছু চেয়ার টেবিল আছে ।আমরা রেষ্টুরেণ্ট এ ঢ়ুকতে গেলাম, বাধা দিল , বলে পার্টি হবে , তাই বন্দ । একটা পানির বোতল কিনতে চাইলাম, বলে দেয়া যাবে না । পার্কিং স্পেসে বসলাম, বারবার তাগাদা দিতে লাগলো উঠেন । তাদের পুরো ব্যাপারটা অত্যন্ত অভদ্র ছিল ।