নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যত অপ্রিয়ই হোক, সত্য বলতে আমি দ্বিধা করি না। আমি সদাই সত্যে অবিচল। অন্যের কাছে থেকে কিছু জানা আমার শখ।
বাংলাদেশে এক সময় কতিপয় জঙ্গী এবং জেএমবি’র তান্ডব চলেছিল। তখন তারা সিনেমা হল, উদিচীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রমনার বটমূল ইত্যাদি স্থানে বোমা হামলা করেছিল। কারন এগুলোতে গান বাজনা হয়। গান বাজনা নাকি ইসলামে হারাম। বাল্যকাল থেকেই এসব শুনে এসেছি। ইসলাম কি শিল্প প্রতিভার বিরোধী? ইসলামে কি গান চিত্রকলা হারাম? ইসলাম কি মানুষের সৃজনশীলতার কোন গুরুত্ব দেয় না কিম্বা মানুষের আনন্দ বিনোদন ইসলাম স্বীকার করে না? ইসলাম কি কেবলই মানুষকে রোবট গন্য করে? ---প্রশ্নগুলো খুবই যুক্তিযুক্ত। আমি নানা ইসলামী পন্ডিত থেকে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছি।
যারা গান বাজনার বিরোধিতা করেন, তারা কোরআন হাদীসের কিছু উদ্বৃতি তুলে ধরেন এবং অনেক ক্ষেত্রে তা অপ্রাসঙ্গিক হলেও তাতেই তাদের মনগড়া ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে মহান ইসলামী দায়িত্ব পালন করে ফেলেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেন, “এক শ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে পথভ্রষ্ট করার উদ্দেশ্যে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে(আল্লাহর পথ) নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। এদের জন্যে রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি”। [সূরা লোকমান, ৩১:৬]
এ আয়াতকেও ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। গান আরা অবান্তর কথাবার্তাকে অনেক তফসিরকারক সমার্থক করে ফেলেছেন।
আল-ওয়াহিদি (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা), অন্যান্য তাফসীরকারগণের সাথে ব্যাখ্যা করেন যে, এই আয়াতে “অবান্তর কথাবার্তা” বলতে গান সঙ্গীতকে বুঝানো হয়েছে। যেসকল সাহাবাগণ এই ব্যাখ্যা প্রদান করেন তারা হলেন ইবন আব্বাস, ইবন মাসউদ, মুজাহিদ, ইকরিমা(রাদিয়াল্লাহু আনহুম)। ইবন মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, “আল্লাহর শপথ, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, ‘অবান্তর কথাবার্তা’ হল ‘‘গান”।
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি আসলেই হাস্যকর। অবান্তর কথাবার্তা কেবল গান বাজনাতে হয়? অবান্তর কথাবার্তা আর গান বাজনা কি এক হলো? আল্লাহপাক কি গান বাজনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না? (নাউজুবিল্লাহ)। অবান্তর কথাবার্তা আর গান বাজনা বা শিল্প সংস্কৃতিকে এক কাতারে ফেলে বিচার করা ভুল ব্যাখ্যা বলেই অনেকে মনে করেন।
আমাদের নবী করিম (দঃ)-এর একটি হাদীস আছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমার উম্মতের মধ্য হতে একদল লোক এমন হবে যারা ব্যভিচার, রেশমি বস্ত্র পরিধান, মদ পান এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার ইত্যাদি হালাল মনে করবে। এবং কিছু লোক এমন হবে যারা একটি পর্বতের নিকটে অবস্থান করবে এবং সন্ধ্যাবেলায় তাদের মেষপালক তাদের নিকট মেষগুলো নিয়ে আসবে এবং তাদের নিকট কিছু চাইবে, কিন্তু তারা বলবে, ‘আগামীকাল ফেরত এসো’। রাতের বেলায় আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন এবং তাদের উপর পর্বত ধ্বসিয়ে দিবেন, বাকি লোকদেরকে তিনি বানর ও শূকরে পরিণত করে দিবেন এবং শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত তারা এই অবস্থায় থাকবে”। [বুখারী, ভলিউম ৭, বুক ৬৯,সংখ্যা৪৯৪]
এখানে বলা হয়েছে রেশমী কাপড় পড়ে, অশ্লীল নাচগান করে বাদ্য বাজিয়ে মদপানসহ ব্যভিচারের কথা। এমন এক সময় আসবে যখন দুর্বল ঈমানের লোকেরা এসবকেও হালাল মনে করবে।
গানবাজনার বিপক্ষে কোরআনের নিম্নোক্ত দুটি আয়াত পেশ করা হয়-
আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে সম্বোধন করে বলেন:
وَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ(الاسراء 64)
তোমার কন্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত কর। (সূরা ইসরা ১৭: ৬৪ আয়াত)।
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشۡتَرِي لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ بِغَيۡرِ عِلۡمٖ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاۚ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمۡ عَذَابٞ مُّهِينٞ ٦ وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَيۡهِ ءَايَٰتُنَا وَلَّىٰ مُسۡتَكۡبِرٗا كَأَن لَّمۡ يَسۡمَعۡهَا كَأَنَّ فِيٓ أُذُنَيۡهِ وَقۡرٗاۖ فَبَشِّرۡهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ ٧﴾ [لقمان: ٦، ٧]
‘আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব।’ {সূরা লুকমান, আয়াত : ০৬-০৭}
শয়তান তার কন্ঠ দিয়ে যাকে ইচ্ছা প্ররোচিত করতে পারে। আল্লাহপাক তাকে সে স্বাধীনতা দিয়েছেন। সেটা কেবল গানবাজনা দিয়ে হতে হবে এমনটা ভাবার কোন অবকাশ আছে কি? আর গানেই কি কেবল বেহুদা কথা আছে? বেহুদা কথা নানা পর্যায়ে নানা পরতে পরতে আছে। অন্যদিকে গানের মধ্যে তো জীবনের কথা আছে, অনুভুতির কথা আছে, উজ্জীবনের কথাও আছে। তাছাড়া সব নাচ গান হাসি ঠাট্টার বিষয় নয়। তাহলে কেন এই ভুল ব্যাখ্যা?
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ইবনে মাসউদ রা. বলেন: ‘গান অন্তরে মুনাফেকী সৃষ্টি করে।’
কিন্তু এটাও একটা ঢালাও অভিযোগ। গান শুনেই যারা মুনাফিক হয়ে যায়, তাদের ঈমানের দাবী ঠুনকো বলেই ধরে নিতে হবে।
তিরমিযী শরীফের আরেকটি হাদীস দেখুন-
হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রসুল (দঃ) বলেছেন, জান্নাতে পরমা সুন্দরী হুরগনের একটি মিলনায়তন থাকবে। সেখানে তারা মন মাতানো অপূর্ব সংগীত পরিবেশন করবে। (তিরমিযী)। এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, সংগীত হারাম তো নয়ই বরং স্বর্গীয়।
হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত “দুইজন বালিকা ‘দফ’ বাজাচ্ছিল ও গান করছিলো। তখন আবুবকর (রাঃ) আগমন করলেন ও তাদেরকে বল্লেন, তেমরা এটা বন্ধ কর। রাসুল(সঃ) তখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ও এই ব্যাপারটি দেখে আবুবকরকে(রাঃ) বল্লেন, তাদেরকে তা করতে দাও। আজ তো ঈদের দিন”। বুখারী-২য় খন্ড-৮৭, তিরমিযী-৩৬৯০
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের কাবাঘরের চারপাশের ইবাদতের কথা সমালোচনা করে বলেন, “(এ ঘরের পাশে) তাদের (জাহেলী যুগের)নামায তো কিছু শিষ দেয়া ও তালি বাজানো ছাড়া কিছুই ছিল না”[সূরা আল আনফাল ৮-৩৫] ।
ইবন আব্বাস, ইবন উমর, আতিয়্যাহ, মুজাহিদ, আদ-দাহাক, আল হাসান এবং ক্বাতাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘মু’কান’ অর্থ শিষ বাজানো, ‘তাসদিয়াহ’ অর্থ তালি বাজানো।
পাঠকবৃন্দ একটু খেয়াল করুন, এখানে শিষ দিয়ে তালি দিয়ে কাফেরদের ইবাদতের সিস্টেমের কথা বলা হয়েছে। এর সাথে গানবাজনা এবং শিল্প সাংস্কৃতির সম্পর্ক কি? মানুষ গানবাজনা করে মনের আনন্দের জন্যে। ইবাদতের উদ্দেশ্যে কেউ গানবাজনা করে না। ভাত খাওয়া যেমন ইবাদত নয়, তেমনি গানবাজনাও ইবাদতের কোন মাধ্যম নয়।
কুরআন মজীদের অন্য আয়াতে আছে, ইবলিস-শয়তান আদম সন্তানকে ধোঁকা দেওয়ার আরজী পেশ করলে আল্লাহ তাআলা ইবলিসকে বললেন,
“তোর আওয়াজ দ্বারা তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস পদস্খলিত কর”।-সূরা ইসরা: ৬৪
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যে সকল বস্তু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তাই ইবলিসের আওয়াজ। এ আয়াতের সাথেও গান বাজনা বা শিল্প সাংস্কৃতির কোন সম্পর্ক নেই। গান বাজনার বিরুদ্ধে অনেক ইসলামী পন্ডিতগন এ আয়াতটির ভুল ব্যাখ্যা পেশ করে এসেছেন। যেমন ইসলামী পন্ডিত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. বলেন, ইবলিসের আওয়াজ বলতে এখানে গান ও বাদ্যযন্ত্রকে বোঝানো হয়েছে। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যেসব বস্তু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তার মধ্যে গান-বাদ্যই সেরা। এজন্যই একে ইবলিসের আওয়াজ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।-ইগাছাতুল লাহফান ১/১৯৯
পাঠকবৃন্দ ইসলামী এসব পন্ডিতদের উপর পূর্ণ সম্মান রেখেই বলছি, সব গানবাজনা কি পাপাচারের দিকে আহ্বান করে? এগুলো কি তাদের মনগড়া ব্যাখ্যা নয়? গান বাজনা শুনলেই কি আত্মা কলুষিত হয়ে যায়? যে কোন আয়াত ব্যাখ্যার আগে সার্বিক বাস্তবতা ভেবে দেখা উচিত বলেই বেশীরভাগ ইসলামী পন্ডিত মনে করেন। নিজের জ্ঞান বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে কোন কিছু ব্যাখ্যা করে মানুষকে ইসলাম বিমুখ করা বরং পাপের সামিল।
প্রাচীনকাল থেকেই আরবে দফ [এক প্রকার আরবীয় বাদ্যযন্ত্র] বাজানো প্রচলিত ছিল। বিয়ে-শাদীতেও তা বাজানো হতো। আমাদের মহানবী (দঃ) কখনোই এই দফ বাজানো নিষিদ্ধ করেননি। আমরা দেখতে পাই আরবদেশগুলোতে কিন্তু নাচ গান রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়নি। আরাবিয়ান ব্যালি ড্যান্স পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং আবেদেনময়ী নাচ বলেই জানি।
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সিনেমাগুলো ইতিমধ্যে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে। কি চমৎকার তাদের কাহিনী, আচার আচরন। মোদ্দা কথা হচ্ছে, যে কাজ দ্বারা ইসলামী শরীয়তের কোন ক্ষতি হয় না অর্থাৎ যা আল্লাহ রাসুল ও কোরআনকে contradict করবেনা সেটা অবশ্যই জায়েজ, তা গান হোক বা সিনেমা হোক। যেসব গানে অশ্লীলতা জাগ্রত করে, মানুষকে বিপথে পরিচালিত করে তা নাজায়েজ হওয়ার ব্যাপারে কোন দলিলের প্রয়োজন পড়ে না।
গানবাজনার বিপক্ষে বলতে গিয়ে ইমাম ইবন তাইমিয়া (রাহিমুল্লাহ) বলেন সেই ব্যক্তির সম্পর্কে যার স্বভাব হল গান-বাজনা শোনা, “ সে যখন কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণ করে তখন সে আবেগাপ্লুত হয় না, অপরদিকে সে যখন শয়তানের বাদ্যযন্ত্র (গান-বাজনা) শ্রবণ করে, সে নেচে উঠে। যদি সে সালাত প্রতিষ্ঠা করে, তবে সে হয় বসে বসে তা আদায় করে অথবা মুরগী যেভাবে মাটিতে ঠোকর দিয়ে শস্যদানা খায় সেভাবে দ্রুততার সাথে আদায় করে। সে কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণ করতে অপছন্দ করে এবং তাতে কোন সৌন্দর্য খুঁজে পায় না। তার কুরআনের প্রতি কোন রুচি নেই এবং যখন তা পড়া হয় সে এর প্রতি কোন টান বা ভালোবাসা অনুভব করে না। বরং, সে মু’কা ও তাসদিয়া শুনে মজা পায়। এগুলো শয়তানী আনন্দ এবং সে তাদের অন্তর্ভুক্ত যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে একটি শয়তান নিযুক্ত করে দেই, অতঃপর সেই সর্বক্ষণ তার সাথী হয়ে থাকে”।[৪৩-৩৬] [আউলিয়া আর রাহমান]
গান বাজনাকে কুরআন তেলাওয়াতের সাথে তুলনা মোটেই কাম্য নয়। আর কোরআনের এ আয়াতটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। গান শুনলে মানুষ কোরআন ত্যাগ করবে এটা তো চিন্তাই করা যায় না। অতি দুর্বল ঈমানদারদের এমনটি হতেও পারে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সেসব গান বাজনা শোনা হারাম এবং পাপ, যা আল্লাহর স্মরণ ও প্রার্থনা থেকে অন্তরকে দুর্বল করে দেয়। নোংরামী আর আশ্লীলতা ইসলাম কোনভাবেই সমর্থন করে না। গোটা ইসলামী বিশ্বে ডঃ ইউসুফ আল কারযাভী একটি সুপরিচিত নাম। তিনি একাধারে ইসলামী পন্ডিত, গবেষক এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতা। এ সংক্রান্তে তার লেখাটি পড়ে দেখুন-
ইসলামে নান্দনিক শ্রবণীয় শিল্প
- ডঃ ইউসূফ আল কারযাভী
ইসলাম সব সময় সুন্দরের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করে থাকে এবং মানুষের সেই ইন্দ্রকে জাগ্রত করতে আগ্রহী যা তাকে বিভিন্ন ভাবে সৌন্দর্য উপভোগ করতে শেখায়।
কিছু কিছু ‘সুন্দর’ শ্রবণইন্দ্রের কাছে ধরা পড়ে, আবার কিছু কিছু ‘সুন্দর’ তার দর্শন ইন্দ্রের কাছে আর কিছু অপরাপর ইন্দ্রের কাছে ধরা পড়ে। এখানে “শ্রবণীয় সুন্দর্য” আলোচনা করা হবে, অর্থাত্ গান সম্পর্কে, হোক বাজনা সহকার আর বাজনা বিহীন।
গান ও বাজনা সম্বন্ধে ইসলামের হুকুম কি?
এটা এমন একটা প্রশ্ন যা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে শুনা যায়। এটা এমন একটা প্রশ্ন যার জবাব দানে আজকে সমগ্র মুসলিম জাতি দ্বিধাবিভক্ত। তাদের জবাবের বিভক্তির কারণে তাদের আচার আচরণও বিভিন্ন ধরণের। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সব ধরণের গান ও বাজনা কান পেতে শুনে একথা বলে যে, তা হালাল জীবনের অপরাপর হালাল বস্তুর মতো, যা আল্লাহ পাক তার বান্দাদের জন্য হালাল করেছেন।
আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ যে কোন গানের শব্দ পেলে রেডিও বন্ধ করে দেয় বা নিজের কান বন্ধ করে নেয়। তারা বলে গান হলো শয়তানের বাঁশি ও বেহুদা কথা, যা আল্লাহর যিকির ও নামাজ থেকে বিরত রাখে, বিশেষত গায়ক যদি কোন নারী। কারণ তাদের মত নারীর কণ্ঠস্বর গান ছাড়াই সতরের অন্তর্ভুক্ত, আর যদি তা গানে হয় তাহলে(তা সহজে অনুমেয়)। তারা তাদের এ অভিমতে পক্ষে আলকোরানের কতিপয় আয়াত, কিছু হাদীস ও কিছু আলেমের অভিমত ও উক্তি দ্বারা দলিল দিয়ে থাকেন।
আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ যে কোন ধরণের বাজনা প্রত্যাখ্যান করেন, এমন কি রেডিও ও টিভির সংবাদের পূর্বে প্রচারিত বাজনা পর্যন্ত।
তৃতীয় আর একদল এই দুইদলের মধ্যে দ্বিধা দন্দ্বে ভোগেন। তারা কখনো একদলের পক্ষে কখনো অন্যদলের পক্ষে অবস্থান নেয়। আর এরা অবশ্য এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইসলামের আলেমদের কাছ থেকে একটা মনে প্রশান্তি আনয়ণকারী চূড়ান্ত ফায়সালা কামনা করে। যা মানুষের আবেগ অনুভূতি ও দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃ্ক্ত। বিশেষত শ্রবণীয় ও দর্শনীয় প্রচার মাধ্যম মানুষের বাড়ি ঘরে ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় প্রবেশ করার পর, এবং তার গান ও মিউজিক বাধ্য ও অবাধ্য ভাবে তাদের শ্রবণ ইন্দ্রকে আকর্য়ণ করার পর।
বাদ্যযন্ত্র তথা মিউজিকসহ গান ও বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গান এমন একটি বিষয় যা নিয়ে ইসলামের আলেমদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক দীর্ঘ দিন থেকে চলছে।তারা কিছু বিষয়ে ঐক্যমত্যে উপনিত হয়েছেন আবার কিছু বিষয়ে মতদ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছেন।
তারা ঐক্যমত্যে উপনীত হয়েছেন ঐ সব গান হারাম হবার ব্যাপারে যাতে অশ্লীলতা ও ফাসেকী রয়েছে, এবং যা গুনাহের কাজে উদ্ভুদ্ধ করে। কারণ গানতো মূলত কথাই- তার মধ্যে যা ভালো তা ভালো আর যা মন্দ তা মন্দই। যে সব উক্তিতে হারাম কিছু রয়েছে তাও হারাম। অতএব তার সাথে যদি ছন্দ সূর ও হৃদয়গ্রাহী কিছু থাকে তাহলে তার অবস্থা কিরূপ হবে?(তা সহজে অনুমেয়)।
তেমনি ভাবে তারা আরও ঐক্যমত্যে উপনীত হয়েছেন পূর্বোক্ত বিষয় মুক্ত গান হালাল হবার ব্যাপারে, যা বাদ্যযন্ত্র মুক্ত স্বভাব সূলভ ভাবে অনুত্তেজিত করণার্থে গাওয়া হয়ে থাকে। আর তাও বৈধ আনন্দ বিনোদনের স্থানে। যথা বিয়ের অনুষ্ঠানে, কাউকে স্বাগত জানাবার কালে এবং ঈদের দিন ইত্যাদিতে। তবে শর্ত হলো তাও পর পুরুষের সামনে কোনো নারীর কন্ঠে হওয়া চলবেনা।
এ প্রসঙ্গে কিছু সুস্পষ্ট কুরান ও হাদিসের বাণী রয়েছে যা আমরা পরে উল্লেখ করব।
এছাড়া বাকি গানের ব্যাপারে তারা সুস্পষ্ট মতদ্বন্দ্বে লিপ্ত। তাদের মধ্যে কেউ সব ধরনের গানকে হালাল মনে করেন তা বাদ্যযন্ত্র সহ হোক আর বাদ্যযন্ত্র বিহীন হোক। আর কেউ কেউ সব ধরণের হারাম ঘোষণা করেছেন তা বাদ্য যন্ত্র সহ হোক বা বাদ্য যন্ত্র বিহীন হোক এমন কি তা শুনা পর্যন্ত কবীরা গুনাহ বলেও উল্লেখ করেছেন।
বিষয়টির গুরুত্বের কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এবং বিভিন্ন দিক থেকে এ প্রসঙ্গে আলোচনা পর্যালোচনা করা আবশ্যক মনে হয়, যাতে মুসলমানেরা এর মধ্য হতে হারাম থেকে হাললকে আলাদা করে নিতে পারেন এবং অকাট্য দলিলের অনুসরণ করতে পারেন। তাদেরকে যেন কারো কথার তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করতে না হয়। এর মাধ্যমেই তারা সুস্পষ্ট দলিল নির্ভর এ দ্বীনি বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন হতে পারেন।
মূলত সব কিছু হালাল
ইসলামের আলেমগণ এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মূলত যে কোন বস্তু হালাল। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً
তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত।
He it is Who created for you all that is on earth. ( সূরা আল-বাকারা ঃ ২৯)
কাজেই কোন কিছু সুস্পষ্ট বিশুদ্ধ নাস তথা আল-কুরআন ও সহীহ হাদিস কিংবা নির্ভরযোগ্য প্রমাণীত ইজমা ছাড়া হারাম হতে পারেনা। অতএব কোন নাস (আল-কুরআন ও সহীহ হাদিস) ও ইজমা না থাকলে, অথবা কোন কিছুকে হারাম ঘোষণা করে কোন সুস্পষ্ট নাস আছে কিন্তু তা সহীহ না হলে, কিংবা সহীহ কিন্তু সুস্পষ্ট না হলে সে নাস ঐ বস্তু হালাল হবার ব্যাপারে কোন প্রভাব ফেলবেনা। বস্তুটি বিস্তৃত হালালের গণ্ডিতেই বাকি থাকবে। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন-
وَقَدْ فَصَّلَ لَكُم مَّا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ إِلاَّ مَا اضْطُرِرْتُمْ
অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও।
while He has explained to you in detail what is forbidden to you, except under compulsion of necessity (সূরা আল-আন’আম ১১৯)
আর রাসূল (স)বলেন, যা আল্লাহ তা’আলা তার কিতাবে হালাল করেছেন তা হালাল, আর যা হারাম করেছেন তা হারাম। আর যে সব বিষয়ে নিরবতা অবল্বন করেছেন তা মাফকৃত। সুতরাং তোমরা আল্লাহর মাফকৃত বস্তু গ্রহণ করো। কারণ আল্লাহ তা’আলা কোন কিছু ভুলে যাননি। অতপর তিনি তেলাওয়াত করেছেন- نَسِيًّا وَمَا كَانَ رَبُّكَ “সবই তাঁর এবং আপনার পালনকর্তা বিস্মৃত হওয়ার নন। and your Lord is never forgetful, সূরা মারিয়াম ৬৪ । (হাদিসটি হাকেম আবুদ দারদা থেকে বর্ণনা করেন এবং সহীহ বলে মন্তব্য করেন, হাদিসটি বাযযারও বর্ণনা করেছেন।)
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তা’আলা কিছু কাজ ফরয করে দিয়েছেন তোমরা তা তরক করোনা। আর কিছু ব্যাপারে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তোমরা সে সীমা লংঘন করোনা। আর তোমাদের দয়া পরবশ হয়ে (ভুলে গিয়ে নয়) কিছু বিষয়ে নিরব থেকেছেন সে সব বিষয়ে অনুসন্ধান করোনা।
(দারেকুতনী কর্তৃক আবু সালাবা আল খশনী থেকে বর্ণিত, হাফেজ আবু বকর মোসআলী তার আমানী নামক গ্রন্থে আর নব্বী তার আরবাঈনে হাদিসটি হাসান বলে মন্তব্য করেছেন।)
এটাই যদি শরীয়াতের মূলনীতি হয়, তাহলে কোন নাস বা দলিলের ওপর ভিত্তি করে গান হারাম ঘোষণাকারীরা তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন ? আর গান বৈধ ঘোষণাকারীদেরই বা এ ব্যাপারে অবস্থান কি ? তা জানা অবশ্যক।
গান হারাম ঘোষণাকারীদের দলিল ও তার পর্যালোচনা
ক. গান হারাম ঘোষণাকারীরা ইবনে মাসউদ ইবনে আব্বাস ও কোন কোন তাবেয়ী থেকে বর্ণিত এক বর্ণনার উপর নির্ভর করেছেন। তারা নিম্নোক্ত আল্লাহ তা’আলার বাণীর উপর ওপর নির্ভর করেই গান হারাম ঘোষণা করেছেনঃ-
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।
And of mankind is he who purchases idle talks to mislead from the Path of Allâh without knowledge, and takes it by way of mockery. For such there will be a humiliating torment (সূরা লোকমান ঃ ৬)
তারা আলোচ্য আয়াতের لَّ عَن سَبِيلِ (লাহুল হাদিস) বা “অবান্তর কথা বার্তা” এর ব্যাখ্যা করেছেন গান বলে।
ইবনে হাযম বলেন, কয়েকটি কারণে এই ব্যাখ্যাটি আমার কাছে গ্রহণ যোগ্য নয়। ১. রাসুল সাঃ ছাড়া আর কারো কথা হজ্জত বা গ্রহণ যোগ্য নয়। ২. এই ভাবে ব্যাখ্যা কারীরা অপরাপর সাহাবী ও তাবেয়ীদের ব্যাখ্যার বিরোধীতা করেছেন। ৩. স্বয়ং এই আয়াতের বাক্যাবলী তাদের এ ব্যাখ্যা ও দলিলকে বাতিল করে। কারণ তাতে রয়েছে- “ এক শ্রেণীর মানুষ আছে যে যারা আল্লাহ তাআলার পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশ্যে অবান্তর কথা-বার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং তা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে”।
তিনি আরও বলেন, কোন মানুষ যদি আল কোরানও খরিদ করে তার দ্বারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার জন্য এবং তাকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করার জন্য তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। আল্লাহ তা’আলা এ আয়াতে এইরূপ কর্মের নিন্দা করেছেন। আল্লাহ কখনো যারা অবান্তর কথা-বার্তা আনন্দ বিনোদন এবং মনে প্রশান্তি আনয়নের জন্য খরিদ করে, আল্লাহর পথকে গোমরাহ করার জন্য খরিদ করেনা। তাই আল্লাহ এখানে তাদের নিন্দা করেন নি। অতএব তাদের আয়াতের ঐ ব্যাখ্যার সাথে আয়াতের কোন সম্পর্ক থাকাটাই বাতিল বলে প্রমাণিত হলো।তেমনি ভাবে যারা কোরান তেলাওয়াতে ব্যস্ত থেকে কিংবা হাদিস অধ্যায়নে ব্যস্ত অথবা কথা-বার্তায় ব্যস্ত থেকে অথবা গান-বাজনা নিয়ে ব্যস্ত থেকে কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে নামাজ ছেড়ে দেয় সেও ফাসিক- আল্লাহর নাফরমান। আর যে উপরোক্ত কাজে ব্যস্ত থেকেও কোন ফর্য কাজে গাফেল হয়ে পড়েনা তিনি সত্কর্মশীল । (দলিল- ইবনে হাযম, আল মুহাল্লা, মুনীরিয়া ৯ পৃ.৬০)
খ. তারা মুমিনের প্রশংসায় উল্লেখিত আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা দলিল দিয়েছেন,-
وَإِذَا سَمِعُوا اللَّغْوَ أَعْرَضُوا عَنْهُ
আর যখন অনর্থক কথাবার্তা শ্রবণ করে, তখন তা থেকে বিমুখ হয়ে পড়ে।
And when they hear Al¬Laghw they withdraw from it and say: (সূরা আল-কিসাস ঃ ৫৫)
তাদের মতে গান যা অনর্থক কথা-বার্তার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব।
এ বক্তব্যের জবাবে বলা যায়, এ আয়াতের বাহ্যিক অর্থ হলো এখানে লাগভ বা অনর্থক কথা-বার্তা বলতে গালা-গালী ও তিরস্কার জাতীয় মন্দ কথা বুঝানো হয়েছে। আয়াতের বাকি অংশও তাই প্রমাণ করে, আল্লাহ তা’আলা বলেন,-
وَإِذَا سَمِعُوا اللَّغْوَ أَعْرَضُوا عَنْهُ وَقَالُوا لَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ سَلَامٌ عَلَيْكُمْ لَا نَبْتَغِي الْجَاهِلِينَ
আর যখন অনর্থক কথাবার্তা শ্রবণ করে, তখন তা থেকে বিমুখ হয়ে যায় এবং বলে, আমাদের জন্যে আমাদের কাজ এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজ। তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা অজ্ঞদের সাথে জড়িত হতে চাই না।। (সূরা আল-কিসাস ঃ ৫৫)
মূলত আয়াতটি আল্লাহর বান্দাদের প্রশংসায় আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত আয়াতের মতোই,-
وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا
যখন অজ্ঞরা তাদের সম্বোধন করে তখন তারা বলে তোমাদের প্রতি সালাম ।
when the foolish address them they reply back with mild words of gentleness. (সূরা আল-ফোরকানঃ৬৩)
যদি আমরা ধরে নেই যে, উক্ত আয়াতের লাগভ বা অনর্থক কথা-বার্তা গানকেও শামিল করে তাহলেও আমরা দেখতে পাই যে, আয়াতটি গান শুনা থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব বা উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজ বলে প্রমাণ করে। গান শুনা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব প্রমাণ করেনা।
“লাগভ” শব্দটি “বাতিল” শব্দের মতোই অনর্থক বেফায়দা বুঝায়, বেফায়দা কিছু শুনা কখনও হারাম নয়, যতক্ষণ না তার কারণে কোন হক বিনষ্ট হয়, কিংবা তা কোন ওয়াজিব কর্ম থেকে বিরত রাখে।
ইবনে জোরাইজ থেকে বর্ণিত যে, তিনি গান শুনা বৈধ মনে করতেন। তাকে জিজ্ঞাস করা হলো, গান কিয়ামত দিবসে আপনার সত্কর্মের অন্তর্ভুক্ত হবে, না কুকর্মের অন্তর্ভুক্ত হবে? তিনি জবাবে বলেন, তা না সত্কর্মের আর না কুকর্মের অন্তর্ভুক্ত হবে, কারণ তাতো অনর্থক বা লাগভ কথারই মতোই। আল্লাহ তা’আলা বলেন,-
لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ
আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তোমাদের (লাগভ) অনর্থক শপথের জন্যে দায়ী করবেন না।
Allâh will not punish you for what is uninentional in your oaths, (সূরা আল-বাকারা ঃ ২২৪, সূরা আল মায়েদা ঃ ৮৯)
ইমাম গাজ্জালী বলেন, যদি আল্লাহর নামে অর্থহীন শপথ করার কারণে- যাতে দৃঢ় প্রত্যয় ও ইচ্ছা থাকেনা এবং বিরোধিতা করার চিন্তা-ভাবনাও থাকেনা- আল্লাহ তা’আলা দায়ী না করেন তাহলে কি করে ভাবতে পারি যে, কবিতা গাওয়া ও নৃত্যের জন্য দায়ী করবেন। (ইমাম গাজ্জালী, এহইয়াউ উলুমুদ্দিন, মিসর, দারুশ শা’আব, কিতাবুস সিমা, পৃষ্টা ১১৪৭) [চলবে]
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:১৯
আনোয়ার আলী বলেছেন: যুক্তি দিয়ে কথা বলুন। জবাব দেব।
২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০০
উড়োজাহাজ বলেছেন: কাঠ মোল্লারা তো মানতে চাইবে না।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২১
আনোয়ার আলী বলেছেন: কাটমোল্লারা ইসলামের কেউ নন।
৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৮
বেকার যুবক বলেছেন: অনেক বড় পোস্ট, এই পোস্টে কমপক্ষে একটা মন্তব্য করতেই হবে, কি করব তাই ভাবছি।
৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৪
সত্য ও সুন্দর বলেছেন: ভাই আপনি কি নিজেকে সাহাবাদের চেয়ে বেশী জ্ঞানী মনে করেন।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২০
আনোয়ার আলী বলেছেন: আমার নিজের কোন মন্তব্য নেই। ডঃ কারযাবী অনেক বড় ইসলামী পন্ডিত।
৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৫
অরণ্য তপু বলেছেন: অননেক বাধা আসবে, কূপমণ্ডূকেরা অশ্লীল কটূক্তিওও করবে। তবু সত্যে অবিচল থাকুন। অনেক শুভকামনা রইল... ✌
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৪
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: গাজার কল্কিতে টান দেন ! গাজা কি ইসলামে হারাম ?
মাজারে যান ডুটাই ভাল জমবে, গান -বাজনা আর ভাং গাজা !