নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপরাজিতা

oparajita

oparajita › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ হিল্লা

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:২৮

ওসমানের বাড়িতে আজকের সকালটা আর দশটা দিনের মত নয়।লোকজনের আনাগোনা, তাদের চোখেমুখের ঔৎসুক্য,চাপা হাসি, বাড়ির মানুষদের কুন্ঠিতভাব সব মিলিয়ে এমন একটা পরিবেশ বিরাজ করছে যা আর কোনদিন এ বাড়িতে দেখা যায়নি।গেল রাতে ওসমানের প্রাক্তন বৌয়ের নতুন বিবাহ হয়ে এ বাড়িতেই বাসর হয়েছে।পর্যাপ্ত ঘরের অভাবে বাসরশয্যা ওসমানের বিছানাতেই পাতা হয়েছিল।আর ওসমানকে ঘুমাতে পাঠানো হয়েছিল দেলু মিঞার বাড়িতে।দেলুর এক চালা ঘরের পৈঠায় শুয়ে চাঁদ-তারা দেখে দেখে ওসমানের রাত কেমন কেটেছে জানিনা কিন্তু নতুন বর নাজিব উল হুদার যে বেশ কেটেছে তা বুঝা গেল সকালবেলা তার পরিতৃপ্ত চোখমুখ দেখে।



দুপুরবেলা হুদা সাহেব গ্রামের উপস্হিত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সম্মূখে তার গত রাতের স্ত্রীকে তালাক দিলে সকলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। তবে মনে মনে বেশি খুশি হলো বোধকরি আবেদা; স্বামীকে গত রাতে টিয়ার ঘরে পাঠানোর পর হতে তার বুকের ভেতর টা কেমন চাপ ধরে ছিলো।স্বামীর মুখে তিনবার তালাক উচ্চারণ শুনে সে দম ছেড়ে বাঁচলো।



ওসমান-টিয়া দম্পতি গাঁয়ের আর পাঁচজনের চেয়ে কম সুখী ছিল না।তাদের অবস্হা স্বচ্ছল,সংসারেও কোন বাড়তি ঝামেলা নেই,পরিবারে কারো কোন রোগ ব্যাধি নেই,এবং ওসমানের কোন নেশা-ভাঙ খাওয়া কি জুয়া খেলার অভ্যাস নেই।এ অবস্হায় সুখে শান্তিতে ঘরকন্না করাটাই নিয়ম।কিন্তু চাঁদের কলঙ্কের মত এ সংসারে সব সুখী মানুষের মনেও কোননা কোন চাপাদু:খ থেকে থাকে।আর ওসমানের সংসারে সেই দু:খটা হলো তার সন্তানহীনতা।



একটা- দুটো বছর নয়, টিয়াকে নিয়ে সে সংসার পেতেছে আটটি বছর হতে চলল; কিন্তু আল্লাহতালা তাদের সংসারে এখনও নতুন মুখ পাঠাননি।এ নিয়ে আফশোস টিয়ার বেশি থাকলেও খোটাটা টিয়াকেই বেশি শুনতে হয়।টিয়ার স্বামী- শ্বাশুড়ীতো বটেই সুযোগ পেলে প্রতিবেশিরাও তাকে দুকথা শুনিয়ে দেয়।মোট কথা বাঁজা মেয়েমানুষ কথাটা টিয়ার কপালে প্রায় স্হায়ী হয়ে যেতে বসেছে।ইদানীং স্বামী-স্ত্রীতে খিটিমিটি লাগলেই ওসমানের মুখ থেকে ঐ খোটাটাই সবার আগে বেরিয়ে আসত।এত শুনেও টিয়া কথাটার সাথে ঠিক অভ্যস্হ হতে পারেনি।তার ভেতরকার সমস্ত আগুন যেন একটিমাত্র দেয়াশলাই কাঠির ছোঁয়ায় দাউদাউ করে জ্বলে উঠত।সেই আগুনই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে মাসতিনেক পূর্বে একদিন তার সংসারটা পুড়িয়ে দিয়েছিল।পোড়া সংসারের গরম ছাইয়ের পানে চেয়ে ওসমান হঠাৎ আবিষ্কার করে যে টিয়াকে সে দারুন ভালবাসত।এত ভালবাসা যে টিয়াকে ছাড়া একটা দিন বেঁচে থাকাও তার পক্ষে অসম্ভব।উপস্হিত অতি উৎসুক গ্রামবাসীর সাক্ষাতে সে এটা ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হয়না বরং প্রমান করতেও সচেষ্ট হয়।একগাছি গরুর দড়ি হাতে বাড়ির পিছনে বড় আমগাছটার দিকে তাকে ছুটে যেতে দেখে তার মা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলে প্রতিবেশীরা অনেক বুঝিয়ে অনেক সান্ত্বনা দিয়েওসমানকে স্বেচ্ছায় প্রাণত্যাগ করার উদ্যোগ হতে নিরস্ত করে এই বলে যে তার বৌ তারই থাকবে। নিছক রাগের মাথায় তিনবার তালাক বলেছে বৈতো নয়; কাগজে-কলমে তো আর কিছু হয়ে যায়নি।



তখন গোটা গ্রামের বড়মাথা,পাকামাথারা এর একটা ফয়সালা করতে বসে।ধর্মমতে তিনবার তালাক বললে বিবি তালাক হয় যদি সাক্ষী থাকে।কোন সাক্ষী আছে কি? দেখা গেল সাক্ষী বিস্তর।ওসমান-টিয়ার গন্ডগোল জমে উঠলেই বেশ কয়েকজন উৎসুক প্রতিবেশী বধুঁ ও ছানাপোনার দল কান্ড দেখতে ও সুশ্রাব্য গালাগালের আর্কষণে ওসমানের উঠানে ভীড় করেছিল।এখন কথা হলো শুধু মেয়েমানুষের সাক্ষের উপর নির্ভর করে বিচার মীমাংসা করা যায়না।আর শিশুদের সাক্ষ্য ধর্তব্য নয়।অতএব কোন পুরুষ সাক্ষী আছে কি?ওসমান মনে মনে একটা নি:শ্বাস ছেড়ে বাঁচল।নাহ্, কোন পুরুষ মানুষ তখন সেখানে ছিল না।কিন্তু ওসমানের ধারণা ভুল প্রমান করে কেরামত মাওলা তার কাঁচাপাকা চাপদড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে অবলীলায় ঘোষণা করলো যে সে ওসমানের তালাক তালাক তিন তালাক শব্দগুচ্ছ স্বকর্ণে শুনেছে।তার উপস্হিতির বিষয়ে ওসমান সন্দেহ প্রকাশ করলে কেরামত যে প্রমান দাখিল করে তাতে করে সকলেরই প্রত্যয় জন্মায় যে কেরামত সত্যি কথা বলেছে।সকালবেলা কেরামতের রাঙা বাছুরটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলনা।এদিকে বেলা বাড়ছে দেখে বৌ রমিছ তাকে তাগাদা দেয় বাছুর খুঁজতে কারন গাই দোয়ানোর সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল।বাছুর খুঁজতে ওসমানের ঘরের পিছনে বাগানে এসে চেঁচামেচি শুনে সে কৌতূহলী হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।রমিছাও সহসাক্ষ্য দেয় যে ঘটনা সত্য।সে সত্যিই স্বামীকে বাছুর খুঁজতে জোর তাগাদা দিয়েছিল এবং তার স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছু সময় পরে বাছুর ছাড়াই এসে এই উত্তেজক সংবাদটি তাকে দিয়েছিল।অতএব ওসমানের বৌ যে শরিয়া মতে সত্যিই তালাক হয়ে গেছে এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বি মত থাকে না।হাজেরানা মজলিসের সম্মিলিত রায় শুনে যত না কাদেঁ টিয়া তার চেয়ে বেশি কাঁদে ওসমান।সে সত্যিই টিয়াকে হারাতে চায়না।অগত্যা মুরব্বীরা অনেক শলা-পরামর্শ করে সকলের মতামত সাপেক্ষে একটা সিদ্ধান্তে আসে।শরিয়া মতে বিবি তালাকের পর তালাকি বিবিকে আবার ঘরে তুলতে হলে প্রথম তিনমাস বিবি ইদ্দত পালন করবে;অত:পর কোন দ্বিতীয় পুরুষের সাথে তার বিবাহের পর যদি সেই খসম ঐ বিবিকে তালাক দেয় তবে আবার তিনমাস ইদ্দত পালনের পর প্রথম স্বামী তাকে পুনরায় বিবাহ করে ঘরে তুলতে পারবে।সুতরাং ওসমান যদি এই মতে রাজী থাকে তাহলে তার বৌকে ফিরে পাবার আশা সে করতে পারে।না, নতুন করে কাবিনের ঝমেলায় ওসমানকে আর যেতে হবেনা; মানুষের তৈরী আইন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি যত কম করা যায় ততই ভাল, কিন্তু আল্লার আইনেতো ফাঁকি চলেনা।জেনাকারীর পরকালীন পরিণতি সম্পর্কে কে না জানে?



এরপর এ ঘটনা নিয়ে আরও কয়েকবার ছেঁড়া মাদুর বৈঠক হয়।মুরুব্বিদের কড়া নির্দেশ ও শাশুড়ীর সাচ্চা ঈমানের পাহারায় ওসমান-টিয়া আলাদা ঘরে রাত কাটাতে থাকে।টিয়ার মা-বাপ নাই, ভাইয়েরাও খুব একটা খোঁজ খবর করতনা। তাই দু:সংবাদটা পেয়ে স্বত:প্রবৃত্ত হয়ে এসে তাকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করার মত কেউ তার বাপের বাড়িতে ছিলনা।তবুও এক ভাই এসেছিল।সব শুনে, দেখে, শাশুড়ীর সুদক্ষ ব্যবস্হাপনায় খুশি হয়ে সে ফিরে গেছে। এমনই করে তিন মাস প্রায় অতিক্রান্ত হচ্ছিল।এখন প্রশ্ন হল কে টিয়ার দ্বিতীয় ও একরাতের স্বামী হবে?দেখা গেল একাজে উমেদারের অভাব গ্রামে নেই।টিয়ার চেয়ে বয়:কনিষ্ঠ যুবক হতে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব ও সর্বজনমান্য বৃদ্ধকেও সে তালিকায় পাওয়া গেল।কিন্তু এদের কারো আবেদনই ধোপে টিকলনা।বয়:কনিষ্ঠদেরকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাদের বাপেরাই ভাগিয়ে দিল এবং বয়:বৃদ্ধের দাবী একারণে অগ্রাহ্য হলো যে সে বিপত্নীক।আর এ কথা কে না জানে যে নতুন স্বামী যদি স্বেচ্ছায় টিয়াকে তালাক না দেয় তাহলে টিয়াকে ফিরে পাওয়ার সব আশা ওসমানের দুরাশায় পরিণত হবে।অনেক আলোচনা, অনেক বিশ্লেষণ, অনেক চিন্তা-ভাবনার পর সমাধানটা বেরুল ওসমানের মায়ের মাথা থেকেই।তিনি ছোট মেয়ে আবেদাকে চিঠি লিখে তাকে তার পতিসহ পিত্রালয়ে আসতে আদেশ করলেন।মেয়ে এলে তার হাত ধরে কেঁদে ফেলে আনুপূর্বিক সব ঘটনা বর্ণনা করে তাকে বললেন, এখন তোর হাতেই বংশের ইজ্জত।আবেদা প্রথমে মায়ের উপর জ্বলে উঠলেও পরে স্তব্ধ হয়ে ভাবতে থাকল। এ পরিবারের মেয়েদের মাঝে তারই সবচেয়ে ভাল ঘরে বিয়ে হয়েছে।একমাত্র তার স্বামীই চাকরিজীবী এবং শহরবাসী। তার ইজ্জতটাও তাই অন্য বোনদের চেয়ে বেশি।মাও তাই তাকে ভরসা করে ডেকে এনেছেন।এখন সে কি করে!



ওসমানের মা আসলে বংশের সম্মানের ব্যাপারে সুক্ষভাবে সচেতন ছিলেন।যেনতেন লোকের শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার জন্য টিয়াকে বাধ্য করার প্রশ্নই আসেনা।কোন যোগ্য সম্মানিত লোকের হাতে পড়লে টিয়া নিজেও না ফিরতে চাইতে পারে। টিয়া সুন্দরী,গুনবতী এবং চতুরাও বটে। ওসমানের চেয়ে ভাল স্বামী পেলে সে হয়ত তাকে একরাতেই এমনভাবে বশীভূত করবে যে বেচারা স্বামীটি সামাজিক কর্তব্য ও প্রতিজ্ঞা ভুলে টিয়াকে নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চাইবে। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা ওসমানের মা মেনে নিতে পারছেননা তা হল তার পুতেরবৌ এই গাঁয়ের কোন লোকের বিছানায় শুয়ে আবার তার ঘরে রাজত্ব করতে আসবে এবং গোটা গ্রাম সে ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকবে।ভবিষ্যতে ওসমান চলাফেরার পথে সেই সৌভাগ্যবান আবাগীর ব্যাটার মুখোমুখি পড়লে উভয়ের মনে ঐ স্মৃতিই চাঙ্গা হয়ে উঠবে।সে হয়ত মুখ টিপে একটা হাসি দিবে কিন্ত ওসমান? তাকে যে বিদ্রুপ হজম করে মাথা নিচু করে গুটিগুটি পায়ে তার সামনে থেকে কেটে পড়তে হবে।এরকম অবমাননা সয়ে ওসমানের মত কুলাঙ্গার বাঁচলেও বাঁচতে পারে কিন্ত তার মর্যাদা ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন জননীর পক্ষে তা কল্পনা করতেও যে ভয়ানক কষ্ট।



তাই একমাত্র আবেদার স্বামীই পারে এই পরিবারের সম্মান রক্ষা করতে।যোগ্য,মান্য ও ঘরের লোকের কাছে মাথানত করাতে লজ্জার কিছু নেই।তাছাড়া আবেদার স্বামী এতটাই ভদ্রলোকযে তার ভাবে বা আচারণে কখনো এ নিয়ে বেচাল,বেফাঁস কিছু ঘটা অসম্ভব। তার নৈতিক চরিত্র নিয়ে কারো মনে এতটুকুও সংশয় নেই্। তাই সে যা করবে তা দায়িত্ব নিয়েই করবে বলে সকলের বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাসের পালে হাওয়া লেগে এবিষয়ে ঐক্যমত গড়ে উঠতে খুববেশি সময়ও লাগলনা। অবস্থা এমন দাঁড়ালযে আবেদাকে দোনোমনো করতে দেখে প্রতিবেশী বয়োজেষ্ঠারা তাকে স্বার্থপর বলে তিরস্কার করতেও কুন্ঠিত হলনা। আবেদাকে রাজী হতে হল এবং রাজী করাতে হল তার মান্যবর,পরহেজগার,ব্যাংক অফিসার স্বামীটিকে।



তিন মাস পেরিয়ে গেছে আরও একমাস পূর্বে।টিয়া তার পুরনো স্বামীর সংসারে পুরনোভাবেই সংসার করছে।কিন্তু কোথাও একটা বড় পরিবর্তন প্রকাশের অপেক্ষায় প্রচ্ছন্ন হয়ে নি:শব্দে ওৎ পেতে আছে।অনিশ্চিত আতঙ্কে টিয়ার শাশুড়ীর দম বন্ধ হয়ে আসে।এসব ব্যাপারে মুরুব্বীদের অনুভব ক্ষমতা প্রায় র্নিভুল হয়ে থাকে।তবুও না জেনে, না শুনে অত বেশি আতন্কিত হওয়া হয়ত উচিৎ নয়; কিন্ত টিয়াকে জিজ্ঞেস করতে তার আরও বেশি ভয় করে।পাছে তার আশঙ্কাকাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়।কিন্ত কেবল শাশুড়ীরই নয়,প্রতিবেশিনীদের মনেও সন্দেহ ঘনাতে শুরু করেছে।কেউ কেউতো পরস্পর গা টেপাটেপি, চাপাহাসি এমনকি ঠারেঠোরে নানা মন্তব্যও করছে।কিন্ত টিয়া নিশ্চুপ।অবশেষে একরাতে খোদ ওসমানই তাকে সন্দিগ্ন প্রশ্নটি করে ফেলল,'ইদানীং তুই আমারে দুরি সরায় দিস কেন?আর তোর প্যাট ফুলাফুলা ঠেহে ক্যান?' টিয়ার মুখে কোন জবাব না পেয়ে ওসমান এবার ক্ষিপ্ত হয়।এক হাতে হ্যাচকা টানে সে টিয়াকে শোয়া থেকে টেনে তোলে।'প্যাটে ছাওয়াল আইছে নাহি?; ক, জবাব দে।বোবা হয়ে আছিস যে?'ওসমানের ধমক চিৎকারে রূপ নেয়।



সে রাতে ওসমান হয়ত টিয়াকে ধরে ঠ্যাঙ্গাত।কিন্ত মা এসে বাইরে দাঁড়িয়ে কঠিন গম্ভীর সুরে ডাকেন ওসমান! টিয়ার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে ওসমান দরজা খুলে দেয়।মা ঘরে ঢুকে টিয়ার মাথায় হাত রেখে বলেন,'সত্যি'? ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে টিয়া শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে ওঠে, মা!একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মা টিয়ার হাত ধরে ওসমানকে বলেন, 'বৌ আজকেরথে আমার ঘরে ঘুমাবি।কাল আবেদারে আসতি লেখবি।সে যা বলবি তাই হবি।'



শাশুড়ীর ঘরে ঘরে মেঝেতে পাতা বিছানায় সারা রাত নির্ঘুম কাটিয়ে টিয়া ধলপহরে ঘরছেড়ে উঠানে এসে দাঁড়ায়।তখন আকাশে শুকতারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে,আধখানি চাঁদ মলিন হেসে বুঝি টিয়ার পানে অপলক চেয়ে আছে।চারধারে আধোআধো জ্যোৎস্না আর জাগিজাগি আলোর এক অপূর্ব মাখামাখি।গোটা পৃথিবী বুঝি এক পড়ন্ত যৌবনা,সুসজ্জিতা,নেশাগ্রস্ত বাইজীর মত না ঘুম,না জাগরণে মদালস পড়ে আছে--হতাশ,রিক্ত,মলিন; তবুও গর্বোদ্ধ।



চাঁদ ম্লান হতে হতে আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে,পূবাকাশে উষা জাগছে একটু একটু করে।টিয়া চেয়ে আছে আকাশ পানে।সে বুঝি একই আকাশে চাঁদ আর সূর্যকে একত্রে দেখতে চায়।তারপর দুজনকে উদ্দেশ্য করে বলতে চায়,ছেলে হোক কিংবা মেয়ে, সে যেন পায় তোমার স্নিগ্ধতা, তোমার তেজ আর তোমাদের বিচরণক্ষেত্র যে সীমাহীন আকাশ তার তুল্য স্বাধীনতা।পেটের উপর কোমল হাতখানি রেখে সে মনে মনে বলে, আমি জানি ওরা তোকে আসতে দিতে নাও চাইতে পারে কিন্ত আমি তা হতে দিবনা।তুই আসবি এই চিরপুরাতন পৃথিবীর নতুন সব সূর্যোদয়ের সাক্ষী হতে।এমন সব সকালকে স্বাগতম জানাতে।এই চাঁদ- সূর্য, এই আকাশ, এই পৃথিবী, এই প্রকৃতি,এই সবকিছু দেখতে,এই ঝির ঝির বাতাস গায়ে মাখতে,এই ঘুমভাঙ্গা পাখির কাকলী শুনতে তোকে যে আসতেই হবে।



মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:৩৮

নির্মোহ কথামালা বলেছেন: ভাল হয়েছে....।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:১৫

oparajita বলেছেন: ধন্যবাদ ।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:৫০

রিফাত হোসেন বলেছেন: aktu kharap lagchee.na aktu na. Aro bashii.prio manush onnar hola onak kostar hooy.

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:১৬

oparajita বলেছেন: কষ্টের হয়। তাইতো তাকে যত্নে রাখা উচিৎ।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:৫২

মাহফুজশান্ত বলেছেন: অনুগ্রহকরে নিচের লিংকটি দেখুন-
"একলগে তিন তালাক ও হিল্লা"- নাউযুবিল্লাহ

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:১৯

oparajita বলেছেন: দেখলাম। জানা বিষয়।

৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:৫৪

অন্ধকারের রাজপুত্র বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে !
+++++++++++

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২০

oparajita বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:০৫

ঠোঁট কাটা বন্ধু বলেছেন: শরিয়া আইনের মায়েরে ুদি। আমার ব্উরে আমি দিনে ৫০ বার তালাক দিমু, ৫১ বার বিয়া করুম। যার োগা জ্বলে জ্বলুক। কোন ানকির পোলা এইডা লইয়া কথা কইলে িচি গালাইয়া দিমু। X(( X(( X(( X(( X(( X(( X(( X((

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২০

oparajita বলেছেন: করতে থাকেন। গিনেজ বুকে নাম উঠতে পারে।

৬| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:০৮

আমি তানভীর বলেছেন: লেখা দারুণ লেগেছে

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২১

oparajita বলেছেন: দারুন ধন্যবাদ।

৭| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:১৩

এস এম ফারুক হোসেন বলেছেন: ভাল লাগলো।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২২

oparajita বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:১৭

ঈষাম বলেছেন: দারুণ!

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৩

oparajita বলেছেন: হ্যাপী।

৯| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:২৯

আলমাস১৭ বলেছেন: ভাই শরীয়া আইনে হিল্লা বিয়ের কথা আছে,তবে আপনি চাইলেই যেমন বউকে তালাক দিতে পারবেন না।আবার চাইলেই যার তার কাছে বিয়ে দিয়ে তালাক নিয়ে তাকে আবার বিয়ে করতে পারবেন না।আর রাগের মাথায় তালাক দিলে তালাক হবে না।
এ ব্যাপারে আলেমরাই ভাল বলতে পারবে।

১০| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:৩৩

রাতুল_শাহ বলেছেন: শিরোনাম দেখে পড়ার আগ্রহটা বেড়ে গেছে। পরে পড়ার জন্য রেখে দিলাম।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৫

oparajita বলেছেন: আপনি শুধু পরে পড়েন। বেশ। পড়ার পর কেমন লাগে জানাবেন।

১১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:০৩

~মাইনাচ~ বলেছেন: সুন্দর গল্প


ভাল লাগল

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৬

oparajita বলেছেন: ছবিটা কিসের, ভাইয়া/আপু?

১২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:০২

শায়মা বলেছেন: মন খারাপ করা গল্প!

০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৭

oparajita বলেছেন: সত্যি মন খারাপ হয়েছে? তাহলেতো আমি লেখক হিসেবে সার্থক।

১৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২২

নিস্প্রভ নীল বলেছেন: সম্ভবত আপনি সামুতে তেমন নিয়মিত সময় দেন না, তবে আমি বলবো আপনি সিরিয়াসলি লিখুন। মনে হচ্ছে অনেকদিন পড়ে একজন ভালো গল্প লেখক পেয়ে গেলাম! :D

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২৬

oparajita বলেছেন: প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমার এই পুরনো পোস্টগুলোতে আগ্রহ প্রকাশের জন্য। আজ বুঝতে পারলাম যে আমি আসলেই বেশ লিখি নইলে আপনি এই পেছনের পাতা উল্টাতে যেতেননা। আমার আগ্রহ এতে সহস্রগুন বেড়ে গেল। হ্যা, নীল, আপনাকে আমি মনে রাখব।

১৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৪৫

ইনো বলেছেন: আপনার গল্পগুলো পড়ছি, ছেলে-পেলে না থাকার ব্যাপারটা মনে হয় বেশ কয়েকবারই এসেছে ।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩২

oparajita বলেছেন: নিস্প্রভ নীলকে এইমাত্র যেটা লিখলাম সেটা অতি অবশ্যই আপনার জন্যও প্রযোজ্য। আমার পুরনো পোস্টগুলো পড়ছেন,খুব আনন্দ হচ্ছে।

হ্যা, ছেলেপেলে না থাকার বেদনাটা বারবার এসেছে, কারণও আছে, সেটা আজ আলোচনা করতে চাইছিনা। তবে কারণ যত বড়ই হোক সেটার পুনরাবৃত্তি যে ভাল লাগেনা সে বোধ আমার আছে। এখন থেকে তাই সতর্ক থাকছি যাতে এ বিষয়টা এড়িয়েও ভাল কিছু লিখতে পারি।

যেকোন পরামর্শকে স্বাগতম।

১৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৫০

সাইফুল ইসলাম নিপু বলেছেন: Valo laglo problem o laglo. Romicha r or jamai er moto lok shob somoi e thakbe kintu upay ki janen?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.