নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক আঘাত সয়েছি একটি গণতন্ত্রের দাবী আদায়ের উপলক্ষকে সামনে রেখে। আমার বুক ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছিল কিছু দুবৃত্ত ছাত্র। আমি এই ঢাকার মাথার উপর দিয়ে চলা শুরু করেছিলাম। আমার এই উন্নত শির ওদের ভাল লাগলো না।
যদিও তারা নজরুলের দ্রোহের কবিতা পছন্দ করে। কিন্তু আমার গর্বকে হিংসে করে, সে তো ভালই বোঝা গেল।
এই দেখুন আমি চলা শুরু করার পর থেকে নগরবাসী কত উপকৃত হলো! কত জ্যাম এড়িয়ে তারা তাড়াতাড়ি অফিসে বা বাড়ি পৌঁছাচ্ছে!
কত গল্প আমাকে ঘিরে তৈরী হচ্ছে!
এই তো গতকালই কত নাগরিক আমার পেটে চড়ে শাহবাগে গেল, মিরপুরে গেল বুদ্ধিজীবি শহীদ মিনারে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। কত শিশু, শিশুর মা গেল যাদুঘর দেখতে। শিশুকে এই দেশ চেনাবে, এই দেশের ইতিহাস জানাবে, তাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার একটা স্টেশন থাকাতে ছাত্রদের যে কত সুবিধা হয়েছে! সেই সাথে যারা বইমেলায় যায়, তাদের জন্যও অনেক সুবিধা হয়েছে। এক গাদা বই হাতে নিয়ে তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে আমার কাছে চলে আসে, চলে যায় অনেক দূর!
কার্জন হলের সামনে দিয়ে যখন আমি চলি, কত ঢাবি এলামনাই আবেগে আপ্লুত হয় সবুজ মখমলের উপরে তৈরি লাল ইটের ইমারত গুলো দেখে। ওই ইমারতগুলোর ভেতরের কাঠের সিঁড়ি বেয়ে কত ছুটে চলা ছোটবেলায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে, এই পরীক্ষা শুরু হয়ে যায় যায়, ক্লাসে দেরী হয়ে গেল, ছুট ছুট ছুট!
আজকের এই আধা পাকা চুল নিয়ে মাঝবয়সী চাকুরে বা গৃহিনীদের এই তো আত্মপ্রসাদ, হাজারো জটিল জীবন সমীকরণের মাঝে একটু খানি প্রশান্তি!
আমার কাছে এসে নারীদের আলাদা আনন্দ! তাদের জন্য একেবারেই প্রথম বগিটা, গোলাপী রং-এর আলাদা কামরা। একটা আলাদা গর্বই বলা যেতে পারে। অনেক দ্রুত চলি বলে দাঁড়িয়ে যেতেও কারো আপত্তি নেই!
তবে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও এখনো কিছু কিছু সার্ভিস দরকার বলে কেউ কেউ মনে করছে। আশা করি সময়ের সাথে সাথে আমি, আমরা সেগুলোও পূরণ করতে পারবো। যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা।
এক দুষ্টের দল আমার দরজাগুলোর পাটাতনের উপর দাঁড়িয়ে দরজা বন্ধ যেন না হয়, সেই বাঁধা দিচ্ছিল। বলি, বাছারা এতে করে আমার সৌন্দর্যই তো নষ্ট হয়ে যাবে! অনেক উপর থেকে তোমাদের নিচে পড়ে যাবার ভয় আছে। আর দেখতে তো তখন লোকাল ট্রেনের মতোই হয়ে যাবে। তোমরা প্লিজ দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে বেড়ে ওঠো!
©somewhere in net ltd.