![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল অসাধারণের মাঝে একজন অতি সাধারণ ।
আজ ভয়াল, রোমহর্ষক ২৫ ফেব্রুয়ারি। ঢাকার বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি আজ। ২০০৯ সালের এই দিনে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ একসঙ্গে ৭৪ জনকে হত্যা করে বিডিআরের কথিত বিদ্রোহী জওয়ানরা।
বিদ্রোহের সূত্রপাতের পর শোনা গিয়েছিল বিডিআর জওয়ানদের নানা অসন্তোষ আর ক্ষোভের কথা। এমনও শোনা গিয়েছিল যে, `অপারেশন ডাল-ভাত` কর্মসূচীতে পরিচালিত ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলোতে যে সৈনিকরা দায়িত্ব পালন করত, তারা লভ্যাংশ না পেয়ে, বাড়তি শ্রমের মূল্য না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছিল ডিজির ওপর। আর বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কারণেই নাকি এ ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছিল ২৫ ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, নিহত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্ধারকৃত বিকৃত লাশ ও হত্যার ধরন দেখে বুঝতে কারও বাকি থাকেনি এটা নিছক বিদ্রোহ নয়, সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যার পেছনে ছিল সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিডিআর ট্রাজেডির ৬ বছর হলেও এখন পর্যন্ত এর প্রকৃত রহস্য জাতি জানতে পারেনি।
প্রায় ৩৬ ঘণ্টার সেই বিদ্রোহের পর পিলখানা তৈরি হয়েছিল একটি মৃত্যুপুরীতে। চারিদিকে শুধু রক্ত আর রক্ত। বিদ্রোহে ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর করা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কামরাঙ্গীরচরের একটি সুয়্যারেজ লাইন থেকে ৯ সেনা কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হাসপাতালের পেছনের একটি গণকবর থেকে উদ্ধার হয় ৩৯টি লাশ। এমটি গ্যারেজ মাঠের গণকবর থেকে উদ্ধার হয় আরো ৯ সেনা কর্মকর্তার লাশ। এ বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, ১ জন সৈনিক, ২ জন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৭ জন বিডিআর সদস্য ও ৬ জন পথচারীসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন।
এত সেনা হত্যাকান্ড এর আগে কখনও হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দু'টি পদাতিক যুদ্ধকে সবচাইতে বড় যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হতো। এর একটি হলো হিটলারের বাহিনী কর্তৃক ডানজিক সমুদ্রবন্দর দখল,দ্বিতীয়টি হল জার্মান বাহিনী কর্তৃক রাশিয়ার সেন্টপিটার্বাগ দখলের অভিযান (১৯৪৩ সালে)। তবে এই দুটি যুদ্ধেও একদিনে জেনারেলসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার নজির নাই। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে ২৫ ফেব্রুয়ারির সেনা হত্যাকান্ড নজিরবিহীন তথা ইতিহাসের সর্ববৃহৎ হত্যাকান্ড নিঃসন্দেহে।
শুধুমাত্র হত্যাকান্ড নয়, এই মামলাটিও ছিল ফৌজদারি আদালতের ক্ষেত্রে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা। দন্ডাদেশের ক্ষেত্রেও পৃথিবীর সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এই মামলা। এই হত্যা মামলার রায়ে ফাঁসির হুকুম হয়েছে ১৫২ জনের। কোনো একটি মামলায় এতো বেশি সংখ্যক ফাঁসির আদেশের নজির আর নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে আসামির সংখ্যা বিবেচনায় এতো বড় বিচার কার্যক্রম কোথাও কখনও অনুষ্ঠিত হয়নি।
রক্তাক্ত ওই এই হত্যাকাণ্ডের পর বিডিআর ভেঙ্গে দিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নতুন নাম রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।পরিবর্তন হয়েছে পোশাক, পতাকা এবং মনোগ্রামসহ অনেক কিছু। বাহিনীর ব্যাপক পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে নতুন করে চারটি আঞ্চলিক সদর, চারটি নতুন সেক্টর এবং ১১টি নতুন ব্যাটালিয়ন তৈরি করা হয়েছে।
যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি এ বিষয়ে অত্যন্ত কৌশলে নীরবতা পালন করে থাকে, তবুও ২০০৯ সালের ভয়াবহ ট্রাজিডির পরের বছর থেকেই বাংলাদেশের কিছু কিছু রাজনৈতিক শক্তি ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পালন করে আসছে। তারা প্রতিবছরই রাষ্ট্র ও সরকারকে বিডিআর ট্রাজেডি দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে, জাতীয়ভাবে শোক দিবস পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। দুঃখজনক হলেও সত্য ৬ষ্ঠ বছরেও জাতীয়ভাবে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শোক দিবস হিসাবে পালন করতে পারিনি আমরা। রাজনৈতিক দলগুলো এখনও এই বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।
আমাদের সেনাবাহিনীর রক্তে রাঙানো ২৫ই ফেব্রুয়ারি আমরা কি ভুলিতে পারি ? বিডিআর ট্রাজেডির সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা । আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে পিলখানা ট্রাজেডির শহীদদের স্মরণে শোকাবহ ২৫ ফেব্রুয়ারিকে "শহীদ সেনা দিবস " হিসাবে জাতীয় শোক দিবস পালন করি।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১৪
Saju Ahmed বলেছেন: ভালো বলেছেন
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭
অবাক ভালবাসা বলেছেন: কে আসল অপরাধি জানি না, তবে এটুকু বলতে পারি সাগর-রুনির মৃত্যু রহস্য যেমন বের হইনি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাও এভাবেই চাপা পরে থাকবে । আমি কোন রাজনেইতিক দলের হয়ে বলছিনা, এটা যদি কোন বিরোধী দলের কাজ হত সরকারি দল সত্যটা ঠিক বের করত, বিরোধী দলের মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য । কিন্তু সেটা হয়নি ।