![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আগমন মানব ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। আল্লাহ তাআলা কোরআনে ঘোষণা করেছেন, “আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি।” (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) এই ঘোষণা শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য নয়; বরং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতি, প্রাণীকুল, উদ্ভিদ এমনকি প্রকৃতি-পরিবেশও এর অন্তর্ভুক্ত। নবীর জীবন ছিল রহমত, ন্যায়, জ্ঞানচর্চা এবং সহিষ্ণুতার এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আজ আমরা যারা তাঁর উম্মত দাবি করি, সেই শিক্ষার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্য রেখে চলছি, তা দেখলে একটি গভীর প্রশ্ন আসে। সাম্প্রতিক বাস্তবতা স্পষ্ট করে—আমরা অনেক ক্ষেত্রে নবীর সর্বজনীন রহমতের ধারণা থেকে বিচ্যুত। প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ব উপেক্ষা, ভিন্নমতের উপর দমন, কুসংস্কারের আড়ালে সহিংসতা, ধর্মীয় শিক্ষা সীমাবদ্ধতার কারণে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি থেকে বিচ্ছিন্নতা—এসব আমাদের সমাজকে নবীর শিক্ষার বিপরীত দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কেবল মুসলিমদের জন্য নয়; তিনি সমগ্র মানবজাতি ও সমস্ত সৃষ্টিকুলের জন্য রহমতস্বরূপ আগমন করেছেন। মদিনার সংবিধান ও অন্যান্য সামাজিক চুক্তি আমাদের শেখায়, নবী ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রতি সহিষ্ণু, ন্যায়পরায়ণ এবং ক্ষমাশীল ছিলেন। তাঁর জীবনধারায় আমরা দেখি—প্রতিটি পদক্ষেপ মানবিক কল্যাণ, প্রকৃতির সুরক্ষা এবং নৈতিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক শিক্ষা নয়; সামাজিক নীতি, জ্ঞানচর্চা এবং পরিবেশ রক্ষাও তার সঙ্গে অভিন্নভাবে যুক্ত। সমগ্র সৃষ্টির প্রতি এই দায়িত্ববোধ আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ প্রকৃতি, মানবিক মর্যাদা এবং জ্ঞান চর্চা—এসবের অভাব মানব সমাজকে ক্রমশ ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নবীর উম্মত হওয়া মানে কেবল নামাজ-রোজা নয় বরং প্রতিটি স্তরে এই রহমতকে বাস্তবায়ন করা।
নবী (সাঃ) কেবল মানুষের কল্যাণের জন্য নয়, সমগ্র সৃষ্টির জন্যই রহমতস্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন। হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে—প্রকৃতি সংরক্ষণ করা, জীববৈচিত্র্যের প্রতি সহানুভূতি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। তিনি বলেছেন, “যদি কিয়ামত আসন্ন হয়, আর কারও হাতে একটি চারা থাকে, সে যদি তা রোপণ করতে পারে, তবে তা রোপণ করবে।” (মুসনাদে আহমাদ) বর্তমান বাস্তবতা দেখাচ্ছে, আমরা নবীর এই শিক্ষার বিপরীতে কাজ করছি। বন উজার, পাহাড় কাটা, নদী ও খাল দূষণ, অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারে মাটি ও জলজ জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। FAO (২০২৪) অনুসারে, বাংলাদেশে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ২০০০ সালের তুলনায় প্রায় ১৫০% বেড়েছে। UNESCO এবং IUCN-এর রিপোর্টও নিশ্চিত করে, রাসায়নিক ও জেনেটিক বিকৃতির ফলে জীববৈচিত্র্য ও কৃষকের স্বাধীনতা হ্রাস পাচ্ছে।
আধুনিক জেনেটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বীজ বিকৃত করা—যা কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণে কৃষককে দায়বদ্ধ করছে—তাও নবীর শিক্ষার পরিপন্থী। ইসলামে কৃষক ও সাধারণ মানুষের রিজিক রক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে:
“যে আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করে, সে নিজেকেই ক্ষতি করছে।” (সূরা নিসা: ১১৯)
অর্থাৎ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা মানবজাতির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
নবীর শিক্ষা নির্দেশ করে—প্রকৃতি রক্ষা শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক নয়, এটি দুনিয়ারও নৈতিক দায়িত্ব। প্রতিটি উদ্ভিদ, জলাশয় এবং প্রাণীকে সংরক্ষণ করা মানবজাতির কল্যাণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আল্লাহ পরিচয় করিয়েছেন “রহমাতাল্লিল আলামিন” হিসেবে। তাঁর জীবনধারায় স্পষ্ট—সহিষ্ণুতা, ক্ষমাশীলতা, ভিন্নমতের প্রতি সম্মান, মানবিক মর্যাদার স্বীকৃতি। কিন্তু আজ আমরা তাঁর নাম ব্যবহার করে যা করছি, তা তাঁর প্রকৃত শিক্ষার বিপরীত। সাম্প্রতিক উদাহরণ—রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নূরা পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে পোড়ানোর ঘটনা—প্রমাণ করে, সমাজে চরম অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতা বেড়েছে। নবী (সাঃ) কখনো এমন কাজের অনুমতি দেননি। বরং তিনি বলেছেন, “মৃত মানুষের হাড় ভাঙা একজন জীবিত মানুষের হাড় ভাঙার সমান।” (সুনান আবু দাউদ) পাশাপাশি, ভিন্নমত ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রশ্নে দেখা যাচ্ছে, অনেক দেশে এখনও মানুষ ধর্মীয় অভিযোগে বিচারবহির্ভূত সহিংসতার শিকার হচ্ছে। Pew Research Center (২০২৩) অনুসারে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ৩১টি দেশের অন্তত ১৭টিতে এই সমস্যা বিরাজমান। নবী (সাঃ)-এর জীবন আমাদের দেখিয়েছে—যতই সমালোচনা, মিথ্যা বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আসুক, ক্ষমা ও সহিষ্ণুতাই পাবে অগ্রাধিকার।
মুসলিম সমাজের একটি বড় সমস্যা হলো—দুনিয়ার দায়িত্ব এড়িয়ে শুধু আখিরাতের পুরস্কারের আশা করা। কোরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখো।” (সূরা কাসাস: ৭৭) নবী (সাঃ) বলেছেন, কিয়ামতের দিনে মানুষকে পাঁচ বিষয়ের জন্য জিজ্ঞাসা করা হবে—জীবন, যৌবন, সম্পদ, জ্ঞান, এবং কিভাবে সে জীবন কাটিয়েছে। অথচ আমরা সামাজিক দায়, পরিবেশ সংরক্ষণ, জ্ঞানচর্চা—এসব থেকে পিছিয়ে কেবল আচার-কেন্দ্রিক ধর্ম পালন করি। Human Development Report (২০২৩) অনুযায়ী, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর অধিকাংশ মানব উন্নয়ন সূচকে পশ্চাদপদ। নবীর শিক্ষায় স্পষ্ট—মানুষের কল্যাণে কাজ করাই প্রকৃত ধর্ম।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর অন্যতম মৌলিক শিক্ষা হলো জ্ঞানচর্চা। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীর ওপর ফরজ।” (সুনান ইবনে মাজাহ) কেবল ধর্মীয় জ্ঞান নয় বরং মানব সভ্যতার প্রতিটি শাখায় অনুসন্ধানের দায়িত্ব নবী প্রদান করেছেন, জ্ঞানার্জনে চীনে যাওয়ার নির্দেশনাই এর বড় প্রমাণ। নবীর উম্মতরা যদি সত্যিই তাঁর রহমতের উত্তরাধিকারী হতে চায়, তবে শিক্ষার ক্ষেত্রেও তার প্রয়োগ প্রয়োজন। ইসলামের সোনালি যুগে মুসলিম সমাজ এই নির্দেশনার আলোকে অগ্রগামী হয়েছিল। আল-রাজি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন, ইবনে সিনা চিকিৎসা ও দর্শনে বিশিষ্ট অবদান রেখেছিলেন, আল-বিরুনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ভূগোলে বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছিলেন, এবং ইবনে রুশদ দর্শন ও যুক্তিবিদ্যায় নবীর শিক্ষার আলোকে মানব সমাজে সত্য ও যুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। এ সময়ের বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রগতি এমন ছিল যে, ইউরোপীয় রেনেসাঁ ইসলামী জ্ঞানচর্চার ধারাকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
কিন্তু আজকের মুসলিম সমাজে সেই ধারার অবমূল্যায়ন লক্ষ্য করা যায়। অধিকাংশ মুসলিম দেশেই শিক্ষার মান, গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের পরিমাণ বিপুলভাবে কম। UNESCO (২০২২) এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর গড় গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় জিডিপির মাত্র ০.৮%, যেখানে বৈশ্বিক গড় ২.২%। Pew Research Center (২০২৩) দেখায়, ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি অগ্রাধিকার থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও নতুন ধারণার প্রতি অনীহা ব্যাপকভাবে বিরাজ করছে। ফলস্বরূপ—শিক্ষার গুণগত মান কম, বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে মুসলিম দেশগুলো পিছিয়ে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে অংশগ্রহণ প্রায় নেই। বাংলাদেশের উদাহরণও অনুরূপ। দেশটির শিক্ষা বাজেট জিডিপির মাত্র ২%-এর নিচে, যেখানে UNESCO ন্যূনতম ৪-৬% ব্যয় প্রস্তাব করেছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং R&D-এর প্রতি অবহেলা—এসব নবীর জ্ঞানের দিকনির্দেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নবীর শিক্ষা নির্দেশ করে—জ্ঞান অর্জন ও প্রযুক্তি ব্যবহার কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয় বরং সামাজিক কল্যাণ, পরিবেশ রক্ষা ও মানবমুক্তির জন্য। নবীর উম্মত হওয়া মানে শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার পালন নয়; বরং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, দর্শন, সাহিত্য এবং জ্ঞানচর্চার প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রগামী হওয়া। জ্ঞানচর্চার অভাব কুসংস্কার ও চরমপন্থাকে উস্কে দেয়, যা নবীর শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত। সত্যিকার উম্মত হওয়া মানে জ্ঞানকে আলিঙ্গন করে মানবকল্যাণে প্রয়োগ করা।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মোৎসব, মিলাদুন্নবী, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলিম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রথা। অনেকের কাছে এটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কিন্তু প্রকৃত তাৎপর্য অনেক গভীর। নবী যেহেতু “রহমাতাল্লিল আলামিন”—সমগ্র সৃষ্টির প্রতি দয়ার প্রতীক—তাহলে তাঁর জন্মস্মরণও কেবল মুসলিম সমাজের সীমাবদ্ধ নয়। ইতিহাস দেখায়, বহু সময় ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও বর্ণের মানুষও এই উৎসবে অংশ নিয়েছে, কারণ নবীর শিক্ষা কেবল আধ্যাত্মিক নয়, মানবিক ও সার্বজনীন। মিলাদকে কেন্দ্র করে বিতর্কও রয়েছে—কেউ এটিকে বিদআত হিসেবে নিন্দা করেন, আবার কেউ এটিকে “বিদআতে হাসানা” বা উত্তম উদ্ভাবন হিসেবে মূল্যায়ন করেন। তবে বাস্তবতা হলো, ইসলামের ইতিহাসে বহু পরিবর্তন ও প্রথা এসেছে, যেগুলো সরাসরি কোরআন-হাদিসে উল্লেখ নেই, কিন্তু সামাজিক কল্যাণ ও মানবিকতার কারণে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। যেমন—মসজিদে মাইক্রোফোন ব্যবহার, ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠন, কাগজে কোরআন ছাপানো—এসব প্রায় নবপ্রবর্তিত হলেও সমাজে কল্যাণ বয়ে এনেছে। তাই প্রশ্ন হলো, মিলাদ যদি নবীর দয়া, ন্যায় ও জ্ঞান প্রচার করে সমাজে ঐক্য ও মানবকল্যাণ আনে, তাহলে এটিকে শুধুমাত্র বিভাজনের অজুহাত বানানো কতটা যৌক্তিক? মিলাদের আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত—ন্যায়, দয়া, জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক ঐক্য প্রচার। নবী (সাঃ)-এর শিক্ষা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মর্যাদা ও সম্মান দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। আজকের বিশ্বে ধর্মের নামে সহিংসতা, বিভাজন ও বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নবীর জন্মোৎসব মানবতার সার্বজনীন উৎসব হিসেবে উদযাপিত হতে পারে। মুসলিমদের উচিত এ উৎসবকে সংকীর্ণতার দেয়ালে আটকে না রেখে, মানবকল্যাণ, দয়া ও জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা।
নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন—“রহমাতাল্লিল আলামিন।” অর্থাৎ তিনি কেবল মুসলিমদের জন্য নয় বরং সমগ্র মানবজাতি, প্রাণীকুল, উদ্ভিদ, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, পরিবেশ, প্রকৃতি—সবকিছুর জন্য দয়ার প্রতীক। তাঁর জীবনদর্শন ছিল এমন এক আলোকবর্তিকা, যা সীমান্ত ও ধর্মভেদ ছাড়িয়ে মানবমুক্তি, ন্যায়বিচার, সহিষ্ণুতা, ও জ্ঞানচর্চার পথ দেখিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সমাজের বাস্তবতা আমাদের কাছে এক করুণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—আমরা কি সত্যিই সেই রহমতের উত্তরাধিকার বহন করছি? আমরা প্রকৃতি ধ্বংস করছি, প্রাণীকুল নিধন করছি, নদী-খাল দূষিত করছি, জেনেটিকভাবে পরিবর্তিত বীজ দিয়ে কৃষককে কর্পোরেট দাসে পরিণত করছি। আমরা ভিন্নমতের মানুষকে দমন করছি, মৃতদেহ পর্যন্ত অসম্মান করছি, কুসংস্কারের আড়ালে সহিংসতা চালাচ্ছি। আমরা জ্ঞান, বিজ্ঞান, দর্শন ও প্রযুক্তির পথে চলছি না; ধর্মকে কেবল আচার-অনুষ্ঠানের খোলসে বন্দী করেছি। নবীর উম্মত হওয়ার প্রকৃত মানে হলো—শুধু নামাজ বা রোজা পালন নয়। বরং এটি অন্তর্ভুক্ত করে প্রকৃতিকে রক্ষা করা: গাছ লাগানো, মাটি ও নদী সংরক্ষণ করা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা; প্রাণীকুলের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া: পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা, পশু ও উদ্ভিদের প্রতি সদয় মনোভাব; ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণু থাকা: অন্য ধর্মাবলম্বী বা ভিন্ন মতের মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতা স্বীকার করা; জ্ঞানকে আলিঙ্গন করা: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, দর্শন, সাহিত্য ও যুক্তির আলোকে নবীর শিক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত করা; এবং কুসংস্কার ভাঙা: অজ্ঞতা ও গোঁড়ামি দূর করে যুক্তি, সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা। নবীর জন্মোৎসব, মিলাদ কেবল একটি আচার-অনুষ্ঠান নয়। এটি হতে পারে মানবতার শিক্ষার এক জীবন্ত উদাহরণ—যেখানে ন্যায়, দয়া, জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক ঐক্যকে সর্বাগ্রে স্থাপন করা হয়। যদি আমরা এই উপলক্ষ্যকে সঠিকভাবে গ্রহণ করি, তবে তা আমাদেরকে নবীর উম্মতের প্রকৃত লক্ষ্য—রহমতের উত্তরাধিকার—প্রতি আরও অঙ্গীকারবদ্ধ করবে। আজকের মানবসভ্যতার সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো একটি সর্বজনীন নৈতিক ভিত্তি, যা পরিবেশ, মানবমর্যাদা এবং জ্ঞানচর্চার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর শিক্ষা ও জীবনই সেই ভিত্তি। তাঁর জন্মোৎসব কেবল মুসলমানদের উৎসব নয়, বরং মানবতার মুক্তির আলোকে স্মরণ করার দিন। আমরা যদি সত্যিই তাঁর রহমতের উম্মত হতে চাই, তবে প্রথম কাজ হলো—নিজেদের জীবনকে তাঁর আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে গড়ে তোলা। নবী (সাঃ)-এর জীবন আমাদের শেখায় যে, আচার-অনুষ্ঠান ও বাহ্যিক ধর্মীয় আনুগত্যের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো—মানবতা, ন্যায়, জ্ঞানচর্চা এবং দয়ার সংস্কৃতি চর্চা করা। জন্মদিনের এই বিশেষ দিনে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হওয়া উচিত—নবীর শিক্ষাকে বাস্তবে প্রতিফলিত করা, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা, প্রকৃতি রক্ষা করা, সহিষ্ণুতা বজায় রাখা, এবং জ্ঞানচর্চার আলো ছড়িয়ে দেওয়া। শুধুমাত্র তখনই আমরা সত্যিকার অর্থে নবীর রহমতের উত্তরাধিকারী হতে পারব।
২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩০
বাজ ৩ বলেছেন: অসাধারন তত্বজ্ঞান মূলক একটি রচনা,ষব মুসলিমের উচিত এভাবে জীভ গঠন করা।তবেই সমাজে শান্তি সস্থি, সুশৃঙ্খলা, প্রতিষ্ঠিত হবে।
৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৪
সুলাইমান হোসেন বলেছেন: মিলাদ এবং জন্মদিন পালন বেদআত হওয়ার কারনে তা পরিত্যাজ্য।যারা বলে এটাতো উত্তম বেদআত।তাদের জানা উচিত দ্বীনের ভিতরে উত্তম বেদআত প্রবর্তন করাও সতর্কতার দাবি রাখে।সাহাবায়ে কেরাম কিছু উত্তম বেদাত আবিষ্কার করেছিলেন,তাও উচু মকামের সাহাবি,যারা খেরাফতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।উত্তম বেদাত আবিষ্কার করার যোগ্যতাও সবার মধ্যে নেই।
৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
আমাদের নবী (স: ) বায়জান্টাইন ও পারশিকদের রাজত্ব দেখে, আরবদের জন্য ১টি রাজত্ব গঠন করতে চেয়েছিলেন; সেটাই তিনি করেছেন; ধর্ম উনি চালু করেছেন ইহুদীদের অনুকরণে; আল্লাহ ইহাতে যুক্ত ছিলেন বলে মনে হয় না।
৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৮
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
নবী (স: ) ময়মনসিংহ এগ্রিকালচার ইউণিভার্সিটর প্রফেসর ছিলেন না; প্রাকৃতিকভাবে মদীনায় খেজুর, সামান্য কিছু শস্য ও পশু পালনের ব্যবস্হা ছিলো, সেটা দিয়ে ভয়ংকর গরীব অবস্হায় আরবেরা চলতো।
আপনি বীজ ইত্যাদি নিয়ে যা বলছেন, এগুলো আপনার আবিস্কার।
৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০২
বাজ ৩ বলেছেন: জেনারেশন একাত্তুর আপনার ধর্মীয় পোস্টে বালপাকনানী করার প্রয়জন নাই।আপনি অন্য কোথাও গিয়ে লেদান।আপনি তো অ্যামেরিকার গরু-ছাগলদের মধ্যে থাকেন।সেখানেই লেদান
৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৪
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
ইহা ধর্মীয় পোষ্ট নয়, ইহা বেকুবী সম্প্রসারণের পোষ্ট।
৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
ঢাকায় আমেরিকান গরুছাগলগুলো তাদের দুতাবাসে ঘাস খায়; আপনাকে ভেতরে যেতে দেয় কিনা, ১ দিন গিয়ে ঘুরে আসেন।
৯| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২
বাজ ৩ বলেছেন: @জেনারেশন একাত্তুর। গরু থেকেও দুদু পাওয়া যায়।মানুষ খেয়ে তৃপ্তি লাভ করে, তাই বলে কখোনো কি দেকেছেন গরু মানুষ হয়ে গেছে।গরু কখোনো মানুষ হয়না।হাম্বাই থাকে।
১০| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
ধর্ম মানুষ থেকে গরু তৈরি করে; ধর্ম গরুকে মানুষ করে না।
১১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭
বাজ ৩ বলেছেন: জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
আমাদের নবী (স: ) বায়জান্টাইন ও পারশিকদের রাজত্ব দেখে, আরবদের জন্য ১টি রাজত্ব গঠন করতে চেয়েছিলেন; সেটাই তিনি করেছেন; ধর্ম উনি চালু করেছেন ইহুদীদের অনুকরণে; আল্লাহ ইহাতে যুক্ত ছিলেন বলে মনে হয় না
কেনো মনে হয়না,আল্লাহ ইহাতে যুক্ত ছিলেন?
১২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫
কামাল১৮ বলেছেন: সব ধর্মই মানুষের তৈরি।
১৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০১
Akasher tara বলেছেন: গবেষনাধর্মী পোস্ট
১৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১৫
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
আল্লাহ গ্যালাক্সী বানায়, আরবের মরুভুমিতে বেদুইনরা কি করছে, উহাতে সময় দেয়া সম্ভব নয়।
১৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪৫
বাজ ৩ বলেছেন: জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
আল্লাহ গ্যালাক্সী বানায়, আরবের মরুভুমিতে বেদুইনরা কি করছে, উহাতে সময় দেয়া সম্ভব নয়
আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করি—<<<
১।আপনি যা জানেন না তা নিয়ে ত্যানা প্যাঁচান কেন?
২।আপনি তো ঐ ব্যাক্তির মতো,যে ব্যাক্তি একটি মোবাইল ষেট হাতে নিয়ে,বাহিরের সবকিছু দেখে,ভিতরের কোডিং,জাভাস্ক্রিপ্ট, বুলিয়ান লজিক গেট সম্পর্কে বেখবর থেকে যায়?অনুরুপ আপনি দিনিয়ার বাহিরের সবকিছুই জানেন,কিন্তু ভিতরের কোডিং,পরিচারন রহস্য সম্পর্কে আপনার অজানা,তা নয় কি?
৩।আপনি যদি না জানেন সোজা সাপ্টা বলে দিবেন,এসব বিষয় আমি জানিনা?ত্যানা প্যাঁচানো এবং খোচানোর মানে কি?
৪।ধার্মিকদেরকে ধার্মিকদের উপর ছেড়ে দেন,তারা যা মন চায় তা করুক আপনার কাজ আপনি করেন।
১৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৮
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
সেলফোনের সব চিপস, সার্কিট, সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার সুরা ফাতেহার মাঝে ছিলো; আমি ওখান থেকে শিখে নিয়েছি। আপনি তো সুরা ফাহেহা মুখস্হ জানেন; সেলফোন ম্যানুফেকচারিং শুরু করেন।
১৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
@বাজ ৩,
ধর্মীয়রা আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষে যুদ্ধ করেছিলো; এখন জাতীয় সংস্কৃতিকে আক্রমণ করছে।
১৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৪৩
বাজ ৩ বলেছেন: @জেনারেশন একাত্তর।
১।সেলফোন ম্যানুফাকচারিং এ আমার আগ্রহ নাই, আমার আগ্রহ অন্য বিষয়ে।
২।
ধর্মীয়রা আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষে যুদ্ধ করেছিলো; এখন জাতীয় সংস্কৃতিকে আক্রমণ করছে।
আপনার এই কথা পুরোপুরি সত্য নয়,ইতিহাস থেকে জানা যায়,এটা আংশিক সত্য।
১।একদল মৌলবী সত্যিই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলো।
২।আরেকদল আলেম চুপ থেকেছিলো,পাকিস্তানি স্বৈর শাষনের প্রতি ক্ষোভ ছিলো।
৩।আরেকদল আলেম মুক্তিযুদ্বের পক্ষে ছিলো।
১৯| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫৪
বাজ ৩ বলেছেন: @জেনারেশন
জাতীয় সংস্কৃতিকে কিভাবে আক্রমন করছে ধর্মীয়রা?জাতীয় সংস্কৃতি বলতে আপনি কি কি বুঝেন বিস্তারিত বুঝিয়ে বললে উপকৃত হতাম।
আপনি যদি বলেন পয়লা বৈশাখে অর্ধ উলঙ্গ মেয়েদের নাচানাচি উপভোগ করা হলো আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি।তাহলে এটা সুধু আমি নই সুরুচিসম্পন্ন মানুষ মেনে নিতে পারবেনা,বখাটেরা সেটা জাতীয় সংস্কৃতি বলে মেনে নিবে।
আরো কি কি জাতীয় সংস্কৃতি আছে বলুন?
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩০
বিজন রয় বলেছেন: নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মদিনে শুভেচ্ছা।