নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনন্য সাধারণ মহাপৃথিবীর বিশালতায় আমি অতি সাধারণ এক ক্ষুদ্র প্রাণী

শূণ্য পুরাণ

অনন্য সাধারণ মহাপৃথিবীর বিশালতায় আমি অতি সাধারণ এক ক্ষুদ্র প্রাণী

শূণ্য পুরাণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গাদের ইতিহাস

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৪

অষ্টম শতাব্দীতে আরবদের আগমনের মধ্য দিয়ে আরাকানে মুসলমানদের বসবাস শুরু হয়। আরব বংশোদ্ভূত এই জনগোষ্ঠী মায়্যু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের (বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের নিকট) চেয়ে মধ্য আরাকানের নিকটবর্তী ম্রক-ইউ এবং কাইয়্যুকতাও শহরতলীতেই বসবাস করতে পছন্দ করতো। এই অঞ্চলের বসবাসরত মুসলিম জনপদই পরবর্তীকালে রোহিঙ্গা নামে পরিচিতি লাভ করে।

রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও তা অলিখিত। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং মংডু, কিয়ক্টাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা এলাকায় এদের বাস। বর্তমান ২০১২ সালে, প্রায় ৮,০০,০০০ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করে। মায়ানমার ছাড়াও ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এবং প্রায় ৫লাখ সৌদিআরবে বাস করে বলে ধারনা করা হয় যারা বিভিন্ন সময় বার্মা সরকারের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী।

রোহিঙ্গা কারা?
বর্তমান মিয়ানমারের রোহিং (আরাকানের পুরনো নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ইতিহাস ও ভূগোল বলছে, রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। তাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়।

রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে_ সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা।

তবে,ওখানকার রাজসভার বাংলা সাহিত্যের লেখকরা ঐ রাজ্যকে রোসাং বা রোসাঙ্গ রাজ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

তবে ইতিহাস এটা জানায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।

এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা, সে প্রশ্ন জ্বলন্ত। তারা মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের বহু ভূল করে গেছে ব্রিটিশ শাসকরা।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ।

মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের অনেকের কাছেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী 'কালা' নামে পরিচিত। বাঙালিদেরও তারা 'কালা' বলে। ভারতীয়দেরও একই পরিচিতি। এ পরিচয়ে প্রকাশ পায় সীমাহীন ঘৃণা।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
ছবি: ডয়েচে ওয়েলে, গুগল

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৭

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রুটিগুলি খুজছি । কি কি কারণ থাকতে পারে এমন নির্মম নির্যাতনের পিছনে?

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: মায়ানমারে সাংবাধিক প্রবেশ প্রায় নিষিদ্ধের মত, ওখনকার ঘটনা নিরপেক্ষভাবে জানা কঠিন। তবে দুনিয়ার অনেক দেশে সংখ্যালঘুদের উপর যেসব কারণে নির্যাতন হয় একই কারণ হতে পারে, মায়ানমারের মানুষের হিংস্রতা সীমাহীন, নির্যাতিতের পক্ষে কথা বলার জন্য সংখ্যাগুরুদের কেউ দাঁডায় নি এটা বিস্ময়কর।

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী।

আবার তারাই সবচে উদাসীন এই বিষয়ে!!!!!! বিস্ময়কর!!! নয়???

বিশ্বনেতৃত্বের জরুরী উদ্যোগ প্রয়োজন।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৫

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অবশ্যই বিস্ময়কর।

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫

এ আর ১৫ বলেছেন: আপনাদের অনেক প্রশ্নের জবাব এখানে আছে , একটু দেখবেন ---- এইটা কি মুসলিম নিপীড়ন , না জাতিগত নিপীড়ন ??? ( প্রসঙ্গ রহিঙ্গা নিধন )

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৯

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: দেখছি ভাই, সংঘাতটি জাতিগত হলেও ধর্মীয় বিদ্বষের দিকে নিয়ে গেছে বৌদ্ব ভিক্ষুরা। মিয়ানমার, পুরো রাষ্ট্রব্যাবস্থা এতটা হিংস্র হয়ে গেল, এটা বিস্ময়কর।

৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১১

এই আমি রবীন বলেছেন: [link|http://www.sylhettoday24.com/opinion/details/6/747|রোহিঙ্গা সমস্যায় ধর্মকে অগ্রাধিকার দেবেন না
"লক্ষ করবেন, মায়ানমারের সকল মুসলমানদের উপর কিন্তু অত্যাচারটা হচ্ছে না। অত্যাচারটা হচ্ছে মূলত রোহিঙ্গাদের উপর। রোহিঙ্গারা বাস করে রাখাইন এলাকার মংডু, বুছিডং আর আরও তিন চারটা শহরে। মায়ানমারে অন্যান্য মুসলমানরা যে আছে- রোহিঙ্গাদের তুলনায় ওদের সংখ্যা অনেক বেশী- ওদের উপর এইসব অত্যাচার হচ্ছে না। যদিও অসহিষ্ণুতা নাকি প্রতিদিনই বাড়ছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের উপরই মায়ানমারের মানুষদের এতো রাগ কেন?

১৯৪৭ সনে ভারত পাকিস্তান ভাগাভাগি হয়। এর বছর খানেক আগে, এটা যখন নিশ্চিত হয়ে গেল যে ভারত স্বাধীন হয়ে মুসলমানদের জন্যে আর হিন্দুদের জন্যে আলাদা দেশ হবে তখন রোহিঙ্গা নেতারা বার্মিজ মুসলিম লীগ গঠন করে। আর ওদের নেতারা গিয়ে মুহম্মদ আলী জিন্নার সাথে দেখা করে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। ওদের ইচ্ছা ছিল রাখাইন প্রদেশ বা এর রোহিঙ্গা মুসলিম প্রধান এলাকাগুলি পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হোক।"


আপনার লেখায় এটা উঠে আসেনি কি কারণে একটা জাতি একটা সম্প্রদায়ের উপর এমন ক্ষেপে উঠল। যদিও আমি এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে ।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৮

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: "১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ।"
পাকিস্তান স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুর ১৯৬২ থেকে এর অাগে তাদের অবস্থা ভাল ছিল।

৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৫

Mukto Mona বলেছেন: নবনির্বাচিত বিএনপি না বুঝেই জামাতি কুটকৌশলের ফাদে পরে রহিঙ্গা সমস্যা সুরু হয় ৯০ দশকের পর।

বাংলাদেশের মৌদুদিবাদি ওহাবী এজেন্টরা সিমান্ত পার হয়ে রহিঙ্গা জনবসতি এলাকায় সৌদি-পাকি আইএসাই মদদে মসজিদে মসজিদে, ঘরে ঘরে ধর্মপ্রচারের নামে মৌদুদিবাদি ইসলাম প্রচার সুরু করে। ইসলামি বিধিনিষেধ .. দাড়ী-টুপি হেজাব, কালো বোরখা … স্থানীয়দের ঘৃনা করতে শিখিয়েছে বছরের পর বছর। সমস্যা সুরু হয় ৯০ দশকের পর। বাংলাদেশের জামাত ও তৎকালীন বিএনপি জোট এরা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল ৯০ দশকের পর – মৌদুদিবাদি ইসলাম ও সৌদি ও আরবদের ফান্ডিং ও বিএনপি সুযোগ করে দেয়ার আরো আগে থেকেই। রহিঙ্গাদের সমস্যার কারন। নবনির্বাচিত বিএনপি না বুঝেই জামাতি কুটকৌশলের ফাদে পরে।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: ৯০ এর অাগে অারাকানবাসী কি অমুসলিম ছিল? অাপনার তথ্যের উৎস উল্লেখ করেন।
যারে দেখতে না পারি, তার চলন বাঁকা।

৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬

Mukto Mona বলেছেন: রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে বার্মা সরকার। শুধু তাই নয় কয়েকশ বছরের পিতৃভূমিতেই তাদের বলা হচ্ছে অবৈধ অভিবাসী বাঙ্গালী জাতী। তাই নিজেদের দেশে তাঁরা আজ প্রবাসী। নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় কয়েক হাজার মানুষকে। সেই হত্যাযজ্ঞ এখনো চলমান। এমনকি এ পর্যন্ত হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম এর ঘড় বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: এভাবে চলতে দেয়া যায় না।

৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১২

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: বিশ্বের মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা কই

২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২০

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: মুসলমানদের মানবাধিকার থাকতে নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.