নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনন্য সাধারণ মহাপৃথিবীর বিশালতায় আমি অতি সাধারণ এক ক্ষুদ্র প্রাণী

শূণ্য পুরাণ

অনন্য সাধারণ মহাপৃথিবীর বিশালতায় আমি অতি সাধারণ এক ক্ষুদ্র প্রাণী

শূণ্য পুরাণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুগ্ধতায় বিমোহিত করা ওমর খৈয়ামের একটি রুবাই

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৯


বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস নিমার্ণকারী একটি সভ্যতা হল পারস্য সভ্যতা। সভ্যতার ইতিহাসে পারসিরা সর্বপ্রথম সষ্ট্রার একত্ববাদের ধারণা দেন। পারসি দার্শনিক জরথুষ্ট্র এই মতবাদ প্রচার করেন। ষষ্ঠ শতকের শেষের দিকে অারবে ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মদ (স) এর অাগমন ঘটে,তার প্রচারিত জীবণ বিধান সভ্যতার ইতিহাসের একটি মাইলফলক,অাঁধার দুনিয়ায় অালোর রশ্মি। মক্কা বিজয়ের পর তিনি ইসলামের সুমহান বাণী চিঠির মাধ্যমে বেশ কয়েকজন রাষ্টপ্রধানের নিকট প্রেরণ করেন, পারস্য সম্রাটও তাদের একজন ছিলেন। তৎক্ষনাৎ সম্রাট বার্তা ছুড়ে ফেলেও পরবর্তীতে ইসলামের সুশীতল ছায়া থেকে পারস্যবাসী বঞ্চিত হয় নি। ইসলাম পরবর্তী পারস্য জন্ম দিয়েছে জগদ্বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকের, তাদের একজন ওমর খৈয়াম।

ওমর খৈয়াম চার লাইনের বিশেষ ধরনের কবিতা লিখে বিখ্যাত হয়ে অাছেন। তার কবিতাগুচ্ছ রুবাইয়াৎ নামে সমাদৃত হয়েছে। পেত্রার্কের সনেটের মত রুবাইয়াৎ এক বিশেষ ধরনের চতুষ্পদী কবিতা। খৈয়ামের কবিতাগুচ্ছের বিষয়বস্তুু প্রেম, উপভোগ, পরকালের সুখ দু:খের অবিশ্বাস,জাগতিক বিষয়ে উদাসীনতা,মাদকতা প্রভৃতি বিষয় উঠে এসেছে। তৎকালীন পারস্যের (বর্তমান ইরান) রাজধানী খোরাসানের নিশাপুরে ১০৪৮ সালে এই অমর কবি জন্মগ্রহণ করেন, ১১২৩ তার মৃত্যু সাল।
রুবাই হলো একপ্রকার ঠাসবুনোটের কবিতা, এর মাধ্যমে মূলত স্রষ্টার স্তুতি বা জীবনের গভীর দর্শনকে ফুটিয়ে তোলা হয়। আরবীতে রুবাই বলতে বুঝায় চার লাইনের কবিতা, যার শেষ অক্ষরের বিন্যাস a a b a; অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ লাইন ছন্দবদ্ধ , আর তৃতীয় লাইনে হয় ব্যতিক্রম । রুবাই এর গঠন প্রতিটি লাইনের শেষ অক্ষর দেখে চেনা যায়। কোনও রুবাই এর শেষ অক্ষর যদি a হয় তাহলে এর দ্বিতীয় ও চতুর্থ চরনের শেষ অক্ষর-ও a হবে। মাত্রা অনির্দিষ্ট, তবে প্রতিটি চরনে সমান রাখতে হয়। মধ্যযুগের আরবী ও ফার্সী সাহিত্যে এই কবিতারীতি সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায়। রুবাই এর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে ওমর খৈয়ামের কালজয়ী গ্রন্থ রুবাইয়াত, যা আসলে একগুচ্ছ রুবাই এর সংকলন।
খৈয়ামের রুবাইয়াৎ বাংলাভাষায় বেশ কয়েকজন তরজমা করেন। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে কাজী নজরুল ইসলাম, সৈয়দ মুজতবা অালী, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং পরবর্তীকালে অারো অনেকে। নজরুলের অনুবাদকে অনেকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন। নজরুল সরাসরি পারসি থেকে তরজমা করেছেন,খৈয়ামের দেয়া অন্তমিল ঠিক রেখেছেন,তার সহজাত কাব্য প্রতিভার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।



খৈয়ামের খুব চমৎকার একটি রুবাই যে কোন মুগ্ধ পাঠককে বিমোহিত করবে। নজরুলের অনুবাদ করা রুবাই টি দিলাম।

এক সোরাহি সুরা দিও, একটি রুটির ছিলকে অার,
প্রিয় সাকি, তাহার সাথে একখানি বই কবিতার,
জীর্ণ অামার জীবণ জুড়ে রইবে প্রিয়া অামার সাথ,
এই যদি পাই চাইব নাকো তখত্ অামি শাহেনশার।

সৈয়দ মুজতবা অালীর একই রুবাইয়ের তরজমা করেছেন। ভাষার সহজবোধ্যতা তার তরজমা অারো বেশি শ্রুতিগ্রাহ করেছে।

এইখানে এই তরুর তলে,তোমায় অামায় কৌতুহলে,
যে ক'টাদিন কাটিয়ে যাবে প্রিয়ে,
সঙ্গে রবে সুরার পাত্র, অল্পকিছু অাহারমাত্র,
অারেকখানি ছন্দমধুর কাব্য হাতে নিয়ে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন নজরুলের অনুবাদ। রুবাইর শর্তও অক্ষুন্ন রয়েছে পরিপূর্ন ভাবে....

মুগ্ধতা।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩০

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: সত্যিই অসাধারাণ, অাপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৫

প্রামানিক বলেছেন: খুব ভালো লাগল।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩২

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অাপনাকে ভাল লাগাতে পেরে অানন্দিত।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: শূণ্য পুরাণ ,



পারসি দার্শনিক যরথুষ্ট্র এই মতবাদ প্রচার করেন ....
এই লাইনটিতে একটি ধন্ধ লেগে গেলো । "যরথুষ্ট্র" ( সম্ভবত নামটি হবে জরথুস্ত্র ) নামে কোনও দার্শনিক নেই মনে হয় । প্রুশিয়ার সাকসনি প্রদেশে জন্মগ্রহনকারী বিশ্বনন্দিত দার্শনিক ফ্রেডারিক নীট্‌শের একটি সৃষ্টি জরথুস্ত্র চরিত্রটি।

বেশি ভালো লাগলো সৈয়দ মুজতবা অালীর তরজমাটি ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৮

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: জোরোয়াষ্টার (গ্রিক Ζωροάστρης, Zōroastrēs) বা জরথ্রুস্ট্রা (এভেস্টান: Zaraθuštra), অথবা জরথ্রুস্ট (ফার্সি ভাষায়: زرتشت‎ ​), ছিলেন একজন প্রাচীন পারস্যীয় ধর্ম প্রচারক এবং জরথ্রুস্ট ধর্ম মতের প্রবর্তক। জরথ্রুস্ট এমন একটি ধর্ম, যা ছিল প্রাচীন ইরানের একামেনিড [১], পার্থিয়ান [২]সাসানিয়ান সাম্রাজ্যের জাতীয় ধর্ম; যা মূলত বর্তমানে আধুনিক ইরানের জরথ্রুস্ট সম্প্রদায় এবং ভারতের পার্সী সম্প্রদায় কর্তৃক পালিত হয়।
https://bn.m.wikipedia.org/wiki/জরথুস্ত্র

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


ধান ভানতে শিবের গীতি হচ্ছে কেন?
ওমর খাইয়াম ছিলেন অংকবিদ, এস্ট্রোনোমীতেও হাত ছিলো; ততকালীন পারশিকদের জীবন তুলে ধরেছেন রুবাইয়াতে; মক্কার রশ্নি মশ্নি যোগ করা হচ্ছে কেন? মক্কায় যখন বেদুইনরা সাম্রাজ্য প্রতিস্ঠা করার চেস্টা করছে, তখনও পারশিকেরা উন্নত ছিলো; পারশিকদের পাশাপাশি রোমানরা ছিল সিরিয়া ও জেরুযালেমে।

শিবের গীতি সব যায়গায় গাইলে কেমনে হবে?

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৫

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: শিব বুঝি খুব অপছন্দ অাপনার?

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মন্দ লাগেনি।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৯

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: যাক অন্তত মন্দ লাগে নি!

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫০

আহমেদ জী এস বলেছেন: শূণ্য পুরাণ ,



ধন্যবাদ প্রতিমন্তব্যের জন্যে ।
হ্যাঁ , জরথুস্ত্রবাদ একটি প্রাচীন ধর্ম । জরথুস্ত্রীয়ানরা এখনো বর্তমান আছেন যেমন আপনি বলেছেন । জন্ম-মৃত্যু সম্পর্কিত ধর্মীয় পলিসির একেশ্বরবাদ আর সৃষ্টিরহস্য সংক্রান্ত দ্বৈতবাদের সংমিশ্রন আছে এই মতবাদে । সব মিলিয়ে একেশ্বরবাদই প্রধান হিসেবে প্রতীয়মান ।
আর ফ্রেডারিক নীট্‌শে এই চরিত্রটিকেই মহীয়ান করেছেন তার দর্শনে । জরথুস্ত্রের সমস্ত মত এবং ব্যক্তিত্বই ছিলো নীট্‌শের জীবনের ধ্যান ধারনা ।

ভালো থাকুন । শুভেচ্ছান্তে ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৫

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অাপনাকেও ধন্যবাদ,শুভেচ্ছা রইল।

৭| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

পুলহ বলেছেন: এম্নিতে ভালো লেগেছে, তবে আরেকটু বিস্তারিত লিখতে পারতেন বোধহয় ভাই। আচ্ছা, মুজতবা আলীর ক্ষেত্রে মিলটা কি কৌতূহলে (হল+এ), প্রিয়ে (শেষে এ) এবং নিয়ে (এ) -এই হিসেবে a a b a গঠন মেনে চলেছে?
শুভকামনা জানবেন!

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪২

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: ধন্যবাদ পুলহ ভাই,অারো বিস্তারিত লেখা যেতে পারত।
অাপনি ঠিক ধরেছেন,মুজতবা অালী'র ছন্দের মিল।

৮| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম!!!!!

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, অাপা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.