নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি করি স্কুল বয়স হতে। এখন যেহেতু মানুষ ভুলেই গেছে খাতায় লেখা, তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমিও গা ভাসিয়েছি স্রোতের অনুকুলে। ব্লগে লিখালিখি তেমন কখনো করিনি। ফেইসবুকেই সকল কিছু লিখে থাকি। চিন্তা করলাম এখন থেকে ব্লগেও কিছু লিখি। যেই ভাবা সেই কাজ।

আরেফিন কাজী

তেমন বিশেষ কোন পরিচয় নেই। আমি মানুষ এইটাই আমার বড় পরিচয় বলে মনে করি।

আরেফিন কাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোজনামচা-৩ (স্বপ্নজাল)

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫

-টিএসসি আসবে আজকে?
-আসা যায়। তোমার সময় হবে?
-সময় না হলে কি জিজ্ঞেস করতাম?
-কখন?
-ঠিক ৪ টায়।
-অফিস তো ৫ টা পর্যন্ত।
-একদিন ২ ঘন্টা আগে বেরুলে কি চাকরি চলে যাবে?
-না তা যাবে না। আচ্ছা, আসবো। শোন...
-কি?
-ওই নীল জামদানিটা পড়ে এসো, সাথে ছোট্ট টিপ।
-কেনো?
-আজ তোমাকে নীলের সাজে দেখতে ইচ্ছে করছে। আর চারুকলার সামনে হতে চুড়ি কিনেছিলে না, পড়ে এসো।
-আচ্ছা।

এলার্মের শব্দে হুট করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। উঠে বসে একটু তটস্থ হলো। না স্বপ্নই দেখছিলো। বাস্তবতো এত সুন্দর হয় না। এই যা ৭.৪০ বেজে গেলো। তাড়াহুড়ো করে বের হলো অফিসের জন্য। বাসা থেকে বেরিয়ে রিকশা পেয়ে গেল। অন্য দিন হলে সেই অনেকটুকু হাটতে হয়। রিকশা পাওয়া যায় না। স্বপ্নের রেশটা এখনো রয়ে গেছে। ভালোই লাগছে। রিকশা হতে নেমে বাসে উঠলো। সামনের দিকের অনেক গুলো সিট ফাঁকা পড়ে আছে। তবুও কেন যেন একেবারে শেষের দিকের একটা সিটে গিয়ে বসলো। ব্যাগ থেকে হেডফোন বের করে মোবাইলের প্রিয় প্লে লিস্ট ছাড়লো।

“যদি একমূহুর্তের জন্যও আমায় চাও, সেটাই সত্যি”

-ক’টা বাজে? বেরুবেনা?
-এখনো ১৫ মিনিট বাকি আছে। ৩ টায় বেরুচ্ছি।
-শাড়ী আর টিপ পড়েছো?
-হু।
-চুড়ি?
-হুম
-তুমি কি বেরুলে নাকি?
-উঁহু।
-শুরু হয়েছে। আচ্ছা। আমি হাতের কাজটা শেষ করে বেরুচ্ছি। টিএসসির কোথায় থাকবে?
-সব সময় যেদিকটায় বসি।
-তুমিও বেরোও, নতুবা দেখা যাবে আমি গিয়ে বসে আছি, তুমি নেই।
-আচ্ছা। আর সমস্যা কি? একটু না হয় অপেক্ষা করলে।
-আচ্ছা, করলাম। নেফারতিতির জন্য অপেক্ষা করতে বরং ভালোই লাগবে।

এই কাকলী, কাকলী, গেটে আসেন। হেলপারের মধুর গলার শব্দে স্বপ্নটা টুটে গেল। আজ হেল্পারের হেড়ে গলাও ভালো লাগছে। অফিস শুরু হতে আর ৫ মিনিট বাকি। অফিসে ঢোকার পর কখন যে ২.৪৫ বেজে গেলো সে দিকে খবর নেই। হঠাত মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলো। সবুজ আলো জ্বলছে আর নিভছে। লক খুলে দেখলো মোবাইল অপারেটর হতে ম্যাসেজ এসেছে। নিজেই হেসে দিল। অফিসের বসকে বললো আজ কাজ রয়েছে একটা ব্যক্তিগত। তিনটায় বেরুবে। বস কথা না বাড়িয়ে বললো, ঠিক আছে। আজ বোধয় দিনটা সুন্দর। না হলে এক কথায় রাজি হয়ে গেল? যাক, সেদিকে আর চিন্তা না করে, বেরিয়ে পড়লো। শাহবাগের বাসে চড়ে বসলো। সকালের মত এখনো বাসের সামনের দিকটা ফাঁকা। সে ইচ্ছে করেই আবারো পেছনে গিয়ে বসলো। শহরের তাপমাত্রার পারদ আজও কমেনি এতটুকুও। গত রাতে দমকা একটা উত্তরীয় বাতাসে কিছুটা শীতল হয়েছিল শহর। বাসের জানালা দিয়ে এই বিষণ্ণ শহর দেখতে দেখতে পৌছে গেল শাহবাগে।

ফুলের দোকান গুলোর সামনে এসে কিছুটা ইতস্তত বোধ হচ্ছিলো। একটা বেলি ফুলের মালা কিনে ব্যাগে পুরে রাখলো। রিকশা নিয়ে টিএসসি গেলো। অন্যদিন হলে হেটেই যেত পথটুকুন। টিএসসি পৌছে চলে গেল ক্যাফেটেরিয়ার সামনের দিকে। গিয়ে বসে রইলো। সে জানে, তার এই বসে থাকা অর্থহীন। কেননা স্বপ্নেরা কখনো সত্যি হয় না। কিছুক্ষণ পর আট-নয় বছরের একটা ছোট মেয়ে এলো চকলেট বিক্রি করতে। চকলেট কিনে ব্যাগ থেকে বেলি ফুলের মালাটা বের করে দিল মেয়েটিকে। মেয়েটি তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষণ। তা দেখে বলে উঠলো, এইটা তোকে উপহার দিলাম। মায়াবী একটা হাসি দিয়ে ও হেটে চলে গেল অন্যদিকে।

এখন সময়টা ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে। অন্ধকার ক্রমেই গ্রাস করছে বহুদিনের পরিচিত এই জায়গাটিকে। আকাশের নীল প্রদীপ গুলো এক এক করে জ্বলতে শুরু করেছে। তবে এদের মাঝেও সন্ধ্যাতারাটি বেশ পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। ভাবতে লাগলো, দিকহারা নাবিকের মত এই সন্ধ্যাতারাটিও কখনো তাকে পৌছে দিবে সেই প্রিয় মানুষটির কাছে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: গোধূলি বেলা, সদ্যনামা সন্ধ্যা আপনাকে কি খুব টানে?!
উপস্থাপন ভালো হয়েছে।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

আরেফিন কাজী বলেছেন: মারাত্মক ভাবে টানে।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: আহারে কতদিন হয়ে গেল টিএসসিতে আড্ডা দেই না।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫

আরেফিন কাজী বলেছেন: এখনো অফিসের পর মাঝে মাঝে যাওয়া হয়। তবে আগের সেই আড্ডাটা আর হয় না।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৬

স্বচ্ছ দর্পন বলেছেন: লেখা ভেতরের ভাবটা খুবই গভীর।


আমার ব্লগ ঘুরে আসার অনুরোধ রইলো ।
স্বচ্ছ দর্পন ব্লগ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.