নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যক্তিগত ব্লগসাইট : www.akterRhossain.blogspot.com \n \nফেসবুক আইডি : Akter R Hossain \n\n\nফেসবুক আইডি লিংক: www.facebook.com/ARH100

আকতার আর হোসাইন

খেলাধুলো করতে ও বই পড়তে প্রচন্ড ভালবাসি। আর মাঝেমধ্যে শখের বসে লেখার ক্ষুদ্র চেষ্টা করি।

আকতার আর হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোখে পানি আনার মতো একটি ঘটনা...!

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮

এই ছবিটার মানে কি জানেন...?


অর্ধমৃত প্রায় শিশুটির পেছনে শকুনটি অপেক্ষা করছে শিশুটির মৃত্যুর জন্য। মরে গেলে শিশুটার শরীরের মাংস খাবার জন্য!!

১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে সুদানের কোন এক জায়গায় জাতিসংঘ খাবার বিতরণ করছিল। সেখানে অভাবী মানুষেরা ঝরো হতে থাকে। তারা এতটাই অভাবের মধ্যে ছিল যে তাদের কাছে তখন দু মুঠো খাবারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই ছিল না!!

সুদান এর দুর্ভিক্ষ এমন ছিল যে দিনের পর দিন সেদেশের মানুষেরা না খেয়ে মরত। সে দেশের মানুষ তখন নির্ভর ছিল কেবল ত্রানের উপর। এমন মানুষদের কাছে দু মুঠো খাবারের চেয়ে আর কি মূল্যবান হতে পারে?

মানুষ খাবারের জন্য ছুটছে। আর ফটোগ্রাফার কেভিন কার্টার ছবি তোলার মাঝে ব্যস্ত। ক্যামেরায় ছবি তুলতে তুলতে হঠাৎ তিনি একটি শিশুকে দেখেন।

ক্ষুধার যন্ত্রণায় শিশুটি কাতর। হামাগুড়ি দিতে দিতে একটু একটু করে শিশুটি এগিয়ে যাচ্ছে রিলিফ ক্যাম্পের দিকে। শিশুটা একটু হামাগূরি দেয়, আবার বসে পরে। তারপরে আবার হামাগুড়ি। এমন সময় একটি শকুন হটাৎ উড়ে এসে শিশুটার পেছনে অবস্থান নেয়। শকুনটু বুঝে ফেলে যে শিশুটি একটু পরে মারা যাবে। তাই এটি শিশুটার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে তাকে খাবে বলে। শিশুটা এক পা এগোয়, শকুনটিও এক পা এগোয়। সত্যিই চোখ থেকে পানি ঝরার মতো একটি ঘটনা এটি।

এভাবে চলতে থাকার প্রায় ২০ মিনিট পরে কেভিন কার্টার এই কালজয়ী ছবিটি তোলেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল কেভিন কার্টার ভেবেছিল শুধু ছবি তোলায় তার কাজ। সে একটি কোম্পানির আন্ডারে কাজ করছিল। আফসোস! তার মানবিকতা বোধ তখন জেগে উঠেনি। সে শিশুটিকে রক্ষা করেনি।

অর্ধমৃত এই ক্ষুধার্ত শিশুটির ছবি পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটু মানবাধিকার সংগঠন ও সমস্ত মানুষ সুদানে পাশে দাঁড়াতে চায়। ছবিটির কারণে কেভিন কার্টার সেরা ফটোগ্রাফারের পুরষ্কার পায়। কিন্তু তার কপালে ঘৃণাও জুটে।

পুরো পৃথিবীর মুখোমুখি তাকে দাঁড়াতে হয়? সবাই প্রশ্ন করে শেষ পর্যন্ত কি হল বাচ্চাটার? আপনি বাচ্চাটাকে বাঁচালেন না কেন? কিভাবে শিশুটাকে ফেলে আসতে পারলেন আপনি?

কেভিন কার্টার বারবার এমন ধরণের প্রশ্নের সম্মুখীন হন। তিনি নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন যে, পেশাদারিত্বের কারণে তিনি মানবতাকে ভুলে গেছিলেন।

শিশুটাকে কাছের কোন ত্রান শিবিরে পৌছে দিতে পারলে হয়তো শিশুটি বাঁচতে পারত। এই হতাশায় ও অনুশোচনায় তিনি ভুগতে থাকেন। তিনি তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে একদিন তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন আত্মহত্যা করে। (ছবিটি তোলার তিন মাস পরে)

কেভিন কার্টার মৃত্যুর সময় একটি সুইসাইড নোট লেখেন যা থেকে আমরা অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। তার সেই সুইসাইড নোটের বাংলা অনুবাদ এরকম দাঁড়ায়--

"হে দয়াময়,আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে আমার আহারের খাদ্য খেতে যতই বিস্বাদ হোক না কেন এবং যদি আমি ক্ষুধার্ত নাও থাকি তবুও আমি কখনো আমার আহারের খাদ্য অপচয় করব না।আমি প্রার্থনা করি যে,তিনি(সৃষ্টিকর্তা) এই ছোট বালকটিকে রক্ষা করবেন,জীবনে চলার জন্য সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন এবং তাকে তার কষ্ট,দুর্দশা ও দুর্ভাগ্য থেকে বাঁচাবেন।আমি প্রার্থনা করি যে,আমরা যেন আমাদের বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা তাঁর (সৃষ্টিকর্তা) সৃষ্টির প্রতি আরো সংবেদনশীল এবং নমনীয় হতে পারি এবং কখনো যেন নিজেদের স্বার্থপরতা এবং লাভের জন্য লোভ-লালসা আমাদের অন্ধ না করতেe পারে।আমি আশা করি যে,এই আলোকচিত্রটি সবসময় আমাদের স্মরণ করিয়ে দিবে যে আমরা আসলেই ভাগ্যবান এবং আমরা যেন কখনোই নিজেদের প্রকৃতিগত স্বার্থপরতা ও লাভের জন্য যে কোন ধরনের কাজ করা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারি।"

.............


আমরা যদি আমাদের মানবিকতা বোধ জাগ্রত করে তুলতে পারি তাহলে এই শিশুটির মতো হয়তো অন্য কোন শিশু অনাহারে ক্ষুধার যন্ত্রণায় মরবে না। কোন শিশু বা অন্য যেকোন অসহায় মানুষ যদি অনাহারে এভাবে মরে তাহলে তার দায়ভার কিন্তু আমাদেরই।

তাই, আসুন আমরা এমন একটা সমাজ গড়ে তুলি যাতে প্রতিটি মানুষ তার পাওনা অধিকারটুকু পায়। আর আমরা যেন খাবার নষ্ট না করি। আমরা যে খাবারটুকু নষ্ট করছি সেই নষ্ট খাবারটুকুর অভাবেই অন্য কেউ ক্ষুধার কঠিন জ্বালায় ভুগছেন।

মানবতার কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত করুন
জনস্বার্থে এগিয়ে আসুন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.