নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(১)
বাস যখন ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে শুরু করেছে তখনি আরাফ ব্যাগ কাঁধে দৌড়াতে দৌড়াতে লাফ দিয়ে বাসের দরজায় উঠে পড়ে। আরেকটু হলেই মিস হয়ে যেত বাসটা। অনলাইনে আগে থেকে টিকিট কেটে রাখলেও রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যামের কারণে বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। ততোক্ষণে বাসের চাকা গড়ানো শুরু করে দিয়েছে। একে তো ঢাকার জ্যাম ঠেলে আসা তারপর আবার কাঁধে ব্যাকপ্যাক নিয়ে দৌড়ে এসে বাস ধরতে গিয়ে রীতিমত ঘেমে একাকার। বাসে উঠে বেশি দেরি না করে সিটে বসে পড়লো সে। ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে ঢকঢক করে খানিকটা শেষ করে ফেলল। তারপর সিটে হেলান দিয়ে আস্তে আস্তে জিরোতে লাগল। একটু স্বাভাবিক হয়ে এলে চোখ খুলে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। এখন বাজে রাত প্রায় আটটা। বাস ইতোমধ্যে যাত্রাবাড়ি ছেড়ে এসেছে। খুলনা পৌঁছুতে আরো সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টা মতো লাগবে। পদ্মা ব্রিজ হয়ে যাবার পর খুলনা যাওয়া এখন অনেক সহজ হয়ে এসেছে। কিন্তু ঢাকার এই জ্যামের কারণে স্বস্তি জিনিসটা কখনোই পাওয়া যাবেনা বোধহয়।
আরাফের বাসা ঢাকাতেই। খুলনায় ডুমুরিয়ার শাহপুরে গ্রামের বাড়ি। অনেকদিন গ্রামে যাওয়া হয়না বলে সেমিস্টার পরীক্ষার পর সে ভাবে গ্রাম থেকে একটু ঘুরে আসা যায়। ঢাকাতে মা আর ভাইয়া-ভাবির সাথে থাকলেও তারা কেউ এখন যাওয়ার সময় পায়নি। তাই আরাফের একাই রওনা দেয়া। গ্রামে দুই চাচা রা থাকে। একটু সেখানে সপ্তাহ খানেক থেকে ঘুরে টুরে গ্রামের হাওয়া গায়ে লাগিয়েই ফিরে আসার পরিকল্পনা তার। যাহোক, আরাফ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। জানালার পাশের সিটটা সে পায়নি। সেখানে এক মুরুব্বি মতো মানুষ বাস ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে কাঁদা হয়ে গেছেন। বাস এখন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বেশ ভালই গতিতে ছুটে চলেছে। স্পিড লিমিট আশি হলেও বাস একশ প্লাস স্পিডে সজোরে ছুটে চলছে। সবথেকে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলে যাত্রীরাও খুশি হয়। কিন্তু প্রাণের মায়া কারোর নাই। গত বছরেই যে এই রাস্তায় একটা ভয়ঙ্কর বাস এক্সিডেন্টে প্রায় বিশ জনের মৃত্যু হয়েছিল সে ঘটনা যেন সবাই ভুলেই গেছে।
এতোকিছু ভাবতে ভাবতেই পদ্মা ব্রিজের টোল প্লাজায় চলে এলো বাস। টোল দিয়ে বাস যখন ব্রিজে উঠতে শুরু করে তখন হঠাৎ করেই আরাফের একটা কথা মনে পড়ে যায়। এই পদ্মা ব্রিজ তৈরি হওয়ার সময়েই সে মনে মনে ভাবতো এই ব্রিজ যদি কখনো মানুষ থাকতে ভেঙ্গে পড়ে তাহলে কি হবে?! যদিও তার এইসব চিন্তার কোনো ভিত্তি নেই। এই ব্রিজের সক্ষমতা নিয়ে অনেক কথা সে পড়েছে। তারপরেও এসব চিন্তা ভাবনা সে অহেতুক করে। অতিরিক্ত হলিউড মুভি দেখার ফল হয়তো। কিন্তু এই মুহুর্তে সেই কথা মনে পড়ে যাওয়ায় আরাফের কেমন অস্বস্তি হতে থাকে।
বাস যখন ব্রিজের প্রায় মাঝামাঝি তখন আস্তে আস্তে গতি কমিয়ে বাসটি থেমে যায়। এমন জায়গায় কেন থামলো বুঝার জন্যে মাথা তুলে সামনে তাকালে দেখা যায় সামনে আরো যানবাহনের লাইন লেগে আছে। সামনে থেকে কেউ একজন বললো সামনে নাকি এক্সিডেন্ট হয়েছে। একটা বাস নাকি পুরো কাত হয়ে পড়ে আড়াআড়ি ব্রিজের এক সাইডের রাস্তা ব্লক করে ফেলেছে। রাস্তা ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা লাগবে। সামনের এক্সিডন্টের কথা শুনে আরাফের অস্বস্তি ভাবটা আরো বেড়ে গেল। অস্বস্তি বোধ বাড়তে বাড়তে সে ঘামতে শুরু করলো। বাসের ফ্যানের বাতাসেও যেন গুমোট ভাবটা যাচ্ছেনা। তাই সিট ছেড়ে উঠে বাস থেকে নামতে চাইলে বাসের সুপারভাইজার বললো ব্রিজে নামা যাবেনা। নামলে আর্মি আছে তারা ক্যাচাল করবে। এই কথা শুনে আরাফ অস্বস্তি ভাবটা নিয়েই বসে পড়লো সিটে। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো রাত বাজে নয়টার একটু বেশি।
হঠাৎ করেই তার মনে হলো বাসটা কেমন করে যেন দুলে উঠলো। মনের ভুল বলে নিজেকে শান্তনা দিল সে। কিন্তু না, হঠাৎ করে আবারো বাসটা দুলে উঠলো। এবং এবার আরো জোড়ে। আশেপাশের লোকজন সবাই টের পেয়েছে। কেউ কেউ বলছে ভুমিকম্প হচ্ছে। আরাফের বুকের উপর মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ির বাড়ি মারছে। আশেপাশের অনেকেই দোয়া দরূদ পড়ছে। বাংলাদেশের ভুমিকম্প এখনো পর্যন্ত খুব খারাপ ভাবে হতে দেখেনি আরাফ। কিন্তু এই ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে থাকা বাসের ভিতর তার আতঙ্কটা অনেক বেশি বেড়ে গেল। আরাফ চোখ বুজে সিটে সামনের দিকে ঝুকে সামনের সিট শক্ত করে চেপে ধরে বসে আছে। তার মনে হচ্ছে কাঁপুনির মাত্রা আগের থেকে আরো বেড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ বাইরে প্রচণ্ড চিৎকার শুনে সে বাইরে তাকিয়ে দেখলো মানুষজন গাড়ি থেকে নেমে সব পিছন দিকে দৌড় দিচ্ছে। কেন দৌড় দিচ্ছে দেখার জন্যে সামনে তাকাতে যা দেখলো তা শুধুমাত্র এতোদিন সে মুভিতেই দেখে এসেছে। ওদের বাসের সামনে যে বাসটা ছিল সেটা হঠাৎ করে নিচের দিকে নেমে গেল। এবং কিছু বুঝার আগেই আরাফের বাসটা প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে সামনের বাসটাকে অনুসরণ করতে করতে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। আশেপাশে ব্রিজের যা কিছু ছিল সব ভেঙ্গে পড়ছে। প্রচণ্ড আত্মচিৎকার করতে করতে আরাফ প্রচণ্ড একটা ঝাঁকি খেল শরীরে।
(২)
প্রচণ্ড ঝাঁকি খেয়ে আরাফ চোখ খুলে তাকালো। দেখলো পাশে বসা সেই মুরুব্বি চোখ বড় বড় করে আরাফের কাঁধ ধরে আছে। সামনে বাসের সুপারভাইজার দাঁড়ানো। আশেপাশের সবাই মাথা উঁচু করে আরাফের দিকে তাকিয়ে আছে। পাশের মুরুব্বি বললেন, “কি হইছে বাবা? স্বপ্ন দেখতেছিলা? যে জোড়ে চিল্লান দিলা আমরা সবাই লাফ দিয়া উঠছি। তারপর তোমারে ঝাঁকায় ঝাঁকায় তুললাম ঘুম থাইকা।”
“ওহ! তাহলে স্বপ্ন দেখছিলাম! আবার ঘুমের মধ্যে জোড়ে চিৎকারও করেছি! কি একটা লজ্জাজনক ব্যাপার! ভরা বাসে এমনটা কারো হয়?!” মনে মনে ভাবলো আরাফ। বাসের সুপারভাইজার বললেন, “ঘেমে তো পুরা ভিজে গেছেন। পানি আছে কাছে? থাকলে একটু খেয়ে নিন।” উনার কথা মতো আরাফ ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে একবারে পুরোটুকু শেষ করে ফেলল। বাইরে তাকিয়ে দেখে বাস এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সজোরে ছুটে চলেছে। স্পিড কম করে হলেও একশ প্লাস। স্বপ্নের মধ্যে যেমন অস্বস্তি লাগছিল সেটা আবারো কেমন যেন হতে লাগলো তার। একই সাথে গত বছরের এক্সিডেন্টের খবরের কথা আর স্বপ্নে দেখা ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ার কথা মনে পড়তে অস্বস্তি আবার বেড়ে গেল। কিন্তু সবতো স্বপ্নই ছিল। তবুও এতোটা বাস্তব মনে হচ্ছিল!
বাস যখন পদ্মা ব্রিজের টোলপ্লাজায় চলে আসে আরাফের অস্বস্তির মাত্রা আরো বেড়ে যায়। কিন্তু শুধুমাত্র একটা স্বপ্নের জন্যে কোনোকিছুকে পাত্তা দেয়াটা তার বুদ্ধিমানের কাজ মনে হল না। তাই মাথা থেকে এসব ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করল। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে বাস ব্রিজের প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় এসে গতি কমাতে কমাতে থেমে গেল। কি হয়েছে জানতে মাথা তুলে দেখে সামনে লম্বা একটা জ্যাম। সামনে নাকি একটা ট্রাক কাত হয়ে আড়াআড়ি পড়ে ব্রিজের এই সাইডের লেন ব্লক করে ফেলেছে। রাস্তা ক্লিয়ার হলে তারপর যাওয়া যাবে। আরাফের হৃদপিণ্ড এবার প্রচণ্ড জোড়ে বাড়ি মারতে শুরু করল। সবকিছু এভাবে মিলে যাচ্ছে কেন? পার্থক্য শুরু একটাই যে স্বপ্নে সে দেখেছিল তাদের বাসের সামনে আরেকটা বাস, আর এবার দেখছে একটা প্রাইভেট কার। আর স্বপ্নে দেখেছিল বাস কাত হয়ে পড়ে রাস্তা আঁটকে ছিল আর এখন ট্রাক। এখন কি আবারো ভুমিকম্প হবে? ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত নয়টার একটু বেশি বাজে। আরাফ আতঙ্কিত হয়ে সিট ছেড়ে উঠে সামনের দিকে এগুতে গেলে সে হঠাৎ করে দেখল তাদের সামনের প্রাইভেট কারের পিছনের বনেটটা প্রচণ্ড জোড়ে ফুলে ফেঁপে উঠলো। এরপর প্রচণ্ড আলোর ঝলকানি আর শব্দে তাদের বাসের সামনের কাচ ভেঙ্গে ভিতরে আগুন ধরে গেল এবং সাথে সাথে তাদের বাসটি পিছনদিকে একটি ডিগবাজি খেল। আরাফের গায়ে বিস্ফোরণের ধাক্কা লাগার সাথে সাথে আরাফের মনে হল তার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে উড়ে যাচ্ছে।
(৩)
শরীরে প্রচণ্ড একটা ঝাঁকি দিয়ে আরাফ তার সিটের উপর সোজা হয়ে বসল। পাশের মুরুব্বিও আরাফের ঝাঁকুনিতে নড়েচড়ে উঠে জেগে গেলেন। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললেন, “কি হইছে বাবা? স্বপ্ন দেখছ নাকি? একটু পানি খাও। পানি আছে না তোমার কাছে?” আরাফ ব্যাগ থেকে বোতল বের করে দেখে সেখানে অর্ধেক বোতল পানি এখনো আছে। কিন্তু সে তো পানি খেয়ে শেষ করে ফেলেছিল। তাহলে কি আবার স্বপ্ন দেখছিল? কি অদ্ভুত! একইভাবে আবারো স্বপ্ন দেখছিল কিভাবে? এবার চিৎকার দেয়নি বলে বাসের কেউ তার দিকে তাকিয়ে নেই। সুপারভাইজারও আসেনি এইদিকে। পানি খেয়ে বাইরে তাকিয়ে কোথায় আছে বুঝতে পারেনা শুরুতে আরাফ। একটু পর বুঝতে পারে সায়েদাবাদের জ্যামে আঁটকে আছে সে। অদ্ভুত! এখনো বেশিদুর আসতে পারেনি তার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লো! আর এতো বড় বড় স্বপ্ন দেখল! কেমন যেন ইন্সেপশন মুভির মতো স্বপ্নের ভিতর স্বপ্ন। এমনটা আগে কখনো হয়নি তার। এখন কেন হল বুঝতে পারছে না। যাহোক, জ্যাম আস্তে আস্তে ছাড়িয়ে বাস যাত্রাবাড়ি যাওয়ার ফ্লাইওভারে ওঠা শুরু করেছে। আরাফ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত নয়টার একটু বেশি বাজে। অবাক হয়ে যায় সে। তারমানে জ্যামের কারণে এতোক্ষণে সায়েদাবাদ থাকতেই নয়টার বেশি বেজে গেছে। কিন্তু সময়টা দেখে আরাফের কেমন যেন আতঙ্ক হতে থাকে। বাস ফ্লাইওভারে উঠে বেশ স্পিডে টান দেয়া শুরু করেছে। জ্যামে আঁটকে থেকে যে সময় নষ্ট হয়েছে সেটাকে পুষিয়ে নিতে হবে। কিন্তু আরাফের আবার মনে হচ্ছে খারাপ কিছু হবে। এতো জোরে স্পিডে বাস চালানো সে সহ্য করতে পারছে না। সুপারভাইজারকে ডেকে সে কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই বাস হঠাৎ করে এদিক ওদিক বাউলি খাওয়া শুরু করলো। বাসের সবাই ডাইনে বায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়তে থাকলো। বুঝা যাচ্ছে কোনো একটা কারণে বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে বাসের অভিজ্ঞ ড্রাইভার। বাসের মধ্যে প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচি চলছে। ড্রাইভার প্রাণপণ চেষ্টা করছে বাস সোজা করার। কিন্তু পারছে না। শেষ পর্যন্ত ফ্লাইওভারের মাঝের ডিভাইডারে একটা বাড়ি খেয়ে বাস আরেকদিকে ছিটকে চলে গেল এবং ডিগবাজি খেতে খেতে ফ্লাইওভারের রেলিঙ টপকে সেটি বাইরে ছিটকে পড়লো। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পাওয়ার আগে আরাফ টের পেল বাসটি ফ্লাইওভার থেকে কমপক্ষে ত্রিশ ফিট নিচে একটা রাস্তার উপর প্রচণ্ড জোরে আছাড় খেল।
(৪)
প্রচন্ড ঝাঁকি খেয়ে আরাফ ঘুম থেকে উঠে সোজা হয়ে বসলো। চারিপাশে তাকিয়ে দেখে সে এখনো লোকাল বাসে জ্যামে আঁটকে আছে। বাস টার্মিনালে যাওয়ার জন্য সে যে লোকাল বাসে উঠেছিল সেটাতেই সে ঘুমিয়ে পড়েছিল। আর স্বপ্ন দেখে ধরফরিয়ে জেগে যায়। পাশের সিটে যে লোকটি বসে ছিল তিনি আরাফের ঝাঁকি খেয়ে উঠা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আরাফ ব্যাগ থেকে বোতল বের করে দেখে এখনো পুরো বোতল ভরা। খুলনার বাসে উঠার আগে যেমনটা ছিল। একবারে অর্ধেক বোতল পানি খেয়ে সে একটু ধাতস্থ হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাতটার একটু বেশি বাজে। বাস টার্মিনাল পৌঁছাতে আর মিনিট চল্লিশের মতো লাগার কথা। কিন্তু আরাফের এতোগুলা স্বপ্ন দেখে মন সায় দিচ্ছে না খুলনার বাসে উঠতে। তাই সে মনঃস্থির করে লোকাল বাস থেকে নেমে পড়লো। তারপর রাস্তা পার করে ফিরতি পথের বাস ধরলো। রাত সাড়ে আটটার মধ্যে সে নিরাপদেই বাসায় পৌঁছে যায় ঐ পথে জ্যাম কম থাকায়। আরাফকে এভাবে ফিরে আসতে দেখে সবাই খুব অবাক হয়। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে সে উত্তর দিল যেতে ইচ্ছা করছে না আজ। কেমন যেন লাগছে।
রাতে দশটার দিকে হঠাৎ আরাফের বড় ভাই জোরে জোরে তাকে ডাক দিল। আরাফ দ্রুত বসায় ঘরে গেলে ভাইয়া টিভির দিকে দেখিয়ে বলেন, “দেখতো, এইটা কি যে বাসে তোর যাওয়ার কথা ছিল সেই বাস নাকি?” আরাফ তাকিয়ে দেখে টিভিতে খবরে একটা বাস দেখাচ্ছে, যেটা একটা ফ্লাইওভারের নিচে রাস্তার উপর খুব খারাপভাবে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। খবরে একজন বলছে, “আজ রাত আটটার খুলনাগামী বাস সায়েদাবাদ পার করে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারে ওঠার পর প্রচণ্ড গতিতে চলার সময় আনুমানিক রাত নয়টার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভার থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়। বাস থেকে এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে বাসের কেউই হয়তো বেঁচে নেই।”
সমাপ্ত।
©somewhere in net ltd.