![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না!
আমার স্কুল মতিঝীলে। অনেক ঝড়-ঝাপটা সহ্য করে যেতে হয়। যাওয়ার অনেকগুলো পথের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও ভেজালের পথ হল খিলগাঁও রেলগেট। গত ৫ বছর ধরে এই পথে যাতায়াত করছি, তাই বোধ হয় রাস্তার ধারের দৃশ্যগুলো খুব একটা আলাদা হয়ে চোখে পরে না।
যাই হোক, একদিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরছি। সাথে কিছু বান্ধবি আছে। হঠাৎ করে রেলগেটের সবচেয়ে বিরক্তিকর মুহূর্ত এলো-ট্রেনের শব্দ। অনেক হুড়োহুড়ি করে ট্রেন আসার আগে রেলগেট পার হওয়ার চেষ্টা করল সবাই। আমাদের রিকশাওয়ালাও চেষ্টা করল, কিন্তু একটুর জন্য পিছনে থেকে গেল।
ট্রেন আসছে যেন হেঁটে হেঁটে। আমি খুব বিরক্ত। তার উপর বান্ধবিরা কানের কাছে প্যানপ্যান করছে। হঠাৎ করে ফ্লাইওভারের একটি খাম্বার উপর চোখ পরল, না খাম্বা না, খাম্বার কাছে বসে থাকা একটি নারী। গায়ে এতটুকু শক্তি নেই। শুধু যেন হাড্ডি ও চামড়া। বসে বসে বিড়ি টানছে। গায়ে একটুকরো ছেড়া শাড়ি। তার আশেপাশে কিছু ভাঙ্গা হাড়ি ও প্লেট। তার মতই আরেকজন মহিলা থালা নিয়ে সবার কাছে ভিক্ষা চাচ্ছে। সে গিয়ে বসে থাকা মহিলাকে কি যেন বলল, যেন কুশলাদি জিজ্ঞেস করছে, কোনও কারনে সান্ত্বনা দিচ্ছে। তাদের ভাষাটাও বঝার ক্ষমতা নেই আমাদের। রাস্তার মানুষজন সবাই তাদেরকে দেখছে, কিন্তু তাদের ভ্রুক্ষেপও নেই। আমার সাথের সবাই দেখে হাসাহাসি করছে। ভিক্ষুক মহিলা তারপর সবার কাছে চিল্লায়ে কি যেন বলল। তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই রিকশা চলা শুরু হল। ট্রেন চলে গেছে।
এরকম অনেক মানুষ রেললাইনের ধারে জীবন কাটায়। আমি এরপরও অনেকদিন সে পথে যাতায়াত করেছি। কিন্তু সেই মহিলাকে আর দেখিনি। সেই মহিলার চোখে আমি একটা জিনিস দেখেছিলাম যা উচ্চবিত্ত ও বিলাশি মানুষের চোখে দেখা যায় না-প্রচণ্ড কষ্ট। রেলগেটের ধারে অনেক বাস্তুহারা মানুষ শুয়ে থাকে, ঘুমিয়ে থাকে, অথবা জীবনের শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে। আমাকে সবাই বলে ওরা গরীব না, দেশের বাড়িতে জায়গা আছে। ঢাকায় থাকাই ওদের মুললক্ষ্য।
আমি জানি না সত্য কি। আমি এটাও জানি না যে বাংলাদেশে কিভাবে ও কখন দারিদ্র কমেছে। রেললাইনে, রাস্তায়, স্টেশনে, ফুটপাতে এখনও শতশত মানুষের জীবন কাটে। তাদের ঘরবাড়ি নেই, কিছু নেই।
কিন্তু আমরা তাদের পাশ কাটিয়ে চলে যাই। আমরা মেনে নেই যে আমাদের কিছু করার নেই। আমিও এর আওতামুক্ত না। সবাই বলে, মানুষ এখন সভ্যতার চূড়ান্তে উঠেছে, কিন্তু বোধ হয় এখনও আমাদের মাঝে পশুত্বের আঁচ থেকে গেছ..
১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪
আরিফা হক বলেছেন: অথচ তারাই গার্মেন্টস কর্মী, শ্রমিক হয়ে আমাদের জন্য টাকা আনছে।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩
জোৎস্নার কান্না বলেছেন: যান্ত্রিক এই নগরে আসলেই আমরা সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাই ।
৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬
শূন্য পথিক বলেছেন: যান্ত্রিক মানুষ
৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৭
উড়ন্ত পায়রা বলেছেন: ভালবাসা সকলের তরে, ঘৃনা নয়কো কারো পরে।- এ কথা যদি কথার কথা না হয়ে কার্যে পরিনত হয়ে যায় তবে সম্ভবে এ বৈষম্য দূর করা। বোধয় আমাদের দ্বারা তা সম্ভব হবে না। বিধাতা তুমি-ই অন্যদাতা-এটা যেমন চীরন্তন সত্য, ঠিক তেমনি বৈষম্য আদী থেকে অন্ত পর্যন্ত থাকবে, এতে মনে হয় আমাদের কিছু করার নেই।
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮
আরিফা হক বলেছেন: অনেক কিছু করার আছে। আমাদের উপমহাদেশেই এক সময়ে জাত-পাত নিয়ে কম মাতামাতি হয়নি। কিন্তু আলোকিত মানুষেরা তা দূর করেছে। এখন ও তা অনেক জায়গায় রয়ে গেছে যদিও। তবে তাও একদিন শেষ হবে।
আমরা কতদিন অন্য মানুষের অপেক্ষা করব আমাদেরই সমস্যা দূর করার জন্য? আমরা এতটাই পঙ্গু? অনেকেই এখন গরীব মানুষদের জন্য কাজ করে। আমাদের সবার উচিৎ এসব উদ্যোগে অংশ নেওয়া, সমাজে নিজের অবস্থান তুলে ধরা এবং অন্যকেও তা করতে সাহায্য করা। হতে পারে এটা আমার কৈশোরের অর্থহীন স্বপ্ন, কিন্তু এটা একদিন সত্যি হবেই।
৫| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৭
ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: এ কাজ সম্মিলিতভাবে সরকারের দ্বায়িত্ব, কারন আমি - আপনি একা বা গুটি কয়েকজন এটি পারব না।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: রেল লাইনের পাশের বস্তি সহ আশে পাশের কোন বস্তির পাশ দিয়ে গেলে মানুষের করুন জীবন গুলো ধরা পরে। আগে বস্তির পাশ দিয়ে অতিক্রম করলে মনটা আনমনে থাকত। এখন এটা গা সওয়ার হয়ে গেছে।