![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"বাংলাদেশ" ছোট্ট এই শব্দের জন্য কত রক্ত, কত ত্যাগ, কত জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছে সেটা কমবেশি
সবাই জানি আমরা। আমার মতো হয়তো অনেকেরই দেশের জন্য রক্ত, ত্যাগ বা জীবন বিসর্জনের মতো
কিছুই করার প্রয়োজন পরে নাই কখনো। দেশ স্বাধীন, নিজস্ব পতাকা আছে, নিজস্ব জায়গা আছে, একটা
ভালো জাতীয় সঙ্গীত আছে, সরকারি ছুটি সহ একটা বিজয় দিবসও আছে। এইযে এতো এতো কিছু দেখছেন,
এইযে ডিসেম্বরের ১৬- তে একটা সরকারি ছুটি পাচ্ছেন, এইটা কিন্তু এমনে এমনেই পাচ্ছেন নাহ। আপনার ঐ
একদিনের ছুটির জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছিলো। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ কিন্তু জীবনটা
হাঁসি মুখেই দিয়ে দিছে, "বাংলাদেশ" নামক ছোট্ট শব্দটার জন্যে। আমি তাঁদের মতো এতোটা দেশ প্রেমিক নাহ,
কখনও হতেও চাই না। তবে আমি এক দেশপ্রেমিক কিশোরের কথা বলবো, খুব কম কথাতেই বলবো।
সেই সময়ে আপনার আমার বয়সেরও ছোট হবে ছেলেটা, এই ধরেন ১৮ বা সাড়ে আঠারো । নাহ, আপনার আমার মতো
শিক্ষিত নাহ, টুকটাক লেখাপড়া জানতো আরকি! মাথায় নাকি মনের অতিরিক্ত দেশপ্রেমের কারনে যোদ্ধা
হওয়ার জন্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয় সেটা সেই ভালো জানতো ।
কিছু সপ্তাহ পরে এক ভোরে দলবলের সাথে চলে যান যুদ্ধ করে মাথার বা মনের দেশপ্রেম প্রমাণ করার জন্যে। তার দলবলের
উপস্থিতি শত্রুপক্ষ টের পাওয়ায় তাঁদের উপর মেশিনগান দ্বারা গুলিবর্ষণ শুরু করে, কেউ কেউ শহীদও হয় তখনি।
সিদ্ধান্ত হলো যেখান থেকে মেশিনগান পরিচালনা হচ্ছে সেখানে গিয়ে গ্রেনেড ছোড়ার । দায়িত্ব পরে ঐ সাড়ে আঠারো বছরের
কিশোরের উপর। সে'ও হাসিমুখে যুদ্ধাদের মতো বুকে ভর করে হেঁটে জেয়ে গ্রেনেড ছুড়ে দিলো। দেশ মনে হয় প্রেমিকের কাছে
রক্ত চায়, তাই হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যেই সে গুলিবদ্ধ হয় । কিন্তু তার দায়িত্ব তখনও সম্পুর্ন হয় নি । মেশিনগান পোস্ট এ দুই পাকিস্তানি
সৈন্যর সাথে গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই হাতাহাতি করে তার দায়িত্ব শেষ করে সে । সে নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা । দেশপ্রেমের
কাছে সেইখানেই তার নিঃশ্বাসের পরাজয় হয়।
হ্যাঁ, কিশোরটি বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান ।
সৈনিক নাম্বার ৩৯৪৩০১৪ ।
১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর দেশপ্রেমের কাছে নিজেকে নত করেন তিনি ।
এবার আসি আসল কথায়।
রাত প্রায় ৩ টা থেকেই মোটামুটি সবগুলা দৈনিক পত্রিকায় ঘুরতেছি বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান সম্পর্কে
নতুন কিছু জানার জন্যে । হ্যাঁ, জেনেছিও অনেক, নায়িকা মাহিয়া মাহির জন্মদিনে
কোথায় কোথায় ঘুরেছেন তিনি এটা জেনেছি, স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য রুটিন পরীক্ষা কেন করতে হবে সেটা জেনেছি, ইয়াবাসহ
এক কনস্টেবল ধরা পরেছে এটাও জেনেছি। অনেক খুঁজে এই বীরশ্রেষ্ঠকে নিয়ে তেমন গুরুত্বপুর্ণ কিছুই পেলাম নাহ।
কয়েকটা দৈনিক পত্রিকার ৩য় বা ৪র্থ পাতায় খুব ছোট করে একটা নিউজ হয়েছে। এডিটররা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে আরকি।
খুব ভালো ভাবেই করেছে। এই স্বল্প শিক্ষিত, বোকা, বীরশ্রেষ্ঠ তাদের কাছে শুধু দুই লাইনের নিউজ আর কিছুই নাহ, তারা তো মাহিয়া মাহির
খবরে ব্যাস্ত, সময় কই তাদের!!
অনেক বড় গলায় বলতাম, এদেশের মানুষ আপনাদের সারা জীবন মনে রাখবেন, আপনারা তো এদেশে অমর!
খুব মিথ্যে বলতাম, পারলে ক্ষমা করবেন।
©somewhere in net ltd.