![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবে মাত্র নির্বাচনী পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ হইলো । নির্বাচনী পরিক্ষায় পাশ করিয়া মনটা আনন্দে গদগদ করিতে লাগিল । নীল আঁকাশে কাঁউয়ার মতো উড়িতে লাগিলাম । আর যাহারা পাশ করিল না তাহারা বিবেচনা, বিশেষ বিবেচনা ও অন্যান্য আজগুবি বিবেচনার জন্য এদিক অদিক ছোটাছুটি করিতে লাগিল। ফেল করার দল বিভিন্ন শিক্ষক ও তাদের গুষ্ঠি উদ্ধার করিতে লাগিল । সিদ্ধান্ত নিলাম নম্বর পত্র দেখিব । যদিও নির্বাচনী পরিক্ষার নম্বর পত্র দেখিবার কোন নিয়ম ছিল না । নিয়ম যাই হোক তথাপি নম্বর পত্র অবশ্যই দেখিতে হইবে । মনের মধ্যে ব্যপক সাহস যোগাইয়া ও আমার মতো আরেক বেকুব কে সঙ্গে নিয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ (দুঃখ্যিত), জনাব নজরুল সাহেবের কাছে উপস্থিত হইলাম ।
মে আই কামিং স্যার?? (জরোসরো হইয়া)
স্যারের মন আন্যদিকে!!!
মে আই কামিং স্যার??
এইহানে কিল্লিগা ? ভিতরে আও (চোখেমুখে বিরক্তি…মনে হয় চাঁবাইয়া খাইবো )
স্যার……নননন নম্বর পত্র দেখিব ।
কথাটা শুনিয়া উনি মুখ ভেংচি দিয়া কহিলেন পিতামাতা নিয়া আস ।
ফেল মারসে আবার নম্বর পত্র দেখিতে আইছে?? যতসব বেক্কেলের দল !!
স্যার ফেফেফে!! ফেল করি নাই..পা পা পা পাশ করিয়াছি ।
পাশ করিয়াছো তো নম্বর পত্রের কি দরকার….পাশ করিয়া কি ভাব দেহাও?? (মুখ ভেংচাইয়া)
কোন নম্বর পত্র দেওয়া যাইবে না…..অপমানজনক কিছু শব্দ নির্গত হইলো!!!!????
স্যারকে সেলাম দিয়া প্রস্থান করিবার সময় আমার সাথের বেকুবটা স্যারকে ফিসফিস করিয়া খারাপ কিছু একটা বলিল ( হালা নিদাইড়া…………বি.দ্র..স্যার এর দাড়ি কম ছিল ) স্যার মন হয় শুনিয়া ফেলিলেন । পরক্ষনেই পিছন হইতে স্যার ডাক দিলেন । আমরা অফিস রুমে ঢুকিলাম । স্যার আমাদের ভিতরে নিয়া গেলেন এবং কি যেন খুজিতেছিলেন? আমি ভাবিলাম হয়ত নম্বর পত্র দিবে । কিন্ত স্যার আমাদিগকে হতাশ করিয়া দুইটা মোটা বেত বাহির করিলেন । তোগ নম্বর পত্র লাগব তাই না???? এই নে নম্বর পত্র…ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ফাত !! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!! ধপাশ!!!...আমাদিগকে উত্তম মধ্যম দিয়া বাহির করিয়া দিলেন । শরীরে বিভিন্ন জায়গায় বিশম বেদনা অনুভব হইতেছিল । দুই এক যায়গায় ফাটিয়া গেল । বিদ্যালয়ের পাশে দুইজন অসুস্থের মতো দাড়াইয়া আছি । আমার মাথা ঘুরিতেছে । হঠাৎ মাথায় খুব গরম কিছু অনুভব করিলাম । বন্ধুরে বলিলাম বন্ধু আমার মাথার চাঁন্দি গরম হইয়া গেছে রে!!!!!! ওয় আমার মাথায় হাত দিল। হাত নামাইয়া দেখে কোন এক পক্ষির সদ্য নির্গত পায়খানা হাতে লাগিয়া আছে। উপরে তাকাইয়া দেখি কাউয়া মামায় তাহার সুন্কদর পাছাখানি আমার দিকে করিয়া মনের সুক্ষে কা....কা করিতেছে । হায়রে আমার কি হইলো!!!!….এরকম কেন ঘটিতেছে……নির্বাচনী পরিক্ষায় পাশ করিয়া, কত পাংকু পুংকু মাইরা..এসমার্ট হইয়া..সুগন্ধি লাগাইয়া নম্বর পত্র নিতে আসিয়াছিলাম!!!! অতপর রাজ্যের বেদনা ও অপমান সহিত বাড়ী পৌছিলাম । মনের দুঃক্যগুলি জলাঞ্জলী দিতে পুকুরে ডুব মারিলাম । পানির নিচের ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দের সহিত তাল মিলাইয়া আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলি ব্যথায় টন টন করিতে লাগিল । ভাবিতেছিলাম ডুব হইতে আর উঠিব না কিন্ত অক্সিজেন শেষ হইতেই কষ্ট বারিতে লাগিল....................................................
উৎস :- লেখকের আত্নজীবনী
সময়কাল : 23 ডিসেম্বর 2005
©somewhere in net ltd.