![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কলকাতা... এই একটা নামের সঙ্গে জুড়ে আছে হাজারও ইমোশন। যাঁদের জন্ম-কর্ম কলকাতায়, বা যাঁরা কর্মসূত্রে বাধ্য হয়ে কলকাতা ছেড়ে কয়েক হাজার মাইল দূরে, তাঁদের কথা যদি বাদও দিই, যাঁরা অন্তত একবারের জন্যেও কলকাতায় পা দিয়েছেন, তাঁরা জানেন, কেন কলকাতার প্রেমে না পড়ে থাকা যায় না। অবশ্য এমন অনেকেই আছেন, খোদ কলকাতায় জন্মেও নাঁক সিঁটকোন এই বলে কলকাতা নাকি এখন ডেড সিটি! সে যাই হোক না কেন, নিন্দুকের মুখে ছাই ঢেলে কলকাতা এখনও লাখো লোকের চোখের মণি। না কোনও একটি কারণ না, কলকাতা আপনাকা ভালোবাসতে বাধ্য করবে অনেক কিছুর জন্যেই...
মনে পড়ে সেই দিনগুলো যখন প্রেমিকাকে নিয়ে কলেজের পর একটু এদিক ওদিক গেছেন, কিন্তু পকেটের রেস্তো বিশেষ নেই! মাত্র দশ টাকা রয়েছে পড়ে... না খুছ পরওয়া নেহি! ইয়ে হ্যায় কলকত্তা মেরি জান... সেদিনও দশ টাকায় দিব্যি জমেছিল প্রেমের টুকিটাকি... আজও এই কলকাতার বুকে আর কিছু না হোক, কুড়ি টাকায় একটা এগরোল তো হয়েই যাবে...
দেশের যে প্রান্তেই চলে যান না কেন... যতই গোলগপ্পে, পানিপুরি মুখে পুরে ফেলুন না কেন, কলকাতার ফুচকার সঙ্গে জাস্ট কোনও তুলনাই চলে না। একপিস অমৃত সমান ফুচকা মুখে চালান করার পর যে ঐশ্বরিক আনন্দ পাওয়া যায়, তা একমাত্র এই শহরেই পাবেন... বাজি ধরতে যাবেন না প্লিজ...
প্যান্ডাল হপিং! না বাবা আমার পোষাবে না... এমন কথা সারা বছর যতই বলুন না কেন, কলকাত্তাইয়ারা পুজোর কটা দিন যেন আগল খুলে বেঁচে নেয় জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত। প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় কলকাতা সেজে ওঠে কনের মতোই। না, এই উত্সবের জৌলুস যেমন কোনওদিনও কম হবে না, তেমনই কলকাতা নিয়ে বাঙালির রোম্যান্সও শেষ হওয়ার নয়। যাঁরা এই সময়টাতে বাইরে থেকে আসেন, তাঁরাও এক দেখাতে প্রেমে পড়ে যান এই খুশির শহরের।
দেশের যে কোনও জায়গায় চলে যান হলফ করে বলতে পারি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের এমন জোয়ার কোথাও পাবেন না। সাইকেল রিক্সা থেকে আধুনিক ভলভো বাস কিংবা ঝটতি মেট্রো, ছোট থেকে বড়, যে কোনও দুরত্ব কলকাতাবাসীর কাছে কোনও ব্যাপারই নয়। তাই তো এই শহরে নিজের গাড়ি না থাকলেও দিব্য চালিয়ে দেওয়া যায়...
ফুটবল ছাড়া কলকাতা এখনও কল্পনা করা যায় না। হ্যাঁ, মানছি একটা সময়ে ফুটবল নিয়ে যে পাগলামি ছিল, এখন তার অর্ধেকও নেই, তবুও কলকাতা এখনও যে হারে ফুটবল পাগল তাতে হার মেনে যাবে যে কোনও শহর।
একটা সময়ে কলকাতাকে ভারতের সাহিত্য ও সংস্কৃতির পীঠস্থান বলা হত... হ্যাঁ, কলকাতা মানেই সেই শহর যেখানে ঘরে ঘরে অন্তত একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে পারেন, একজন নাচ করতে পারেন, ঘরের মধ্যে বইয়ের অন্তত একটা তাক দেখতে পাবেনই... কলকাতা উস্তাদ আমজাদ আলি খানকেও কুর্নিশ জানাতে জানে... আবার অনুপম রায়-কেও স্বাগত জানায় মুক্তকন্ঠে।
দেশের অন্যান্য প্রান্তে যখন সম্পত্তি (পড়ুন বাড়ি) কিনতে যাওয়া মানে আগুনের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেওয়া, তখনও এই শহরে মাথা গোঁজার আস্তানা পাওয়া যায় হাত না পুড়িয়েই!
আন্তরিকতার দিক থেকে বাঙালিরা অতুলনীয়। না প্লিজ এ ক্ষেত্রেও মনে কোনও ডাউট রাখবেন না। ভর দুপুরে কোনও বাঙালির বাড়ি গিয়ে দেখেছেন? না গিয়ে থাকলে যান, আর কিচ্ছুটি দাঁতে না কেটে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন... ব্যাস... আর এখানে পড়ে বাঙালিদের আতিথেয়তা সম্পর্কে জানতে হবে না।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা মানে যে আসপাশের সমস্ত ভুলে গিয়ে ছুটে চলতে হবে এমনটা বিশ্বাস করে না কলকাতা। আর তাই তো এখনও কাজের ফাঁকে এই শহর দু'মিনিট জিরিয়ে নিতে জানে... জানে ময়দানে গিয়ে অলস বিকেল কাটাতে ছুটির দিনে... কিংবা গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত এখনও কলকাতা দেখে।
কলকাতা মানে কলেজ স্ট্রিট...কলকাতা মানে গড়িয়াহাট/নিউটাউন... কলকাতা মানে এই দুই জায়গায় অলিগলিতে খোঁজ পাওয়া চিলতে বইয়ের দোকান, যার অন্দরে রয়েছে মণিমুক্তের আস্ত কেল্লা.. হ্যাঁ, একটু ধৈর্য ধরে এই সব বইয়ের দোকানে ভিতরে ঢুঁ মারলে পেয়ে যাবেন এমন সব বইয়ের হদিশ যা হয়তো এখন অ্যান্টিক বললেও কম বলা হবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: আমি কোলকাতাকে খুবই পছন্দ করি। মানুষের ব্যাবহার, ট্রাফিক শৃঙ্খলা, যাতায়াতের চমৎকার সব সুবিধা, অল্প টাকায় খাবার দাবার, যেকোন জায়গাতে ভ্রমন, নিরাপত্তা, আতিথেয়তা, কম টাকায় থাকার সুবিধা ইত্যাদি আরো অনেক ভাল কিছু মিলিয়ে কোলকাতা সত্যি এক ভাললাগার শহর। জয়তু ক্যালকাটা জয় কোলকাতার জয়।