![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই তো সেদিনও ছিল অপেক্ষা৷ পুজো আসছে…৷ বর্ষা কেটে নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা দেখা মাত্রই বাঙালির মন নেচে উঠেছিল৷ এদিক ওদিক শুরু হয়ে গিয়েছিল ব্যস্ততা৷ শহরে কোথাও শিউলি ফুটুক বা না ফুটুক, কাশের দেখা মিলুক বা না মিলুক, তবু পুজো যে আসছে এ কথা যেন বাঙালিকে বুঝিয়ে দিতে হয় না৷
অপেক্ষার প্রহর কেটে পুজো এসে এখন চলে যেতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি৷ আর বাঙালির মনে তাই গুনগুন-যেও না নবমী নিশি৷ পুজো চলে যাচ্ছে, উৎসবের আমেজ কাটিয়ে আবার দশটা-পাঁচটা চেনা ছকে ফেরার মনখারাপ তো আছেই৷ তবে স্লগ ওভারে চুটিয়ে ব্যাট করা বলেও তো একটা ব্যাপার আছে৷ বাঙালি মাত্রই পুজোর শেষ বেলায় যেভাবে আনন্দে মাতে, তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে প্রত্যেকটা মুহূর্ত তাতে বিশ্বের সেরা ফিনিশার মহেন্দ্র সিং ধোনিরও তাক লেগে যেতে পারে৷ হ্যাঁ, ধোনির যদি থাকে হেলিকপ্টার ছক্কা, তবে বাঙালির আছে ম্যারাথন রাত জাগা৷ সপ্তমী বা অষ্টমীর রাত জাগার ক্লান্তি শরীরে লেগে আছে বটে, তবে কে তার পরোয়া করে৷ তাই নবমীর রাত্রি মানেই জমাটি ভিড় শহর জুড়ে৷
এদিকে গোড়াতেই বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি৷ কদিনই বৃষ্টিই যে পুজোর অসুর হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তাও দিনের বৃষ্টি মাথায় নিয়েই রাতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছেন মানুষ৷ কিন্তু নমবীর সন্ধেতেই আকাশের মুখ ভার৷ খানিকক্ষণ পরেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি৷ অনেকেই তাই শেষ বেলার পুজো ঘোরা মুলতুবি রাখলেন৷ কারও কারও চোখ থাকল টেলিভিশনে৷ তবে নয় নয় কর যা ভিড় হল তাতেই বাঙালির পুজো স্পিরিট বিলক্ষণ টের পাওয়া যায়৷ উত্তর থেকে দক্ষিণে, থিম পুজো থেকে বনেদি বাড়ির পুজোয়, আবাসন থেকে আড্ডায় চেনা বাঙালিকে পাওয়া গেল পরিচিত ছন্দে৷ কোথাও জমে উঠেছে আড্ডা, কোথাও বা ভিড়ের থেকে নিজেদেরকে আড়াল করে উষ্ণতা খুঁজে নিচ্ছে কপোত-কপোতীরা৷ আর এই পুজোয় সদ্য যাদের হাতের ছোঁয়ায় মনে বিদ্যুৎ খেলে গিয়েছে, তারাও শেষবেলায় ঝালিয়ে নিচ্ছে সম্পর্কের আগামী রূপরেখা৷ কোথাও বা পারিবারিক সম্মিলনের শেষ ছবি তোলা থাকছে মোবাইলের মেমরিতে৷ নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির ভাঙনের যুগে এখন আর যৌথ পরিবার চিত্র কোথায় মেলে! তবু এই পুজোর খাতিরেই এখান ওখান থেকে সকলে এসে জোটে৷ অস্থায়ী হলেও একটা যৌথ পরিবারের ছবি অন্তত ধরা পড়ে এই পুজোর সময়টুকুতে৷ এবং তা বৃহত্তর ক্ষেত্রেও৷ রাজনীতি, পাড়ার দলাদলি, ক্লাবের টেক্কা দেওয়া চলতে থাকলেও, প্রতিযোগিতার মধ্যেই খেলে যায় এক বন্ধুতার স্বাস্থ্যপূর্ণ হাওয়া৷ এই তো পুজোর প্রাপ্তি৷ এমনকী, কে চেনা আর কে অচেনা, সে ভেদও মিশে যায় এই কটাদিনের প্রান্তে৷ মনে হয় সকলেই সকলের চেনা৷ সকলের জন্য সকলে এগিয়ে এসেছে এক বড় আনন্দের উৎসকে কেন্দ্র করে৷ ছন্নছাড়া সমাজের নানা ছবির মধ্যে এ চিত্র যে বড় আশাপ্রদ তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আবার সেই ঘিষাপিটা দিনকালে ফিরে যাওয়ার আগে শেষ কয়েক মুহূর্ত তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে নেওয়া এই সম্মিলন, এই যৌথ থাকার মুহূর্তটুকু৷ আবার বিছিন্নতা, আবার ভিড়ের মধ্যেও একাকীর যাপনের দিনগত পাপক্ষয়ে ক্লান্ত হবে মানুষ৷ তার আগে কে হাতছাড়া করতে চায় এমন স্বপ্নের মুহূর্তদের? পায়ে পায়ে তাই ফেলে আসা এক মণ্ডপ থেকে মণ্ডপ, ঘুরে যাচ্ছে ঘড়ির কাঁটা, আর আরও যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠছে টুনি বাল্বের আলোগুলি৷ মিটিমিটি মনখারাপ কি তাতে লেগে নেই? আছে৷ এত কোলাহলের ভিতরও কে যেন বলছে, যেওনা নবমী নিশি…৷ কিন্তু তবু তো সে যাবেই চলে৷ আর তাকে টে্ক্কা দিয়ে বাঙালিও যতটা পারছে গায়ে মেখে নিচ্ছে উৎসবকে৷ প্রতীক্ষার পুজো শেষ৷ কিন্তু কে না জানে বাংলায় বেলাশেষে মানেই সুপারহিট৷ হ্যাঁ, তা সিনেমায় হলেও যেমন, পুজোর বেলাশেষে হলেও তেমনই৷
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:২২
এখওয়ানআখী বলেছেন: বিদায়বেলার বিষাদে রাত জাগছে বাঙালি------------এ কেমন কথা!
প্রভূকে বাদ দিয়ে কল্পিত অস্তিত্বের প্রতি বিষাদ ---এ তো দূরাচার। প্রভূর অনুগতরা এর মধ্যে নেই।
৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৫০
অরিন্দম চক্রবত্রী বলেছেন: আসছে বছর আবার হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:০১
শিপন মোল্লা বলেছেন: শুভ বিজয়া।