![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার মৃত্যুর পর তোমরা আমাকে খুজোনা আমার মৃত্যু ভূমির ‘পর। সেখানে তোমরা আমাকে পাবেনা খুঁজে; আমি লুকিয়ে রবো লোক চক্ষুর অন্তরালে; কিছু না পাওয়ার ব্যথাতুর বেদনার, শকুনেরা আমাকে ছিঁড়ে খাবে; রক্ত আর ভস্মীভূত দহনের জ্বালায়; সীমাহীন এক যন্ত্রণার আঁধার, আমি হতে রবো কাতর।
শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি
আপন অন্তর হতে। বসি কবিগণ
সোনার উপমাসূত্রে বুনিছে বসন।
সঁপিয়া তোমার 'পরে নূতন মহিমা
অমর করিছে শিল্পী তোমার প্রতিমা।
কত বর্ণ কত গন্ধ ভূষণ কত-না,
সিন্ধু হতে মুক্তা আসে খনি হতে সোনা,
বসন্তের বন হতে আসে পুষ্পভার,
চরণ রাঙাতে কীট দেয় প্রাণ তার।
লজ্জা দিয়ে, সজ্জা দিয়ে, দিয়ে আবরণ,
তোমারে দুর্লভ করি করেছে গোপন।
পড়েছে তোমার 'পরে প্রদীপ্ত বাসনা
অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা।
নারী বিষয়ে বাংলা কবিতার ভিত্তি তৈরি হয়েছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় এবং আজও আমাদের মনন সেখানেই আটকে আছে। তাঁর কবিতায় নারী এসেছে সৌন্দর্য, নির্ভরশীলতা, সহনশীলতা ও আনুগত্যের প্রতিমূর্তি হিসেবে। নারীর অবয়ব নির্মাণ হয় পুরুষালি অবয়বের বিপরীতে। আজও অধিকাংশ পুরুষের মনে ঢেউ তোলে নারীর ললিত লোভন লীলা;
আঙিনাতে যে আছে অপেক্ষা করে
তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্ত্রী মৃণালিনীর মধ্যে স্বপ্নের প্রেমিকাকে খুঁজে না পাওয়ার বেদনা ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর কবিতায়। প্রেমের স্বরূপ নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তাভাবনা করেন তিনি। চিত্রাঙ্গদায় প্রকাশ হয় কবি মনের নারীর মধুর ও শক্তিশালী রূপের দোলাচলের অপূর্ব চিহ্ন। সেই সময় থেকেই নারীর খরতর ও ললিত দুই রূপের দোলাচল প্রকাশ পেতে থাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায়, যার সবচেয়ে স্পষ্ট প্রকাশ চিত্রাঙ্গদার কুরূপা ও সুরূপার মধ্যে, তথাকথিত পুরুষালি আর নারীর দ্বন্দ্বে;
পুরুষের বিদ্যা করেছিনু শিক্ষা
লভি নাই মনোহরণের দীক্ষা
খরতর স্বয়ংসিদ্ধা কুরূপা তখন মোহের বশে রূপ ভিক্ষা করে মদনের কাছে, নারী হতে চায় অর্জুনের মন জয়ের আশায়;
শুধু এক বরষের জন্যে
পুষ্পলাবণ্যে
মোর দেহ পাক তবে স্বর্গের মূল্য
মর্ত্যে অতুল্য।
আবার কিছু দিনের মধ্যে মোহভঙ্গ হয় তার, সে ফিরে চায় তার আত্মপরিচয়, কুরূপার অহঙ্কার, ধিক্কার দেয় মিথ্যা দেহ পরিচয়কে;
এই ছদ্মরূপিণীর চেয়ে
শ্রেষ্ঠ আমি শতগুণে।
সেই আপনারে করিব প্রকাশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানতেন, পুরুষের জন্য শ্রুতি সুমধুর নয় স্বয়ংসিদ্ধা নারীর কাহিনী, তবু চিত্রাঙ্গদার মুখে তিনি নারীর আত্মচেতনার গৌরব বাক্য দিয়েছেন;
আমি চিত্রাঙ্গদা।
দেবী নহি, নহি আমি সামান্যা রমণী।
পূজা করি রাখিবে মাথায়, সেও আমি নই;
অবহেলা করি পুষিয়া রাখিবে
পিছে সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখো
মোরে সংকটের পথে, দুরূহ চিন্তার
যদি অংশ দাও, যদি অনুমতি কর
কঠিন ব্রতের তব সহায় হইতে,
যদি সুখে দুঃখে মোরে কর সহচরী
আমার পাইবে তবে পরিচয়।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় শুধু নারী বা মাতৃভক্তির বর্ণনা দিয়েই সম্পন্ন করেননি বরং কালের অভিরুচি শিল্পী সত্তাকে বরাবরই বিকশিত করেন প্রকৃতির নির্যাসে। মাতৃসমা কিছু নারীর অপরিসীম প্রভাব, তাদের স্নেহ, অপত্য শাসন আর বুকে আগলে রাখার মাতৃত্ব বোধই কবিকে পথের নির্দেশ দিয়েছে;
তোমার মমতা-মানিক আলোকে চিনিনু তোমারে মাতা তুমি লাঞ্চিতা বিশ্ব-জননী!
তোমার আচল পাতা নিখিল দুঃখী নিপীড়িত তবে,
বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরনীর ভার বহে।
মাতৃভক্তির ক্ষেত্রে যেমন কবি আকুল হয়ে ওঠেন, তেমনি প্রেয়সীকে কাছে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। প্রিয়তমা প্রেয়সীর জন্য হৃদয় তাঁর হাহাকার করে উঠলেও এ সম্পর্কে বিরূপ অনুভূতি ও মনকে তাড়িত করে;
বারে বারে মোর জীবন প্রদীপ নিভিয়া গিয়াছে প্রিয়া
আমি মরিয়াছি, মরেনি নয়ন, দেখ প্রিয়তমা চাহি।
কবির ভিতরের যে মানব সত্ত্বা তা কারো জন্য অপেক্ষ্যমান। মনের সে আকুতি গভীর ভাব রসে প্রকাশ করেছেন কবিতায়। অপেক্ষামান প্রিয়ার জন্য কবির ব্যাকুলতা;
প্রিয়া রূপ ধরে এতদিনে এলে আমার কবিতা তুমি,
আখির পলকে মরুভূমি যেন হয়ে গেল বনভূমি।
কিংবা;
ফুল কেন এত ভালো লাগে তব, কারণ জান কি তার!
ওরা যে আমার কোটি জনমের ছিন্ন অশ্র হার!
কল্পনা বিলাসী কবি নারীর চুলের সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে মনের গোপন ইচ্ছা কাব্যিক ভাব রসে প্রকাশ করেছেন;
সেই এলোকেশে বক্ষে জড়ায়ে গোপনে যেতাম চুমি!
তোমার কেশের সুরভি লইয়া দিয়াছি ফুলের বুকে
আঁচল ছুইয়া মূর্ছিত হয়ে পড়েছি পরম সুখে!
নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমান অধিকারই সাম্যবাদী দর্শনের মূল চেতনা;
আমার চোখে পুরুষ-রমনী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
নারীর প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, নারীকে অবমাননা করছে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে। যে কথা পুরুষ শাসিত সমাজকে বুঝিয়ে দিয়েছেন কবি নারীর মর্যাদার কথা বলে;
নর যদি রাখে নারীরে বন্ধী, তবে এর পর যুগে
আপনারি রচা ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে
যুগের ধর্ম এই
সমাজের সর্বস্তরের নারী যে সন্মানীর তা কবিতায় প্রকাশ করেছেন। সমাজের নারীদেরকে আলোর পথ দেখিয়েছেন;
কে তোমায় বলে বারাঙ্গনা মা
কে দেয় থুথু-ও-গায়?
হয়ত তোমার স্তন্য দিয়াছে-সীতা সম সতী মায়
নাই হলে সতী তবুও তোমরা মাতা-ভগিনীরই জাতি,
স্বর্গ বেশ্যা ঘৃতচী পুত্র হল মহাবীর দ্রোণ
কুমারীর ছেলে বিশ্ব পূজ্য কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন
অসতী মাতার পুত্র সে যদি জারজ সন্তান হয়
অসৎ পিতার সন্তান ও তবে জারজ সুনিশ্চয়।
কাজী নজরুল ইসলাম নারীকে মঙ্গলকামী কল্যাণীয়া হিসেবেই বিবেচনা করেছেন;
পুরুষ এনেছে দিবসের জ্বালা তপ্ত রৌদ্রদাহ
কামিনী এনেছে যামিনী-শান্তি, সমীরণ, বারিবাহ।
দিবসে দিয়াছে শক্তি-মাংস, নিশীথে হয়েছে বধু,
পুরুষ এসেছে মরুতৃষা লয়ে নারী যোগায়েছে মধু।
কাজী নজরুল ইসলাম স্রষ্টাকে ব্যবহার করেছেন প্রেমিক রূপে। প্রেমিক স্রষ্টা আদরের নারীকে স্বম্বোদন করেছেন ’প্রিয়া’। কবি তাঁর নিজের ভিতরের কাব্যিক সৌন্দর্য শৈল্পিক রসে প্রকাশ করেছেন এভাবেই;
স্রষ্টা হইল প্রিয়-সুন্দর সৃষ্টিরে প্রিয়া বলি
কল্পতরুতে ফুটিল প্রথম নারী আনন্দকলি!
নিজ ফুলশরে যেদিন পুরুষে বিধিল আপন হিয়া
ফুটিল সেদিন শূন্য আকাশে আদিবাণী- ”প্রিয়া, প্রিয়া”
কবি জীবনানন্দ দাশ যাপিত জীবনে চলার পথে মোহাচ্ছন্নতা আর বিভ্রান্তির কথা লিখেছেন ঐতিহ্যের নিবিড় পতনের শব্দ মাধুর্যে। হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার গভীর অন্ধকার বিদিশা তার বস্তু পরিচয় ঝেড়ে ফেলে নারীর কোমলকান্তির মোড়ক পরিধান করে নেয় আর প্রিয়তমার চুলের কালোর অতলতার বিভ্রমে আটকে যায় তাঁর চেতনা। প্রেম কাতর পাগল হৃদয়ের জন্য কবি নির্মাণ করেন ভালোবাসা আর আশ্বাসের বিরাট ভূমি;
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ‘পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
প্রেমিক কবির কাছে প্রেম ছিলো জীবনেরই নামান্তর ও রূপান্তর। তিনি বিশ্বাস করতেন সময়ের অন্ধকার দূর করতে পারে কেবল প্রেমিকার স্বরূপ। জীবনানন্দ দাশ তাঁর প্রেমিকাদের সবচেয়ে শরীরী কিংবা অশরীরী করে তুলেছিলেন বিভিন্ন নাম ধরে ডেকে ডেকে; বনলতা সেন, অরুণিমা সান্যাল, সুদর্শনা, সুরঞ্জনা প্রভৃতি নামে। জন্ম জন্মান্তরে যার সাথে পথ চলা যায়, এমন এক স্বপ্ন মানবীর রূপ তিনি বারবার ভেবেছেন; হয়তো পৃথিবীর আলো বাতাসে খুঁজেছেনও তাকে। অদেখা কোনো এক বনলতাকে নিয়ে কবির অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কবিতায়;
আমরা মৃত্যুর থেকে জেগে উঠে দেখি
চারিদিকে ছায়া ভরা ভিড়
কুলোর বাতাসে উড়ে খুদের মতন
পেয়ে যায়-- পেয়ে যায়-- অণুপরমাণুর শরীর।
একটি কি দুটো মুখ-- তাদের ভিতরে
যদিও দেখিনি আমি কোনো দিন-- তবুও বাতাসে
প্রথম জানকীর মতো হয়ে ক্রমে
অবশেষে বনলতা সেন হয়ে আসে।
ক্লান্তিহীন পথ চলার আর অন্তহীন আনন্দের সাথী হিসেবে যে মানুষকে পাওয়া যায় বা মনে মনে ভাবা যায়, সে নারীর মোহময়তা যেন এই নিবিড় প্রেমলগ্ন কবির জীবনে বারবার বনলতার মুখ হয়ে ভেসে ওঠে। অন্য একটি কবিতায় জীবনানন্দ দাশ বনলতাকে তুলে ধরছেন এভাবে;
বনলতা সেন, তুমি যখন নদীর ঘাটে স্নান করে ফিরে এলে
মাথার উপরে জ্বলন্ত সূর্য তোমার,
অসংখ্য চিল, বেগুনের ফুলের মতো রঙিন আকাশের পর আকাশ
তখন থেকেই বুঝেছি আমরা মরি না কোনো দিন
কোনো প্রেম কোনো স্বপ্ন কোনো দিন মৃত হয় না
আমরা পথ থেকে পথ চলি শুধু-- ধূসর বছর থেকে ধূসর বছরে--
আমরা পাশাপাশি হাঁটতে থাকি শুধু, মুখোমুখি দাঁড়াই:
তুমি আর আমি।
কখনো বা বেবিলনের সিংহের মূর্তির কাছে
কখনো বা পিরামিডের নিস্তব্ধতায়
কাঁখে তোমার মাদকতাময় মিসরীয় কলসি
নীল জলের গহন রহস্যে ভয়াবহ
জীবনানন্দ দাশের বনলতাকে দেখি গভীর রাতের অনুপস্থিতি উপস্থিতির দোলাচলের রঙিন মোড়কে;
শেষ হ’ল জীবনের সব লেনদেন
বনলতা সেন।
কোথায় গিয়েছ তুমি আজ এই বেলা
মাছরাঙা ভোলেনি তো দুপুরের খেলা
শালিখ করে না তার নীড় অবহেলা
উচ্ছ্বাসে নদীর ঢেউ হয়েছে সফেন,
তুমি নাই বনলতা সেন।
তোমার মতন কেউ ছিল না কোথাও?
কেন যে সবের আগে তুমি চলে যাও।
কেন যে সবের আগে তুমি
পৃথিবীকে করে গেলে শূন্য মরুভূমি
(কেন যে সবার আগে তুমি)
ছিঁড়ে গেলে কুহকের ঝিলমিল টানা ও পোড়েন,
কবেকার বনলতা সেন।
কত যে আসবে সন্ধ্যা প্রান্তরে আকাশে,
কত যে ঘুমিয়ে রবো বস্তির পাশে,
কত যে চমকে জেগে উঠব বাতাসে,
হিজল জামের বনে থেমেছে স্টেশনে বুঝি রাত্রির ট্রেন,
নিশুতির বনলতা সেন।
জীবনানন্দ দাশের কবিতায় সভ্যতার বিবরণে ভেসে ওঠে বনলতার মুখ, তার ছবি;
হাজার বছর শুধু খেলা করে অন্ধকারে জোনাকির মতো:
চারিদিকে চিরদিন রাত্রির নিধান;
বালির উপরে জ্যোৎস্না দেবদারু ছায়া ইতস্তত
বিচূর্ণ থামের মতো: দাঁড়কাক;-- দাঁড়ায়ে রয়েছে মৃত, ম্লান।
শরীরে ঘুমের ঘ্রাণ আমাদের-- ঘুচে গেছে জীবনের সব লেনদেন;
“মনে আছে?” শুধাল সে-- শুধালাম আমি শুধু “বনলতা সেন?”
অসহায়তার আড়ালে কবিতায় নির্মিত হয়েছে আশ্বাস বার্তা, আশ্রয় ইঙ্গিত আর সবশেষে নিথর পৃথিবীর ভয়াবহ নির্জনতা;
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে-- সব নদী-- ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
পূর্ণ সহমত, তবে বাংলা কবিতার এই তিনজন কবির তুলনা এই তিনজন নিজেই যারা আপন মহিমায় চিরকাল উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত আমাদের মননে থাকবেন।
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:১১
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট।
পড়া শুরু করলাম।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা দূর্জয় ভাই। পড়ে কিন্তু জানাবেন কেমন লাগলো।
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২৭
এম ই জাভেদ বলেছেন: চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ‘পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে-- সব নদী-- ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৫
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: ঠাকুর বাবু ব্যক্তি হিসেবে খুবই স্পর্শকাতর ছিলেন। যদিও তিনি জমিদারী দেখাশুনা করতেন তবু তিনি কোনমতেই রাশভারী কেউ ছিলেননা। তাঁর কবিতার, লেখার, জীবনের বন্ধু ছিলেন তাঁর ভাবী কাদম্বরী দেবী। তিনি ছিলেন একাধারে তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু ও কাব্য সমালোচক।
কেউ মানুক আর না মানুক ভাবীর প্রতি ঠাকুর বাবু দূর্বল ছিলেন তা অস্বীকার করা যাবেনা। কিন্তু এই সম্পর্ককে আবার কাঁঠগড়ায় দাঁড় করানোও সম্ভব নয়। ঠাকুর বাবুর বিয়ে হলো মৃণালীনির সাথে যে তাঁর চেয়ে অনেক বয়সে ছোট। তাই তিনি হয়ত তাঁর স্ত্রীর মাঝে সেই কাল্পনিক ভালোবাসার মানুষটিকে কখনোই খুঁজে পাননি।
এরপর কাদম্বরী দেবীর আত্মহত্যা সম্ভবত ঠাকুর বাবুকে আরো বেশি দুঃখ ভারাক্রান্ত করে তোলে যার বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাই তাঁর তৎকালীন উৎসর্গ পত্রে- শুধু একটা শব্দঃ "তোমাকে"! এই তুমি আর কেউ নয়, তাঁর বন্ধু, সমালোচক ভাবী! ঐসময়ে তিনি একটা গানও লিখেছেন কাদম্বরীকে নিয়ে -" তুমি কি কেবলই ছবি শুধু পটে..."
তবে আমি যতটুকু জেনেছি সংসার বিষয়ে ঠাকুর বাবু; বিশেষ করে তাঁর ছেলের বিষয়ে খুবই স্নেহশীল ছিলেন। ছেলে মারা যাবার পর তিনি একটি গানও লেখেন- "আজ জোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে, বসন্তের এই মাতাল..."
নজরুল সম্পর্কে আমার জানাশোনা কম। তবে আমার ধারণা এই তিন কবির মধ্যে সংসার জীবনে সবচেয়ে সুখি ছিলেন সম্ভবত তিনি। তাঁর কবিতা বা গানে নারীকে যেমন প্রেমিকা রূপে পাওয়া যায় তেমনি আদর্শ হিসেবেও। এবং তিনি নারীর কন্ট্রিবিউশানকে যেভাবে তাঁর কবিতায় উপস্থাপন করেছেন এমনটি কেউ করেনি আমার ধারণা বাংলা সাহিত্যি। এক শরৎ বাবু নারীর দুঃখকে তুলে ধরেছেন শুধু, তিনি শুধু নারীর অন্দরমহলটাকে চিনিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন।
জীবন বাবু সম্পর্কে বেশি কিছু বলবোনা। শুধু এটুকু বলি উনি যতটা না রিয়েলিজমের মধ্য দিয়ে নারীকে দেখেছেন তার চেয়ে তাঁর স্যুরিয়েলিস্টিক ভাবনা দিয়ে সম্ভবত তাঁকে বিচার করা উচিত।
"বনলতা সেন" যদি বলি কোন নারী নয় তবে???
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সুপ্রিয় জীবনানন্দদাশের ছায়া এমন একটি মন্তব্যের পর আসলে এর প্রতিউত্তরে আর কিছু বলার থাকেনা। আপনার এই মন্তব্যটি আমার পোস্টের অলংকার হয়ে থাকবে। আপনি শেষে এসে যে প্রশ্নটি করেছেন; সেটার উত্তর অনেকটা এভাবে দেয়া যেতে পারে যে,
বনলতা সেন প্রকৃত পক্ষে একজন নারী ছিলেন কিনা সে বিষয়ে আমার ব্যাক্তিগত সংগ্রহশালা থেকে কিছু তথ্যপূর্ণ সমালোচনা দেখা যেতে পারে;
শাশ্বত মানবীয় মূল্যবোধের কারণে তাঁর পরিভ্রমণের কথা ‘হাজার বছর’-এর বেষ্টনীতে নিবদ্ধ। এই বিচারে কবির বনলতা সেন সেই মানবী যাকে যুগেযুগে পুরুষ ভালোবেসেছে এবং আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে। ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা/ মুখতার শ্রাবস্তীর কারুকার্য।’ বনলতা সেনের রূপ একই সাথে প্রাচীন কালের এবং নারীর ধ্রুপদী সৌন্দর্যে সিক্ত। শুধু তাই নয়, তার চোখে শান্তির নিশ্চিন্ত আশ্রয় আছে। ক্লান্ত পাখি দিনের শেষে যেমন নীড়ে ফেরে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে তেমনি কবিও পাখিদের মতো বনলতা সেনের চোখে অবসাদগ্রস্ত জীবনে খুঁজে পেয়েছেন শান্তির নীড়। এখানে ‘নীড়’ উপমাটি ব্যবহারের পশ্চাতে কবির সাংসারিক জীবনের প্রভাব থাকাটাও অস্বাভাবিক নয়। সারাদিনের কর্মকান্তি শেষে কবি ঘরে ফিরে স্ত্রী লাবণ্য দাশের চোখেই ‘শান্তির নীড়’ রচনা করেছেন। কবিতার শেষ স্তবকে যে বনলতা সেনের পরিচয় পাওয়া যায় তার কোনো ভৌগোলিক কিংবা শারীরিক অস্তিত্ব নেই। ‘থাকে শুধু অন্ধাকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন’; কবির একথার মধ্য দিয়ে বনলতার সেনের বিশেষায়িত সকল সত্তার অস্তিত্ব হারিয়ে গিয়ে টিকে থাকে সার্বিক বা সামষ্টিক সত্তা। বনলতা সেন তখন আর নির্দিষ্ট কোনো সীমায় বা ভৌগোলিক অবস্থানের দ্যোতক নয়। তখন তার পরিচয় শুধুই বনলতা সেন। এই বনলতা সেন কোনো নির্দিষ্ট স্থানের (নাটোর) নয়, বরং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তার অস্তিত্ব। বলা যায়, শেষ পংক্তির কাব্যভাষ্যে বনলতা সেন বিশেষ কোনো ব্যক্তিসত্তায় আবদ্ধ না থেকে সার্বিক সত্তায় বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে নিসর্গপ্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশের এই বনলতা সেনের অস্তিত্ব নিসর্গে আরোপিত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। উপরন্তু চরিত্রটির নামকরণও তার নিসর্গ হওয়ার পে জোরাল যুক্তি হিসেবে ক্রিয়াশীল।
কথিত আছে, নাটোরের মুকুল স্টেটের জমিদার তারাপ্রসাদ মুকুল সাহিত্যানুরাগী জমিদার ছিলেন। এই জমিদারের মুকুল স্টেটের ম্যানেজার ছিলেন ভুবন সেন নামের এক ব্যক্তি। শোনা যায়, ভুবন সেনের বাল্যবিধবা এক বোনের নাম সত্যিকার অর্থেই বনলতা সেন ছিল। মুকুল স্টেটের জমিদার তারাপ্রসাদ মুকুলের সাহিত্যানুরাগিতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁর নিমন্ত্রণে কবি জীবনানন্দ দাশ সম্ভবত দু’-একবার নাটোরেও গিয়েছিলেন তারও ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে। কবির নাটোর সফরকালে জমিদারের পদস্থ কর্মচারী হিসেবে ম্যানেজার ভুবন সেন তাঁকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করেও থাকতে পারেন। আর সেই সুবাদে ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতা সেনের সঙ্গে কবির সাক্ষাৎ কিংবা পরিচয় ঘটেও থাকতে পারে। উল্লেখ্য, অল্পবয়স্কা বিধবা বনলতা সেন নাকি অতুলনীয়া সুন্দরী ছিল! বিশেষত তার চোখ ও চুলের অনুপম সৌন্দর্যে কবি নাকি মুগ্ধ হয়েছিলেন। শোনা যায়, জীবনানন্দ দাশ নাকি রূপসী এই বিধবা বনলতা সেনের প্রেমেও মজেছিলেন। তবে এসব ঘটনার সত্যাসত্য পুরোপুরি প্রমাণযোগ্য নয়। তার পরও এসব ঘটনাকে বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, কবি অপরূপা কোনো এক নারীর রূপে মুগ্ধ হয়ে ‘বনলতা সেন’ নামক একটি বিশেষ কবিতা অথবা সম্পূর্ণ একটি কাব্যগ্রন্থ রচনায় উৎসাহিত হয়েছিলেন। এরকম ঘটা যেমন অসম্ভব নয় তেমনি অযৌক্তিকও নয়।
বনলতা সেনের পরিচয় প্রসঙ্গে ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’ উপমাটির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন সাদা কথায় ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’ উপমাটির ব্যখ্যা করা হয়েছে। কখনো এর গভীর তাৎপর্য অনুধাবনের চেষ্টা করা হয়নি। কবি জীবনানন্দ দাশের এই উপমাটির ব্যাখ্যা এখনো স্পষ্ট হয়নি কিংবা এর গূঢ় তাৎপর্য অনুধাবন করা সম্ভব হয়নি প্রচলিত সাহিত্য-সমালোচনায়। কারণ, সমালোচকবৃন্দ এতদিন কবিমনের ‘আর্কেটাইপ’ স্তরের ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন অনুভব করেননি। অন্যকথায়, জীবনানন্দ দাশের কবিতার ভাষানির্মাণের অধিবিদ্যক স্তরে বা চেতনালোকে প্রবেশ করতে পারেননি প্রায় কেউই। ‘নীড়’ শান্তির এবং আশ্রয়ের সমার্থক’ বিশেষত তা নিরাপদ ও নিরাপত্তার আশ্রয়ের স্থান; কান্ত মানুষ যে আশ্রয়ের সন্ধান করে থাকে। কবি কান্ত হয়ে (হাজার বছরের পথ-পরিক্রমায়) আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন ‘নাটরের বনলতা সেনে’র (প্রিয়তমার) চোখে।
অধিকাংশ পাঠকই উপমাটির উপরোক্ত সরলীকরণের বাইরে চিন্তার আর অবকাশ পায় না; অসংখ্য পণ্ডিতজনের প্রাজ্ঞ অথচ বিবেচনাহীন ব্যাখ্যা মূলত এজন্য দায়ী। সম্ভবত এই কারণেই কবি জীবনানন্দ দাশ নিজেও সাহিত্য সমালোচকদের ওপর এজন্য কিছুটা বিরক্ত ছিলেন; এমনকি তাঁদেরকে তিনি মনে মনে ঘৃণাও করতেন।
প্রচলিত সাহিত্য সমালোচনার ধারায় কবি-সাহিত্যিকের ভাষানির্মাণের স্তর বিন্যাসের কৃতকৌশল সম্বন্ধে কিছুই বলা হয় না। অথচ সাহিত্যের পাঠ প্রতিকল্পের ও সমালোচনার েেত্র সাহিত্যিকের ভাষানির্মাণ স্তরের ব্যাখ্যা অত্যন্ত জরুরি ও অপরিহার্য বিষয়। অন্যথায়, সাহিত্যের এবং সাহিত্যিকের বক্তব্য বিষয় পাঠকের বোধের চূড়ান্ত সীমানাকে কোনোদিনই স্পর্শ করতে পারে না। অর্থাৎ কবির ব্যক্তব্য পাঠকের উপলব্ধির বাইরে বা অন্তরালেই থেকে যায়। অবশ্য এই বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে কবি-সাহিত্যিকের ভাষানির্মাণ স্তরের সব বিষয় যে আবিষ্কার করা সবেেত্র সম্ভব তাও নিশ্চিত করে বলা যায় না।
কবি জীবনানন্দ দাশ যে সময়ে বসে ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন তা মানবেতিহাসের এক ক্রান্তিকাল। যে সময় সর্বার্থে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতায় ভরপুর ছিল। এ সময় মানবপ্রজাতি (বিশেষত অনুভূতি প্রবণ) ‘দু’দ-’ কোথাও নিশ্চিত নিরাপত্তার আশা করতে পারেনি। কেননা বিশ্ব তখন গোলাবারুদের রাসায়নিক গন্ধে ভরপুর (মানুষই হত্যা করছে তার নিজ প্রজাতিকে, অর্থাৎ এ সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-’৪৫) মানব প্রজন্মকে সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছিল)। কোথাও কেউ নেই স্ব-প্রজাতির, যার নিকট বিশ্বাসের আশ্রয় মিলতে পারে! তার পরও কবি স্বজাতির ‘প্রিয়তমা’র (মানুষ) কথা বলেন। পান্তরে কবির ‘প্রিয়তমা’ও তো পরিণতিতে একজন মানুষই। কিন্তু তিনি ‘প্রিয়তমা’র কথা বললেও তার চোখে ‘পাখির নীড়ে’র অনিশ্চয়তাকে স্ফূটতর করে তুলেছেন অত্যন্ত দতায়। এবং এটা সম্ভব হয়েছে সঞ্চিত প্রজাতি-অভিজ্ঞতার ভাষানির্মাণের কৃৎকৌশলে। কবির প্রাথমিক ভাষা সংগঠনশৈলীতে ‘প্রিয়তমা’ও অবিশ্বাসের প্রতিকল্প, প্রতিচিত্র। কেননা বিশ্বজুড়ে মানুষই তো মানুষকে হত্যা করছে, নারকীয় উল্লাসে। সুতরাং কবির ‘আর্কেটাইপ’ স্তরের ভাষায় ‘প্রিয়তমা’ কিভাবে বিশ্বাসের অথবা নিশ্চয়তার প্রতীক হিসেবে স্থান লাভ করতে পারে! এজন্য তার ভঙ্গুর, ণিকের বিশ্বাসকে স্পষ্টতর করতেই কবিমানসে ‘পাখির নীড়ে’র মতো অনিশ্চিত আরেকটি প্রতিচিত্র নির্মিত হয়েছে। যার ফলাফল দাঁড়ায়, কবির প্রকাশিত ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’ উপমায় সম্পূর্ণার্থেই বাস্তবানুগ ও সমকালীন মনুষ্যপ্রজাতির মানবিক সংকট, অনিশ্চতা, নিরাপত্তাহীনতা বিশেষ করে আশ্রয়হীনতার দৃশ্য প্রতিস্থাপিত হয়েছে। অতএব বনলতা সেনের পরিচয় ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’ উপমাটির গভীর তাৎপর্যের সাথেও অনিবার্য সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এসব সত্ত্বেও বলা প্রয়োজন, জীবনানন্দ দাশ হয়তো জীবনের কোনো এক সময়ে রক্তেমাংসে গড়া কোনো এক মানবীর প্রেমে মজেছিলেন, যার অস্তিত্ব বস্তুজাগতিক আলো-বাতাসের মাটি-পৃথিবীতেই বিদ্যমান ছিল। এই রমণীর ঠিকানা নাটোর হতেও পারে আবার নাও পারে। বনলতা সেন কবির কাব্যলক্ষ্মী (অশরীরী) কিংবা শরীরী বস্তুজাগতিক নারী যেই হোক না কেন চরিত্রটি দ্বারা যে কবিহৃদয় প্রচণ্ড আলোড়িত হয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কবি প্রেমে না পড়লে বারংবার অমূলক বিচ্ছেদের আশঙ্কা করতেন না। বনলতা সেনের জাগাতিক অস্তিত্বই অধিকতর যুক্তিযুক্ত মনে হয়, অবাস্তব কল্পলোকের কাব্যলক্ষ্মীর পরিবর্তে। এজন্যই হয়তো বিরহকাতর কবি বলেন; ‘জানি আমি তোমার দু’চোখ আজ আমাকে খোঁজে না আর পৃথিবীর পরে।’ বনলতা সেনের বস্তুজাগতিক অস্তিত্ব স্বীকৃত হলে তার সাথে সাধারণ প্রেমিক-প্রেমিকার মতো হয়তো কবিরও বিচ্ছেদ ঘটেছিল। আর বিচ্ছেদের মুখে কবির প্রেম প্রবল হয়ে উঠলে বাস্তবের নারীই হয়তো কবির কল্পরাজ্যে অধিশ্বরী কাব্যলক্ষ্মীর আসনে অবচেতনে অধিষ্ঠত হয়েছিল।
৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২৭
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: চমৎকার পোস্ট । তবে,
পোস্টের চাইতেও বেশী ভালো লাগছে আপনার আর ব্লগার জীবনানন্দ দাশের ছায়ার কমেন্ট পড়ে ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমি সুপ্রিয় ব্লগার জীবনানন্দদাশের ছায়া ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। এমন একটি মন্তব্য সত্যি আমার পোস্টের অলংকার হিসেবে থাকবে।
এবার বলেন কেমন আছেন ? পূজায় দাওয়াত পেলাম না এটা একটা কথা হলো যদিও আমি নিজেও ঈদে আপনাকে দাওয়াত দেই নাই।
৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৩
সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: ইশ ! উনাদের সময় আমার কেন জন্ম হইলো না । আহা ! কি সুন্দর সুন্দর সব কবিতা লিখে গেছেন উনারা ! তাহলে একটা কবিতা অন্তত ভাগে পেতাম । :!>
তুই এত্ত কষ্ট করে ক্যামনে পোস্ট দিস ? পড়তে যেয়েই ক্লান্ত হয়ে গেছি ! তোরে আল্লাহ আরও ধৈর্য দিক । আমীন !
ইয়ে একটা হলুদ তারা দিতেই হয় ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এহ ! আসছেন ? কেন এই কালে কি কবিতা ভাগে এখনো জোটেনি ?
আসলে ব্লগিং করতে করতে এখন আর কোন কষ্ট মনে হয়না। ভালই লাগে, বেশ তৃপ্তি পাই।
যাই হোক হলুদ তারা পেয়ে আনন্দিত।
৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
সপন সআথই বলেছেন: darun post
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ সপন সআথই। ভালো থাকুন।
৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ । তবু অতৃপ্তি থেকে যায়, আরও বিস্তারিত হওয়া উচিত ছিল ।
পোস্টে ভালোলাগা ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আসলে মামুন ভাই আপনি জানেন আলোচনা কিংবা সমালোচনা করার অভ্যাসটা ঠিক আমার হয়না। তাই এই পোস্টে আমি বিস্তারিত ভাবে কোন আলোচনা কিংবা সমালোচনায় নাগিয়ে শুধু প্রিয় কিছু কবিতা থেকে ছত্রগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। তাই অতৃপ্তি থেকে যাওয়ার জন্য ক্ষমা চাইছি।
পাঠে ও মন্তব্যে চির কৃতজ্ঞতা।
৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪০
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: খুব চমত্কার পোষ্ট হে কবি!
সত্যি গুড ওয়ান!
প্লাসের ঝর্ণাধারায় সিক্ত হোন ....
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অভি তোর প্লাসের ঝর্ণাধারায় পুরোপুরি তিতিয়ে গেলাম। ভালো থাকিস।
১০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪০
আমিনুর রহমান বলেছেন:
প্লাস দিলাম। একটা বৃহদ আকারের কমেন্ট করার জন্য আবার আসতেছি। আপাতত ব্যস্ত
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এইরে সেরেছে এবার বুঝি আমি শেষ
১১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৩
মামুন রশিদ বলেছেন: কাদম্বিনী দেবী সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন, না ফেরার দেশে । ঠাকুরবাড়ী শোকে নিস্তব্ধ। কবিগুরুর হৃদয়ে নিরব অশ্রুপাত, বুকে অস্ফুট কান্নার ঢেউ। আশৈশব ভাললাগা আর ভালবাসার এই বৌদি সব মায়া ছেড়ে আজ চলে গেছেন অনেক দুরে। কবির এই কষ্ট, এই বেদনা, এই নিরব অশ্রুপাত ছুঁয়ে যায় বিধাতার মন। কবির নিরব অশ্রুফোটায় তিঁনি ঢেলে দেন সুরের এক করুন রস-
"আমার প্রানের পরে চলে গেল কে
বসন্তের বাতাস টুকুর মত
সে যে ছুঁয়ে গেল, নুয়ে গেল রে
ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত"
এটা ছিল সামহোয়্যারইনে আমার প্রথম পোস্ট, জীবু'দা কাদম্বিনী দেবীর প্রসঙ্গ আনায় মনে পড়ে গেল..
কবিগুরুর ১৫১তম জন্মবার্ষিকী : রবিরাগের এক করুন রস ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সেদিন বরষা ঝরঝর ঝরে
কহিল কবির স্ত্রী
`রাশি রাশি মিল করিয়াছ জড়ো,
রচিতেছ বসি পুঁথি বড়ো বড়ো,
মাথার উপরে বাড়ি পড়ো-পড়ো,
তার খোঁজ রাখ কি!
শিঞ্জিত করি কাঁকন-দুখানি
চঞ্চল করে অঞ্চল টানি
রোষছলে যায় চলি।
হেরি সে ভুবন-গরব-দমন
অভিমানবেগে অধীর গমন
উচাটন কবি কহিল, `অমন
যেয়ো না হৃদয় দলি।
ধরা নাহি দিলে ধরিব দু পায়,
কী করিতে হবে বলো সে উপায়,
ঘর ভরি দিব সোনায় রুপায়---
বুদ্ধি জোগাও তুমি।
১২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৪
অচিন্ত্য বলেছেন: এখন সময় হচ্ছে না। কাল পড়ার জন্য তুলে রাখলাম। পোস্ট এবং মন্তব্য দেখে বেশ বিকেলের বৃষ্টিভেজা বাতাসে তেলমাখা মুড়ির গন্ধ পাচ্ছি।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ঈশ ! কি মনে করিয়ে দিলেন ? এখন এই রাতেও যে আমার তেলমাখা মুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে। যাই হোক আপাতত ধোঁয়া নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
১৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৮
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: চমৎকার চমৎকার। নাটোরের বনলতা সেন বলতে গিয়ে অনেকেই শুধু উপমায় আটকে থাকে, অনেকে বলে সম্ভবত নাটোরে বাস্তবিকই কোন বনলতা ছিল। এর ভিত্তি যে আছে তাতো আপনি মন্তব্যেই বলে দিলেন। তবে খুব বেশি মানুষ এ বিষয়টা জানেননা।
আমাদের কলেজে বাংলা পড়াতেন মারলিন ক্লারা পিনেরো ম্যাডাম। উনি একদিন আমাদের জিজ্ঞেস করলেনঃ "বলোতো বনলতা সেন কে?"
আমাদের সমস্বরে উত্তর জীবনানন্দ দাশের প্রেমিকা। ম্যাডাম বললেনঃ "এটাতো একদম সাদামাটা হয়ে গেল। জীবনানন্দ দাশ একজন পরাবাস্তব কবি, তোমরা কি মনে করো বনলতা শুধুই রক্তে মাংসে গড়া এক নারী।"
এরপর আমাদের পরাবাস্তবতা নিয়ে কিছু লেকচার দিলেন ম্যাডাম। তারপর যা বললেন তা সংক্ষেপে এমন-
বনলতা হচ্ছে ব্যক্তির জীবনে এমন একজন, এমন কেউ যার কাছে সব খুলে বলা যায়, যে একজন বন্ধু, যার সান্নিধ্যে দুঃখ, হতাশা, বেদনা, আক্ষেপ সব তুলে ধরা যায়। সে হতে পারে তোমার বন্ধু, হতে পারে কোন মেয়ে, হতে পারে তোমার মা বা বাবা অথবা বোন। বনলতা সেন একটা আশ্রয় যে কখনো তোমাকে ফেলে দেবেনা, যে তোমার সব দুঃখ-কষ্ট মুছে দেবে প্রেমে অথবা সান্তনায়।
উনি এটাও বলেছিলেন অনেক মানুষের জীবন বনলতাহীন কেটে যায়। তোমরা চেষ্টা করো জীবনে একজন বনলতা সেনকে খুঁজে নিতে। সে তোমার আশেপাশেই আছে হয়ত যাকে তুমি চেন কিন্তু বুঝতে পারোনা।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অদ্ভুত কিছু সুন্দর কথা বলেছেন মারলিন ক্লারা পিনেরো ম্যাডাম;
বনলতা হচ্ছে ব্যক্তির জীবনে এমন একজন, এমন কেউ যার কাছে সব খুলে বলা যায়, যে একজন বন্ধু, যার সান্নিধ্যে দুঃখ, হতাশা, বেদনা, আক্ষেপ সব তুলে ধরা যায়। সে হতে পারে তোমার বন্ধু, হতে পারে কোন মেয়ে, হতে পারে তোমার মা বা বাবা অথবা বোন। বনলতা সেন একটা আশ্রয় যে কখনো তোমাকে ফেলে দেবেনা, যে তোমার সব দুঃখ-কষ্ট মুছে দেবে প্রেমে অথবা সান্তনায়।
তাই হয়তোবা কবি লিখেছেন;
পাণ্ডুলিপি কাছে রেখে ধূসর দীপের কাছে আমি
নিস্তব্ধ ছিলাম ব’সে;
শিশির পড়িতেছিল ধীরে-ধীরে খ’সে;
নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি
উড়ে গেলো কুয়াশায়,- কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো।
তাহারি পাখার হাওয়া প্রদীপ নিভায়ে গেলো বুঝি?
অন্ধকার হাতড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুঁজি;
যখন জ্বলিবে আলো কার মুখ দেখা যাবে বলতে কি পারো?
কার মুখ?- আমলকী শাখার পিছনে
শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিলো, আহা,
সে-মুখ ধূসরতম আজ এই পৃথিবীর মনে।
তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ র’বে না আর, র’বে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখনঃ
সেই মুখ আর আমি র’বো সেই স্বপ্নের ভিতরে।
১৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০০
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: আমি কি রবি বাবুর বৌদির নামে ভুল করলাম
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
নাহ ভাইয়া একদম ভুল করেননি। কাদম্বরি দেবী ছিলেন রবী বাবুর বৌদি।
১৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০৮
মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: অনেক কিছু জানার মত একটি পোস্ট।
ভালোলাগা এবং শুভেচ্ছা।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
শুভেচ্ছায় সিক্তহোলাম, সত্যি অনেক বেশি আপ্লুত হোলাম হে প্রিয় লেখক।
শুভ রাত্রি ও শুভকামনা।
১৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০৯
শ্যামল জাহির বলেছেন: তিন কবি'র কবিতায় নারীকে নিয়ে আপনার পোস্টে চমৎকার বর্ণনায় প্লাস!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
প্লাসের জন্য অগনিত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা শ্যামল জাহির।
১৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১০
শায়মা বলেছেন: কাদম্বরী দেবীর আত্মহত্যা নিয়ে বিশেষ গান গুলি
আমার প্রাণের পরে চলে গেলো কে? -বৌদির মৃত্যুর পর একদিন সন্ধ্যাকালে রবিঠাকুর বাগানে বসে ছিলেন, হঠাৎ এক ঝলক হাওয়া ছুঁয়ে গেলো তাকে। তার মনে হলো বৌদিই বুঝি সেই বাতাস হয়ে এসেছেন.......
সে যে ছুঁয়ে গেলো নুয়ে গেলো রে...ফুল ফুটিয়ে গেলো শত শত......
http://www.youtube.com/watch?v=aL2uAYFlEUs
মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে
সেদিন ভরা সাঁঝে যেতে যেতে দূয়ার হতে
কি ভেবে ফেরালে মুখখানি
কি কথা ছিল যে মনে মনে ......
http://www.youtube.com/watch?v=744mCN3Fr34
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের 'পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
এমনি করে কাজল কালো মেঘ
জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ়মাসে নামে তমাল-বনে।
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাত্ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
১৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৮
শায়মা বলেছেন: http://www.youtube.com/watch?v=CP5JRWmezLY
এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়
এমন দিনে মন খোলা যায়, এমন মেঘ স্বরে বাদল ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমষায়.....এমন দিনে তারে বলা যায়...
সে কথা শুনিবেনা কেহ আর, নিভৃত নিরজন চারিধার
দুজনে মুখোমুখি গভীর দুঃখে দুখী আকাশে জল ঝরে অনিবার
জগতে কেহ যেন নাহি আর..
সমাজ সংসার মিছে সব, মিছে এ জীবনের কলরব
কেবলি আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব ....
আঁধারে মিশে গেছে আর সব ...
তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার
নামাতে পারি যদি মনোভার
শ্রাবন বরিষনে একদা গৃহকোনে
দুকথা বলি যদি কাছে তার
তাহাতে আসে যাবে কাহা কার
ব্যাকুল বেগে আজি বহে বায়
বিজলী থেকে থেকে চমকায়
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেলো মনে
সেকথা আজি যেন বলা যায়......
এমন ঘন ঘোর বরিষায়
এমন দিনে তারে বলা যায়!!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমি পরানের সাথে খেলিব আজিকে মরণখেলা
নিশীথবেলা।
সঘন বরষা, গগন আঁধার
হেরো বারিধারে কাঁদে চারিধার---
ভীষণ রঙ্গে ভবতরঙ্গে ভাসাই ভেলা;
বাহির হয়েছি স্বপ্নশয়ন করিয়া হেলা
রাত্রিবেলা॥
ওগো, পবনে গগনে সাগরে আজিকে কী কল্লোল!
দে দোল্ দোল্।
পশ্চাত্ হতে হাহা ক'রে হাসি
মত্ত ঝটিকা ঠেলা দেয় আসি,
যেন এ লক্ষ যক্ষশিশুর অট্টরোল।
আকাশে পাতালে পাগলে মাতালে হট্টগোল!
দে দোল্ দোল্।
আজি জাগিয়া উঠিয়া পরান আমার বসিয়া আছে
বুকের কাছে।
থাকিয়া থাকিয়া উঠিছে কাঁপিয়া,
ধরিছে আমার বক্ষ চাপিয়া,
নিঠুর নিবিড় বন্ধনসুখে হৃদয় নাচে;
ত্রাসে উল্লাসে পরান আমার ব্যাকুলিয়াছে
বুকের কাছে॥
হায়, এতকাল আমি রেখেছিনু তারে যতনভরে
শয়ন-'পরে।
ব্যথা পাছে লাগে---- দুখ পাছে জাগে
নিশিদিন তাই বহু অনুরাগে
বাসরশয়ন করেছি রচন কুসুমথরে;
দুয়ার রুধিয়া রেখেছিনু তারে গোপন ঘরে
যতনভরে॥
কত সোহাগ করেছি চুম্বন করি নয়নপাতে
স্নেহের সাথে।
শুনায়েছি তারে মাথা রাখি পাশে
কত প্রিয়নাম মৃদুমধুভাষে,
গুঞ্জরতান করিয়াছি গান জ্যোত্স্নারাতে;
যা-কিছু মধুর দিয়েছিনু তার দুখানি হাতে
স্নেহের সাথে॥
শেষে সুখের শয়নে শ্রান্ত পরান আলসরসে
আবেশবশে।
পরশ করিলে জাগে না সে আর,
কুসুমের হার লাগে গুরুভার,
ঘুমে, জাগরণে মিশি একাকার নিশিদিবসে
বেদনাবিহীন অসাড় বিরাগ মরমে পশে
আবেশবশে॥
ঢালি মধুরে মধুর বধূরে আমার হারাই বুঝি,
পাই নে খুঁজি।
বাসরের দীপ নিবে নিবে আসে,
ব্যাকুল নয়ন হেরি চারি পাশে
শুধু রাশি রাশি শুষ্ক কুসুম হয়েছে পুঁজি;
অতল স্বপ্নসাগরে ডুবিয়া মরি যে যুঝি
কাহারে খুঁজি॥
তাই ভেবেছি আজিকে খেলিতে হইবে নূতন খেলা
রাত্রিবেলা
মরণদোলায় ধরি রশিগাছি
বসিব দুজনে বড়ো কাছাকাছি,
ঝঞ্ঝা আসিয়া অট্ট হাসিয়া মারিবে ঠেলা;
আমাতে প্রাণেতে খেলিব দুজনে ঝুলনখেলা
নিশীথবেলা॥
দে দোল্ দোল্।
দে দোল্ দোল্।
এ মহাসাগরে তুফান তোল্
বধূরে আমার পেয়েছি আবার, ভরেছে কোল।
প্রিয়ারে আমার তুলেছে জাগায়ে প্রলয়রোল।
বক্ষশোণিতে উঠেছে আবার কী হিল্লোল!
ভিতরে বাহিরে জেগেছে আমার কী কল্লোল!
উড়ে কুন্তল, উড়ে অঞ্চল,
উড়ে বনমালা বায়ুচঞ্চল,
বাজে কঙ্কণ বাজে কিঙ্কিণী--- মত্তরোল।
দে দোল্ দোল্।
আয় রে ঝঞ্ঝা, পরানবধূর
আবরণরাশি করিয়া দে দূর,
করি লুণ্ঠন অবগুণ্ঠন-বসন খোল্।
দে দোল্ দোল্।
প্রাণেতে আমাতে মুখোমুখি আজ
চিনি লব দোঁহে ছাড়ি সব লাজ,
বক্ষে বক্ষে পরশিব দোঁহে ভাবে বিভোল।
দে দোল্ দোল্।
স্বপ্ন টুটিয়া বাহিরিছে আজ দুটি পাগল।
দে দোল্ দোল্।
১৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৯
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @শ্যামা
আমার জীবনে আমি যত গান শুনেছি তার মাঝে "মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে" অন্যতম, অন্যতম সুন্দর গান। কি কথা, কি সুর আর কি সুন্দর আক্ষেপ!!
"তুমি সে কি হেসে গেলে..
... ... .... ... ...
তুমি আছো দূর ভূবনে..."
@কান্ডারী
আমি মামুনের মন্তব্যে কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাইয়া আমি প্রথমে আপনার কেন কনফিউশন হলো সেটা বুঝতে পারি নাই। এখন বুঝলাম।
এই নিন জীবনানন্দ দাশের আরও একটি প্রিয় কবিতা;
একবার নক্ষত্রের দিকে চাই- একবার প্রান্তরের দিকে
আমি অনিমিখে।
ধানের ক্ষেতের গন্ধ মুছে গেছে কবে
জীবনের থেকে যেন; প্রান্তরের মতন নীরবে
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
নক্ষত্রেরা বাতি জ্বেলে- জ্বেলে- জ্বেলে- ‘নিভে গেলে- নিভে গেলে?’
ব’লে তারে জাগায় আবার;
জাগায় আবার।
বিক্ষত খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে- বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার,
ঘুম পায় তার।
অনেক নক্ষত্রে ভ’রে গেছে এই সন্ধ্যার আকাশ- এই রাতের আকাশ;
এইখানে ফাল্গুনের ছায়ামাখা ঘাসে শুয়ে আছি;
এখন মরণ ভালো,- শরীরে লাগিয়া র’বে এই সব ঘাস;
অনেক নক্ষত্র র’বে চিরকাল যেন কাছাকাছি।
২০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৩
শায়মা বলেছেন: জীবানানন্দভাইয়া তুমি কেমন আছো?
সবকিছু ঠিকঠাক তো?
ভালো আছো ভাইয়া?
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
@জীবনানন্দদাশের ছায়া ভাই
২১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৫
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @ শ্যামা
ভালো আছি জীবনকে উপভোগ করছি।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
@শায়মা আপুনি
২২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৬
শায়মা বলেছেন: মনে কি দ্বীধা রেখে গেলে চলে সেদিন ভরা সাঁঝে
যেতে যেতে দূয়ার হতে কি ভেবে ফেরালে মুখখানি
কি কথা ছিল যে মনে মনে......
মৃত্যুর আগে বৌদি রবিঠাকুরের ঘরে এক ঝলক ঢুকেছিলো দূয়ার ঠেলে। রবিঠাকু মুখ তুলে চেয়ে জিগাসা করেছিলেন কি? বৌদি কিছু না বলে হেসে ফিরে গেছিলেন, তারপরপরই আত্মহত্যা।
তুমি সে কি হেসে গেলে আঁখিকোনে
আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে কম্পিত হৃদয়খানি
তুমি আছো দূরভুবনে..........
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
বন্ধু, তোমার পথ সম্মুখে জানি,
পশ্চাতে আমি আছি বাঁধা।
অশ্রুনয়নে বৃথা শিরে কর হানি
যাত্রায় নাহি দিব বাধা।
আমি তব জীবনের লক্ষ্য তো নহি,
ভুলিতে ভুলিতে যাবে হে চিরবিরহী,
তোমার যা দান তাহা রহিবে নবীন
আমার স্মৃতির আঁখিজলে -
আমার যা দান সেও জেনো চিরদিন
রবে তব বিস্মৃতিতলে।।
২৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৭
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: বারেক তোমায় শুধাবারে চাই
বিদায়কালে কী বলোনাই
সে যে রয়ে গেল
.....................................
বৌদি মৃত্যু মূলত ১) স্বামীর অবহেলা- জাহাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক না পাওয়া এবং ২) রবি বাবুর বিয়ের পরে দূরে চলে যাওয়া যেটা খুবই স্বাভাবিক ছিল।
আমি মাঝে মাঝে ভাবি ঐ সময়টাতে কত মেয়ে কত একাকীত্বের যন্ত্রনায় পুড়েছে, বন্ধুহীন, একা একা!!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
রবীন্দ্রনাথ তার প্রত্যেকটি কবিতা আগে কাদম্বরি দেবীকে পড়ে শুনাতেন।কাদম্বরি দেবীর একাকিত্ব আর নিঃসঙ্গতা দূর করতে তাকে নিয়ে বাগানে ঘুরে বেড়াতেন।এমনি ভাবে রবীন্দ্রনাথ একদিন বেরিয়েছেন কাদম্বরি কে নিয়ে, এমন সময় আকাশ কেলো করে বৃষ্টি নামলো, দুজনে বৃষ্টিতে ভিজলেন, আর রবীন্দ্রনাথ লিখলেন-
“এসো নীপবনে, ছায়াবীথি তলে
এসো কর স্নান, নবধারা জলে”
এভাবেই রবীন্দ্রনাথ ও কাদম্বরি দেবীর সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। কাদম্বরি দেবী সম্পুর্নভাবে রবীন্দ্রনাথের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।তিনি ছিলেন স্বামী কর্তৃক উপেক্ষিত আর একাকী, এমতাবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ই ছিলো তার একমাত্র সঙ্গী।কাদম্বরি দেবী ও রবীন্দ্রনাথের মনমানসিকতাও ছিলো প্রায় এক্রকম।রবীন্দ্রনাথের এত বড় কবি হওয়ার পেছনে কাদম্বরি দেবীর ভুমিকা ছিলো অপরিসীম।ধীরে ধীরে তাদের এ সম্পর্ক সবার নজরে পরতে থাকে, রবীন্দ্রনাথের বাবা তার জন্য পাত্রী দেখা শুরু করলেন। কাদম্বরি দেবীকে যশোরে পাঠালেন পাত্রী দেখার জন্য। কিন্তু রবির প্রেমে মগ্ন কাদম্বরি পাত্রী না দেখেই সবাইকে বললেন রবির জন্য যোগ্য পাত্রী পাওয়া যায়নি।রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন ২২,তখন হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিত ভাবে রবির বিয়ে হয় ১১ বছর বয়সী ভবতারিনী দেবীর সঙ্গে।
পরবর্তিতে তার স্ত্রীর নাম পালটে রাখা হয় মৃনালিণী দেবী।কাদম্বরি দেবী এ কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি।তিনি এ বিয়ে ভাঙ্গার জন্যও অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু তার সবকটি চেষ্টাই অসফল হয়।
২৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৯
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। অনেক কষ্ট করে সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা দেওয়াতে বুঝতে সুবিধা হলো।
প্রতিটি কবির বর্ণনা শুরু করার লাইনগুলো চমৎকার এবং আপনার মতামতের সাথে মিল রেখে কবিতা তুলে ধরেছেন অসাধারণ ভাবে।
পোস্টে প্লাসের বন্যা রইল।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপনার জন্য নজরুলের একটি প্রিয় কবিতা থেকে মাঝের কিছু ছত্র;
স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,
কাহার যেন চেনা-ছোওয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে, -
জাগবে হঠাৎ চমকে!
ভাববে বুঝি আমিই এসে
ব'সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,
ধরতে গিয়ে দেখবে যখন
শূন্য শয্যা! মিথ্যা স্বপন!
বেদনাতে চোখ বুজবে -
বুঝবে সেদিন বুঝবে!
গাইতে ব'সে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না,
ব'লবে সবাই - "সেই যে পথিক, তার শেখানো গান না?"
আসবে ভেঙে কান্না!
প'ড়বে মনে আমার সোহাগ,
কন্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ!
প'ড়বে মনে অনেক ফাঁকি
অশ্রু-হারা কঠিন আঁখি
ঘন ঘন মুছবে -
বুঝবে সেদিন বুঝবে!
২৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৪
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দূর্দান্ত একটা পোষ্ট!। অনেক ভালো লাগল।
আপনার পোষ্টের কন্টেন্ট এবং সবার মন্তব্যগুলো বেশ উপভোগ্য। অনেকদিন পর ভালো একটা লেখা পড়লাম। পোষ্টে প্লাস।
তবে আসল কথা হইল, ইয়াল্লাহ!!!!!!! সাহিত্যের এত কঠিন কথা আমি বুঝি না
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমিও সাহিত্য তেমন একটা বুঝিনা তবে কবিতা প্রেমি বলতে পারেন আমাকে। আমি আমার নিজের মত বুঝে নেই সব কবিতা সেখানে বোঝার ভুল অবশ্য থাকতে পারে।
তোমারে পড়িছে মনে
আজি নীপ-বালিকার ভীরু-শিহরণে,
যুথিকার অশ্রুসিক্ত ছলছল মুখে
কেতকী-বধূর অবগুন্ঠিত ও বুকে-
তোমারে পড়িছে মনে।
হয়তো তেমনি আজি দূর বাতায়নে
ঝিলিমিলি-তলে
ম্লান লুলিত অঞ্ছলে
চাহিয়া বসিয়া আছ একা,
বারে বারে মুছে যায় আঁখি-জল-লেখা।
বারে বারে নিভে যায় শিয়রেরে বাতি,
তুমি জাগ, জাগে সাথে বরষার রাতি।
সিক্ত-পক্ষ পাখী
তোমার চাঁপার ডালে বসিয়া একাকী
হয়ত তেমনি করি, ডাকিছ সাথীরে,
তুমি চাহি' আছ শুধু দূর শৈল-শিরে ।।
তোমার আঁখির ঘন নীলাঞ্জন ছায়া
গগনে গগনে আজ ধরিয়াছে কায়া ।
২৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৪
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া এখন তো এই গানের পিছের রহস্য নিয়েও আমার একই কথা মনে হচ্ছে
আমি তোমার প্রেমে হবো সবার কলংকভাগী
আমি সকল দাগে হবো দাগী...
তোমার পথের কাঁটা করবো চয়ন যেথায় তোমার ধুলায় শয়ন
সেথা আঁচল পাতবো আমার তোমার রাগে অনুরাগী!
আমি সূচী আসন টেনে টেনে, বেড়াবোনা বিধান মেনে
যে পংকে ঐ চরণ পড়ে তাহার ই ছাপ বক্ষে মাগি!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অসম্ভব কিছু নয়। হতেই পারে এমন। যেমন আপু যতদূর জানি রবী বাবুর বৌদি খুব ভালো গান গাইতেন, তাই হয়ত কবি তাঁর কবিতায় লিখেছেন;
আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে
তখন কে তুমি তা কে জানত।
তখন ছিল না ভয়, ছিল না লাজ মনে,
জীবন বহে যেত অশান্ত।
তুমি ভোরের বেলা ডাক দিয়েছ কত
যেন আমার আপন সখার মতো,
হেসে তোমার সাথে ফিরেছিলাম ছুটে
সেদিন কত-না বন-বনান্ত।
ওগো, সেদিন তুমি গাইতে যে সব গান
কোনো অর্থ তাহার কে জানত।
শুধু সঙ্গে তারি গাইত আমার প্রাণ,
সদা নাচত হৃদয় অশান্ত।
হঠাৎ খেলার শেষে আজ কী দেখি ছবি -
স্তব্ধ আকাশ, নীরব শশী রবি,
তোমার চরণপানে নয়ন করি নত
ভুবন দাঁড়িয়ে গেছে একান্ত।
২৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৫
জিনান শুভ বলেছেন: এসব কবিতা যারা লাইক করে বাস্তব জীবনে এরা একটুও রোমান্টিক হয়না।বরং হয় একেকটা রোবোট।যত আবেগ এসব কবিতায় গল্পেই সীমাবদ্ধ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আর যারা এসব কবিতা লিখেছেন তারাও নিশ্চয় রোবোট নাহলে এমন কবিতা লিখলেন কি করে ?
পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৭
সুমন কর বলেছেন: যে দিন আমি হারিয়ে যাব
বুঝবে সেদিন বুঝবে।
সুন্দর।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমার বেদনা আজি রূপ ধরি' শত গীত-সুরে
নিখিল বিরহী-কন্ঠে--বিরহিণী--তব তরে ঝুরে!
এ-পারে ও-পারে মোরা, নাই নাই কূল!
তুমি দাও আঁখি-জল, আমি দেই ফুল!
২৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৫
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: হা হা হা! @ শ্যামা
কবির সৃষ্টিকে ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব। আমরা শুধু ধারণা করতে পারি, নিশ্চিৎ হতে পারিনা। এর সম্ভবত খুব ভালো উদাহরণ রবি বাবুর "সোনার তরী কবিতাটি"। এর প্রেক্ষাপট কী তা নিয়ে কিন্তু কবি জীবিত থাকাকালেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
ভাগ্যিস কবি ব্যাখ্যা দিয়ে যেতে পেরেছেন এবং চারুচন্দ্র ব্যানার্জিকে লেখা কবির একটা চিঠির মাধ্যমেও বোঝা যায় কবিতাটা কবির চারপাশের প্রকৃটিকে কেন্দ্র করেই কবিতাটিকে লিখেছিলেন। তবে কবিতার ভেতর যে গভীর দর্শনটি আছে সেটিও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন- মানুষের কর্মকেই মহাকাল মনে রাখে, ব্যক্তিকে নয়!
@ কান্ডারী
রবি বাবুর সাথে বৌদির সম্পর্কের মাত্রা আমার জানামতে বন্ধুত্বেই ছিল। বৌদি যশোর গিয়ে এমনটি করেছেন জানতাম না। তবে অসম্ভব নয়। মানুষ ব্যাখ্যার অতীত জীব!!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাইয়া আমিও আসলে কিছুটা এই ব্যাপারটি নিয়ে কনফিউজড তবে বিভিন্ন লেখায় যা পেয়েছি শুধু সেখান থেকেই কিছু লিখেছি। তবে হ্যাঁ এটা সত্যি মানুষ ব্যাখ্যার অতীত জীব!! মানুষের কর্মকেই মহাকাল মনে রাখে, ব্যক্তিকে নয়!
কাদম্বরি দেবীর অকাল মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথ মানসিকভাবে দারুন বিপর্যস্ত হয়ে পরেন,পরবর্তিকালে তার বিভিন্ন কবিতা ও গানে কাদম্বরি দেবীর ছায়া দেখতে পাওয়া যায়।কাদম্বরি দেবীর শোকে কবি নিজেকে ভীষন একা করে ফেলেন। লেখা থেকেও দূরে ছিলেন অনেক দিন। তার এহেন দুরবস্থায় তাকে বৃক্ষের মত ছায়া দিতে থাকেন তার সুযোগ্য স্ত্রী মৃ্নালিনী দেবী। জীবনের সবক্ষেত্রে তিনি স্বামীর পাশে থেকেছেন। এমনকি কোলকাতার ঠাকুরবাড়ির আরাম আয়েশ ছেড়ে কবির সাথে তিনি শান্তিনিকেতনে যেতেও পিছপা হননি।
৩০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩০
লেখোয়াড় বলেছেন:
এই পোস্ট এবং এখানে মন্তব্য ও তার প্রতিউত্তগুলো খুব ভাল লাগছে।
কান্ডারী আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট দেয়ার জন্য।
@ জীবনানন্দদাশের ছায়া..............
@ শায়মা অরফে শ্যামা...................
আপনাদের দুজনকেও ধন্যবাদ এখানে অনেক কথা বলার জন্য।
পোস্টটি বার বার পড়তে আসতে হবে।
ধন্যবাদ কান্ডারী।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমি সুপ্রিয় ব্লগার জীবনানন্দদাশের ছায়া ও শায়মা আপুনির কাছে সত্যি ভীষণ কৃতজ্ঞ থাকবো কারন এই পোস্টটিকে উনারা মন্তব্যে ভীষণ রকম সমৃদ্ধশালী করে তুলেছেন এবং অনুরোধ করবো উনাদের যদি আরও কিছু তথ্য জানার থাকে তবে শেয়ার করবেন।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আপনার জন্য নজরুলের একটি কবিতা থেকে কিছু ছত্র;
(বাতায়ন পাশে গুবাক-তরুর সারি)
অস্ত-আকাশ-অলিন্দে তার শীর্ণ কপোল রাখি
কাদিতেছে চাঁদ 'মুসাফির জাগো, নিশি আর নাই বাকি'।
নিশীথিনী যায় দূর বন-ছায়, তন্দ্রায় ঢুলঢুলু
ফিরে ফিরে চায় দু হাতে জড়ায় আঁধারের এলোচুল।
চমকিয়া জাগি, ললাটে আমার কাহার নিশাস লাগে ?
কে করে বীজন তপ্ত ললটে, কে মোর শিয়রে জাগে
জেগে দেখি, মোর বাতায়ন পাশে জাগিছ স্বপনচারী
নিশীথ-রাতের বন্ধু আমার গুবাক-তরুর সারি!
তোমাদের আর আমার আঁখির পল্লব কম্পনে
সারা রাত মোরা কয়েছিযে কথা বন্ধু পড়িছে মনে
জাগিয়া একাকী জ্বালা করে আঁখি আসিতো যখন জল
তোমাদের পাতা মনে হত যেন সুশীতল করতল
আমার প্রিয়ার ! তোমার শাখার পল্লবমর্মর
মনে হত যেন তারি কন্ঠের আবেদন সকাতর
তোমার পাতায় দেখেছি তাহার আঁখির কাজল-লেখা
তোমার দেহেরই মতন দীঘল তাহার দেহের রেখা।
তব র্ঝির্ঝি র্মির্মি যেন তারি কুন্ঠিত বাণী,
তোমার শাখায় ঝুলানো তাহার শাড়ির আঁচলখানি
তোমার পাখার হাওয়া
তারি অঙ্গুলি-পরশের মত নিবিড় আদর-ছাওয়া !
৩১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩২
অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:
ভালো লাগলো, গ্রেট ওয়ার্ক!
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল ভ্রাতা।
ভাবিতে ভাবিতে ঢুলিয়া পড়েছি ঘুমের শ্রান্ত কোলে
ঘুমায়ে স্বপন দেখেছি --তোমার সুনীল ঝালর দোলে
তেমনি আমার শিথানের পাশে। দেখেছি স্বপনে, তুমি
গোপনে আসিয়া গিয়াছ আমার তপ্ত ললাট চুমি।
৩২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: অনেক ভালো পোস্ট
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা পোস্ট পাঠে প্রিয় মাসুম ভাই।
তব র্ঝির্ঝি র্মির্মি যেন তারি কুন্ঠিত বাণী,
তোমার শাখায় ঝুলানো তাহার শাড়ির আঁচলখানি
তোমার পাখার হাওয়া
তারি অঙ্গুলি-পরশের মত নিবিড় আদর-ছাওয়া !
তোমরে লইয়া সাজাব না ঘর সৃজিব অমরাবতী !
তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু আর আমি জাগিব না।
কোলাহল করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙ্গিব না।
৩৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৫
শায়মা বলেছেন: মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী , দেবো খোঁপায় তারার ফুল......
কর্ণে দুলাবো তৃতীয়া তিথির চৈতী চাঁদের দুল......
কাজী নজরুল ইসলামের এই গানটি লেখার আদি উৎসরুপ। আব্বাসউদ্দীন তার 'আমার শিল্পী জীবনের কথা' বইটিতে লিখেছেন একদিন কবি ও আরো কয়েকজন শিল্পী গ্রামোফোন কম্পানীতে বসে গল্প করছিলেন। এমন সময় কথাচ্ছলে প্রশ্ন উঠলো যদি কেউ একলাখ টাকা লটারীতে পেয়ে যায় তবে কে কার প্রিয়াকে কেমন ভাবে সাজাবেন। কেউ কমলালয় স্টোর্সে যেতে চাইলেন, কেউ আবার সুইৎজারল্যান্ড। কিন্তু কবি খাতা কলম নিয়ে বসে গেলেন তার প্রিয়াকে সাজাতে।
Click This Link
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অসাধারন;
মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী,
দেব খোঁপায় তারার ফুল ।
কর্ণে দোলাব তৃতীয়া তিথির,
চৈতী চাঁদের দুল ।
কন্ঠে তোমার পরাবো বালিকা,
হংস-সারির দুলানো মালিকা ।
বিজলী জরীণ ফিতায় বাঁধিব,
মেঘ রং এলো চুল ।
মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী,
দেব খোঁপায় তারার ফুল ।
জ্যোছনার সাথে চন্দন দিয়ে
মাখাব তোমার গায়,
রামধনু হতে লাল রং ছানি,
আলতা পরাব পায় ।
আমার গানের সাত-সুর দিয়া,
তোমার বাসর রচিব প্রিয়া ।
তোমারে ঘেরিয়া গাহিবে আমার,
কবিতার বুলবুল ।
মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী,
দেব খোঁপায় তারার ফুল ।
৩৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
বশর সিদ্দিকী বলেছেন: জীবনান্দ দাসের মত করে নারীকে এত ভালভাবে উপলব্ধি বকি দুজন করতে পারেনি বলে আমার মনে হয়। তার উপমা গুলো আমার কাছে বেশি ভাল লাগে।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমার মনে হয়েছে তিনজনই তিনরকম ভাবে নারীকে উপলব্ধি করেছেন তাদের কবিতায় তবে জীবনানন্দ দাশ তাঁর কবিতায় নারীকে দেখেন জাগতিক ভূমিকায় এঁকেছেন কখনও জীবন গড়তে কখনও মৃত্যুর ভূমিকায় পাশে সুখ নিদ্রায় শায়িত অবস্থায় রেখে।
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হল তার সাধ। বধূ শুয়ে ছিল পাশে - শিশুটিও ছিল;
প্রেম ছিল,আশা ছিল-জোৎসনায়,-তবে সে দেখিল
কোন ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেলো তার?
অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল - লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি!
৩৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৭
শায়মা বলেছেন: জীবানানন্দভাইয়া
আমার হৃদয় তোমার আপন হাতে দোলে দোলাও দোলাও দোলাও
এ গানটা যে কেনো লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ.......
আহা যদি জানতে পেতাম!!!
http://www.youtube.com/watch?v=1inI_vEh7dA
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
@জীবনানন্দদাশের ছায়া ভাই
৩৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
শায়মা বলেছেন: জীবানানন্দভাইয়া কান্ডারী ভাইয়া আর লেখো্যাড়ভাইয়া কাদম্বরী দেবীকে পাওয়া যায় পুরোটাই তার নষ্টনীড় ছোটগল্পে।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনিতেও কিছুটা পাওয়া যায়। তবে নষ্টনীড় অনবদ্য সৃষ্টি।
৩৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪১
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: হা হা হা
@ শ্যামা
@লেখোয়াড়, ধন্যবাদ
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমাকেও একটু ধন্যবাদ দিন ভাইয়া
৩৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৪
শায়মা বলেছেন: Click This Link
আমার লেখাটা পড়ো ভাইয়া......
জীবানানন্দভাইয়া তুমিও রবিঠাকুরকে নিয়ে লিখেছিলে সেই লিন্কটা দাও। সব্বাই পড়ি।
http://www.youtube.com/watch?v=oxMBvEjtyTw
পুরানো সে দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়
সেই চোখের দেখা প্রানের কথা সে কি ভোলা যায়?
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায় ।
ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায় ।
আয় আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয় ।
মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায় ।
মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়-
বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায় ।
হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি, গেলেম কে কোথায়-
আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয় ।।
৩৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
শায়মা বলেছেন: ১৯৩৩ সালে অগ্রহায়নের এক সন্ধ্যায় মিশরীয় নর্তকী মিস ফরিদা আলফ্রেড রঙ্গমন্চে নাচ দেখাতে আসেন। উর্দূ গজল 'কিস কি খায়রো ম্যায় নাজনে,কবরো মে দিল হিলা দিয়া' গানটির সাথে নাচটি নজরুলের মনে যে ভাবের সন্চার করে তারি প্রতিফলন এই 'আসে বসন্ত ফুলবনে' গানটি।
আসে বসন্ত ফুলবনে সাজে বনভুমি সুন্দরী।
চরনে পায়েলা রুমুঝুমু মধুপ উঠিছে গুন্জরী।
যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পারো নাই
কেনো মনে রাখো তারে?
ভুলে যাও মোরে ভুলে যাও একেবারে....
কুমিল্লার দৌলতপুর নিবাসী আলী আকবার খানের ভাগ্নী নার্গিস খানমের সাথে নজরুলের বিয়ে হয়েছিলো ১৩২৮ সালের ৩ আষাঢ়। এ বিয়ে সফল হয়নি একেবারেই। বিয়ের দিন রাতেই কবি পায়ে হেটে চলে আসেন সে বাড়ি হতে। এরপর তার সাথে কবির আর দেখা হয়নি তবে ষোলো বছর পরে নার্গিস কবিকে একখানি চিঠি লিখেন। ১০৬ আপার চিৎপুর রোডে গ্রামোফোন কম্পানীর রিহার্সেল রুমে বসে বন্ধু শৈলজানন্দ মুখপাধ্যায়কে কবি চিঠিখানি পড়তে দেন। বন্ধুর অনুরোধে কবি চিঠিখানির উত্তর লিখতে গিয়ে লিখে ফেলেন এই গানটি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আসে বসন্ত ফুলবনে
সাজে বনভূমি সুন্দরী ।
চরণে পায়েলা রুমঝুম
মধুপ উঠিছে গুঞ্জরি ।।
ফুলরেণু – মাখা দখিণা বায়
বাতাস করিছে বন – বালায় ,
বন কবরী-নিকুঞ্জ-ছায়
মুকুলিকা ওঠে মুঞ্জরি ।।
কুহু আজি ডাকে মুহুমুহু
পিউ কাহা কাঁদে উহু উহু ,
পাখায় পাখায় দোহে দুহু
বাধে চঞ্চর চঞ্চরী ।।
দুলে আলো-ছায়া বন –দুকূল,
ওড়ে প্রজাপতি কলকা ফুল ,
কর্ণে অতসী স্বর্ণ-দুল
আলোক-লতার-সাত-নোরী ।।
পদ্ম ডলিয়া পায়ে বালা
করিয়াছে সারা বন আলা ,
দ্বারে মঞ্জরী-দ্বীপ জ্বালা
ডালপালা রচে ফুলছড়ি ।।
কবি, তোর ফুলমালি কেমন ,
ফাগুনে শুন্য পুস্পবন ,
বরিবি বুরে এলে কানন
রিক্ত হাতে কি ভুল ভরি ।।
৪০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: আমার বোন বাংলায় মাস্টার্স। ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। ও এতরাতে ঘুম ভাঙালাম কেন তাই বকা দিল। আসলে জানেনা
ওটা আমি খুঁজে দেখবো। @শ্যামা "আমার হৃদয় তোমার আপন হাতে দোলে দোলাও দোলাও দোলাও " মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে
আর আগের মন্তব্যটা ছিল নজরুলের গানের কাহীনি শুনে
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাই আমার পক্ষ থেকে আপুর জন্য সরি রইল। আমার এই পোস্টের কারনেই আপুর ঘুম ভাঙাতে হলো
৪১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৮
গোর্কি বলেছেন:
রমনী হৃদয়ে কবিগণ - সাধু! সাধু!!
পোস্টে এবং চমৎকার গঠনমূলক আলোচনায় একরাশ মুগ্ধতা।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
কবিতায় রমনীগন সত্যি অতুলনীয়া।
অনেক কিছুই জানতাম না আজ জানা হয়ে যাচ্ছে।
শুভেচ্ছা রইল প্রিয় গোর্কি
৪২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫০
শায়মা বলেছেন: আমার কিশোরীবেলার মুগ্ধবালকের কন্ঠে শোনা সেই প্রিয় গান..... যা শুনলে আমি এখনও ফিরে যাই সেই দিনে......
http://www.youtube.com/watch?v=H9vogTB6SuE
এই গান নিয়ে লেখা........ যখন আমার হৃদয় ছিলো......
Click This Link
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
মম সঙ্গীত তব অঙ্গে অঙ্গে দিয়েছি জড়ায়ে জড়ায়ে
তুমি আমারি তুমি আমারি মম জীবন মরণ বিহারী।
৪৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩
শায়মা বলেছেন: জীবানানন্দভাইয়া নজরুলের গানের পিছের কিছু কাহিনী নিয়ে লিখেছিলাম খোঁপায় তারার ফুল...লিন্কটা দিয়েছি উপরে......
আর তুমি সন্ধ্যার মেঘমালাও যে কেনো লিখলো !!!
ধ্যাৎ রাত দুপুরে তো এখন এসব ভাবনায় ঘুমই হারাম হয়ে যাবে।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
তাহলে এককাপ চা হলে কিন্তু মন্দ হয় না কিন্তু এত রাতে চা কে বানাবে ?
৪৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৪
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: হ্যা রবি বাবুকে একটা নৈবেদ্য লিখেছিলাম এই হলো সেই লিংকঃ
আমার রবীন্দ্রনাথঃ রবি বাবুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিলম্বিত নৈবেদ্য
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ লিংকটির জন্য। পোস্ট পড়ে দারুণ লাগলো।
তোমার মনে থাকার মত করেছি কোন কাজ!
তোমায় দিতে পেরেছিলেম একটু তৃষার জল
এই কথাটি আমার মনে রহিল সম্বল।
কুয়ার ধারে দুপুরবেলা তেমনি ডাকে পাখি,
তেমনি কাঁপে নিমের পাতা- আমি বসেই থাকি।
৪৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
শান্তির দেবদূত বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের "বিদায় অভিশাপ" আমার মতে নারী নিয়ে বাংলা সাহিত্যের সেরা কবিতা। অবাক লাগে এই কবিতাটা নিয়ে তেমন কোন আলোচনা চোখে পড়ে না।
এই বিদায় অভিশাপ প্রায় ২ ঘন্টা আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলা মোবাইল ফোনে, তার পরের দিন প্রপোজ করেছিলাম।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাই উফ ! অস্থির একটা কাব্য কথোপকথনের কথা স্মরন করিয়ে দেয়ার জন্য একরাশ ভালোবাসা জানবেন।
সুধা হতে সুধাময়
দুগ্ধ তার— দেখে তারে পাপক্ষয় হয়,
মাতৃরূপা, শান্তিস্বরূপিণী, শুভ্রকান্তি,
পয়স্বিনী । না মানিয়া ক্ষুধাতৃষ্ণাশ্রান্তি
তারে করিয়াছি সেবা; গহন কাননে
শ্যামশষ্প স্রোতস্বিনীতীরে তারি সনে
ফিরিয়াছি দীর্ঘ দিন ; পরিতৃপ্তিভরে
স্বেচ্ছামতে ভোগ করি নিম্নতট- ’পরে
অপর্যাপ্ত তৃণরাশি সুস্নিগ্ধ কোমল—
আলস্যমন্থরতনু লভি তরুতল
রোমন্থ করেছে ধীরে শুয়ে তৃণাসনে
সারাবেলা ; মাঝে মাঝে বিশাল নয়নে
সকৃতজ্ঞ শান্ত দৃষ্টি মেলি, গাঢ়স্নেহ
চক্ষু দিয়া লেহন করেছে মোর দেহ।
মনে রবে সেই দৃষ্টি স্নিগ্ধ অচঞ্চল,
পরিপুষ্ট শুভ্র তনু চিক্কণ পিচ্ছল।
৪৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
শায়মা বলেছেন: জীবানানন্দভাইয়া ইহা আমাকে উৎসর্গ করা হয়েছিলো!!
ও হ্যাঁ তানিম পিচকা কবিভাইয়ারও একটা পোস্ট আছে রবিঠাকুরকে নিয়ে সেটাও নিয়ে আসি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপুনি সাথে এককাপ চা হলে কিন্তু রাতের আড্ডাটা আরও জমজমাট হতো।
৪৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০০
শায়মা বলেছেন: দেবদূত ভাইয়া!!!!!!!!!!!!!!! সেটা আমার কবিতা!!!!!!!
দেবযানী আর কচ!!!!!!!!!!!
দাঁড়াও সেটাও নিয়ে আসি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
৪৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০১
শায়মা বলেছেন: @ শান্তির দেবদূতভাইয়া
Click This Link
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
৪৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৪
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: আমাদের ৪র্থ বর্ষের শেষদিন। আমাদের বিদায় জানানো হচ্ছে, এরপর আমরা যে যার মত আলাদা হয়ে যাবো, যার যার জীবনে ব্যস্ত হয়ে পরবো। আমরা সবাই মিলে একটা গান গেয়েছিলাম মন্চে-
"পুরানো সেই দিনের কথা...।
আয় আরেকটি বার আয়রে সখা প্রানের কাছে আয়...।"
আমার এমন হেরে গলা যে আমাকে রিহার্সেল থেকে বাদ দিতে হলো কিন্তু পরে যতবার মনে পরেছে ততবার বুঝতে পেরেছি কি মর্ম এ গানের। " আয় আরেকটিবার আয়রে সখা..." প্রানের গভীর থেকে উঠে আসা কি আহ্বান!!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাইয়া আরও কিছু পুরানো স্মৃতি শেয়ার করুন; বেশ লাগছে আপনার অতীত স্মৃতি জেনে।
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায় ।
ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায় ।
আয় আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয় ।
মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায় ।
মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়-
বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায় ।
হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি, গেলেম কে কোথায়-
আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয় ।।
৫০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১১
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @ শান্তির দেবদূত, "বিদায়-অভিশাপ" সম্ভবত এর কলেবরের কারণে আলোচনায় থাকেনা। এত দীর্ঘ বলেই হয়ত!
"আমি বর দিনু, দেবী, তুমি সুখি হবে-
ভুলে যাবে সর্বগ্লানি বিপুল গৌরবে"
@শ্যামা
হ্যা, ওটা চানাচুর এবং শায়মাকে উৎসর্গ করা হয়েছিল
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপনার সাথে সহমত আমারও তাই ধারনা কবিতাটি এত দীর্ঘ বলেই হয়ত এর কলেবরের কারণে আলোচনায় থাকেনা।
৫১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৬
শায়মা বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
নজরুল ইসলাম----
Click This Link
Click This Link
Click This Link
না না সময়ে রবিঠাকুর আর কবি নজরুল নিয়ে লেখা আমার লেখাগুলি। যদিও বেশিভাগ লেখাই অংবং চিন্তা ভাবনা থেকে লেখা তবুও বুঝবে রবিঠাকুর কিভাবে আমার জীবনের সাথে মিশে আছে। আমার প্রথম ভালোবাসা।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ওরেরে অনেক অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আপু এতগুলো লিংক শেয়ার করার জন্য। যাও তোমার জন্য চকোলেট পাওনা রইল।
৫২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৭
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: নজরুলকে নিয়ে আরেকজন ( ) ব্লগারের একটা লেখার লিংক দিয়ে যাইঃ
নজরুল-নজরুল-অ্যারন নজরুল
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই লিংকটি শেয়ার করার জন্য।
৫৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৯
শায়মা বলেছেন: শান্তির দেবদূত বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের "বিদায় অভিশাপ" আমার মতে নারী নিয়ে বাংলা সাহিত্যের সেরা কবিতা। অবাক লাগে এই কবিতাটা নিয়ে তেমন কোন আলোচনা চোখে পড়ে না।
এই বিদায় অভিশাপ প্রায় ২ ঘন্টা আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলা মোবাইল ফোনে, তার পরের দিন প্রপোজ করেছিলাম।
আহালে ভাইয়া আমাদের ভাবিজীকে এত কষ্ট দিসো!!!!!!!! ২ ঘন্টা আবৃত্তি করালে!!!!!!!!! তুমি তো আচ্ছা!!!!!!!!!!!!!!
জীবানানন্দভাইয়া গেলাম অনেক হইসে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আমাদের। এখন ঘুমাতে যাই, নাইলে কাল দুপুর বেলা উঠে দেখবো স্কুল শেষ হয়ে গেছে।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপু আপনাদের দুজনের কল্যানে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আশা করি এখন একটি সুখ নিদ্রার পর কাল স্কুল শেষে আবার কিছু জানতে পারবো। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক অনেক অনেক।
৫৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২০
শায়মা বলেছেন: জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: নজরুলকে নিয়ে আরেকজন ( ) ব্লগারের একটা লেখার লিংক দিয়ে যাইঃ
নজরুল-নজরুল-অ্যারন নজরুল
উফ আবার আসতে হলো!
মনিরাআপুর একটা লেখা আছে নজরুলকে নিয়ে সেটা এ যাবৎ সামুএর নজরুলকে নিয়ে লেখা সর্বশ্রেষ্ঠ লেখা। কাল লিন্ক দিয়ে যাবো। টাটা বাই
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ওকে টাটা বাই, কাল আবার দেখা হচ্ছে।
৫৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩০
এম মশিউর বলেছেন: পোস্টের মত পোস্টের মন্তব্যগুলোও বেশ ভালো লেগেছে।।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
পোস্টের চেয়ে পোস্টের মন্তব্যগুলো আরও অনেক অনেক অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী।
৫৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৩
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @ কান্ডারী
ধন্যবাদ দেয়ার কি আছে আবজাব আউল ফাউল কোন এক ব্লগার কোন একসময়ে ভুলে নজরুলের দু'টো গান কম্পোজ করে পোস্ট করেছিল
@ শ্যামা আই থিংক ইউ গট ইট!!
নাইট!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ইয়ে মানে ভাই ধন্যবাদ দেয়া জরুরী বলে মনে করেছি তাই দিলাম
ওকে আপনি বললে ধন্যবাদ উঠিয়ে নিচ্ছি
৫৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৮
রাইসুল নয়ন বলেছেন:
একজন রমণী শত-সহস্র কবিতার জননী!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এই যেমন এটাও কিন্তু একটি কবিতা হয়ে গেলো
৫৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪০
শান্তির দেবদূত বলেছেন: @শায়মা
হা হা হা, আরে সে তো এত কঠিন কঠিন ভাষা, শব্দ কিছুই বুঝে না; প্রতিটি বাক্য আবার ব্যাখ্যা করতে হয়েছে তো!
ঝড় তো আমার উপর দিয়ে গেছে !! হা হা হা
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
৫৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৩
শান্তির দেবদূত বলেছেন: @শায়মা
আপনার ভাবী না তো! আমি আবৃত্তি করে তাকে শুনিয়েছিলাম, তারপরের দিন প্রপোজ
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
তাহলে ভাই বিয়ে করছেন কবে ?
৬০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৮
লেখোয়াড় বলেছেন:
@ শায়মা অরফে শ্যামা আপনার জন্য কিছুটা নষ্টনীড়...................
নষ্টনীড়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রথম পরিচ্ছেদ
ভূপতির কাজ করিবার কোনো দরকার ছিল না। তাঁহার টাকা যথেষ্ট ছিল, এবং দেশটাও গরম। কিন্তু গ্রহবশত তিনি কাজের লোক হইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। এইজন্য তাঁহাকে একটা ইংরেজি খবরের কাগজ বাহির করিতে হইল। ইহার পরে সময়ের দীর্ঘতার জন্য তাঁহাকে আর বিলাপ করিতে হয় নাই।
ছেলেবেলা হইতে তাঁর ইংরেজি লিখিবার এবং বক্তৃতা দিবার শখ ছিল। কোনোপ্রকার প্রয়োজন না থাকিলেও ইংরেজি খবরের কাগজে তিনি চিঠি লিখিতেন, এবং বক্তব্য না থাকিলেও সভাস্থলে দু-কথা না বলিয়া ছাড়িতেন না।
তাঁহার মতো ধনী লোককে দলে পাইবার জন্য রাষ্ট্রনৈতিক দলপতিরা অজস্র স্তুতিবাদ করাতে নিজের ইংরেজি রচনাশক্তি সম্বন্ধে তাঁহার ধারণা যথেষ্ট পরিপুষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল।
অবশেষে তাঁহার উকিল শ্যালক উমাপতি ওকালতি ব্যবসায়ে হতোদ্যম হইয়া ভগিনীপতিকে কহিল, ‘ভূপতি, তুমি একটা ইংরেজি খবরের কাগজ বাহির করো। তোমার যে রকম অসাধারণ’ ইত্যাদি।
ভূপতি উৎসাহিত হইয়া উঠিল। পরের কাগজে পত্র প্রকাশ করিয়া গৌরব নাই, নিজের কাগজে স্বাধীন কলমটাকে পুরাদমে ছুটাইতে পারিবে। শ্যালককে সহকারী করিয়া নিতান্ত অল্প বয়সেই ভূপতি সম্পাদকের গদিতে আরোহণ করিল।
অল্প বয়সে সম্পাদকি নেশা এবং রাজনৈতিক নেশা অত্যন্ত জোর করিয়া ধরে। ভূপতিকে মাতাইয়া তুলিবার লোকও ছিল অনেক।
এইরূপে সে যতদিন কাগজ লইয়া ভোর হইয়া ছিল ততদিনে তাহার বালিকা বধূ চারুলতা ধীরে ধীরে যৌবনে পর্দাপণ করিল। খবরের কাগজের সম্পাদক এই মস্ত খবরটি ভালো করিয়া টের পাইল না। ভারত গবর্মেন্টের সীমান্তনীতি ক্রমশই স্ফীত হইয়া সংযমের বন্ধন বিদীর্ণ করিবার দিকে যাইতেছে, ইহাই তাহার প্রধান লক্ষের বিষয় ছিল।
ধনীগৃহে চারুলতার কোনো কর্ম ছিল না। ফলপরিণামহীন ফুলের মতো পরিপূর্ণ অনাবশ্যকতার মধ্যে পরিস্ফুট হইয়া উঠাই তাহার চেষ্টাশূন্য দীর্ঘ দিনরাত্রির একমাত্র কাজ ছিল। তাহার কোনো অভাব ছিল না।
এমন অবস্থার সুযোগ পাইলে বধূ স্বামীকে লইয়া অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করিয়া থাকে, দাম্পত্যলীলার সীমান্তনীতি সংসারের সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করিয়া সময় হইতে অসময়ে এবং বিহিত হইতে অবিহিতে গিয়া উত্তীর্ণ হয়। চারুলতার সে সুযোগ ছিল না। কাগজের আবরণ ভেদ করিয়া স্বামীকে অধিকার করা তাহার পক্ষে দুরূহ হইয়াছিল।
যুবতী স্ত্রীর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া কোনো আত্মীয়া তাহাকে ভর্ৎসনা করিলে ভূপতি একবার সচেতন হইয়া কহিল, “তাই তো, চারুর একজন কেউ সঙ্গিনী থাকা উচিত, ও বেচারার কিছুই করিবার নাই।”
শ্যালক উমাপতিকে কহিল, “তোমার স্ত্রীকে আমাদের এখানে আনিয়া রাখো-না–– সমবয়সি স্ত্রীলোক কেহ কাছে নাই, চারুর নিশ্চয়ই ভারি ফাঁকা ঠেকে।”
স্ত্রীসঙ্গের অভাবই চারুর পক্ষে অত্যন্ত শোকাবহ, সম্পাদক এইরূপ বুঝিল এবং শ্যালকজায়া মন্দাকিনীকে বাড়িতে আনিয়া সে নিশ্চিন্ত হইল।
যে সময়ে স্বামী স্ত্রী প্রেমোন্মেষের প্রথম অরুণালোকে পরস্পরের কাছে অপরূপ মহিমায় চিরনূতন বলিয়া প্রতিভাত দাম্পত্যের সেই স্বর্ণপ্রভামণ্ডিত প্রত্যুষকাল অচেতন অবস্থায় কখন অতীত হইয়া গেল কেহ জানিতে পারিল না। নূতনত্বের স্বাদ না পাইয়াই উভয়ে উভয়ের কাছে পুরাতন পরিচিত অভ্যস্ত হইয়া গেল।
লেখাপড়ার দিকে চারুলতার একটা স্বাভাবিক ঝোঁক ছিল বলিয়া তাহার দিনগুলা অত্যন্ত বোঝা হইয়া উঠে নাই। সে নিজের চেষ্টায় নানা কৌশলে পড়িবার বন্দোবস্ত করিয়া লইয়াছিল। ভূপতির পিসতুতো ভাই অমল থার্ড-ইয়ারে পড়িতেছিল, চারুলতা তাহাকে ধরিয়া পড়া করিয়া লইত; এই কর্মটুকু আদায় করিয়া লইবার জন্য অমলের অনেক আবদার তাহাকে সহ্য করিতে হইত। তাহাকে প্রায়ই হোটেলে খাইবার খোরাকি এবং ইংরেজি সাহিত্যগ্রন্থ কিনিবার খরচা জোগাইতে হইত। অমল মাঝে মাঝে বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করিয়া খাওয়াইত, সেই যজ্ঞ-সমাধার ভার গুরুদক্ষিণার স্বরূপ চারুলতা নিজে গ্রহণ করিত। ভূপতি চারুলতার প্রতি কোনো দাবি করিত না, কিন্তু সামান্য একটু পড়াইয়া পিসতুতো ভাই অমলের দাবির অন্ত ছিল না। তাহা লইয়া চারুলতা প্রায় মাঝে মাঝে কৃত্রিম কোপ এবং বিদ্রোহ প্রকাশ করিত; কিন্তু কোনো একটা লোকের কোনো কাজে আসা এবং স্নেহের উপদ্রব সহ্য করা তাহার পক্ষে অত্যাবশ্যক হইয়া উঠিয়াছিল।
অমল কহিল, “বোঠান, আমাদের কলেজের রাজবাড়ির জামাইবাবু রাজঅন্তঃপুরের খাস হাতের বুননি কার্পেটের জুতো পরে আসে, আমার তো সহ্য হয় না–– একজোড়া কার্পেটের জুতো চাই, নইলে কোনোমতেই পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারছি নে।”
চারু। হাঁ, তাই বৈকি! আমি বসে বসে তোমার জুতো সেলাই করে মরি। দাম দিচ্ছি, বাজার থেকে কিনে আনো গে যাও।
অমল বলিল, “সেটি হচ্ছে না।”
চারু জুতা সেলাই করিতে জানে না, এবং অমলের কাছে সে কথা স্বীকার করিতেও চাহে না। কিন্তু তাহার কাছে কেহ কিছু চায় না, অমল চায়–– সংসারে সেই একমাত্র প্রার্থীর প্রার্থনা রক্ষা না করিয়া সে থাকিতে পারে না। অমল যে সময় কালেজে যাইত সেই সময়ে সে লুকাইয়া বহু যত্নে কার্পেটের সেলাই শিখিতে লাগিল। এবং অমল নিজে যখন তাহার জুতার দরবার সম্পূর্ণ ভুলিয়া বসিয়াছে এমন সময় একদিন সন্ধ্যাবেলায় চারু তাহাকে নিমন্ত্রণ করিল।
গ্রীষ্মের সময় ছাদের উপর আসন করিয়া অমলের আহারের জায়গা করা হইয়াছে। বালি উড়িয়া পড়িবার ভয়ে পিতলের ঢাকনায় থালা ঢাকা রহিয়াছে। অমল কালেজের বেশ পরিত্যাগ করিয়া মুখ ধুইয়া ফিট্ফাট্ হইয়া আসিয়া উপস্থিত হইল।
অমল আসনে বসিয়া ঢাকা খুলিল; দেখিল, থালায় একজোড়া নূতন-বাঁধানো পশমের জুতা সাজানো রহিয়াছে। চারুলতা উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল।
জুতা পাইয়া অমলের আশা আরো বাড়িয়া উঠিল। এখন গলাবন্ধ চাই, রেশমের রুমালে ফুলকাটা পাড় সেলাই করিয়া দিতে হইবে, তাহার বাহিরের ঘরে বসিবার বড়ো কেদারায় তেলের দাগ নিবারণের জন্য একটা কাজ-করা আবরণ আবশ্যক।
প্রত্যেক বারেই চারুলতা আপত্তি প্রকাশ করিয়া কলহ করে এবং প্রত্যেক বারেই বহু যত্নে ও স্নেহে শৌখিন অমলের শখ মিটাইয়া দেয়। অমল মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করে, “বউঠান, কতদূর হইল।”
চারুলতা মিথ্যা করিয়া বলে, “কিছুই হয় নি।” কখনো বলে, “সে আমার মনেই ছিল না।”
কিন্তু অমল ছাড়িবার পাত্র নয়। প্রতিদিন স্মরণ করাইয়া দেয় এবং আবদার করে। নাছোড়বান্দা অমলের সেই-সকল উপদ্রব উদ্রেক করাইয়া দিবার জন্যই চারু ঔদাসীন্য প্রকাশ করিয়া বিরোধের সৃষ্টি করে এবং হঠাৎ একদিন তাহার প্রার্থনা পূরণ করিয়া দিয়া কৌতুক দেখে।
ধনীর সংসারে চারুকে আর কাহারও জন্য কিছু করিতে হয় না, কেবল অমল তাহাকে কাজ না করাইয়া ছাড়ে না। এ-সকল ছোটোখাটো শখের খাটুনিতেই তাহার হৃদয়বৃত্তির চর্চা এবং চরিতার্থতা হইত।
ভূপতির অন্তঃপুরে যে একখণ্ড জমি পড়িয়া ছিল তাহাকে বাগান বলিলে অনেকটা অত্যুক্তি করা হয়। সেই বাগানের প্রধান বনস্পতি ছিল একটা বিলাতি আমড়া গাছ।
এই ভূখণ্ডের উন্নতিসাধনের জন্য চারু এবং অমলের মধ্যে কমিটি বসিয়াছে। উভয়ে মিলিয়া কিছুদিন হইতে ছবি আঁকিয়া, প্লান করিয়া, মহা উৎসাহে এই জমিটার উপরে একটা বাগানের কল্পনা ফলাও করিয়া তুলিয়াছে।
অমল বলিল, “বউঠান, আমাদের এই বাগানে সেকালের রাজকন্যার মতো তোমাকে নিজের হাতে গাছে জল দিতে হবে।”
চারু কহিল, “আর ঐ পশ্চিমের কোনটাতে একটা কুঁড়ে তৈরি করে নিতে হবে, হরিণের বাচ্ছা থাকবে।”
অমল কহিল, “আর-একটি ছোটোখাটো ঝিলের মতো করতে হবে, তাতে হাঁস চরবে।”
চারু সে প্রস্তাবে উৎসাহিত হইয়া কহিল, “আর তাতে নীলপদ্ম দেব, আমার অনেকদিন থেকে নীলপদ্ম দেখবার সাধ আছে।”
অমল কহিল, “সেই ঝিলের উপর একটি সাঁকো বেঁধে দেওয়া যাবে, আর ঘাটে একটি বেশ ছোটো ডিঙি থাকবে।”
চারু কহিল, “ঘাট অবশ্য সাদা মার্বেলের হবে।”
অমল পেনসিল কাগজ লইয়া রুল কাটিয়া কম্পাস ধরিয়া মহা আড়ম্বরে বাগানের একটা ম্যাপ আঁকিল।
উভয়ে মিলিয়া দিনে দিনে কল্পনার-সংশোধন পরিবর্তন করিতে করিতে বিশ-পঁচিশখানা নূতন ম্যাপ আঁকা হইল।
ম্যাপ খাড়া হইলে কত খরচ হইতে পারে তাহার একটা এস্টিমেট তৈরি হইতে লাগিল। প্রথমে সংকল্প ছিল–– চারু নিজের বরাদ্দ মাসহারা হইতে ক্রমে ক্রমে বাগান তৈরি করিয়া তুলিবে; ভূপতি তো বাড়িতে কোথায় কী হইতেছে তাহা চাহিয়া দেখে না; বাগান তৈরি হইলে তাহাকে সেখানে নিমন্ত্রণ করিয়া আশ্চর্য করিয়া দিবে; সে মনে করিবে, আলাদিনের প্রদীপের সাহায্যে জাপান দেশ হইতে একটা আস্ত বাগান তুলিয়া আনা হইয়াছে।
কিন্তু এস্টিমেট যথেষ্ট কম করিয়া ধরিলেও চারুর সংগতিতে কুলায় না। অমল তখন পুনরায় ম্যাপ পরিবর্তন করিতে বসিল। কহিল, “তা হলে বউঠান, ঐ ঝিলটা বাদ দেওয়া যাক।”
চারু কহিল, “না না, ঝিল বাদ দিলে কিছুতেই চলিবে না, ওতে আমার নীলপদ্ম থাকবে।”
অমল কহিল, “তোমার হরিণের ঘরে টালির ছাদ নাই দিলে। ওটা অমনি একটা সাদাসিধে খোড়ো চাল করলেই হবে।”
চারু অত্যন্ত রাগ করিয়া কহিল, “তা হলে আমার ও ঘরে দরকার নেই–– ও থাক্।”
মরিশস হইতে লবঙ্গ, কর্নাট হইতে চন্দন, এবং সিংহল হইতে দারচিনির চারা আনাইবার প্রস্তাব ছিল, অমল তাহার পরিবর্তে মানিকতলা হইতে সাধারণ দিশি ও বিলাতি গাছের নাম করিতেই চারু মুখ ভার করিয়া বসিল; কহিল, “তা হলে আমার বাগানে কাজ নেই।”
এস্টিমেট কমাইবার এরূপ প্রথা নয়। এস্টিমেটের সঙ্গে সঙ্গে কল্পনাকে খর্ব করা চারুর পক্ষে অসাধ্য এবং অমল মুখে যাহাই বলুক, মনে মনে তাহারও সেটা রুচিকর নয়।
অমল কহিল, “তবে বউঠান, তুমি দাদার কাছে বাগানের কথাটা পাড়ো; তিনি নিশ্চয় টাকা দেবেন।”
চারু কহিল, “না, তাঁকে বললে মজা কী হল। আমরা দুজনে বাগান তৈরি করে তুলব। তিনি তো সাহেববাড়িতে ফরমাশ দিয়ে ইডেন গার্ডেন বানিয়ে দিতে পারেন–– তা হলে আমাদের প্ল্যানের কী হবে।”
আমড়া গাছের ছায়ায় বসিয়া চারু এবং অমল অসাধ্য সংকল্পের কল্পনাসুখ বিস্তার করিতেছিল। চারুর ভাজ মন্দা দোতলা হইতে ডাকিয়া কহিল, “এত বেলায় বাগানে তোরা কী করছিস।”
চারু কহিল, “পাকা আমড়া খুঁজছি।”
...........................................................
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
লেখোয়াড় ভাই দুর্দান্ত মন্তব্য প্রিয়তে নিলাম।
৬১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৭
শান্তির দেবদূত বলেছেন: হা হা হা, বিয়ে করেছি যখন বিয়ের বয়স হয়েছিল, হা হা হা।
সে এক অস্থির সময় ভাই অনেক ঝড় ঝাপটার পরে শশুরমাশায় আর বাপজান মিলে ঘাড়ে ধরে বিয়ের পিড়িতে বসিয়ে দিয়েছে :#> :#>
সে এক অন্য ইতিহাস, অন্য গল্প ভাই
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
তাহলেত সেই ইতিহাস একদিন সময় করে শুনতেই হয়। অপেক্ষায় রইলাম।
৬২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৬
সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: ওরে ! এতো কথা হয়ে গেছে ! অনেক কিছু জানা হলো !
ওই আমারে কে কবিতা দেবে ? জীবনানন্দ বেঁচে থাকলে বনলতা সেন রে পাত্তা দিতো নাকি ! হুহ :!> ! সব আমারে নিয়েই লিখত :!> । আহারে ! কথা নাই বার্তা নাই হুট করে মরে গেলো ! এখন আমারে নিয়ে কেউ কবিতা লেখে না ।
:-<
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
:-< :-< :-<
৬৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এমন পোস্ট (এবং দারুণ কমেন্টগুলো) সময় নিয়ে পড়তে হয়।
ভালো করে পড়ে তারপর ভালো করে মন্তব্য করার আশা রাখি। সুন্দর পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ, কাণ্ডারি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু অপেক্ষায় রইলাম আপনার সুন্দর একটি মন্তব্যের আশায়।
৬৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:০৭
ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:
কোথায় গিয়েছে আজ সেইসব পাখি, – আর সেইসব ঘোড়া -
সেই শাদা দালানের নারী ?
বাবলা ফুলের গন্ধে, সোনালি রোদের রঙে ওড়া
সেইসব পাখি, আর সেইসব ঘোড়া
চ’লে গেছে আমাদের এ – পৃথিবী ছেড়ে;
হৃদয়, কোথায় বলো – কোথায় গিয়েছে আর সব !
অন্ধকারঃ মৃত নাসপাতিটির মতন নীরব
[কোথায় গিয়েছে-জীবনানন্দ দাশ]
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সেইখানে যুথচারী কয়েকটি নারী
ঘনিষ্ঠ চাঁদের নিচে চোখ আর চুলের সংকেতে
মেধাবিনী–দেশ আর বিদেশের পুরুষেরা
যুদ্ধ আর বাণিজ্যের রক্তে আর উঠিবে না মেতে।
প্রগাঢ় চুম্বন ক্রমে টানিতেছে তাহাদের
তুলোর বালিশে মাথা রেখে আর মানবীয় ঘুমে
স্বাদ নেই–এই নিচু পৃথিবীর মাঠের তরঙ্গ দিয়ে
ওই চূর্ণ ভূখণ্ডের বাতাসে–বরুণে
(গোধূলিসন্ধির নৃত্য)
৬৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:১৪
ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:
সম্ভবত, বনলতা সেন ছিলেন জীবনানন্দ দাশের চাচাত বোন শোভনা-প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরা পালক’ কবি তাকেই উৎসর্গ করেছিলেন । কঠিন সময় গুলোতে কবির কবিতার মুগ্ধ পাঠিকা ছিলেন শোভনা ।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এও হতে পারে। কবির সৃষ্টি আমাদের মত সাধারণ পাঠকের ধারনার ঊর্ধ।
ধন্যবাদ সুন্দর একটি তথ্যের জন্য।
৬৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:৩২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কৃষ্ণকলি /গুরুদেব শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের ‘পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে
ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,
শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে
কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই।
আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু
শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
পূবে বাতাস এল হঠাত্ ধেয়ে,
ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ।
আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা,
মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ।
আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে,
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
এমনি করে কাজল কালো মেঘ
জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ়মাসে নামে তমাল-বনে।
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাত্ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
আর যা বলে বলুক অন্য লোক।
দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস,
লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়ো নাকে তুমি,
বোলো নাকো কথা অই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা:
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;
ফিরে এসো এই মাঠে ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে–আরো দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়ো নাকে আর।
কী কথা তাহার সাথে?–তার সাথে!
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ:
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।
সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয় আজ ঘাস:
বাতাসের ওপারে বাতাস–
আকাশের ওপারে আকাশ।
৬৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
লাবনী আক্তার বলেছেন: নারীর অঙ্গ-পরশ লভিয়া হ’য়েছে অলঙ্কার।
নারীর বিরহে, নারীর মিলনে, নর পেল কবি-প্রাণ,
যত কথা তার হইল কবিতা, শব্দ হইল গান।
নর দিল ক্ষুধা, নারী দিল সুধা, সুধায় ক্ষুধায় মিলে’
জন্ম লভিছে মহামানবের মহাশিশু তিলে তিলে!
জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান,
মাতা ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান্।
কোন্ রণে কত খুন দিল নর লেখা আছে ইতিহাসে,
কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে।
কত মাতা দিল হৃদয় উপড়ি’ কত বোন দিল সেবা,
বীরের স্মৃতি-স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
কোনো কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।
রাজা করিতেছে রাজ্য-শাসন, রাজারে শাসিছে রাণী,
রাণীর দরদে ধুইয়া গিয়াছে রাজ্যের যত গ্লানি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
তারপর একদিন উজ্জ্বল মৃত্যুর দূত এসে
কহিবে: তোমারে চাই-তোমারেই, নারী;
এই সব সোনা রুপা মসলিন যুবাদের ছাড়ি
চলে যেতে হবে দূর আবিষ্কারে ভেসে।
বলিলাম; শুনিল সে: তুমি তবু মৃত্যুর দূর নও-তুমি-’
নগর-বন্দরে ঢের খুঁজিয়াছি আমি;
তারপর তোমার এ জানালায় থামি
ধোঁয়া সব; তুমি যেন মরীচিকা-আমি মরুভূমি-’
শীতের বাতাস নাকে চলে গেল জানালার দিকে,
পড়িল আধেক শাল বুক থেকে খসে;
সুন্দর জন্তুর মতো তার দেহকোষে
রক্ত শুধু? দেহ শুধু? শুধু হরিণীকে
৬৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১২
নেক্সাস বলেছেন: সুন্দর আর্টিকেল।
আমি বনলতা সেনের ব্যাপারে ফাহাদ ভাইয়ের সাথে কিছুটা একমত।
জীবনানন্দ ছিলেন ইতিহাস ও ইতিহ্য সচেতন কবি। তার কবিতায় উঠে আসতো সারা বিশ্বের নানা সমৃদ্ধ ইতিহাস। আর চাচাত বোন শোভনা ছিলেন এসবের গুনমুগ্ধ পাঠক এবং কঠিন সময়ে কবির মানসিক আশ্রয়।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ নেক্সাস ভাই । বনলতা সেন এমন এক সৃষ্টি যাকে নিয়ে রয়েছে অনেক দ্বিধা দন্দ যেমন রয়েছে ভিঞ্চির আঁকা মোনালিসা নিয়ে।
৬৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭
অচিন্ত্য বলেছেন: অসাধারণ !
জীবনান্দ দাশের ছায়া দারুণ এক খোশগল্পের সূচনা করলেন। পোস্ট এখানে এসে একেবারে আড্ডার মেজাজ পেল। এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে যা বললেন, ওহ আমি অনেক কিছু জানলাম। অশেষ কৃতজ্ঞতা। সাবরিনা সিরাজী তিতির উনাদের সময় আমাদের জন্ম হয় নি বলে আফসোস করেছেন। সত্যিই। উনাদের সময় আমাদের জন্ম হলে কী হত জানি না, তবে আমাদের সময় উনারা থাকলে ব্লগে উনাদের লেখা থাকত এটা নিশ্চিত। আর উনাদের ফোনের প্রতিটি ম্যাসেজ হত একেকটি অণুকবিতা।
আমি যখন এই তিন মহারথীর যাত্রায় সঙ্গী হবার চেষ্টা করি, চাকার দোলায় সুখ পাওয়ার আশায় তাদের ঘূর্ণাবর্তে শুধু মুগ্ধই হই। মনে হয় জীবনের সহজ সমীকরণের সাথে বিশ্ববিধানের যেন সহজ যোগাযোগ নেই। তা না হলে যে অশ্রু তারার মত জ্বলে তা কেন খোপায় ফুল হয়ে ফুটবে; অভাবের অভাবে ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে নিঃসীম আকাশে কেন ওড়বে নগরক্লিষ্ট চিল; আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের উন্মাদনাই কেন হয়ে উঠবে কাব্যিক বেদনার সুর; লাশকাটা ঘরে আচমকাই কেন জীবনের চাওয়া পাওয়ার হিসাব মেলার আগেই সহজে নেমে আসবে ঊদার বৈরাগ্যময় বিশাল বিশ্রাম
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
উনাদের সময় জন্ম নিলে হয়ত এতটা অনুরাগী পাঠক আমরা হতে পারতাম না।
বিংশ শতাব্দীর আধুনিক বাংলার অন্যতম প্রধান কবি জীবানানন্দ দাশের ৫৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি রইল এবং কবির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি কবিতার কিছু অংশ তুলে ধরছি;
অনেক সময় পাড়ি দিয়ে আমি অবশেষে কোন এক বলয়িত পথে
মানুষের হৃদয়ের প্রীতির মতন এক বিভা
দেখেছি রাত্রির রঙে বিভাসিত হয়ে থেকে আপনার প্রাণের প্রতিভা
বিচ্ছুরিত ক'রে দেয় সঙ্গীতের মত কণ্ঠস্বরে!
হৃদয়ে নিমীল হয়ে অনুধ্যান করে
ময়দানবের দ্বীপ ভেঙে ফেলে স্বভাবসূর্যের গরিমাকে।
চিন্তার তরঙ্গ তুলে যখন তাহাকে
ডেকে যায় আমাদের রাত্রির উপরে -
পঙ্কিল ইঙ্গিত এক ভেসে ওঠে নেপথ্যের অন্ধকারে: আরো ভুত
আধেক মানব
আধেক শরীর - তবু অধিক গভীরতর ভাবে এক শব।
৭০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
এহসান সাবির বলেছেন: অসাধারন পোস্ট। কমেন্টগুলো এসেছে চমৎকার। ++++++++++++
আমি আরো কিছু লিখতে চাই। পরে এসে লিখে যাবো।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই, আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
৭১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭
আশিক মাসুম বলেছেন: সোজা প্রিয়তে।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
মাসুম ধন্যবাদ ভাই। আছো কেমন ?
৭২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮
সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
দারুন পোষ্টটি প্রিয়তে নিলাম।
গুড জব কান্ডারী ভাই!!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমরা মৃত্যুর থেকে জেগে উঠে দেখি
চারিদিকে ছায়া ভরা ভিড়
কুলোর বাতাসে উড়ে খুদের মতন
পেয়ে যায়-- পেয়ে যায়-- অণুপরমাণুর শরীর।
আপনার মন্তব্য সবসময় ভালো কিছু করার তাগিদ দেয়।
৭৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০
শায়মা বলেছেন: Click This Link
তানিমভাইয়ার পোস্ট...........
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
লিংকটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আর আমার কৃতজ্ঞতা জানবেন আপু। জীবনের প্রতিটি চলার পথ হোক আনন্দময় শুভ কামনা রইল আপু।
৭৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের সব নারী বা প্রেমিকা আসলে নারী বা প্রেমিকা নয়- আমাদের খালি চোখে কেবল তারা নারী বা প্রেমিকা। রবীন্দ্রনাথের ‘জীবনদেবতা’ বা ‘জীবনদেবী’ই হলেন নারী বা প্রেমিকার প্রকৃত সত্তা। অর্থাৎ, রবীন্দ্রনাথ কবিতায় নারী বা প্রেমিকাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রূপক হিসাবে ব্যবহার করেছেন।
কিছু বিদ্রোহী বা বিপ্লবী কবিতা বাদে নজরুলের সব কবিতাই নারী বা প্রেমিকাকে নিয়ে। এতএব, নজরুলের নারী বলতে তাঁর সমগ্র কবিতাকেই বোঝায়। এখানে নারী বা প্রেমিকাকে রবীন্দ্রনাথের মতো রূপক হিসাবে কখনো ব্যবহার করেন নি- নারী তাঁর কাছে নারীই- জননী, জায়া। জীবনানন্দ দাশও নারীদেরকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রেমিকা বা নারী হিসাবেই দেখেছেন। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দার্শনিক তত্ত্ব।
শরৎচন্দ্রের ‘নারী’দেরও এ পোস্টে যোগ করা যেত। নারীদেরকে সাহিত্যে খুব গভীরভাবে ও বাস্তবতার নিরিখে উপস্থাপিত করেছেন শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়- যা রবীন্দ্রনাথের ভাবনাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
খুব সংক্ষিপ্তভাবে তিন কবির কবিতায় নারীদের উপস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে। পোস্ট খুব ভালো লাগলো।
শুভেচ্ছা।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আসলে ভাই আমিত সমালোচক নই তাই আমার কাছে ভালো লাগার কিছু কবিতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র তাই অনেকটা সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে হয়ত আরও বিশদ বর্ণনা হতে পারত বা করতে গেলে অনেকগুলো পোস্ট দেয়া যাবে। তবে আপনি আপনার মন্তব্যে অল্প কথায় খুব সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দারুণ লাগলো। আর শরৎচন্দ্রের ভাবনাগুলো অতুলনীয় কিন্তু যেহেতু শুধু কবিতায় থাকতে চেয়েছি তাই উপন্যাসে যাওয়া হয়নি।
কৃতজ্ঞতা জানবেন। শুভকামনা রইল।
৭৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩০
একজন আরমান বলেছেন:
ব্যাপক পোস্ট দেখছি !
প্রিয়তে না নিয়ে উপায় আছে?
ইয়ে আমাদের কবি কান্ডারীর কবিতায়ও নারী !
তুমি অনবদ্য, অবরুদ্ধ আমার অপ্সরা শিশির;
আমি হলফ করে বলতে পারি,
যে কেউ করবে তোমার চরণে মাথা ঠোকার জিকির।
রাজকুমারী বসে আছো তুমি পরে নীল শাড়ি,
যেন স্বর্গের আকাশে ডুবেছে সূর্য আমার হৃদয়ের সন্ধ্যা হয়ে;
আমি পুজো দেব, মাল্য দেব তোমার চরণে,
ও আমার ভাগ্যদেবী !!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
পোস্ট প্রিয়তে নিয়ে আমাকে লজ্জায় ফেলেছিস। কিন্তু এই কান্ডারী নামক কবিটাকে চিনলাম নাত উনি আবার কোন কবি ?
যাই হোক এইটা কি কোন কবিতার পর্যায়ে পরে নাকি ? ছাই পাস লিখলেই কি কবি হওয়া যায় নাকি রে ?
৭৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০১
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @ধুলোবালিছাই
জীবনানন্দের কাব্যে নারী সরলরৈখিক রমনী বা প্রেমিকা নয়। এর চেয়ে ঢের গভীরে তার নারী (প্রকান্তরে প্রেম ভাবনা)। আজকের এই লেখায় ইমন জুবায়েরকে খুব মিস করছি। উনি হয়ত অনেক তথ্য দিতে পারতেন এ বিষয়ে যা আমরা কেউ পারবোনা।
আপনি যে বলেছেন "দার্শনিক" এই দর্শনগত প্রেক্ষাপট থেকেই জীবন বাবুর কবিতায় নারীর রূপায়ন মূখ্য। কেন? জীবন বাবুর কবিতায় নারী সবসময়ই এক রহস্যের আধার। আক্ষরিক অর্থেই নারী রহস্যময়। তবু সেই রহস্যময়তাকে বাস্তব করে তুলে পাঠককে জীবনঘনিষ্ঠ এক নারী রূপ দিতে সচেষ্ট ছিলেন তিনি সব সময়। তার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ সম্ভবত তার নারীরা শুধু একনামে নয় পদবীতে (বনলতা সেন, শেফালিকা বোস), ভৌগলিক পরিচয় (নাটোরের বনলতা সেন)। এর ফলে পাঠক মাত্রের মনে হবে এই নারী বাস্তব, বুঝি সে বর্তমান ছিল কোন এক অতীতে তার যার নাম ছিল, ঘর ছিল, কে জানে কবির সাথে প্রণয়ও বুঝি ছিল! আসলে কী বিষয়টা এত সহজ সরল?
নারী জীবন বাবুর কাছে নিছক নারী নয়, প্রেম নিছক প্রেম নয়। নারী তাঁর কাছে পুরুষের আশ্রয় একজন নিছক শরীর সর্বস্ব নারী হিসেবে-
"একদিন এসেছিলে
দিয়েছিলে এক রাত্রি দিতে পারো যত"
অথবা
"তোমার শরীর,
তাই নিয়ে এসেছিলে একবার-"
অথবা আরো নগ্নভাবে তিনি যখন বলেন-
"আমারে চাওনা তুমি আজ আর, জানি;
তোমার শরীর ছানি..."
নগ্নভাবে বললাম "ছানি" শব্দটার ব্যবহারের কারণে। কবিতায় এমন শব্দের ব্যবহারে পাঠকের মনে হতে পারে নারী জীবনানন্দের কাছে বুঝি শুধু শরীর সর্বস্ব দৈহিক এক রূপ।
কিন্তু তিনিই তাঁর কবিতায় নারীকে তুলে ধরেন নারীত্বের গন্ডির বাইরে, পুরুষের আশ্রয়ে-
"সব পাখি ঘরে আসে সব নদী ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।"
নারী আবার তাঁর কবিতায় প্রকৃতির প্রতিরুপ-
"পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে
............................................................
পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দু'জনার মনে
আকাশ ছড়ায়ে আছে শান্তি হয়ে আকাশে আকাশে"
প্রেম/নারী আবার তাঁর কাছে শক্তির উৎসরূপ যা মানুষের তাত্ত্বিক জ্ঞান, ধর্মিয় বিশ্বাস, টিকে থাকার বা অস্তিত্ব রক্ষার প্রেরণা-
"মানুষ কাউকে চায়- তার সেই নিহত উজ্জল
ঈশ্বরের পরিবর্তে অন্য কোন সাধনার ফল।"
"যে জিনিস বেঁচে আছে হৃদয়ের গভীর গহ্বরে-
নক্ষত্রের চেয়ে আরো নিঃশব্দ আসনে
কোন এক মানুষের তরে এক মানুষীর মনে।"
"তোমার সৌন্দর্য নারী অতীতের দানের মতন।
অতীত কী দিয়েছে কি দান করেছে মানুষকে? জ্ঞান। আর তাই জীবন বাবুর কবিতায় নারীর অবস্থান ঠিক কোথায় দেখুন। শুধু শরীর "ছেনে" "হাতরে" দেখার জন্য কোন কোন দেহ নয়, শুধু ইন্দ্রিয় সুখের ভোগ্য বস্তু নয়, শুধু নারী নয়, নারীই তাঁর কাছে যেন হাজার বছরের সব নিয়ে এক পৃথিবী!!
আর তাই সম্ভবত নারী কবির কাছে চিরকালীন, ধ্বংসহীনঃ "কতবার বর্তমান হয়ে গেছে ব্যথিত অতীত, তবুও তোমার বুকে লাগে নাই শীত, যে নক্ষত্র ঝরে যায় তার।"
এবং অমিত সম্ভাবনার নাম-
আজকের জীবনের এ টুকরো টুকরো মৃত্যু আর থাকতোনা
থাকতোনা আজকের জীবনের টুকরো টুকরো সাধের ব্যর্ধতা ও অন্ধকার
আমি যদি বনহংস হতাম
বনহংসী হতে যদি তুমি
মন্তব্যটি বিভিন্ন সময়ে পড়া জীবন বাবুর কবিতায় নারী ও প্রেম নিয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাই মন্তব্য যদি প্রিয়তে নিয়ে রাখার অপশন থাকতো এই মন্তব্যটি প্রিয়তে নিয়ে রাখতাম। অসম্ভব সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য ধন্য হোলাম।
আর এমন একজন মানুষের কথা স্মরন করিয়েদিলেন যিনি অকালেই চলে গিয়ে শূন্য করে দিয়েছেন আমাদেরকে। ইমন ভাই থাকলে সত্যি আমরা আরও অনেক কিছু পেতাম যা এখন অপূর্ণ রয়ে যাচ্ছে।
৭৭| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জীবনানন্দদাশের ছায়া@
মন্তব্যে মুগ্ধতা। আর মুগ্ধ না হয়ে উপায় আছে, যেখানে স্বয়ং জীবনানন্দ দাশ তাঁর ছায়ার ভিতর থেকে কমেন্ট করে গেছেন!
শুভ কামনা।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
জীবননান্দ দাশ নিজেই নিজের কবিতার ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন;
Long I have been a wanderer of this world.
Many a night
My route lay across the sea of Ceylon somewhere winding to
The ocean of Malay.
I was in the dim world of Vimbisar and Asok, and further off
In the mistiness of Vidarbha.
At moments when life was too much a sea of sounds –
I had Banalata Sen of Natore and her wisdom.
I remember her hair dark as nights at Vidisha,
Her face; image of Sravasti; the pilot
Undone in the blue milieu of the sea
Never twice sees the earth of grass before him.
I have also seen her Banalata Sen of Natore.
When day is done, no fall somewhere but of dews
Dips into the dusk; the smell of the sun is gone
Off the kestrel’s wings. Light is your wit now
Fanning fireflies that pitch the wide things around.
For Banalata Sen of Natore.
শুভকামনা ও শুভরাত্রি।
৭৮| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৫
রাজ্জাক রাজ বলেছেন: আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন
খুঁজি তারে আমি আপনার,
আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি
আমারি তিয়াসী বাসনায়।।
আমারই মনের তৃষিত আকাশে
কাঁদে সে চাতক আকুল পিয়াসে,
কভু সে চকোর সুধা-চোর আসে
নিশীথে স্বপনে জোছনায়।।
আমার মনের পিয়াল
তমালে হেরি তারে স্নেহ-মেঘ-শ্যাম,
অশনি-আলোকে হেরি তারে থির-
বিজুলি-উজল অভিরাম।।
আমারই রচিত কাননে বসিয়া
পরানু পিয়ারে মালিকা রচিয়া,
সে মালা সহসা দেখিনু জাগিয়া,
আপনারি গলে দোলে হায়।।
কবিতা খানি কর বলেন তো দেহি?
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপন-পিয়াসী
কাজী নজরুল ইসলাম
পারছি এইবার আমারে পুরস্কার দেন
৭৯| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫০
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @রাজ্জাক
ওটা কাজী সাহেবের লেখা
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
৮০| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৮
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: অনভ্যাসে বিদ্যা নাশ। আজকাল চাইলেও চাইলেও সুন্দর করে মন্তব্য করতে পারছি না। মনের ভেতর হাহাকার তৈরী হচ্ছে। কিছুই ভাল লাগছে না। কি যে করি !
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:০৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
কে বিদেশী মন – উদাসী
বাঁশে বাঁশী বাজাও বনে ।
সুর – সোহাগে তন্দ্রা লাগে
কুসুম বাগের গুল – বদনে ।।
ঝিমিয়ে আসে ভোমোরা – পাখা
যুথির চোখে আবেশ মাখা
কাতর ঘুমে চাদিমা রাকা
দর – দালানে ভোর গগনে ।।
লজ্জাবতীর লুলিত লতায়
শিহর লাগে পুলক ব্যথায় ,
মালিকা সম বঁধুরে জড়ায়
বালকা বধূ সুখ স্বপনে ।।
সহসা জাআগি আধেক রাতে
শুনি সে বাঁশী বাজে হিয়াতে
বাহু – সিথানে কেন কে জানে
কাঁদে গো পিয়া বাশীর সনে ।।
বৃথাই গাথি কথার মালা
লুকাস কবি বুকের জ্বালা
কাঁদে নিরালা বনশীওয়ালা
তোরি উতালা বিরহি মনে ।।
৮১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:১৬
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @কবি ফাহাদ
বনলতা সেন এর বাস্তব অস্তিত্ব নিয়ে এটা একটা তত্ত্ব বটে। তবে সম্ভবত এই তত্ত্বের কিছুটা দূর্বলতা আছে। সনাতন ধর্মে চাচাতো-মামাতো ভাই-বোন বিষয়ক জটিলতা রয়েছে। তবে হতে পারে!
তবে আমার মনে হয় "বনলতা সেন" এর উৎসমূল মারলিন ম্যাডামের বলা বন্ধুত্ব এর সাথেই বেশি যায় (তোমার বলাটাও বন্ধুত্ব অর্থেই হতে পারে)। তবে, সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য তত্ত্ব হচ্ছে "বনলতা সেন" বাস্তব কোন রমনী নয়। তবে মজার বিষয় হচ্ছে দাশ এবং বনলতা সেন এই দু'টি নামের মাঝে কিন্তু আত্মিক একটা যোগ রয়েছে। খেয়াল করো দাশ এবং সেন। সেন বলতে সনাতন ধর্মের একটি বর্ণকে বোঝায়- "বৈদ্য" আবার সেনও কিন্তু তাই!!
যাহোক আরো মজার বিষয় হচ্ছে জীবনবাবুর এক খালার নাম ছিল "স্নেহলতা"! আসলে "লতা" সম্ভবত ঐ সময়ে খুবই কমন নাম ছিল। "বনলতা" নামটিকে তাই অনেকে বলেন একজন সাধারণ রমণীরূপ দেয়ার প্রচেষ্টা যিনি কবির নিজ পরিচয়কেও বহন করে।
এবার আসি আরো মজার বিষয় নিয়ে ১৯২৯ এর শেষের দিকে জীবন বাবু রামযশ নামে দিল্লীর একটি কলেজে ইংরেজী বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু ঐ এলাকাটি ওনার খুব একটা পছন্দ হয়নি। এই সময়টা ছিল সম্ভবত কবির জন্য খুবই যন্ত্রনাদায়ক একটি সময় যার সাক্ষী উনি ছুটি নিয়ে বরিশালে চলে আসেন।
যাহোক জীবন বাবুর এক ছোট ভাই, বন্ধু ছিলেন যার নাম "সুধীর কুমার দত্ত"। এই দত্ত বাবুর সাথে জীবন বাবুর নিয়মিত দেখা হত। দিল্লী এলে দত্ত বাবু রেল স্টেশনে দেখা করেন জীবন বাবুর সাথে। প্রায় ৫ বছর পরে সুধীর কুমার সম্পর্কে একটা মন্তব্য করেছিলেন জীবন বাবু-
"মুখে তার পাখির নীড়ের মত আশ্বাস ও আশ্রয়..."
সুধীর কুমারের মৃত্যু হয় ১৯৩৫ এ। বনলতা সেনের জন্ম (প্রকাশকাল) কত একটু খুঁজে দেখোতো
তবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই দত্ত বাবুই সেই বন্ধু কীনা। বনলতা সেন সব রোমান্টিক মানুষের কাছে, প্রেমিকের কাছে প্রেমিকা, নারী। কিন্তু আমার মনে হয় হয়ত না, সে বন্ধু, সে আশ্রয়!!
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
বনলতা সেন সব রোমান্টিক মানুষের কাছে, প্রেমিকের কাছে প্রেমিকা, নারী। কিন্তু আমার মনে হয় হয়ত না, সে বন্ধু, সে আশ্রয়!!
৮২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৫
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: @লেখক, হা হা হা! পোস্টইতো আপনার! আসলে এমন করে দীর্ঘ সময় নিয়ে অনেকদিন পরে কোন পোস্টে মন্তব্য করছি। আগে এমনটা প্রায়ই হত; পারভেজ আলম বা হাসান মাহবুবের পোস্টে সম্ভবত বেশিরভাগ। ইদানিং গল্প পড়িনা খুব একটা তাই মন্তব্য করা হয়না। সেটা পোস্টে স্বীকার করেও নেই। কিন্তু রবি বাবু, জীবন বাবু আর কাজী সাহেবকে নিয়ে পোস্ট লিখে আপনি বিপদে ফেলে দিলেন আর সেই আগুনে ঘি ঢেলে দিল শ্যামা!!
আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্র নই। তবু নিজের আগ্রহে আর বোনের সংগ্রহশালা থেকে কিছু বই ঘাটাঘাটির অভ্যেস ছিল- তাই অল্প বিস্তর কিছু জানি। বইয়ের সাহায্যও নিতে হয়েছে বৈকি মন্তব্য লিখতে। সবটুকু কৃতিত্ব আপনার আপনি এই সুযোগটা করে দিয়েছেন তাই
@ ধুলোবালিছাই
ভেবেছিলাম আপনি বিপরীতে বুঝি তর্কে যাবেন, সে আর হলোনা আপনার জন্যও শুভকামনা
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাইয়া আমিও বাংলা সাহিত্যের ছাত্র নই যতটুকু জেনেছি বই পড়ে। তবে আপনার মন্তব্যগুলো থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি, শিখতে পেরেছি। এবং এই একটি কারণে হলেও আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আপনাকে ঠিক বোঝাতে পারবোনা যে আমি আপনার মন্তব্য থেকে যা পেয়েছি তা আমার জন্য অনেক। তবে এখন আপনাকে বিপদে পরতে হবে কারণ আপনার কাছ থেকে প্রত্যাশাটা আরও কয়েক গুন বেড়ে গেলো।
৮৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:২২
রাজ্জাক রাজ বলেছেন: পারছি এইবার আমারে পুরস্কার দেন। wait করেন নোবেল কমিটিকে বইলা দিছি পুরুষ্কার আপনার বাসায় পৌছায় দিবো।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
থেঙ্কু সাথে এক কাপ চা পাঠায় দিলে কিন্তু মন্দ হতো না
৮৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:২৩
রাজ্জাক রাজ বলেছেন:
Typed with Panini Keypad
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:১১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অভ্র দিয়ে লেখা
৮৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৭
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: যেই কবিতাটি আমার মন্তব্যের ঘরে উপহার হিসাবে পেলাম। মনের জ্বালা তো আরো বেড়ে গেলো। রাত বাড়ছে জ্বালা জ্বল জ্বল করছে। ভাল থাকবেন।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
তাহলে আর নতুন করে কোন কবিতা দিয়ে আপনার মনের জ্বালা আর বাড়াতে চাইছিনা। তবে ক্ষমা প্রার্থী। ভালো থাকুন জীবনের প্রতিটি সময়।
৮৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯
জুন বলেছেন: শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি
আপন অন্তর হতে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর আর কিছু বলার নেই।
নজরুল মেয়েদের অনেক সন্মান দিয়ে লিখেছেন
আর জীবনানন্দতো কামনা বাসনা নয় এক স্নেহময়ী, কোমলতার প্রতীক যার কোলে মাথা রেখে বলেছিলেন.....
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
কান্ডারী অসাধারন বিশ্লেষন আমার প্রিয় তিন জন কবি নিয়ে।
ভালোলাগা অনেক আর সকালের একরাশ শুভেচ্ছা ।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৫১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আপু সকালের শুভেচ্ছার জন্য প্রতীক্ষায় থাকি কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠে না তখন মনে হয়;
আমরা মৃত্যুর থেকে জেগে উঠে দেখি
চারিদিকে ছায়া ভরা ভিড়
কুলোর বাতাসে উড়ে খুদের মতন
পেয়ে যায়-- পেয়ে যায়-- অণুপরমাণুর শরীর।
৮৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩
তাসজিদ বলেছেন: দারুণ লেখা।
++++++++++++++++++
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ প্রিয় তাসজিদ ভাই।
এতগুলো প্লাসের জন্য কৃতজ্ঞ।
৮৮| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: পোস্ট , মন্তব্য, প্রতি মন্তব্য মিলে পোস্ট টা একটা চমৎকার পোস্ট , প্রিয়তে ।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় অদ্বিতীয়া আমি ।
৮৯| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০০
শ্রাবণ জল বলেছেন: প্রিয়তে
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:১১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভীষণ ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পেয়ে।
৯০| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:১০
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: অসাধারন পোস্ট।পড়লাম আবার পড়ব...প্রিয়তে থাকল
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভাই।
শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:০৫
শায়মা বলেছেন: আমার সবচাইতে প্রিয়জন যদিও রবিঠাকুর তবুও জীবানানন্দ দাসের মত করে নারীকে ফুটিয়ে তুলতে আর কেউই পারেনি বলে আমার মনে হয়।
শুধু এক বনলতা আর সুরঞ্জনাই যথেষ্ঠ! আর কিছুর প্রয়োজন নেই।