![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্মের মূল কি ?
ডকিন্স তার বইতে এইবার ধর্মের উত্স কি তাই বিচার করছেন | প্রথমে তিনি একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করেছেন যে, বিবর্তনবাদ কিভাবে মানুষের ধর্মের প্রতি আকর্ষণ তৈরী করেছে? কেন এই প্রশ্ন ? কারণ, দেখা গেছে যে সমস্ত মানুষের মধ্যেই ধর্ম নিয়ে আকর্ষণ আছে | বিবর্তন প্রক্রিয়া যে বস্তুর কোনো উপযোগ নেই সেই বস্তুকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলে | কোন বস্তুর উপযোগিতা নেই ? যে বস্তু মানুষের বাঁচার আর বংশবৃদ্ধির কোনো কাজে লাগে না , তার কোনো উপযোগিতা নেই | ধর্ম এমনই একটি বস্তু | সুতরাং ধর্মের কোনো উপযোগিতা নেই | তবু কেন বিবর্তন প্রক্রিয়া ধর্মকে মুছে না ফেলে মানুষের মধ্যে ধর্মের প্রতি আকর্ষণ তৈরী করছে ? এই হলো ডকিন্সের প্রশ্ন |
এরপর ডকিন্স বলেছেন যে ধর্মের কি উপযোগিতা আছে ? উপযোগিতা বলতে ডকিন্স আর তার মত বিবর্তনবাদীরা বোঝেন যে নিজেদের জিনকে টিকিয়ে রাখা আর নিজেদের বাঁচা আর বংশবৃদ্ধির কাজে সহায্য করা | সোজা কোথায় ডকিন্সের প্রশ্নটি হলো : ধর্ম কি আমাদের জিনকে বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারে, না আমাদের বাঁচা আর বংশবৃদ্ধির কাজে সাহায্য করতে পারে ? যদি উত্তর হ্যা হয় তাহলে ধর্ম খুব ভালো আর যদি না হয় তাহলে ধর্ম খুব খারাপ |কোনো কাজেরই নয় | বিবর্তনবাদীদের কাছে কোনো কিছুর তখনই প্রয়োজনীয়তা আছে যখন তা হয় বাঁচা আর বংশবৃদ্ধির কাজে লাগে নতুবা জিনের দীর্ঘজীবনের কাজে লাগে | আর কোনো বিষয় উপযোগিতা নয় |
মুশকিলটা হলো যে ধর্মের সাথে জিনের কোনো সম্পর্ক নেই | এই দুটোর মধ্যে সম্পর্ক আর আরশোলা আর বিশ্বায়নের মধ্যে সম্পর্ক একই ব্যাপার | দুটো সম্পূর্ণ অসম্পর্কিত সুতরাং এদের ব্যাপারে কিছু না বলাই ভালো |
আর দ্বিতীয়ত ধর্ম আমাদের বেঁচে থাকা আর বংশবৃদ্ধির কাজে কিছুটা সাহায্য তো করেই | এই ব্যাপারে আলোচনার আগে দেখে নেই ডকিন্স কিভাবে ধর্মের উপযোগিতাকে খন্ডন করেছে |
১] ধর্ম মানুষের টেনশন কমিয়ে আনে বলে যে প্রচলিত যুক্তি ছিল তাকে ডকিন্স প্লাসিবো ইফেক্ট বলে উড়িয়ে দিয়েছেন| প্লাসিবো অনুযায়ী মানুষ যাকে জ্ঞানী বলে মানে তাদের আশ্বাসবাণী মানুষের মানসিক রোগ সারাতে কাজে লাগে | যখন মানুষ বিপদে পরে বা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে বা মৃত্যুভয়ে ভীত হয় তখন সে ঈশ্বরের সান্নিধ্য পেয়ে মানসিক শান্তি পায় |
আবার ধর্ম কখনো কখনো মানুষের টেনশন বাড়ায় | কিভাবে ? না পাপের ধারণা দিয়ে | উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই যখন মুসলিম মেয়েটা একটা হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করে তখন মেয়ের বাড়ির ও ছেলের বাড়ির লোকের টেনশন বেড়ে যায় | টেনশন বাড়ায় ধর্ম | অথবা হিন্দুর এক জাতের ছেলে যদি আরেক জাতের মেয়েকে বিয়ে করে তাহলেও মেয়ের বাড়ি ও ছেলের বাড়ির লোকের টেনশন বেড়ে যায় | বাড়ায় ধর্ম | সুতরাং ধর্মের উপযোগিতা নেই |
ধর্মের উপযোগিতাকে খন্ডন করতে ডকিন্স এই একটা যুক্তিই ব্যবহার করে তার ব্যতিক্রম দেখিয়ে ধর্মের উপযোগিতা নেই : এই কথা প্রমান করার চেষ্টা করেছেন | ধর্মের কি শুধু মানসিক উপযোগিতা ? অন্য কোনো উপযোগিতা নেই ? কেন এমনটা ডকিন্স ভাবলেন ?
ডকিন্স দেখালেন যে ধর্মের কোনো উপযোগিতা নেই | এবার তিনি জানতে চেয়েছেন যে তাহলে কেন ধর্মকে বিবর্তন প্রক্রিয়া মুছে ফেলল না ?
প্রথম যুক্তি ছিল গ্রুপ সিলেকশন | এখানে বলা হয়েছে যে বিবর্তন প্রক্রিয়া কোনো একটা বিশেষ গোষ্ঠিকে নির্বাচন করেছিল | সেই গোষ্ঠির মধ্যে একতা আর সংহতি বৃদ্ধি পায় অন্য গোষ্ঠীগুলির তুলনায় | ফলে সেই ধর্মীয় গোষ্ঠীটি টিকে যায় | অন্যগুলি লোপ পেয়ে যায় | এইভাবে ধর্ম টিকে আছে | তবে ডকিন্স এটাকে ইকোলজিকাল সিলেকশন বলেছেন |
দ্বিতীয় যুক্তিটা কিছুটা বোধগম্য | এটা হলো ধর্ম একটা কোনো কার্যকরী জিনিসের বাই প্রোডাক্ট | কিন্তু সেই কার্যকরী জিনিষটা কি ? সেটা হলো ডকিন্সের মতে এমন একটা জিনিস যা আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে কিন্তু অন্যদিকে যখন সেটা বুমেরাং হয় তখন ধর্ম তৈরী করে | জিনিষটা কি ? ডকিন্সের মতে এটা হলো বাচ্চাদের বড়দের কথা বিনা প্রশ্নে মেনে নেয়ার প্রবণতা | এটা বাচ্চাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে | কিন্তু অন্যদিকে এটা বাচ্চাদের ভালো মন্দ বিচার ক্ষমতাকে একেবারে নষ্ট করে দেয় | এর ফলে তারা ধর্মকেও মেনে নেয় যখন বড়রা তাদের মানতে বলে | এভাবেই তারা ধর্মের ফাঁদে পড়ে যায় | এছাড়া আরো একটা থিওরি আছে | সেটা হলো মানুষের প্রেমে পড়ার প্রবণতা | এটাও মানুষের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে কিন্তু এই প্রবণতাই নাকি ধর্ম-এর ফাঁদে পড়তে সাহায্য করে | এছাড়াও আরো আছে যেমন: আশাবাদ ইত্যাদি|
এছাড়া আরেকটা থিওরি আছে যে জিন নাকি ধর্মটাকে টিকিয়ে রেখেছে এবং তা ছড়িয়ে দিচ্ছে | এই সব কথা |
সোজা কথা হলো ধর্মের এমনি কোনো উপযোগিতা নেই | তবে এটা অন্য একটা উপযোগী জিনিসের বাই প্রোডাক্ট কিনা , তাই টিকে আছে | মুছে যায়নি | যতদিন ওই উপযোগী জিনিষটা থাকবে ততদিনই ধর্ম থাকবে |
তৃতীয়ত ধর্ম টিকে আছে সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের পথ ধরে | উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সংস্কৃতি হলো ধর্ম, তাই নাকি এটা টিকে আছে | একটা প্রজন্ম তার আগের প্রজন্মর কাছ থেকে যা শেখে তাই সে তার পরের প্রজন্মর কাছে দেয় | এভাবেই পুরুষানুক্রমে সেই শিক্ষা চলে আসে | একেই উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সংস্কৃতি বলে , ডকিন্স যাকে মেমে বলেছেন | এভাবেই ধর্ম টিকে আছে | বিবর্তন প্রক্রিয়া একে মুছে ফেলতে পারে নি | বইটার একটা পুরো অধ্যায় ডকিন্স এইটুকু কথা বলার জন্য ব্যয় করেছেন | পাতার পর পাতা গেজিয়েছেন |
তাহলে ধর্ম কেন টিকে আছে ? তার তিনটি কারণ:
১] এক ধর্মগোষ্ঠী আরেক ধর্মগোষ্ঠী থেকে বেশি সংহত আর ঐক্যবদ্ধ তাই বিবর্তন প্রক্রিয়া তাদের মুছে ফেলেনি |
২] ধর্ম একটা বেঁচে থাকার উপযোগী কিছুর বাই প্রোডাক্ট : এই মূল উপযোগী বস্তুটি হলো বাচ্চাদের বিনাপ্রশ্নে বড়দের কথা মেনে নেবার অভ্যাস বা প্রেমিকদের বিনাপ্রশ্নে প্রেমিকার কথা মেনে নেবার বৈশিষ্ট্য |
৩] উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সাংস্কৃতিক নিয়মের মধ্যে ধর্মও আছে | অর্থাত বাবা মা যেসব ধার্মিক সংস্কৃতি ছেলেমেয়েদের শিখিয়েছেন ছেলেমেয়েরাও সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে নিয়ে চলেছে | এভাবেই ধর্ম টিকে আছে | বিবর্তন প্রক্রিয়া টিকিয়ে রেখেছে |
আসুন দেখা যাক এই তিনটি কারণ কতটা যুক্তিযুক্ত | প্রথম কারণটি হলো: এক ধর্মগোষ্ঠী আরেক ধর্মগোষ্ঠী থেকে বেশি সংহত আর ঐক্যবদ্ধ তাই বিবর্তন প্রক্রিয়া তাদের মুছে ফেলেনি | এখানে কোনটি আগে হয়েছে ? বিবর্তন প্রক্রিয়া কোনো একটি গোষ্ঠিকে চয়ন করেছে বলেই কি গোষ্ঠীতে সংহতি এসেছে না গোষ্ঠীতে সংহতি এসেছে বলেই বিবর্তন প্রক্রিয়া তাকে চয়ন করেছে ? যদি প্রথমটি হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠিকে চয়ন করার কারণ কি ? যদি দ্বিতীয়টি হয় তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে গোষ্ঠীতে সংহতি এসেছে বলেই সেটা টিকে আছে . তাহলে বিবর্তন প্রক্রিয়ার ভুমিকা কি ? এমন কেন বলা হচ্ছে যে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় গোষ্ঠিতাকে টিকিয়ে রেখেছে, সংহতি নয় ? এই কারনটা বড্ড গোলমেলে |
দ্বিতীয় কারণটি হলো ধর্ম হলো বাচ্চাদের বিনাপ্রশ্নে বড়দের কথা মেনে নেয়া স্বভাবের বাই প্রোডাক্ট | এই স্বভাবটি বেঁচে থাকার উপযোগী | তাই ধর্ম টিকে আছে | কিন্তু বাচ্চারা কি বিনা প্রশ্নে বড়দের সব কথাই মেনে নেয় ? তাহলে অবাধ্য সন্তান, জ্যাঠা ছেলে, পাকা ছেলে এসব কি সত্যিই নেই ? অনেক ধার্মিক বাবা মায়ের সন্তান পরে নাস্তিক হয়ে গেছে | তারা কি বাবা মায়ের কথাগুলি বিনা প্রশ্নে মেনে নিয়েছিল ? ডকিন্সের নিজের বাবা মা ধার্মিক ছিলেন তাহলে ডকিন্স নিজে কেন নাস্তিক হলেন ? আর প্রেমিকের প্রেমিকার কথা বিনা প্রশ্নে মেনে নেবার অভ্যাসের কি কোনো ব্যতিক্রম নেই ? অবিশ্বাসী প্রেমিক থাকে না ?
তৃতীয় কারণটি হলো বাবা মা যা ধার্মিক সংস্কৃতি বা শিক্ষা ছেলে মেয়েদের শেখায়, ছেলে মেয়েরা তাই বহন করে | এটা আগের যুক্তিটার একটা অন্য রূপ | একই কথা | ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের শেখানো সংস্কৃতি সব সময় মানে না | অনেক ধার্মিক বাবা মায়ের সন্তান পরে নাস্তিক হয়ে গেছে | তারা কি বাবা মায়ের শেখানো ঐতিহ্য বহন করেছিল ? ডকিন্সের নিজের বাবা মা ধার্মিক ছিলেন তাহলে ডকিন্স নিজে কেন নাস্তিক হলেন ?
তাহলে দেখা গেল যে ধর্ম কেন পৃথিবীতে টিকে আছে সে বিষয়ে যত যুক্তি ডকিন্স দিয়েছেন তার অসংখ্য ব্যতিক্রম আছে | কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো তিনি নিজেই এর ব্যতিক্রম | সুতরাং এইগুলি কোনো যুক্তিই নয় |
তাহলে ধর্ম টিকে আছে কি করে ? এটা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন | ডকিন্স বিবর্তনবাদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এটার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন | কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন | কেন ? কারণ তিনি একটা ভুল পূর্বানুমান নিয়ে এগিয়েছিলেন | সেই ভুল পুর্বানুমানটি হলো : ধর্মের কোনো উপযোগিতা নেই মানুষের বেঁচে থাকা আর বংশবৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে | এই পুর্বানুমানটির জন্য তিনি ধর্মকে অন্য উপযোগী বস্তুর সাথে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে জুড়তে চেয়েছিলেন | এইটাই হলো আগের যুক্তিগুলি ভুল হবার কারণ | ধর্মের যথেষ্ট উপযোগিতা আছে মানুষের বেঁচে থাকা আর বংশবৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে | ধর্মের আড়ালে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চলে পৃথিবীর বেশিরভাগ ধর্মগুলিতে | প্রমান : ঈদের গরু কোরবানির বাজার, ভারতের মন্দিরে বলির পশুর বাজার, ভারতের মন্দিরে পুজো সামগ্রীর বাজার, রমজান মাসে খাদ্যসামগ্রীর উচ্চ মূল্যের বাজার, মন্দিরের প্রনামির টাকা, জিহাদে আগত আর্থিক অনুদান ,মসজিদের আর্থিক অনুদান, গির্জার পাদ্রীদের বেতন , গির্জার আর্থিক অনুদান, মসজিদের ইমামের বেতন, কাশীতে মরা পোড়াবার চিতাকাঠের বাজার, কবর দেবার কফিনের বাজার,ধর্মীয় উত্সবে আতসবাজির বাজার ...আর কত বলব | সব মিলিয়ে প্রতিটি ধর্মে লক্ষ কোটি টাকার বিজনেস চলে | আর অর্থ যে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য সেটা কে না জানে | আর ধর্ম সেই অর্থের যোগানদার | সুতরাং বেঁচে থাকাতে ধর্মের উপযোগিতা আছে |
ধর্ম মানুষের ক্ষমতার প্রয়োজনও মেটায় | ধর্মকে হাতিয়ার করে পৃথিবীর বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় এসেছে এবং টিকে থেকেছে | উদাহরণ: ভারতের বিজেপি , বাংলাদেশের বিএনপি-জামাত , পাকিস্তানের প্রায় সব কয়টা পার্টি, আমেরিকার রিপাবলিকান দল, ব্রিটেনে কনজারভেটিভ পার্টি আর ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টি, ফ্রান্স আর জার্মানির দক্ষিনপন্থী দল,ইরানের খোমেইনীর দল,...আরো কত দল আছে | ধর্মকে হাতিয়ার করে এরা আকসার ইলেকসন জেতে, ক্ষমতায় আসে , এসে বড়লোকদের পা চাটে আর গরিবদের পোঁদে লাথি মারে | সব্বার একই চেহারা | ধর্ম দিয়ে সবচেয়ে সহজে আর বিনা পরিশ্রমে ইলেকশন জেতা যায় ডকিন্স সাহেব |কোনো খাটুনি নেই, কোনো কাজের হিসাব দেয়া নেই, শুধু ধর্মের বুলি বলে যাও আর গদি তোমার | ধর্ম মানুষের বেঁচে থাকার কত কাজে লাগে ডকিন্স সাহেব | আপনি কিছুই জানেন না |
ধর্ম মানুষকে মানসিক শান্তি দেয় | সারা জীবনে মানুষ নিজের লোভ লালসার জন্য এত মিথ্যাচার, ভন্ডামি, বেইমানি, খুন খারাবি করে এসেছে আর আসছে, যে একটা সময় বিবেকের দংশনটি সহ্যসীমার বাইরে চলে যায় | যাদের বিবেক বস্তুটি নেই , তারা বেঁচে গেল, তারা সিংহহৃদয়, লৌহমানব ইত্যাদি | কিন্তু বেশিরভাগ লোকেরই ওটা আছে | তাই বিবেকের দংশনও আছে | সেটা থেকে বাঁচবার উপায় বলে দেয় ধর্ম | গঙ্গায় এতগুলো ডুব লাগালেই তুমি যত মিথ্যাচার, ভন্ডামি, বেইমানি করেছ ,স-অ-ব পাপ ধুয়ে যাবে | কাবায় এতগুলো চক্কর লাগালে যাবতীয় বেইমানি, নরহত্যা মাফি | জিহাদে নির্দোষ নিরীহ লোকেদের হত্যা করতে গিয়ে মরলে অনন্ত স্বর্গবাস কেউ ঠেকাতে পারবে না | যত রকম পাপ করে তোবা করে নিলে স-অ-ব মাফি | গির্জায় গিয়ে ফাদারের কাছে ফেঁচ ফেচঁচিয়ে কেঁদে দোষ স্বীকার কর , তাতে দুটো লাভ আছে : তোমার জেল, ফাঁসি কোনটাই হবে না অথচ স-অ-ব দোষ মাফ | অনন্ত স্বর্গের টিকিট পাক্কা | এগুলো যে কি বিশাল পরিমান মানসিক রিলিফের কাজ করে ডকিন্স সাহেব সে আপনি কি বুঝবেন | আর কে না জানে মানসিক শান্তি মানুষকে কত বাঁচতে সাহায্য করে | সাইকো সোমাটিক ডিসর্ডার হতে দেয় না | নাঃ ডকিন্স সাহেব, ধর্ম মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য |
আবার ধর্ম টেনশন বাড়ায় | বাড়ায় পাপের ধারণা দিয়ে | কি সেই পাপ ? চুরি, নরহত্যা, লুঠপাট , ধর্ষণ, মিথ্যা সাক্ষ্য ইত্যাদি , (জাতপাতের সমস্যা নয় , ধর্ম জাতপাতের বিধান দিয়েছে মাত্র কিন্তু সমস্যা মানুষের নিজের সৃষ্টি) | এই পাপের ধারনাটুকু মানুষের টেনশন বাড়ায় , অতএব মানসিক শান্তি নষ্ট করে | ধর্মের কোনো উপযোগিতা নেই | কিন্তু আসুন দেখা যাক এই পাপের ধারনাটুকু না থাকলে কি হত ? ধারণা থাকতেই দুনিয়াজোড়া পাপাচার হচ্ছে | না থাকলে কি আরো বেশি পাপাচার হত না ? ধর্মের এই পাপের বিধানের এইটাই উপযোগিতা | এইটুকু টেনশন না বাড়ালে ডকিন্স সাহেব , পৃথিবীটা জানোয়ারের আস্তাবল হয়ে যেত | নয় কি ?
ধর্ম মানুষের বংশবৃদ্ধিতেও সাহায্য করে ডকিন্স সাহেব | ধর্মের নামে এককালে আপনার দেশের মানুষেরা একসাথে চার পাঁচটা করে বিয়েও করত | আমাদের দেশেও করত | ধর্ম নিয়োগ প্রথার বিধান দিয়েছে, আপনারা যাকে সারোগেসী বলেন | ধর্ম গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছে | এতেও পৃথিবীতে জনসংখ্যা বেড়েছে | ধর্ম কনডম ব্যবহার বন্ধ করেছে যার ফলে সন্তানাদি ভালই উত্পন্ন হচ্ছে | ধর্ম অবৈধ সন্তানদেরও স্বীকৃতি দিয়েছে আমাদের দেশে মানে ভারতে | তাদের ক্ষেত্রজ বা কানিন পুত্র নাম দিয়েছে | উদাহরণ কর্ণ, যিনি দানবীর ছিলেন | সত্যকাম জাবাল, যিনি ব্রম্ভজ্ঞানী ছিলেন | সন্তান উত্পাদনের জন্যই বিয়ে : এই বিধান তো ধর্মই দিয়েছে না ডকিন্স সাহেব | নারী পুরুষের শস্যক্ষেত্র | যাতে পুরুষ চাষ করবে যখন তার ইচ্ছে হবে | আর ফসল না ফললে নারীরই দোষ | পুরুষ নির্দোষ | এসবই ধর্মের বিধান | ধর্ম এইভাবেই আমাদের বংশবৃদ্ধিতেও সাহায্য করে | নাঃ ডকিন্স সাহেব আপনি কিছুই জানেন না |
নাস্তিকদের বেঁচে থাকতেও ধর্ম সাহায্য করে | ধর্মকে গালি না দিলে নাস্তিকদের অস্তিত্বই থাকবে না | ধর্ম নাস্তিকদের স্কেপগোট হয়ে তাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে | তাদের সমাজে বাহবা কুড়োনোর বা হাটকে হয়ে চলার ইচ্ছাকে পূরণ করে | ধর্মকে গালি না দিয়ে এক মুহূর্তও নাস্তিকরা থাকতে পারে না | আমি যত গুলো নাস্তিক দেখেছি ইনক্লুডিং বাংলাদেশের মুক্তমনারা , তারা কেউই ধর্মকে গালি দেয়া ছাড়া একটা কাজও করেননি | তারা গরিবের সেবা করেননি, আর্তদের ত্রান করেননি | তারা শুধু ধর্মকে গালি দিয়েছেন | ধর্মকে গালি দেয়াই নাস্তিকদের অক্সিজেন | এভাবে ধর্ম আস্তিক-নাস্তিক তথা সমগ্র মানবজাতিকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে |
যে ধর্ম মানুষের বেঁচে থাকা আর বংশ বৃদ্ধির এত কাজে লাগে, তাকে বিবর্তন প্রক্রিয়া কেন মুছে ফেলবে ডকিন্স সাহেব ?
কিন্তু ডকিন্স সাহেব আমি ধর্মের টিকে থাকার যে কারণ দেখালাম তা তো প্রত্যক্ষ সিদ্ধ , অথচ আপনি তা দেখতে পেলেন না কেন ? কারণ ডকিন্স সাহেব ধর্মের প্রতি ঘৃনা আপনার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে | তাই ধর্মের কোনো উপযোগিতা আপনি দেখতে পেলেন না | তাই আপনি ধর্মকে অন্য উপযোগী বস্তুর সাথে জুড়ে তার উপযোগিতা প্রমান করতে গেলেন | কিন্তু ধর্ম যে কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই উপযোগী তা আপনি দেখতে পেলেন না | আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বড় একপেশে |
২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮
ময়না বঙ্গাল বলেছেন: সব ধর্মের একই সুর
মূল্যবোধ আর নৈতিক গুন
৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩২
জেকলেট বলেছেন: বইটি পড়িনি। কিন্তু আপনি যা বলেছেন তাই যদি সত্য লিখে থাকেন উনার চিন্তা ধারায় বিরাট গন্ডগোল আছে। কারন বিবর্তনের স্বভাবিক ধারনার সাথে রিচার্ড সাহেবের চিন্তার বিশাল গ্যাপ। সাধারন পশুরা মা-বাবা যেভাবে চলে বাচ্চারা তা ফলো করে বা বংশ পরস্পর একি খাবার বা বৈশিষ্ট চলে আসে, যেমন গরু, ছাগল ইত্যাদি প্রানির দাত থাকার পর ও এরা সবসময় তৃনভুজী মাংশসাসি না আবার কুকুর বা শেয়াল এরা মানুষের সমাজের কাছাকাছি থেকেও শুধু মাংশভুজী এবং হাজার বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে। আমেরিকা, ইউরোপ বা এশিয়ার গরু ছাগল যেখানকারই হউক না কেন সবাই তৃনভুজী। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এইটার বিরাট চেন্জ দেখা যা্য়। মানুষের টিক থাকার জন্যই শুধু নিজের পূর্ব পুরুষকে ফলো না করে নিজেরা ক্রমাগত নিজেদের প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে এবং উত্তর খুজেছে। এই জন্য একি ব্যাপারে এলাকা বা দেশ ভেদে একি ব্যাপারে মানুষ আর মানুষের চিন্তার মাঝে কত গ্যাপ। রিচার্ড সাহেবের ধারনা সন্তান মা-বাবাকে শুধু ফলো করে এটার কুনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই এমনকি এটা একসেপশনাল ও না (আমি এখানে লেখকের সাথে ও দ্বিমত)। আর ধর্ম কেন টিকে আছে তা নিয়ে আরেকটা বিশাল ব্লগ লেখা যাবে। শুধু জেনে রাখুন মানুষের প্রয়োজনেই ধর্ম ধর্মের প্রয়োজনে মানুষ না। তাই রিচার্ড সাহেবের এই সকল পন্ডিতি অনেকটাই ভুয়া
কিন্তু মানু
কিন্ত মানুষের ক্ষেত্রে মানুষ প্রত্যেকটি ব্যাপারে একটা অনুসন্ধানি প্রশ্ন করে বলেই মানুষ অন্য প্রানী থেকে আলাদা হয়ে আজকের মানুষ হয়েছে।
প্রশ্ন করার বা কেন এইটা এই রকম ঐটা ঐ অন্যরকম
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
সত্যান্বেসী বলেছেন: বন্ধু আমি যা লিখেছি ডকিন্স তাইই বলেছেন । শুধু ডকিন্স কেন সমস্ত বিবর্তনবাদিরাই এইরকম ভাবে | এমনটা হলে মানবসমাজের হাল কেমন হবে শুধু ভাবুন |
৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২১
জেকলেট বলেছেন: সব বিবর্তন বাদিরা এই রকম চিন্তা করেনা। রিচার্ডের ধারনার সাথে বাকিদের চিন্তার বিশাল গ্যাপ আছে..
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৬
সত্যান্বেসী বলেছেন: গ্যাপ গুলি বিস্তারিত বললে বাধিত হব ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৮
নজরুল ইসলাম টিপু বলেছেন: ধর্ম মানুষের চরিত্রের আমুল পরিবর্তন করে। হিংসা, বিদ্ধেষ, আত্মপ্রচার, অহংকার, গর্ববোধ, লোভ সহ নানাবিধ মৌলিক চরিত্র পরিবর্তনে ধর্মই সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখে। উদারতা, মহানুভবতা, বদান্যতা, দয়া, ক্ষমা, আত্মনিয়ন্ত্রন, শ্রদ্ধা, স্নেহ, পরিমিত ভাব সহ বহু ধরনের নৈতিক চরিত্র তৈরীতে ধর্মের প্রভাব অপরীসিম।
- আজকের দুনিয়ার দলে দলে ডাক্তার বাড়ছে কিন্তু মানবতা হারাচ্ছে, অনেক ডাক্তার আর ডাকাতের মাঝে কোন তফাৎ নাই।
- প্রচুর অর্থনিতীবিদ বাড়ছে কিন্তু জাতিকে কিভাবে ঠকাবে সেই বিদ্যাটা নিয়েই তারা বেশী উৎসাহী হচ্ছে।
- প্রচুর বিদ্যানবিশ সচিব হচ্ছে কিন্তু দেশ প্রেম হারিয়ে নিজের দেশের টাকা লুট করে অন্য দেশে গিয়ে ফকিরের মত জীবন ধারণ করছে।
এই সব তো নৈতিকতার অভাবেই হচ্ছে। বস্তুত নৈতিকতা তৈরী করে ধর্ম। আমি একক ভাবে কোন ধর্মের নাম নিচ্ছিনা, কেননা সব ধর্মই মানুষকে নৈতিক হতে বলে।
বিবর্তন বাদীদের চিন্তা প্রাণীদের মত। পেট, পিট, যৌনতার ক্ষুদা মেটানোকেই তারা জীবন মনে করে। তারা জীবনে একটি অংশ দেখে মাত্র..........