নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ....

সত্যান্বেসী

কলকাতা হাই কোর্টের উকিল

সত্যান্বেসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিচার্ড ডকিন্সের গড ডিলিউসান বইয়ের সমালোচনা পর্ব ৫

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৫

এই অধ্যায়ে ডকিন্স দেখিয়েছেন যে ধর্মগ্রন্থগুলি যে শিক্ষা দেয় তা অত্যন্ত ফালতু | এটা দেখাতে তিনি বাইবেলের ওল্ড আর নিউ টেস্টামেন্ট থেকে সেইসব শিক্ষা বেছে নিয়েছেন যেগুলি ফালতু | ভালো শিক্ষাগুলি সযত্নে এড়িয়ে গেছেন | চিরকালীন ডকিন্স ধান্দাবাজি |

ওল্ড আর নিউ টেস্টামেন্টের নিয়মগুলি নাকি খুব খারাপ | ডকিন্স বলেছেন , দুভাবে আমরা ধর্মশাস্ত্র থেকে শিক্ষা পেতে পারি : ১] সোজাসুজি উপদেশ, ২] নবীদের ও ঈশ্বরের কৃতকার্য | এই দুইভাবেই নাকি যে শিক্ষা ধর্মশাস্ত্র থেকে আসে তা খুব বাজে | বাজে শিক্ষার উদাহরণ ডকিন্স দিয়েছেন ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে নোয়ার গল্পে ঈশ্বর মানবজাতিকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন, জেনেসিসে লটের গল্প যেখানে ফেরেশতাদের বাঁচাতে লট তার দুই মেয়েকে বলিদান দিতে প্রস্তুত ছিল , বুক অফ জাজ-এর লেভিশীয়র গল্প যে তার রক্ষিতাকে গণধর্ষিত হতে দিয়েছিল,সেই একই পুস্তকের জেপথার গল্প যে তার নিজের শিশুকন্যাকে পুড়িয়ে ঈশ্বরকে উপহার দিয়েছিল, আব্রাহামের নিজের ছেলে আইজাককে বলিদানের গল্প, জেনেসিসের সোনালী ভেড়া পূজার গপ্প, গণনা পুস্তক (বুক অফ নাম্বারস)-এর মোজেসের মিদিয়ানদের আক্রমন করার গল্প যেখানে মোজেস শিশুহত্যা করেছিলেন, যেসব ইহুদি অন্য ঈশ্বর বালের উপাসনা করেছিল তাদের মস্তকছেদনের গল্প, জশুয়াকে দিয়ে ইস্রায়েল জয় এবং অন্য সমস্ত ঈশ্বরের ধংস সাধন ইত্যাদি | ধর্মগুরুরা অবশ্য এগুলোকে প্রতিকী বলেন কিন্তু কোনটা প্রতিকী আর কোনটা বাস্তব , বোঝার কোনো নিয়ম নেই |

এইসব গল্প দিয়ে ডকিন্স এটাই দেখাতে চান যে আধুনিক নৈতিকতা বাইবেল থেকে আসে নি |গল্পগুলো সত্যি না মিথ্যে তা নিয়ে ডকিন্সের মাথাব্যথা নেই , তিনি দেখে অবাক হন যে আজকের দিনে মানুষ এই গল্পগুলিকে আদর্শ বলে ভাবে | তিনি শুধু দেখাতে চান যে আমরা আমাদের নৈতিকতা ধর্মগ্রন্থ থেকে পাইনা | কারণ সমস্ত মানুষ ওই ধর্মগ্রন্থর কথামত চলে না |
নিউ টেস্টামেন্টের বাজে গল্পের তালিকা হলো : যিশুর পারিবারিক মূল্যবোধ ( তিনি নিজের শিষ্যদের পিতা মাতাকে ত্যাগ করে তাকে অনুসরণ করতে বলেছেন |), অরিজিনাল সিনের গপ্প (এটা নাকি মেন থিম), যিশুর ক্রস হলো ধর্ষকামের চিহ্ন , নিজের প্রতিবেশিকে ভালবাসা নাকি ইহুদি প্রতিবেশিকে ভালবাসা ...ইত্যাদি|

এছাড়াও ডকিন্স বলেছেন যে ধর্ম এক বিরাট বিভেদ সৃষ্টিকারী | এটা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে | উদাহরণ আয়ার্লান্ডে ক্যাথলিক-প্রটেস্টান্ট, ভারতে হিন্দু-মুসলিম ইত্যাদি |

এছাড়া ডকিন্স বলেছেন যে দশটি নিয়মের সময় থেকে আজ আমরা অনেকটাই বদলেছি | উদাহরণ হলো : দাসপ্রথা বিলোপ, নারীদের ভোটাধিকার, শিশুদের অত্যাচার প্রতিকার ইত্যাদি |

শেষমেষ ডকিন্স হিটলার এবং স্টালিন সম্বন্ধে বলেছেন যে নাস্তিক হলেই কেউ খারাপ হয় না |

আসুন দেখি ডকিন্সের কথা কতটা সত্যি | ডকিন্সের পুরো কেসটা এককথায় “শকুনের নজর ভাগাড়ের দিকে” | ডকিন্সের নজর সর্বদা ধর্মের খারাপ বৈশিষ্ট্যের দিকে থাকে | ধর্মের ভালো দিকগুলি ডকিন্স এবং নাস্তিকেরা দেখতে পারে না | তাই তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভীষণ একপেশে |

ওল্ড টেস্টামেন্ট ও নিউ টেস্টামেন্টের যে গল্পগুলি বাজে বলে ডকিন্স বলছে আমি সেগুলিকে ভালো বলছি না | আমি ওই দুই টেস্টামেন্টের ভালো গল্পগুলি তুলে ধরছি | ওল্ড টেস্টামেন্টে গীতি সংহিতা আছে , উপদেশক আছে, বিভিন্ন নবীদের কথা আছে যারা ইস্রাইলের বিপদের সময় তাকে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন | এছাড়াও মিশর থেকে ইহুদি দাসদের মুক্ত হবার গল্প আছে , যা ঈশ্বরের করুণাকে প্রকাশ করে | নিউ টেস্টামেন্টে যিশুর কার্যকলাপ আছে : যেমন কুষ্ঠরোগীদের আরোগ্য করা , অন্যান্য রোগীদের আরোগ্য করা , সারমন অন দা মাউন্ট, যিশুর আত্মবলিদান, ফরীশীদের ভন্ডামির বিরুদ্ধে যিশুর প্রতিবাদ, স্বর্গের কথা শোনান : ইত্যাদি ভালো গল্পও তো কম নেই | সন্ত পলের প্রেমের ধর্ম, ঈশ্বরের সাম্রাজ্যের কথা : ইত্যাদি ভালো গপ্পো তো কম নেই ডকিন্স সাহেব | অবিশ্যি আপনার নজর তো ধর্মের খারাপ অংশের দিকেই থাকবে | ভালো দিক তো দেখবেনই না |

ধর্মগ্রন্থ গুলির বাজে গালগল্প গুলোকে অনেক লোক সত্যি বলে বিশ্বাস করে বলে ডকিন্স যে দাবি করেছেন যা আংশিক সত্যি | বেশিরভাগ লোক করে | কিন্তু ক্ষুদ্র হলেও কিছুসংখ্যক লোক এই ধর্মীয় গাল গল্পগুলোকে বিশ্বাস করে না | তাদের অতিন্দ্রিযবাদী বা মিস্টিক বলে | তারা এগুলোর অন্য মানে করে | আর আছে নাস্তিকেরা | তারা এইসব গল্পগুলোকে বিশ্বাস করে না | তাদের মধ্যে ডকিন্সও পড়েন |

নিজের প্রতিবেশিকে ভালবাসা মানে ইহুদি প্রতিবেশিকে ভালবাসা :- এই নিয়ে একটি সাব চ্যাপ্টার ডকিন্স লিখেছেন | কিন্তু উনি আবার ভুলে যাচ্ছেন যে ঈশ্বর প্রতিবেশিকে ইহুদি বলেননি | ধর্মগ্রন্থে ইহুদি কথাটার প্রয়োগ আছে আবার প্রতিবেশী কথাটারও প্রয়োগ আছে | তবে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় | প্রতিবেশীর সাথে ইহুদি শব্দের প্রয়োগ নেই | দাস শব্দের সাথে আছে | অর্থাত ঈশ্বর স্পষ্ট বলতে চান যে তোমার প্রতিবেশী যে কেউ হতে পারে | তাকে তুমি ভালোবাসো | আবার দাস শব্দের সাথে ইহুদি শব্দের প্রয়োগ করে ঈশ্বর ইহুদি দাসদের কথাই বলতে চান | ঈশ্বর কখনো কখনো “আমার লোকেরা”, “আমাকে অনুসরণকারীরা” ইত্যাদি শব্দ প্রয়োগ করেছেন | এটার অর্থ হলো ইস্রাইলের অধিবাসীরা | এইরকম নানা অর্থ আছে | কিন্তু প্রতিবেশী শব্দের মানে শুধু ইহুদিরা : এমন কদর্থ ধর্মগুরু ব্যতীত আর কে করতে পারে ? এটা করা হয়েছে একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে | উদ্দেশ্যটা হলো ইহুদিদের নিজেদের প্রতিবেশী দেশসমূহ অর্থাত আরবদের সাথে লড়াইতে প্ররোচনা দেয়া | শুধু কি আরব , যারা অ ইহুদি , তাদের বিরুদ্ধেও ইহুদি জাতিকে লড়াই করতে বলাই হচ্ছে এই কদর্থের উদ্দেশ্য | তাই আজ ইসরাইলে শান্তি বলে কিছু নেই | পালেস্তাইনে শান্তি নেই | আরবেও শান্তি নেই |

ধর্মগ্রন্থের কদর্থ করার এই পরিনাম হয় |

এই প্রসঙ্গে ইসলামের কদর্থটাও বলা উচিত | ইসলামে কাফের শব্দটা নিয়ে খেলা করা হয়েছে | পৌত্তলিকদের কাফের বলে না | কারণ নবী নিজে সাবিয়ানদের গ্রহ নক্ষত্র পূজাকে কুফুরী বলেন নি | বরং অনুমোদন করেছিলেন | কোরানেও এর উল্লেখ আছে | ইহুদি আর খ্রিষ্টানদেরও নবী কাফের বলেননি | কিন্তু আজ মুসলিম ব্যতীত পৌত্তলিক, ইহুদি আর খ্রিষ্টানদের কাফের বলা হচ্ছে | উদ্দেশ্য এই তিন জাতের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ করে এদেরকে হারিয়ে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা | যে মহান কার্যে এককালে আল কায়দা ছিল , এখন আইসিস আছে | এতে মুসলিম জাহানের তিন রকম ক্ষতি হচ্ছে : ১] যারা শহীদ হচ্ছে , তাদের পরিবার পথে বসছে, ২] যারা টার্গেট হচ্ছে তাদের পরিবার পথে বসছে আর দুনিয়া এক একটি রত্ন হারাচ্ছে , ৩] মাঝখান থেকে কোলাটারাল ড্যামেজে অজস্র পরিবার ও স্থাপত্য-ভাস্কর্য ধংস হয়ে যাচ্ছে | আর দুনিয়ায় শান্তি বলে কোনো কিছু থাকছে না | কাফের সম্ভবত নাস্তিকদের বলা হয়েছিল |

ইসলামে দুনিয়াবী বিদ্যাকে হেয় করা হয়েছে | কিন্তু মুসলিমরা ভুলে যায় যে নবী নবিত্ব পাবার আগে পর্যন্ত এক ব্যবসায়ী ছিলেন | তিনি এক ধনী বিধবা খাদিজাকে বিয়ে করেছিলেন | তার পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি ব্যবসা করতেন | ইসলামের খলিফারা দুনিয়াবী বিদ্যার বলেই দুনিয়াজোড়া ইসলামী সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন, ইলম-এ-লাদুনির বলে নয় | এদের মধ্যে হজরত ওসমান ছিলেন ঝানু ব্যবসায়ী | তাহলে আজ মুসলিম জাহানে দুনিয়াবী বিদ্যা এত হেয় কেন ? এই জন্যই মুসলিম জাহান পিছিয়ে পড়ে আছে | এই সবই ধর্মগ্রন্থের কদর্থ করার ফল |

যাই হোক , মূল প্রসঙ্গে ফিরি | ডকিন্স বলেছেন ধর্ম এক বিভেদ সৃষ্টিকারী হাতিয়ার | তা জগতে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে | আবার ভুল! ধর্ম নিজে বিভেদ সৃষ্টি করে না | সেটা একটা নির্জীব গ্রন্থমাত্র | ধর্মের ব্যাখ্যা দানকারী ধর্মগুরুরা (পুরোহিত-মৌলবী-পাদ্রী) নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মকে বিভেদ সৃষ্টিকারী হাতিয়ার বানিয়েছে | একটু আগে দেখিয়েছি কিভাবে ধর্মগুরুরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দেয় | ক্যাথলিক-প্রটেস্টান্ট বিরোধ ইউরোপ কার সাম্রাজ্যবিস্তার তথা আধিপত্য হবে তাই নিয়ে , হিন্দু মুসলমান বিরোধও ভারতে তথা এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াই | এটা ধর্ম করে না , ধর্মগুরুরা করেন | আরো ভালো করে বলতে গেলে ধর্মগুরু-রাজনীতিবিদ অশুভ আঁতাত এর জন্য দায়ী | ভারতের বেশিরভাগ ধর্মগুরুদের সাথে বড় বড় ভিআইপি রাজনীতিকদের যোগাযোগ আছে | এটা হিন্দু, মুসলিম দুপক্ষের ক্ষেত্রেই সত্য | ইউরোপেও পোপ আর পলিটিশিয়ানের আঁতাত আছে | ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশরা ধর্মকে ভারতে বিভেদ সৃষ্টিকারী হাতিয়ার বানিয়েছিল | ইউরোপেও রাজনীতিক ও ধর্মগুরুরা ধর্মকে বিভেদ সৃষ্টির হাতিয়ার বানায় | যত মানুষ বিভক্ত হবে তত শাসন করা সোজা | ডকিন্স ইতিহাস হয়ত ভালো জানেন না |

ডকিন্সের পরের দাবি হলো আমরা নাকি বাইবেলের দশটি নিয়মের সময় থেকে অনেক এগিয়ে এসেছি | আমাদের ওগুলোর দরকার নেই | কিন্তু ঠিক কতটা এগিয়েছি ? ডকিন্স দেখিয়েছেন যে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে আর নারীর ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়েছে | নারী এখন আর কারো সম্পত্তি নয় | ভালো | আর কি পার্থক্য আছে ? ঈশ্বরের নাম নরহত্যা হলে আমরা হত্যাকারীকে শাস্তি দেই যা আব্রাহামের সময় দেয়া হত না | উদাহরণ হিসেবে বুশের ইরাক হানার নিন্দা করা হয়েছে কারণ বহু সাধারণ মানুষ মারা গেছে | আর আফগানিস্তান হানার কি হলো ? তাতে কি সাধারণ মানুষ মারা যায় নি ? সেটাও কি ইরাকের মত ক্রুসেড ছিল না ? কসভোর উপর হানার কি হলো ? সেটাও কি সমান নিন্দনীয় নয় ? আর উপসাগরীয় যুদ্ধ (গালফ ওয়ার) ? সেটাও কি নিন্দনীয় নয় ? না, এসবের কোনো উত্তর ডকিন্স দেন নি | তার ইরাক হানার নিন্দা এই সমস্ত হানার নিন্দা বুঝায় না |

তবে দাসপ্রথা আর নারীর ব্যাপারে আমরা সত্যিই এগিয়েছি | কিন্তু দশটি নিয়মের তো আরো আছে | যেমন হত্যার নিয়ম, চুরির নিয়ম, পরস্ত্রী গমনের নিয়ম, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবার নিয়ম, গরিব মানুষের বিচারের নিয়ম, ঈশ্বরের নাম পাপ করার নিয়ম, ঈশ্বরের সামনে অন্য দেবতা পূজার নিয়ম, বিদেশীদের সাথে দুর্ব্যবহারের নিয়ম ইত্যাদি | এই নিয়মগুলোও কি আজকের দিনে অপ্রাসঙ্গিক ? আমরা কি এতটাই এগিয়েছি যে এই নিয়মগুলোরও আজ আমাদের দরকার নেই ? আজ্ঞে না , দরকার আছে | এই নিয়মগুলো চিরন্তন | এগুলি সর্বকালে দরকার আছে ডকিন্স সাহেব | আমরা এতটা এগোইনি যে এই নিয়মগুলোর আমাদের প্রয়োজন নেই |

শেষে ডকিন্স বলেছে যে নাস্তিক হলেই কেউ খারাপ হয় না | হিটলার আর স্টালিন যে কুকীর্তি করেছে তার সাথে নাস্তিকতার কোনো যোগ নেই | কথাটা সত্যি| নাস্তিক হলেই কেউ খারাপ হয় না | হিটলার আর স্টালিন যা কুকীর্তি করেছে তা রাজনৈতিক | ধর্মের সাথে তার কোনো সম্বন্ধ নেই | বহু আস্তিক রাষ্ট্রনায়ক ধর্মগুরুদের সাহায্যে এর চাইতে বড় কুকীর্তি করেছে ধর্মের নামে | প্রথমেই যার কথা মনে পড়ে তিনি হলেন আয়াতোল্লা খোমেইনি | তিনি যথেষ্ট শক্ত হাতে ইরানের উদারবাদকে খুন করেছেন | পরে যার কথা আসে তার নাম তালিবান | এরা একটা গোষ্ঠী যারা আফগানিস্তানের শাসনভার নিয়েছিল | এরা ধর্মের নাম যা পাশবিকতা করেছে তার কোনো বিস্তারিত বর্ণনা দেবার প্রয়োজন নেই | পাকিস্তানে তো ধর্মের নামে হত্যাকারী জিহাদী বানাবার ফ্যাক্টরি চলে সেখানকার শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতে | সৌদি আরবেও ধর্মের নামে বহু নির্দোষ নিরীহ ব্লগারদের হত্যা করা হয়ে থাকে |ইরাকে সাদ্দাম হুসেন বহু কুর্দকে ধর্মের নাম হত্যা করে | ইউরোপের কথা একটু বলি | জোয়ান অফ আর্ক কে ধর্মের নাম পুড়িয়ে মারে ফ্রান্সের শাসকেরা| আয়ারল্যান্ড-এ আজ পর্যন্ত ক্যাথলিক আর প্রটেস্টান্ট বিরোধ চলছে , সেখানকার শাসকেরা তা মেটাবার চেষ্টা করেনি | উপরন্তু তারা সেই বিরোধকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটছে | ভারতও কম কিছু যায় না | ধর্মকে কাজে লাগিয়ে গুজরাতে মোদী সরকার গোধরা দাঙ্গা করেছিল, রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ দাঙ্গায় দুপক্ষেরই বহু মানুষ মারা গেছিল | বর্তমানে এম এম কালবুর্গি হত্যা থেকে শুরু করে সাহিত্যিকদের হুমকি এবং বুদ্ধিজীবিদের উপর সন্ত্রাস : সবটাতেই ধর্ম আছে | এইভাবে দেখা যায় আস্তিকরা ধর্মের নামে মানবজাতির কতদুর ক্ষতিসাধন করছে | নাস্তিকেরা কিন্তু অন্তত ধর্মের নামে এমনটা করেনি |

সুতরাং ডকিন্সের যে মূল বক্তব্য যে ধর্ম বিভেদ সৃষ্টি করে : ইত্যাদি সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত | তবে নাস্তিক হলেই সে খারাপ হয় না : এই সিদ্ধান্তটা সত্যি | আমরা দশটি নিয়মের সময় থেকে অনেক এগিয়ে গেছি এবং ধর্মের শিক্ষাগুলি খারাপ : এই সিদ্ধান্তগুলি আংশিক সত্য |

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.