নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ....

সত্যান্বেসী

কলকাতা হাই কোর্টের উকিল

সত্যান্বেসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুফিবাদ

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৮

সুফিবাদ নিয়ে লেখার ইচ্ছা অনেক দিন থেকেই ছিল | এইবার তাই লিখতে বসলাম | সুফিবাদ আসলে কি ? সুফিরা কারা ? এদের উত্পত্তি কোথায় ? এই সুফিবাদের বিভিন্ন মত ও পথ কি ? সুফিদের উদ্দেশ্য কি ? সুফিদের পথ কি ? ইসলামের সঙ্গে সুফিবাদের পার্থক্য ও সাদৃশ্য কি ? এইসব প্রশ্নের উত্তরই এই লেখায় দেবার চেষ্টা করব |

সুফিরা ইসলামের একটি শাখা | এদের উত্পত্তি কেউ বলেন আরবে , কেউ বলেন পারস্যে | বেশিরভাগ সুফি গ্রন্থ ফার্সি ভাষায় লেখা দেখে আমার মনে হয় এদের উত্পত্তি ও বিস্তার সম্ভবত পারস্যেই হবে |শ্রেষ্ঠ সুফি জালালুদ্দিন রুমিও পারস্যেরই লোক ছিলেন | সুফি শব্দের অর্থ কেউ বলেন সাফা পর্বত থেকে হয়েছে , কেউ বলেন সাফা নামক বস্ত্র পরিধান করেন বলে হয়েছে | আমার মনে হয় সুফি শব্দটি সাফ শব্দ থেকে এসেছে | সাফ শব্দটির অর্থ পরিস্কার বা শুদ্ধ | সুফিরা মনে হয় শুদ্ধচিত্তের লোক ছিলেন | তাদের সাধনায় শুদ্ধ চিত্তের কথা বার বার এসেছে |সুতরাং এটাই সম্ভবত সুফি শব্দের অর্থ |

ইসলামের সাথে সুফিদের সাদৃশ্য ও পার্থক্য

ইসলামের সাথে সুফিদের মিল হলো :

১] দুইজনেই আল্লা , জান্নাত ইত্যাদি ইসলামিক কনসেপ্টকে মানে |
২] দুইজনেই নামাজ, জিকির ইত্যাদি করে |
৩] দুইজনেই হজরত মহম্মদকে নবী মানে |
৪] দুইজনেই কোরানশরিফ পড়ে |

ইসলামের সাথে সুফিদের পার্থক্য হলো :

১] সুফিরা আল্লাকে চায় কিন্তু মুসলিমরা জান্নাত চায় |
২] আল্লাকে পাবার জন্য সুফিরা মুরাকাবা করে কিন্তু জান্নাত পাবার জন্য মুসলিমরা জিহাদ করে |
৩] সুফিদের নামাজ জিকির আর মুসলিমদের নামাজ জিকির ইত্যাদি আলাদা |
৪] মুসলিমরা কোরানের মুকাত্তায়াতের মানে জানে না কিন্তু সুফিরা জানে | এছাড়াও সুফিরা কোরানের অনেক বিষয় জানে যা মুসলিমরা জানে না |
৫] সুফিরা চিত্কার করে নামাজ ও জিকির করে না , নিশব্দে করে কিন্তু মুসলিমরা ওই দুটি কাজ চিত্কার করে করে |
৬] সুফিরা গুরু (পীর/মুর্শেদ) পূজা করে কিন্তু মুসলিমরা তা করে না |
৭] সুফিরা মাজারে থাকে কিন্তু মুসলিমরা মসজিদে যায় |
৮] সুফিদের আল্লা সর্বব্যাপী কিন্তু মুসলিমদের আল্লা শুধুই জান্নাতে থাকে |
৯] মুসলিমরা শুধুই শরীয়তে থাকে কিন্তু সুফিরা তরিকত, হকিকত ও মারেফত অব্দি যায় |
এই কতকগুলি পার্থক্য বললাম | আসলে আরো অনেক পার্থক্য আছে |

সুফিবাদ কি

সুফিবাদ হলো সুফিদের পথ ও মত | বিশ্বের নানা স্থানে সুফিদের মত ও পথের মধ্যে বহু পার্থক্য আছে | যেমন রুমির অনুসারীরা গোল গোল ঘোরে | এইটাই পারস্যের বেশিরভাগ সুফিরা করে | কোনো কোনো সুফি আবার নাচ গানের মাধ্যমে আল্লার উপাসনা করে | বাংলা তথা ভারতের সুফিরা মুরাকাবা করে যা প্রকৃত অর্থে ধ্যানসাধনা | কেউ আবার কবর পুজো করে | কোনো কোনো সুফি আবার প্রাণায়াম করে | এইভাবে সুফিরা বিভিন্ন মত ও পথের মধ্যে বিভক্ত |

আমি এখানে বিস্তারিত ভাবে বাংলার সুফিদের সাধনার কথা বলব | বাংলার সুফিদের মতে মুরাকাবাই হলো সুফিমতের মেরুদন্ড | অর্থাত ঐটাই হলো সুফিবাদের মূল কথা | মুরাকাবা বা আল্লার ধ্যানের মধ্য দিয়ে আল্লার সাথে সুফিরা অভিন্নতা প্রাপ্ত হয় | সুফিদের মূল লক্ষ্য মুরাকাবার মধ্য দিয়ে লা-মোকামে পৌছুনো | এই লা মোকাম হলো “নেই-রাজ্য” | এই মোকামে পৌছুনোর পথে বাধা হলো বিভিন্ন জাগতিক কামনা বাসনা | এই সব কামনা বাসনা থেকে মুক্ত হলে তবেই লা-মোকামে পৌছে আত্মদর্শন হয় |

মুরাকাবা শুরু করতে হয় গুরু পীর বা মুর্শেদের কথা স্বরণ করে | মুরাকাবার চারটি মোকাম হলো : নাসুত , মলকুত , জাব্রুত এবং লাহুত | এই মকামগুলি পর পর হাসিল করতে হয় |এই মুরাকাবায় গুরুর ছবি মুরিদের সাথে মোকাম-এ-জাব্রুত অব্দি থাকে | লা-মোকামে আসতেই মুরিদ দেখে গুরু নাই শুধু সে আছে | এই পর্যায়ে এসেই মুরিদ উপলব্ধি করে আনা আল হক (আমিই সত্য) | কথিত আছে গুরু নানক একবার জাব্রুত মোকাম পর্যন্ত পৌছে আর উঠতে পারছেন না | তখন তার গুরু বাহলোল দানা বললেন যে নানকের মনে একটি ছোট্ট বাসনা এখনো রয়ে গেছে আর তা হলো জগতে প্রসিদ্ধি পাবার বাসনা | তাই তিনি লাহুত মোকামে যেতে পারছেন না | ওই বাসনাটুকু বিসর্জন দিলেই তিনি লা মোকামে পৌছুতে পারবেন | লা-মোকামে পৌছুলে আত্মার নানাবিধ শক্তি অর্জন হয় |
আল্লামা ইকবাল এই লা মোকামে পৌছুনো আত্মাকেই সম্ভবত খুদী বলেছেন | কারণ ওনার খুদির যে শক্তি দেখা গেছে (খুদিকে শক্তিশালী করলে খোদা বান্দার ইচ্ছামত চলবেন ) সেই রকম শক্তি সাধারণ আত্মায় সম্ভব নয় | শুধুমাত্র লা-মোকাম হাসিল করা আত্মায় তা সম্ভব বলেই আমার মনে হয় |

যাই হোক এই মুরাকাবায় কতকগুলি মন্ত্র পড়তে হয় | সেইগুলিকে সম্ভবত অজিফা বলে | অজিফাগুলিকে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়তে হয় | তাহলেই নানারকম অলৌকিক দর্শন হয় |

তবে এই মুরাকাবা করতে গেলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে | সম্পূর্ণ অহিংস থাকতে হবে |কোনো রকম হিংসাত্মক কাজ এবং অন্যায় অনাচার করা চলবে না | অনেকটা যোগসাধনার মত ব্যবস্থা |

সুফিদের আল্লার পরিচয়

সুফিদের আল্লা সর্বব্যাপী নিরঞ্জন | রুমি তো নিজের শামস-ই-তাবৃজিতে আল্লাকে বহুবার সর্বব্যাপী বলেছেন | আল্লা মানব দেহেই অবস্থান করেন | তাই মানব দেহকে ভালো করে না জানলে আল্লাকে পাওয়া যায় না | সুফিদের এই চার মোকাম : নাসুত, মালকুত, জাবরুত আর লাহুত মানবদেহেই আছে | এই মকামগুলো অতিক্রম করলে এই মানবদেহেই আল্লার দর্শন হয় |
মুসলিমদের আল্লা অবশ্য মানবদেহে থাকেন না | উনি জান্নাতে থাকেন আর অবশ্যই সর্বব্যাপী নন |

সুফিমতে রুহ আর নফস

সুফিরা বলেন নফস হলো জীবাত্মা | অর্থাত অজ্ঞ আত্মা | এই নফসই মৃত্যু আস্বাদন করে | রুহ হলো পরমাত্মা | এই রুহ কখনো মরে না | ইনি জন্মমৃত্যুহীন , অমর ও চিরন্তন |মুসলিমরা অনেক সময় রুহের সত্কার বা শোকসভা জাতীয় কাজ করেন | সুফিমতে এটা সম্পূর্ণ ভুল কারণ রুহ কখনো মরে না |

সুফিমতে নরক ও নরকের আগুন

সুফিরা মনে করেন নরক ও স্বর্গ মানুষের মনেই আছে | নরকের আগুন আসলে মানুষের মনকে জ্বালায় | মুসলিমরা অবশ্য মনে করেন যে নরক বলে পৃথক জায়গা আছে আর সেখানকার আগুন মানুষের চামড়া জ্বালায় |

সুফিদের উদ্দেশ্য

সুফিদের উদ্দেশ্য আল্লার সাথে একীভূত হওয়া | সুফিরা সাধনার শেষে আল্লার সাথে এক হয়ে গিয়ে বলেন আমিই সত্য, আমিই মূল্যবান | তাঁরা নিজের আত্মাকে জেনে বলেন আমার আত্মার শক্তির সামনে আল্লাও কিছু নন | তিনি বান্দার কথামত চলেন | সর্ববাসনা বিসর্জন দিয়ে আল্লার সাথে এক হয়ে যাওয়াই সুফিদের উদ্দেশ্য | সুফিদের প্রেমিকা হলেন স্বয়ং আল্লা |
অন্যদিকে মুসলিমরা শুধুই জান্নাত নিয়ে ব্যস্ত |

আল্লা ভালো না জান্নাত ভালো

এতে বিভিন্ন লোক বিভিন্ন রায় দেবেন | সুফিরা বলবেন আল্লা ভালো আর মুসলিমরা বলবেন জান্নাত ভালো |দু পক্ষ কেউই যুক্তি দেবেন না , শুধু নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী চলবেন | আমাকে যদি কেউ আল্লা আর জান্নাতের মধ্য থেকে কোনো একটিকে বেছে নিতে বলেন , তাহলে আমি আল্লাকেই বেছে নেব | কারণ আল্লা জান্নাত সৃষ্টি করেছেন | উনি চাইলে কোটি কোটি জান্নাত সৃষ্টি করতে পারেন বা বর্তমান জান্নাতটি ধ্বংস করতে পারেন | জান্নাত ওনার হুকুম মেনে চলে উনি জান্নাতের প্রভু | তাই আমার মনে হয় আল্লা জান্নাতের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান | তাই আমি বেশি মূল্যবান বস্তুটিকেই বেছে নিলাম | যারা ওনার মধ্যে লীন হয়েছেন শুধু তারাই জানেন তারা কি পেয়েছেন | আমি শুধুই অনুমান করলাম |

সুফি সাহিত্য

সুফিদের সাহিত্য অতি সমৃদ্ধ | বেশিরভাগই পারসিক | ফার্সি ভাষায় লেখা | রুমির শামস-ই-তাব্রিজি, ফিহি মা ফিহি আর মসনভী শরিফ ফার্সি ভাষায় লেখা সুফি সাহিত্যের অনবদ্য গ্রন্থ | ফরিদুদ্দিন আত্তারের লেখা পাখিদের বার্তালাপ ফার্সি ভাষার গ্রন্থ |ইবন তুফাইলের লেখা হেয়ে ইবন য়াকধান ফার্সি ভাষায় রচিত আর একটি গ্রন্থ | মনসুর আল হিল্লাজের লেখা তাওয়াসিন আরবি ভাষার সুফি গ্রন্থ | আমাক-ই-খায়াল বলে আরেকটি সুফি গ্রন্থ পাওয়া যায় তুর্কি ভাষায় লেখা | এছাড়া ওমর খৈয়াম, হাফিজ ও আমির খুসরু ইত্যাদিরাও ফার্সি ভাষায় রুবাই, মসনভী ও অন্যান্য সাহিত্য সৃষ্টি করেন |

ভারতের সুফি সাহিত্যের কথা এবার বলি | বাংলার কবিরা প্রধানত ফারসি ও হিন্দি ভাষায় রচিত সুফিসাহিত্যের গ্রন্থসমূহ বাংলায় অনুবাদ করেন। সেসব গ্রন্থের মধ্যে শাহ মোহাম্মদ সগীরের ইউসুফ-জুলেখা, দৌলত উজির বাহরাম খাঁনের লায়লী-মজনু, কাজী দৌলতের সতীময়না-লোরচন্দ্রানী, আলাওলের পদ্মাবতী, নওয়াজিস খানের গুলে বকাওলী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মধ্যযুগে বাংলা ভাষায় সুফিতত্ত্ব বিষয়ে দুধরণের কাব্য রচিত হয়েছে শাস্ত্রকাব্য ও পদাবলি। শাস্ত্রকাব্যগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য: শেখ জাহিদের আদ্য পরিচয় (১৪৯৮), সৈয়দ সুলতানের জ্ঞানপ্রদীপ ও জ্ঞানচৌতিশা (১৬ শতক), যোগকলন্দর (১৬ শতক), শেখ চাঁদের হরগৌরী-সম্বাদ ও তালিবনামা (১৭ শতক), আবদুল হাকিমের চারি-মাকাম-ভেদ (১৭ শতক), হাজী মহম্মদের সুরতনামা (১৭ শতক), মীর মহম্মদ শফির নূরনামা (১৭ শতক), শেখ মনসুরের সির্নামা (১৮ শতক) এবং আলী রজার আগম ও জ্ঞানসাগর (১৮ শতক)। এ গ্রন্থসমূহে প্রধানত সুফি সাধনপ্রক্রিয়াই বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া সৃষ্টিতত্ত্ব, যোগতত্ত্ব, ধর্ম ও নীতিবিষয়ক উপদেশেরও বর্ণনা আছে। শেখ জাহিদের আদ্য পরিচয়ের শুরুতে আছে সৃষ্টিতত্ত্ব। সৃষ্টির আদিতে সবকিছু ছিল শূন্য; শূন্য থেকে স্রষ্টা, স্রষ্টার অঙ্গ থেকে বিশ্বের সৃষ্টি ইত্যাদির বর্ণনা আছে। এছাড়া দেহতত্ত্ব, জন্ম-মৃত্যুর রহস্য, সুফিভাব মিশ্রিত যোগতত্ত্ব ইত্যাদিরও বর্ণনা আছে।

সুফিদের সালাত

সুফিদের কাছে সালাতের অর্থ হলো দেহের মধ্যে মনের গতি পর্যবেক্ষণ | দেহের মধ্যে মন কিভাবে কেমন ব্যবহার করে , সেটা জানাই সুফিদের সালাত | চিস্তি সাহেব তার কোরান দর্শনে এই কথাই বলেছিলেন | সুফিরা দেহের মধ্যে ভ্রমন করার কথা বলে |

সুফিদের কোরান

সুফিদের কোরান মুসলিমদের চেয়ে আলাদা | এর ব্যাখ্যাও আলাদা | মুসলিমরা কোরানের বহু আয়াত, বিশেষ করে মুকাত্তায়াত যুক্ত আয়াতগুলির মানে জানে না | তারা সেগুলির ব্যাখ্যা আল্লার উপর ছেড়ে দেয় | কিন্তু সুফিরা ঐসব আয়াতের মানে জানে | এছাড়া মুসলিমদের চলতি কোরানে অনেক সুরা নেই যা সুফিরা জানে |

রুমির ঘূর্ণন ও তার তাত্পর্য্য

রুমির ঘূর্ণন পদ্ধতি সারা বিশ্বে সুফিবাদের প্রতিক হয়ে দাড়িয়েছে | কিন্তু এই দরবেশী ঘুর্ণনের একটা মানে আছে | দরবেশের টুপিটা হলো কবরের ওপরের ফলক, বস্ত্রটা হলো কবর , দরবেশ হলেন আত্মা | মৃত্যুর পরে আত্মা কবরের মধ্য থেকে এইভাবে ঘুরতে ঘুরতে উর্ধ্বে গমন করেন ও আল্লার সাথে মিলিত হন | এই ঘুর্ণনের এইটাই অর্থ |

সুফিরা এখন .......

বর্তমানের হিংসাপূর্ণ যুগে সুফিদের উপরেও বহু আক্রমন নেমে আসছে | মাজার পুড়িয়ে দেয়া, খুন হত্যা, কাফের উপাধি লাগিয়ে হত্যা ইত্যাদির কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম | সুফিবাদের উপরে কোনো ফার্সি কিতাবগুলি বাংলা ভাষায় অনুবাদ হচ্ছে না | উপরন্তু শুনছি সৌদি ওহাবীরা নাকি ফার্সি ভাষাটাকেই তুলে দিছে তাদের পয়সায় চলা মাদ্রাসা থেকে | চালটা ভালই | ভাষাটাই যখন কেউ জানবে না তখন বইগুলিও কেউই পড়তে পারবেনা | সুফিবাদ একেবারে হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে | সুফিবাদের এখন খুবই বিপদ |

সুফিদের জ্ঞান ও হিন্দুদের জ্ঞান

অনেক সময় সুফিদের জ্ঞানের সাথে হিন্দুদের যোগশাস্ত্রের মিল দেখিয়ে অনেক হিন্দু গর্বিতভাবে বলে সুফিরা হিন্দুদের কাছ থেকে নাকি ঐসব শিখেছে | এটা আসলে অন্যজাতিকে নিচু করে নিজেদের উঁচু হবার ঘৃণ্য প্রয়াস মাত্র |এটা একধরনের জাতিগর্ব যার কোনো অস্তিত্ব নেই | আমার মনে হয় জ্ঞান মানুষমাত্রেই সবার কাছেই সমান ভাবে আসতে পারে, এর জন্য হিন্দু-মুসলমান বলে কোনো কথা নেই | এছাড়া আল্লা কাকে কি জ্ঞান দেবেন সেটা কি মানুষ কখনো জানতে পারে ? উনি যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই এই জ্ঞান দেবেন |

উপসংহার

অনেক কিছুই বলার ছিল | যতটা পারলাম বললাম | স্থান ও সময়ের অভাবে সবটা বলতে পারলাম না | আসলে সুফিবাদ বিষয়টা এত বড় আর গভীর যে এই নিয়ে বলতে গেলে কথা শেষ হয় না | তবু ব্লগ পোস্টের একটা শেষ আছে | তাই এখানেই শেষ করতে হলো | যা যা দরকারী মনে হলো বললাম | কোনো ভুল হলে সংশোধন করে দেবেন | খোদা হাফেজ, পাঠকবর্গ |

তথ্যসূত্র

বাংলা উইকিপেডিয়া
বাবা ঈমান আল সুরেশ্বরির গ্রন্থসমূহ
রুমি আদি সুফি সাধকদের গ্রন্থসমূহ

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২২

মেমননীয় বলেছেন: সুফিবাদ সম্পর্কে আপনার লেখাটা অনেক ইনফরমেটিব!

আমি যতদূর জানি কারবালা হত্যাকান্ডের পর ক্ষমতা চলে যায় একদল রক্তপিপাশু শাসকদের হাতে। যারা ইসলাম মানতো কিন্তু ইসলামের শিক্ষা মানতো না। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যখন ইরাক, সিরিয়া ও পারস্যের শাসক তখন দেশের সকল পুরুষদের যুদ্ধে অংশ গ্রহন করা বাধ্যতা মুলক ছিল। কোন ধরনের অজুহাত গৃহিত হত না। ব্যাপারটা এ রকম ছিল, হয় যুদ্ধ করে মারা যাও অথবা আমার হাতে।

তখন কিছু লোক ছিল যাদের যুদ্ধ করার মত সাহস বা শক্তি ছিল না, কিন্তু তারা মুসলমান। সেই সব লোক লোকালয় হতে পালিয়ে গিয়ে পাহাড়ে বা জন্গলে অবস্থান করত ও আল্লাহর ইবাদত করত।
যদিও ইসলামে বৈরাগ্য নিষিদ্ধ ছিল।

সেখান হতেই সুফিবাদের সৃষ্টি। ভুল হলে সংশোধন করবেন।

ধন্যবাদ!

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৬

সত্যান্বেসী বলেছেন: ধন্যবাদ | এইসব নরপশুরাই ইসলামের মুখ কালিমালিপ্ত করেছিল | এখন তাদের অনুগামীরা করছে |

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩২

আহলান বলেছেন: বহুত কিছু জানলুম ... !

৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ধন্যবাদ ভনিতা না করে সুফিদের রূপ বোঝানোর জন্য। মুসলমানদের উচিত সুফিবাদীদের সাথে কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক না করা। তাদের সাথে শুধু অন্য ধর্মাবলম্বীদের মত সম্পর্ক রাখা। কারণ, এদের সাথে আত্মীয়তা থাকলে প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.