নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ....

সত্যান্বেসী

কলকাতা হাই কোর্টের উকিল

সত্যান্বেসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামী অর্থনীতি বনাম পুঁজিবাদ

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬

এই লেখায় আমি দুই অর্থনীতির তুলনা করে দেখাবো যে দুটো অর্থনীতি কোথায় নিয়ে যায় | এটাও দেখাবো যে কোনটা ভালো | প্রথমে ইসলামী অর্থনীতি :

১] এই অর্থনীতি সম্পদের সুষ্ঠু বন্টনের ওপর গুরুত্ব দেয় |

২] সব মৌলিক চাহিদা মেটানো হয় (অন্য-বস্ত্র-বাসস্থান)

৩] সম্পদ প্রবাহিত করা ( সার্কুলেশন অফ ওয়েলথ ) একটি আবশ্যিক কর্তব্য |

৪] বিনা সুদে অর্থ ঋণ দেয়া |

৫] শেয়ার বাজার এই ব্যবস্থায় নিষিদ্ধ |

৬] একচেটিয়া কারবার নিষিদ্ধ | প্রতিযোগিতায় উত্সাহ দেয়া হয় |

৭] আর্থিক বাজারে শর্ট সেলিং বা ফরওয়ার্ড সেলিং নিষিদ্ধ |

৮] এই ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত সম্পত্তি, রাষ্ট্রের সম্পত্তি আর জনগনের সম্পত্তি এই তিন ভাগে সম্পদের ভাগ আছে |

৯] অর্থ স্বর্ণমান ( গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ) দিয়ে সমর্থিত |

এবার পুঁজিবাদী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যগুলি দেখি :

১] মুক্ত বাজার আর সরকারী নিয়ন্ত্রণ শুধু ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষার কাজে লাগে |

২] চাহিদা অনন্ত আর উত্পাদনে গুরুত্ব দেয়া হয় |

৩] এক ব্যক্তির আয়ে অপরের কোনো অধিকার নেই |

৪] ব্যক্তিগত শিল্পপ্রতিভা দেশ ও মানুষের কাজে লাগে |

এবার আসুন দুই অর্থনীতির সত্যাসত্য দেখা যাক | প্রথমত :ইসলামী অর্থনীতি বলে সম্পদের বন্টন ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দেয় | সে বলে যে সম্পদের প্রবাহ জারি রাখা অবশ্য কর্তব্য | এই কথা যদি সত্যি হয় তাহলে মুসলিম দেশগুলিতে ধনী গরিব ভেদাভেদ কম থাকার কথা | কিন্তু একটু দেখা যাক | সৌদি আরব , ইরাক, ইরান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ সর্বত্র ধনী গরিবের ভেদটা প্রকট | আরব দেশগুলিতে যাদের তেল আছে তারা বিশাল ধনী আর যাদের তেল নেই তারা মরা গরিব | এককথায় মুষ্টিমেয় লোক ধনী আর বিশাল সংখ্যক লোক গরিব | পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও একই গল্প | তাহলে এইসব দেশগুলিতে কি ইসলামী অর্থনীতি চলে না ? অর্থনীতির সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন হয় না তার অকাট্য প্রমান ধনী গরিবের সংখ্যা এবং জীবনযাত্রার মানের পার্থক্য |

দ্বিতীয়ত : বিনা সুদে অর্থ ঋণ দেয়া | এই ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের জন্য খুব লাভজনক কারণ কোনো সুদ দিতে হবে না , যতটা তুলবে ততটাই দিবে | কিন্তু এর একটা উল্টো পিঠও আছে | তা হলো আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় | এই আমানতকারীদের টাকা থেকেই তো শিল্পপতিদের ঋণ দেয়া হয় | এরা কেউ সুদ পায় না | ফলে যেটুকু জমা সেটুকুই তোলা | পয়সা বাড়িতে জমানো যা, ব্যাঙ্কে রাখা তাই | এখন এই আমানতকারীরা কারা ? গরিব মানুষ , যারা সংখ্যায় বেশি | শিল্পপতিরা ধনী ও সংখ্যায় কম | সুতরাং ইসলামিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সার কথা হলো : গরিবের পেটে লাথি মেরে ধনীদের পকেট ভর | এরই জন্য গরিবরা আরো গরিব হয় আর ধনীরা আরো ধনী হয় | উপরিউক্ত ধনী গরিবের ভেদের পিছনে এটা একটা বড় কারণ |

তৃতীয়ত : শেয়ার বাজার নিষিদ্ধ করা | অর্থাৎ ফাটকাবাজি নিষিদ্ধ | কিন্তু বড় বড় হোটেলে ক্যাসিনো বা জুয়া খেলা নিষিদ্ধ হয়েছে কি ? আমি শুনি দুবাই , আবু ঢাবি ইত্যাদি জায়গার বড় বড় হোটেলে নাকি ক্যাসিনো থাকে | নিচের লিঙ্কটা দেখুন : দুবাইয়ের ক্যাসিনো

অর্থাৎ শেয়ার-এ ফাটকা করবেন না কিন্তু দেদার জুয়া খেলবেন | এই ভাবের ঘরে চুরি করার নাম হলো ইসলামী অর্থনীতি | অন্যদিকে শেয়ার বাজার না থাকার কারণে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিগুলি শেয়ার দিয়ে টাকা তুলতে পারে না | ফলে ব্যবসার বিকাশ হয় না | অর্থনীতি মজবুত হয় না |

চতুর্থত : এই অর্থনীতি একচেটিয়া কারবার নিষিদ্ধ করে প্রতিযোগিতার উপর গুরুত্ব দেয় | সমস্ত আমিরশাহী দেশগুলিতে তৈলখনির একচেটিয়া কারবারের বহু নিদর্শন পাওয়া যায় | যার তৈল খনি আছে সেই বাদশা | সৌদি রাজপরিবার সবচেয়ে বেশি তৈল খনির মালিক | এটা কি একচেটিয়া কারবার নয় ? প্রতিযোগিতা করতে গেলে যেসব শর্ত প্রয়োজন , যা কিনা পুঁজিবাদে আছে , তার কোনটাই ইসলামী দুনিয়ায় নেই | তাহলে কেমন প্রতিযোগিতা ?

পঞ্চমত : আর্থিক বাজারে শর্ট সেলিং বা ফরওয়ার্ড কন্ট্রাক্ট নেই | কারণ যা তোমার নেই তা তুমি বেচবে না | অথচ এই ব্যবস্থায় ঝুঁকি এড়িয়ে লাভ করা যেত | মানি মার্কেট বিশেষজ্ঞরাই একথা বলেন |

ষষ্ঠত : এই অর্থনীতির একটা ভালো দিক আছে , তাহলো এই যে এর কারেন্সী গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড দিয়ে সমর্থিত | এর মানে হলো কোনদিন যদি অর্থনীতি দেউলে হয়ে যায় লোকে একেবারে ভিখিরি হবে না | তবে যার কাছে কারেন্সি বেশি আছে অর্থনীতি দেউলে হলেও সে রাজা, আর যার কাছে কম আছে সে ফকির |

সপ্তমত : এই ব্যবস্থায় নাকি অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের চাহিদা মেটানো হয় | অর্থাৎ কেউ ভুখা থাকবে না , কেউ গৃহহীন থাকবে না বা কেউ উলঙ্গ থাকবে না | অনেকটা পাশ্চাত্য দেশের মত শোনাচ্ছে , কতদুর সত্যি তা আল্লাই জানেন |

সব মিলিয়ে ইসলামী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো মানুষের নির্লোভ চরিত্র যা আজকের যুগে মুসলিম দুনিয়ায় বিরল | আমি কাফেরদের কথা ছেড়ে দিলাম | ইসলামী অর্থনীতি ব্যবহারিক দিক থেকে দেখতে গেলে , একটা সম্পূর্ণ ইউটোপিয়ান অর্থনীতি | এইরকম খোদ আরব জাহানেই হয় না , অন্যে পরে কি কথা |

পুঁজিবাদ একমাত্র বাস্তবসম্মত অর্থনীতি | কারণ এটা মানুষের লোভী চরিত্রকে স্বীকার করে ও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করে | এই কারণেই পুঁজিবাদ আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরেছে | কমিউনিস্ট চীন নামেই কমিউনিস্ট আসলে সে পুঁজিবাদী | আরব দুনিয়াও পুঁজিবাদী কিন্তু খাতায় কলমে সে ইসলামিক অর্থনীতি | সুতরাং পুঁজিবাদই একমাত্র পথ |





















তথ্যসূত্র :

ইসলামী অর্থনীতি

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৯

বিদেশ পাগলা বলেছেন: সব মিলিয়ে ইসলামী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো মানুষের নির্লোভ চরিত্র যা আজকের যুগে মুসলিম দুনিয়ায় বিরল
কথাটি মনে বড় দোলা দিয়েছে ।
সত্য কথা হচ্ছে বিশ্বে ইসলাম রাষ্ট্র বলতে যা বুঝায় সেটা কোথাও অবশিষ্ট নেই । শুধু বায়বীয় আংশিক মুসলিম রাষ্ট্র । ধন্যবাদ

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩১

সত্যান্বেসী বলেছেন: একটা জিনিস জানতে চাই | ইসলামিক স্টেট , আল কায়দা এরা কি সেই ইসলাম রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনতে পারবে , পারবে মানুষের চরিত্রকে নির্লোভ করতে ?

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২২

বিদেশ পাগলা বলেছেন: সত্যিকারে ইসলাম জাদুর কাঠি পরশ মণি কিন্তু ফেক বানোয়াট (পিজারভেটিভ,ফ্লেভার ফরমালিন ) কৃত্রিম ভাবে তৈরী মার্কা ইসলাম অন্য ধর্ম দুরের কথা মুষমানদের কোন উপকারে আসবেনা । চরিত্র কে কিভাবে নির্লোভ করবে । ঐ মুরতাদ মুনাফেক ইসলামের মুখোশধারীরা যা ইহুদী-নাসারাদের তৈরী ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.