![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রোজা লুক্সেমবুর্গ কিছু কারণ দেখিয়েছেন যার দ্বারা এটা স্পষ্ট যে রাশিয়ার সাম্যবাদী সরকারের পতনের পিছনে কিছু আভ্যন্তরীণ ত্রুটি ছিল | লেনিন মনে করতেন যে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ যাবতীয় সুবিধাবাদের উত্স | অতএব নতুন সাম্যবাদী শাসনে কেন্দ্রীকরণ কঠোরভাবে করা প্রয়োজন | কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির হাতে সব ক্ষমতা থাকবে আর রাজ্য আর জেলাস্তরের কমিটিগুলির হাতে কোনো ক্ষমতা থাকবে না | তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির কথা মেনে চলতে হবে | তাহলে সুবিধাবাদ আর থাকবে না | এটা ছিল লেনিনের ধারণা |
এখন এই ধরনের কেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থা গঠন করার জন্য দুটো শর্ত দরকার | শর্ত দুটো হলো :
১] শ্রমিকেরা নিজেদের শ্রেণীস্বার্থ ভালো করে বুঝবে | শ্রমিকরা নিজেরাই রাজনৈতিক অ্যাকশন নিতে পারবে নিজে থেকে |
২] কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত শ্রমিকদেরকে জানানোর জন্য পার্টির ছাপাখানা ও সংবাদপত্র ইত্যাদি থাকতে হবে |
রাশিয়ায় এই দুইটি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে নি | প্রথম শর্তটা সবেমাত্র ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে | এখন এই ব্যবস্থাকে স্পিড আপ করাটাই সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত | কিন্তু লেনিন অতটা অপেক্ষা করতে নারাজ | তিনি মনে করেন শর্তদুটি রাশিয়ায় ভালো মত আছে | এইখানেই লেনিনের সাথে রোজার বিরোধ | পরিনাম সবারই জানা |
এখন প্রশ্ন হলো এই যে লেনিনের এই ভুলের পরিনাম হলো সাম্যবাদের ধ্বংস, তা থেকে ভারতের বামপন্থীরা কতটা কি শিখেছে ? আমার মনে হয় কিছুই তেমন শিখে নাই তারা, কারণ আজও ভারতে বামপন্থী দল কেন্দ্রীকৃত | পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্তের বাইরে এক পাও চলতে পারে না রাজ্যের দলগুলি | কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রকাশ ও বৃন্দা কারাত, সীতারাম ইয়েচুরি ইত্যাদির নির্দেশ ভিন্ন রাজ্যের বুদ্ধ-সুর্যকান্তরা এক পাও চলতে পারে না | বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থা আলাদা | সুতরাং স্ট্রাটেজি আলাদা হওয়া উচিত | কিন্তু একরোখা মাথামোটা প্রকাশ কারাতের জন্য তা হওয়ার উপায় নেই | এই কারাতই জোর করে সিপিএমকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে দেয় নি ২০১০-এ | পরিনাম এই বঙ্গে বামদুর্গের অবলুপ্তি | এখনো যদি এই নীতি নেয়া হয় তাহলে পরিনাম হবে মানবতার পরাজয় |
আমার মতে বিকেন্দ্রীকরণ অতি জরুরি কারণ এতে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবার ক্ষমতা পাবে রাজ্য শাখাগুলি | এর ফলে অবস্থা গুরুতর হবার আগেই ব্যবস্থা নিতে পারবে রাজ্য দলগুলি | একা কেন্দ্রের পক্ষে সব রাজ্যের পরিস্থিতি বুঝা সম্ভব নয় |
এছাড়া কেন্দ্রীকরণের যে শর্ত গুলির কথা রোজা লুক্সেমবুর্গ বলেছেন সেই গুলি কি ভারতে আছে ? উত্তর না, নেই | ভারতের শ্রমিকরা শ্রেণীস্বার্থ বোঝেন না | তারা শুধু নিজেরটুকু বোঝেন আর পার্টির দাদারা যা বোঝান সেটুকুই বুঝেন | দরকার পড়লে তারা নিজে থেকে রাজনৈতিক অ্যাকশন করতে পারবেন না | সুতরাং এইসব শ্রমিকরা কেন্দ্রীয় কমিটির হাতের পুতুল মাত্র | এমতাবস্থায় কেন্দ্রীকরণ সবচেয়ে বাজে পদক্ষেপ |
দ্বিতীয় শর্তটা অবশ্য আছে কিন্তু তা আপামর শ্রমিকের মাথায় ঢোকে না | পার্টির একটা কাগজ আছে এবং তাতে অনেক খবর থাকে, এটা সব শ্রমিকরাই জানে কিন্তু সেই খবর কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা শুধু বুদ্ধিজীবী ছাড়া কোনো শ্রমিক সদস্য জানে না | এখানেও বৌদ্ধিক ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ রয়েছে বুদ্ধিজীবিদের হাতে | সুতরাং শ্রমিকদের কোনো উন্নতি নাই |
সুতরাং সেই বৃথা কেন্দ্রীকরণে যেমন রাশিয়ার শ্রমিকদের কোনো উন্নতি হয় নি তেমনি ভারতীয় শ্রমিকদেরও উন্নতি হবে না |
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩০
সত্যান্বেসী বলেছেন: তা বলতে পারেন | উদাহরণ তো আপনার সামনেই আছে | ভারতের শ্রমিকেরা এখনো দলিত নিষ্পেষিত আর রাশিয়ার শ্রমিকদের তো খুঁজেই পাওয়া যায় না |
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩০
আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: সাম্যবাদ, বুঝিয়ে বলুন।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩১
সত্যান্বেসী বলেছেন: বুঝতে চেষ্টা করুন বুঝতে পারবেন |
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৫
রোমেল রহমান বলেছেন: বিকেন্দ্রী করন ছাড়া বাংলার শ্রমজীবী কর্মজীবী পেশাজীবী মানুষের মুক্তি মিলবে না, অধিকার আদায় হবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
" সুতরাং সেই বৃথা কেন্দ্রীকরণে যেমন রাশিয়ার শ্রমিকদের কোনো উন্নতি হয় নি তেমনি ভারতীয় শ্রমিকদেরও উন্নতি হবে না | "
আপনি নতুন Das kapital লিখে ফেলেছেন।