নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
– মাঝি, কোরআন-হাদিস কখনো খুলে দেখেছিলে?
– মশায়, ল্যাংটাকালে মক্তবে আমপারা পর্যন্ত পড়েছিলাম। এখন মোটে চারটি সূরা মুখস্থ আছে।
– সর্বনাশ, তোমার জীবন তো দু’আনাই মিছে। আচ্ছা, ফিকহ শাস্ত্রের কোন বই পড়েছ? বিভিন্ন মতবাদসমূহের বই যেমন- বেদ, উপনিষদ, ত্রিপিটক, ইঞ্জিল, তোরাহ ইত্যাদি পড়েছ?
– আজ্ঞে না। ঘরে শুধু নামায শিক্ষার একটি পুস্তক আছে মনে হয়।
– বলো কি! আচ্ছা, বর্তমানের আলেম-ওলামা, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ কিংবা স্কলারদের ওয়াজ কিংবা লেকচার শুনো?
– মশায়, এত সময় আছে। দাঁড় টানতে টানতেই তো জীবনডা শ্যাষ হয়া গেল।
– হায় হায়, তোমার জীবন তো চারআনাই মিছে। আচ্ছা, নামায-কালাম পড়ো? রোযা রাখ?
– আমাগো আবার নামায? পানিতে ভাইসা ভাইসা পুরা দিনডা কাইট্টা যায়। শুক্কুরবারেরডা কোন রকমে পড়ি।
– হায় আল্লাহ, এক ওয়াক্ত নামায ক্বাযা করলে কত বছর দোযখে জ্বলতে হবে জানো? সেখানে তুমি নামাযই পড়ো না। তোমার জীবন তো দেখছি আটআনাই মিছে।
– মশায়, তয় রাইতের বেলা আল্লার কাছে রোদন করি যদি তিনি দয়া করেন।
– সারাদিন তুমি শুধু এই লুঙ্গি আর গেঞ্জিই পরে থাক? সুন্নতি পোশাক নেই তোমার? এই যে আমি পরে আছি জোব্বা-পায়জামা-টুপি। তোমার তো দাড়িও নেই।
– গরীব মানুষ, এত জামা কোথায় পামু? পরনের লুঙ্গিডাই আইজ তিন বছর হতে চলল।
– বুঝছি, তোমার জীবন বারোআনাই মিছে। শুনেছি, তোমরা নাকি কোন বিপদে পড়লে এখানকার কোন এক ওলীর নাম জপতে থাকো? খবরদার, এগুলো স্পষ্ট শিরক। বিপদে পড়লে সবসময় আল্লাহকে ডাকবে। বুঝেছ?
– মৌলবি মশায়, আকাশের গতিক কিন্তু ভাল ঠেকতেছেনা। তুফান আইতে পারে।
– তুফান! কি বলছো তুমি? তরী ডুবে গেলে আমিও তো ডুবে যাবো …
– কেন মশায়, সাঁতার জানেন না?
– জীবনটা কাটিয়েছি জ্ঞান সাধনায়, সাঁতার তো শিখলাম না। এখন কী হবে?
– মরতে হবে। এখন তো দেখছি আপনার জীবনটা ষোলআনাই মিছে!
বাতাসের এক ঝটকায় মাঝির নৌকোটি হঠাৎ মাঝ নদীতে ডুবে গেল।
– মাঝি, ডুবে গেলাম যে, আমাকে বাঁচাও …
– শিরক করছেন কেন? আল্লাহকে ডাকেন।
– মাঝি, তলিয়ে যাচ্ছি …
– আয়াতুল কুরসি পড়েন, বেদ-ত্রিপিটকের মন্ত্র পড়েন, লষ্ট ইসলামিক হিস্ট্রি পড়েন …
পুনশ্চঃ জীবনভর শুধু পড়েই গেলেন, এই যেমন- ইয়া বড় বড় তাফসীর, সিহাহ সিত্তার হাদিস, বিভিন্ন পন্ডিতদের ইয়া মোটা মোটা বই, রাকাতের পর রাকাত নামায, রোযার পর রোযা, শুনলেন আর দেখলেন বড় বড় পীর, মৌলবি আর স্কলারদের ওয়াজ আর লেকচার, হালাল-হারামের তোয়াক্কা না করে দু’হাতে টাকা কামিয়ে মক্কায় গিয়ে ধাক্কা খেয়ে এলেন, লোক দেখানো যাকাত দিলেন, মস্ত বড় দুনিয়ায় ছোওয়াব কামায় জান্নাত যায়। কিন্তু একবারের তরেও মহান ”আল্লাহ” বলে যে একটি সত্তা আছে তাঁকে খুঁজলেন না, তাঁকে নিয়ে একটা মিনিট চিন্তাও করলেন না। অপেক্ষা করুন, একদিন এক ঝটকায় আপনার দেহনৌকোটিও কবরে ডুবে যাবে। ওখানে জিজ্ঞেস করা হবে না নামায কয় ওয়াক্ত পড়েছেন, জিজ্ঞেস করা হবে না কতগুলো বই পড়েছেন, জিজ্ঞেস করা হবে না হজ্ব কিংবা যাকাত নিয়েও। শুধু তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। জীবনভর ’আল্লাহ’ ’আল্লাহ’ করা কোন লোককে শেষকালে যখন জিজ্ঞেস করা হবে ”তোমার ’রব’ কে” তখন কেমন লাগবে? কেন প্রথমেই ’রব’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে বলতে পারেন?
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৪
বিদ্রোহী সিপাহী বলেছেন: ভয়ানক প্রশ্ন। আত্মার মুক্তি ছাড়া নিজ রবকে কেউ চিনতে পারে না।
৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: এ জীবন তুচ্ছ খনিকের মায়া,আসল জীবন শুরু হবে মৃত্যুর পর।।হুর গেলমন আর সুরা।কোন মাঝি মাল্লা নাই নদী পারাপারের কোন ঝামেলা নাই ,কেবল ফালাও তক্তা আর মারো পেরেক।
৪| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: আরমান আরজু ,
প্রশ্নটা বড়ই চিন্তার বিষয় !