নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছায়া নয়, আলো ...

আরমান আরজু

সত্য ও অসীমের পথে

আরমান আরজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফরহাদ মজহার এবং কোরবানি প্রসঙ্গ

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:১৩

শ্রদ্ধেয় লেখক ফরহাদ মজহারের অনেক পরিচয়। বর্তমানে তিনি কোরআন’র ব্যাখ্যার গ্রন্থসমূহ (তাফসীর) বিষয়ে আপত্তি তুলে দাবি করছেন যে কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবেই পড়তে হবে। কোরআন এবং কোরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ এক জিনিস নয়। তাঁর এ দাবির সাথে আমরা একমত। আরো ভাল লাগল এটা জেনে যে তিনি ফকির-দরবেশ, পীর-আউলিয়া এঁদের ভালবাসেন। এ উপমহাদেশে ইসলামের ভিত তো তাঁরাই (ফকির-দরবেশ, পীর-আউলিয়া) বপন করেছেন, আরবী জানাওয়ালারা নয়। সম্প্রতি তিনি কোরবানি প্রসঙ্গে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন তাঁর সম্পাদিত ’চিন্তা’ পত্রিকায় এবং তাঁর ফেসবুক পাতায়। সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে কোরআন প্রসঙ্গে কিছু কথা বলে নেয়া প্রয়োজন।
কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবে পড়তে গেলে সাধারণ মানুষরা আটকে যাবে। কারণ অনেকেরই আরবী ভাষাজ্ঞান নেই। আবার আরবী ভাষাজ্ঞান থাকলেও লাভ নেই কারণ কোরআন কোন গল্প কিংবা উপন্যাস গ্রন্থ নয় যে পড়ে ফেলে রাখলাম। কোরআন একটি দর্শন। কোরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থসমূহের (তাফসীর) সীমাবদ্ধতা আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে ভাষাজ্ঞান কিংবা ব্যাকরণ কিংবা আরো অন্যান্য শাস্ত্রের জ্ঞান থাকলে শুধু হবে না, বোধির উদ্ভাস থাকাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবে পড়তে গেলে শুধু পড়াই হবে আর তর্ক হবে কিন্তু আমাদের জানতে হবে কোরআন কি শুধু পাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি এ পবিত্র গ্রন্থটির যে বিস্তৃত দর্শন সেগুলো জানা কিংবা মানার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রাতদিন মুখস্থ করা কিংবা তর্ক-বিতর্ক করা কোন জ্ঞানীর কাজ নয় কারণ তাতে রোগের কোন চিকিৎসা হবে না। ব্যবস্থাপত্রে কী লেখা আছে সে অনুযায়ী ওষুধ সেবন কিংবা জীবন গড়নটাই জরুরী। কোরআন মহাজ্ঞানীর নিকট হতে মানবজাতির প্রতি একটি জীবন দর্শন। দেহতত্ত্ব আর অধ্যাত্মতত্ত্বের মিশেলে এ রহস্যময় গ্রন্থ। এখানে কোন গল্প নেই। ঘটনার রূপকে আমরা যা দেখি সেগুলোকে যদি গল্প বলে মনে করি তবে তা আমাদেরই জ্ঞানের দৈন্য। এখানে নেই কোন কঠিন-তরল-বায়বীয় পৃথিবী কিংবা সূর্য নামক নক্ষত্র কিংবা চন্দ্র নামক উপগ্রহের বিবরণ। রূপকের চাদর উল্টালেই দেখা যাবে সেসবের আড়ালে কারা জ্বলজ্বল করছে। ঠিক একই ভাবে এ গ্রন্থে যেসব চরিত্রগুলো আছে তারা কি আসলেই রক্ত-মাংসের মানুষ নাকি অন্য কোন অর্থ প্রকাশ করছে সেটাও ভাবতে হবে। এতসব বিষয় নিয়ে এবার আপনি কোরআন নিয়ে বসেন (যারা শুধু ছো-ও-য়া-বে-র উদ্দেশ্যে পাঠ করেন তারা ব্যতীত), দেখবেন আপনি আর এগোতে পারছেন না। একটা আয়াত তো দূরের কথা, একটা শব্দ নিয়েও অনেক চিন্তার অবকাশ আছে এখানে। তাই আগের মহামানবেরা তাঁদের শিষ্যদের পুরো কোরআনের পরিবর্তে শুধু একটি আয়াত দিতেন আমল তথা চিন্তুা করার জন্য। মানবের এক জীবনে পুরো কোরআন আয়ত্ত করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এ এক বিশাল মহাসাগর। এ মহাসাগর সেঁচে একটি একটি বিন্দু এনে মহামানবেরা সাধারণ মানুষদের দিতেন অনুষ্ঠান স্বরূপ যেন তারা এ অনুষ্ঠান সমূহ পালন করার মধ্যে দিয়ে রহস্যের দিকে ধাবিত হয়। তাই নামায, রোযা, হজ্ব, কোরবানি এগুলো সব একেকটি অনুষ্ঠানের নমুনা। কিন্তু হতভাগা মানুষেরা এ অনুষ্ঠানগুলো নিয়েই পড়ে রইল। কারণ অনুষ্ঠান পালন খুব সোজা কিন্তু এগুলোর আড়ালে যে দর্শন তার সন্ধান কাজটি অনেক কষ্টের। আর দর্শন না জানলে মানবের মুক্তি নেই। কোত্থেকে মুক্তি নেই সে বিষয়ে আর যাচ্ছি না।
”ইসলামের কোরবানিঃ 'মনের পশু' তত্ত্ব ও খ্রিস্টধর্ম” নামক লেখাটিতে জনাব ফরহাদ মজহার বাইবেলের প্রসঙ্গ এনেছেন। কোরআনে আছে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে মহান আল্লাহ ইঞ্জিল দিয়েছিলেন, বাইবেল নয়। আর তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিল গ্রন্থগুলোকে কোরআন সত্যায়ন করে। এও বলে যে ইহুদী, সাবেঈ ও নাসারা তথা খ্রিস্টানরা যদি এখনো গ্রন্থগুলোর আমল করে সৎকাজ করে তবে তারা মুক্তি পাবে। কোরআনে বলা হয়নি পূর্ববর্তী মতবাদ তথা ধর্মগুলো বাতিল। বরঞ্চ বলা হয়েছে সেগুলো অসম্পূর্ণ ছিল। কোরআন হচ্ছে তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিল সহ আরো যত সত্য গ্রন্থ আছে সবগুলোরই ধারাবাহিকতা। গ্রিক ভাষাটি পৃথিবীর অনেক প্রাচীন একটি ভাষা। কোরআনে বর্ণিত ’ইব্রাহীম’ শব্দটি এসেছে গ্রিক ’আব্রাহাম’ থেকে। আব্রাহাম শব্দটিকে যদি আরো রূপান্তর করি আমরা পাই আব্রাম বা ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণ অর্থ যিনি ব্রহ্মকে জানেন আর ব্রহ্ম অর্থ হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা। তাই তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিলের কথা কোরআনে থাকবে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এখন প্রশ্ন হল মূল তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিল গ্রন্থগুলোর অস্তিত্ব পৃথিবীতে আছে কিনা। মহান আল্লাহ সকল জ্ঞানের আধার। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সহ সব জ্ঞান তাঁর কাছে আছে। তিনি ইঞ্জিলে এক রকম বলবেন আবার পাঁচশত বছর পর কোরআনে আরেক রকম বলবেন, এটা কখনো হতে পারে না। সব সত্য গ্রন্থের মূল সুর একই। হয়ত উপস্থাপন ভিন্ন। তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিল বলে যে গ্রন্থগুলো আমরা এখন দেখছি আসলেই কি সেগুলো ঐ সময়কার অবতীর্ণগুলো? সৎ ও নির্মোহ গবেষকগণের নিকট প্রশ্নটি রাখলাম। প্রশ্ন হল- তোরাহ, যবুর ও ইঞ্জিলের সত্যতার ব্যাপারে যদি সংশয় থাকে তবে কেন জনাব ফরহাদ সেসব গ্রন্থসমূহ থেকে উদ্ধৃতি নিচ্ছেন? আর যদি সংশয় না থাকে তবে কেন সেসব গ্রন্থসমূহের মুখোমুখি কোরআনকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন?
এবার আসি উনার অনুবাদে। তিনি সূরা আস-সাফফাতের ১০২ ক্রমিকের আয়াতটি অনুবাদ করেছেন এভাবে-
”অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিত! আপনি যে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাই করুন। ইনশাল্লাহ, আপনি আমাকে সবুরকারী পাবেন।”
কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবে পড়তে গেলে উল্লেখিত অনুবাদে ’ইব্রাহীম’ শব্দটি থাকার কথা নয় কারণ আয়াতে ’ইব্রাহীম’ শব্দটি নেই। ইনশাআল্লাহ শব্দটির কি বাংলা নেই? বাংলা হচ্ছে ’যদি আল্লাহর ইচ্ছা থাকে’। সমস্যা হল জনাব ফরহাদ মজহার আয়াতের দর্শন তথা গভীরে না গিয়ে গেলেন ’আদেশ’ আর ’স্বপ্ন’র বির্তকে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কোনটি চাই- দর্শন না বিতর্ক। বিতর্ক অন্য কিছু নিয়ে হতে পারে, ঐশী গ্রন্থ নিয়ে নয়।
ইব্রাহীম আল্লাহর একজন নবী। কোরআনে আছে, হযরত মুসা এবং ঈসার মতো হযরত ইব্রাহীমকেও সহীফা দেয়া হয়েছে যদিও নামোল্লেখ নেই। উল্লেখিত আয়াতটিতে (৩৭:১০২) ’মানাম’ অর্থ হচ্ছে বিছানা/ধ্যান। মানুষের আপন দেহটাই তার বিছানা, এ বিছানায় সে ঘুমায়, ধ্যান করে। মানুষ দু’ভাবে রহস্যলোকে যেতে পারে, এক. হচ্ছে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে আর দ্বিতীয়টি ধ্যানের মাধ্যমে। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন সবাই দেখে কিন্তু ধ্যানে সবাই দেখে না। ধ্যানের মাধ্যমে দেখা এত সহজও না। আর ধ্যান করতে গুরু আবশ্যিক। আমি ওদিকে যাচ্ছি না। স্বপ্নে দেখে সাধারণ মানুষরা। নবীগণ মহামানব। তাঁরা দেখেন ধ্যানে। কোরআনে কোথাও নবীদের স্বপ্ন দেখার কথা নেই। স্বপ্নের আরবী আরেকটি। মহান আল্লাহ দয়া না করলে কেউই ধ্যানে পূর্ণতা লাভ করতে পারে না। নবী-রসূলগণ আল্লাহর মনোনীত। তাঁদের ধ্যান অর্থই হচ্ছে আল্লাহর ইচ্ছা। কারণ নবীগণ আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে একটা কথাও বলেন না।
”তিনি (নবী) প্রবৃত্তি (নিজ ইচ্ছামত) হতে কথা বলেন না” (সূরা নজম, আয়াত: ৩)।
জবেহ করা মানে উৎসর্গ করা, বিশুদ্ধ বা পবিত্র করা। প্রত্যেক পিতাই চান তাঁর সন্তান বিশিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছুক। নবীগণও চান তাঁদের শিষ্যরা বিশিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছুক। তবে এখানে ধ্যান সাধনা বলে একটি ব্যাপার আছে যা কষ্টসাধ্য। আর সাধনায় প্রয়োজন ধৈর্য। সেজন্য আয়াতটিতে পুত্র বলছে যে তাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাওয়া যাবে। প্রচলিত আছে পুত্রের পরিবর্তে নাকি মেষ/দুম্বা/ভেড়া কোরবানি হয়েছিল! অথচ কোরআনে এ বিষয়ে কোন ইঙ্গিত পর্যন্ত নেই।
উপরোক্ত বিষয়টিতে আমাদের জন্য শিক্ষা বা দর্শন কী? মহামানবদের কর্ম আমাদের জন্য ইবাদত। ছাত্রদের কোন বিষয় বুঝানোর জন্য শিক্ষক আগে নিজে কাজটি করেন। নবী ইব্রাহীম তাঁর পুত্র তথা শিষ্যকে পবিত্র ভাবধারার ধারাবাহিকতার স্বার্থে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করেছেন।
উৎসর্গ কাকে করা হয়েছিল- ইসমাঈল না ইসহাক, আদেশ না স্বপ্ন, এসব ফালতু বিতর্ক তারাই করতে পারে যাদের বোধির উন্মেষ এখনো ঘটেনি।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:২৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
উনি বর্তমানে আফগান তালেবান বন্দনায় মেতে আছেন।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:২৬

সাসুম বলেছেন: আপনার পোস্ট টি বুঝতে কস্ট হয়েছে। তবে যা বুঝতে পেরেছি কস্ট করে হলেও-

১. ফরহাদ মজহার ভুল ব্যাখ্যা করেছেন।
২. আল্লাহর নবী রাসুল রা ভুল করতে পারেন না।
৩. আমাদের কোরান না পড়ে এর ব্যাখ্যা অনুধাবন করা উচিত নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে ( এটা ভাল জিনিষ , ইন্টারেস্টীং )
৪. হাদিস ও তাফসির গুলোর সততা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
এবং
৫. তাওরাত, জাবুর, ইঞ্জিল ও বাইবেল আল্লার প্রেরিত হলেও সেগুলা অসুম্পূর্ন যার কারনে শেষ গ্রন্থ কোরান নাজিল হয়েছিল।


এই যায়গায় একটা প্রশ্ন মনে উঠে- আপনি এবং অন্য সবাই দাবি করেন- তাওরাত, জাবুর, ইঞ্জিল ও বাইবেল সহ বাকি সব গ্রন্থ বিকৃত হয়েছে। কিন্তু আবার কোরান কে অবিকৃত বলে দাবি করেন।

আমার কোশ্চেন- বেশ কিছু প্রেরিত গ্রন্থ বিকৃত হল অন্যদিকে শেষ গ্রন্থ অবিকৃত রইল কিভাবে? শেষ গ্রন্থের বিকৃতি হয় নি এটার পক্ষে নিরেট প্রমান কই? কিংবা, আগের গ্রন্থ গুলো ও যে বিকৃত সেটার প্রমান ই বা কি!

ধর্ম কে যে যার মত করে, যার যার ন্যারেটিভ এ এক্সপ্লেইন করে। এটাই ধর্মের সবচেয়ে বড় ভারসাটাইলিটি

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫৪

রানার ব্লগ বলেছেন: ফরহাদ মাজাহার সেই না যে নিজে কালী পূজা করেন, লিভ টুগেদার করেন ।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৪৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সুরা আস সাফফাতের ১০২ নং আয়াতে স্বপ্নের কথা বলা আছে আবার আল্লাহর আদেশের কথাও বলা আছে। অর্থাৎ এটা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহর আদেশ। কোরানেই পরিষ্কার করা আছে।

ঐ সুরার ১০১ নং আয়াতে বলা আছে যে ‘সুতরাং আমি তাকে এক ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করলাম’। অর্থাৎ যখন হজরত ইব্রাহিমের (আ) কোন সন্তান ছিল না তখন আল্লাহ তাকে বলেন যে তোমাকে একজন ধৈর্যশীল পুত্র দেয়া হবে। ইসমাইল (আ) যে হজরত ইব্রাহিমের (আ) প্রথম পুত্র এই ব্যাপারে ইহুদি, খ্রিস্টান বা মুসলমানদের মধ্যে কোন মত বিরোধ নাই। এবার যদি আমরা একই সুরার ১০২ নং আয়াত দেখি তাহলে দেখা যাবে যে আয়াতে পুত্র বলছে যে ‘আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন (ধৈর্যশীল) ‘।

অতঃপর যখন পিতার সাথে (তার কাজে সাহায্য) করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বলল: পুত্র আমার! আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমি তোমাকে জবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি (ভেবে) দেখ। সে বলল: পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন।” (৩৭:১০২)

১০১ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ একজন ধৈর্যশীল পুত্র দিবেন। ১০২ আয়াতে পুত্র বলছে যে আপনি আমাকে সবরকারি (ধৈর্যশীল) পাবেন। অতএব বোঝা যাচ্ছে যে প্রথম সন্তানকে কোরবানির চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রথম সন্তান যে হজরত ইসমাইল এই ব্যাপারে সকল কিতাবি ধর্মগুলি একমত। অতএব প্রমাণিত হোল যে হজরত ইসমাইলকে (আ) কোরবানির চেষ্টা করা হয়েছিল।

তাই সারাংশ হোল যে আল্লাহ স্বপ্নের মাধ্যমে আদেশ দিয়েছিলেন এবং হজরত ইসমাইলকে (আ)কোরবানির চেষ্টা করা হয়েছিল।

আমার মনে হয় কোরআনে কোথাও বলা হয় নাই যে আগের ধর্মগুলি অসম্পূর্ণ ছিল। বরং ঐ ধর্মগুলি ঐ উম্মতের জন্য ছিল। আর রসুলের যুগের তাওরাত, ইঞ্জিল যা কিতাবিদের কাছে ছিল সেগুলিকে পুরোহিতরা আংশিক বিকৃত করেছিল। রসুলের (সা) সমকালিন সময়ে ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্ম পালনকারীদেরকে ঈমানদার বলা যাবে না ( রসুলের (সা) নবুয়তের আগে একেশ্বরবাদী কিছু লোক ছিলেন, তারা ব্যতীত। যেমন হজরত খাদিজার (রা) এক কাজিন। তবে রসুলের (সা) আগমনের পরে ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া কোন বিকল্প নাই, যদি তার কাছে রসুলের (সা) সংবাদ পৌঁছে থাকে) তারা সঠিক পথেও নাই। প্রমাণ স্বরূপ নীচের আয়াতগুলি দিলাম যেখানে ইহুদি খ্রিস্টানদেরকে আল্লাহ কাফের বলেছেন, তিরস্কার করেছেন এবং তারা যে তাদের কিতাবকে বিকৃত করেছে সে কথাও বলা হয়েছে। ইসলাম ব্যতীত কোন ধর্মকে মেনে নেয়া হবে না, এটাও বলেছেন।

আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ৮৫ )

"(হে মুসলমানগণ!) তোমরা কি আশা কর যে, তারা (ইহুদীরা) তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? তাদের মধ্যে একদল ছিল, যারা আল্লাহর বাণী শ্রবণ করত; এরপর বুঝে-শুনে তা বিকৃত করত এবং তারা তা অবগত ছিল।"(২:৭৫)

'আর ইয়াহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র, এবং নাসারারা বলে, মসীহ আল্লাহর পুত্র এটা তাদের মুখের কথা। আগে যারা কুফরী করেছিল তারা তাদের মত কথা বলে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। কোন দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে!' - সুরা আত তাওবা, আয়াত ৩০। তাদের এই দাবি কোরআনের বিপরীত।

কাজেই দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে অতঃপর সামান্য মূল্য পাওয়ার জন্য বলে, “এটা আল্লাহর কাছ থেকে। অতএব, তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য তাদের ধ্বংস এবং যা তারা উপার্জন করেছে তার জন্য তাদের ধ্বংস। ( সুরা বাকারা, আয়াত ৭৯)

আর নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে একদল আছে যারা কিতাবকে জিহবা দ্বারা বিকৃত করে যাতে তোমরা সেটাকে আল্লাহর কিতাবের অংশ মনে কর; অথচ সেটা কিতাবের অংশ নয়। আর তারা বলে, সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে; অথচ সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা জেনে-বুঝে আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে। ( সুরা আল ইমরান, আয়াত ৭৮)

আল্লাহতালা ইহুদিদের দুষ্কর্ম সম্পর্কে কোরআনে বলেন -

"ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক মূল অর্থ থেকে তাদের কথার মোড় ঘুরিয়ে নেয় এবং বলে আমরা শুনেছি, কিন্তু অমান্য করছি ৷ তারা মহানবীর উদ্দেশ্যে বেয়াদবী করে আরো বলে, শোন, না শোনার মত। মুখ বাঁকিয়ে ধর্মের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তারা বলে "রায়িনা" বা আমাদের রাখাল। অথচ তারা যদি বলতো যে, আমরা শুনেছি ও মান্য করেছি এবং যদি বলতো শোন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য কর তবে তা তাদের জন্য ভালো ও সংগত হতো। কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন, তাদের কুফরীর জন্য। তাই তাদের অতি অল্প সংখ্যকই ঈমান আনবে।" (সুরা আন নিয়া , আয়াত ৪৬)

আল্লাহ উপরের আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলেছেন ইহুদিদের উদ্দেশ্যে যে আল্লাহ তাদের প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন। তাই ইহুদি ধর্ম যদি ঠিক থাকতো তাহলে আল্লাহ কখনও ইহুদিদের অভিশাপ দিতেন না।

আগের আয়াতগুলি ও এই মন্তব্যে দেয়া আয়াতগুলি পড়ার পর আর কোন সন্দেহ থাকার কথা না যে আল্লাহ ইহুদি ও নাসারাদের ধর্মকে কিভাবে বাতিল করে দিয়েছেন। আরও বলেছেন যে ইহুদিদের অতি অল্প সংখ্যকই ইমান আনবে। তারা যদি ইমানদার হতো তাহলে আল্লাহ তাদের ইমান আনার কথা বলতেন না। আমাদের রসুল তার মদিনা জীবনের পুরো সময় ইহুদি, কাফের আর নাসারেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন ও সন্ধি করেছেন। তারা সঠিক পথে থাকলে তার দরকার পড়তো না। তাই কোরআন কখনই ইহুদি বা খ্রিস্টান ধর্মকে সঠিক বলে নাই।

হে রাসূল! আপনাকে যেন তারা চিন্তিত না করে যারা কুফরীর দিকে দ্রুত এগিয়ে যায়---যারা মুখে বলে, ‘ঈমান এনেছি’ অথচ তাদের অন্তর ঈমান আনেনি এবং যারা ইয়াহুদী তারা মিথ্যা শুনতে অধিক তৎপর, আপনার কাছে আসে নি এমন এক ভিন্ন দলের পক্ষে যারা কান পেতে থাকে। শব্দগুলো যথাযথ সুবিন্যস্ত থাকার পরও তারা সেগুলোর অর্থ বিকৃত করে। তারা বলে, এরূপ বিধান দিলে গ্রহণ করো এবং সেরূপ না দিলে বর্জন করো। আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই। এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয়কে আল্লাহ বিশুদ্ধ করতে চান না; তাদের জন্য আছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা, আর তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতে মহাশাস্তি। ( সুরা মায়িদা, আয়াত ৪১)

অতএব, তারা যে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল, তা ছিল তাদেরই অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য এবং অন্যায়ভাবে রাসূলগণকে হত্যার কারণে এবং তাদের এই উক্তির জন্য যে, তারা বলেছিল, আমাদের হৃদয় আচ্ছন্ন। অবশ্য তা নয় বরং কুফরীর কারণে স্বয়ং আল্লাহ তাদের অন্তরের ওপর মোহর এঁটে দিয়েছেন। ফলে অতি অল্পসংখ্যক ছাড়া এদের বেশির ভাগই ঈমান আনে না।" ( সুরা আন নিসা, আয়াত -১৫৫) এই আয়াত ইহুদিদের উদ্দেশ্যে নাজিল হয়েছে।

আর ইয়াহুদী ও নাসারারা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ করেন। বলুন নিশ্চয় আল্লাহর হেদায়াতই প্রকৃত হেদায়াত। আর যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরও, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার কোন অভিভাবক থাকবে না এবং থাকবে না কোন সাহায্যকারীও। ( সুরা বাকারা, আয়াত ১২০)

কোরআনের অনেক আয়াতে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের অনেক দাবিকে আল্লাহ মিথ্যা বলে পরিষ্কারভাবে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। যেমন খ্রিস্টানরা ইসাকে (আ ) আল্লাহর পুত্র বলে। কোরআনে এই কথাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বইগুলি যদি সঠিক থাকতো তাহলে কোরআনে এইভাবে মিথ্যাগুলিকে সংশোধন করে দেয়া হতো না।

সুতরাং তাদের জন্য দুর্ভোগ (ওয়াইল দোযখ), যারা নিজ হাতে গ্রন্থ রচনা করে এবং অল্প মূল্য পাবার জন্য বলে, ‘এটি আল্লাহর নিকট হতে এসেছে।’ তাদের হাত যা রচনা করেছে, তার জন্য তাদের শাস্তি এবং যা তারা উপার্জন করেছে তার জন্যও তাদের শাস্তি (রয়েছে)। (সুরা বাকারা, আয়াত ৭৯ ) এই আয়াত ইহুদিদের উদ্দেশ্যে। ইহুদি পণ্ডিতরা অর্থের লোভে বিভিন্ন যুগে তাওরাতে পরিবর্তন করত।

‘হে কিতাবীরা, তোমরা কোন ভিত্তির উপর নেই, যতক্ষণ না তোমরা তাওরাত, ইনজীল ও তোমাদের নিকট তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা কায়েম কর। আর তোমার নিকট তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বৃদ্ধি করবে। সুতরাং তুমি কাফির কওমের উপর হতাশ হয়ো না। ( সুরা মায়িদা, আয়াত ৬৮)

কিতাবধারী বলতে খ্রিস্টান ও ইহুদিদের বুঝায়। কোরআনকে না মানার জন্য বলা হয়েছে যে এই কারণে তাদের কুফরি বৃদ্ধি পাবে। কুফরি করার জন্য বলা হয়েছে যে ' সুতরাং তুমি কাফির কওমের উপর হতাশ হইয়ো না'।

হে রাসূল, তোমাকে যেন তারা চিন্তিত না করে, যারা কুফরে দ্রুত ছুটছে- তাদের থেকে, যারা তাদের মুখে বলে ‘ঈমান এনেছি’ কিন্তু তাদের অন্তর ঈমান আনেনি। আর যারা ইয়াহূদী তারা মিথ্যা অধিক শ্রবণকারী, অন্যান্য কওমের প্রতি, যারা তোমার নিকট আসেনি তাদের পক্ষে তারা কান পেতে থাকে। তারা শব্দগুলোকে যথাযথ সুবিন্যস্ত থাকার পরও আপন স্থান থেকে বিকৃত করে। তারা বলে, ‘যদি তোমাদেরকে এটি প্রদান করা হয়, তবে গ্রহণ কর। আর যদি তা তোমাদেরকে প্রদান না করা হয়, তাহলে বর্জন কর’; আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান, তুমি তার পক্ষে আল্লাহর বিরুদ্ধে কিছুরই ক্ষমতা রাখ না। এরাই হচ্ছে তারা, যাদের অন্তরসমূহকে আল্লাহ পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহা আযাব। (সুরা মায়িদা, আয়াত ৪১)

উপরে ইহুদিদের কথা বলা হয়েছে যে ' তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহা আযাব'।

"ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক মূল অর্থ থেকে তাদের কথার মোড় ঘুরিয়ে নেয় এবং বলে আমরা শুনেছি, কিন্তু অমান্য করছি ৷ তারা মহানবীর উদ্দেশ্যে বেয়াদবী করে আরো বলে, শোন, না শোনার মত। মুখ বাঁকিয়ে ধর্মের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তারা বলে "রায়িনা" বা আমাদের রাখাল। অথচ তারা যদি বলতো যে, আমরা শুনেছি ও মান্য করেছি এবং যদি বলতো শোন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য কর তবে তা তাদের জন্য ভালো ও সংগত হতো। কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন, তাদের কুফরীর জন্য। তাই তাদের অতি অল্প সংখ্যকই ঈমান আনবে।" (সুরা আন নিয়া , আয়াত ৪৬)

ইহুদি আর খ্রিস্টান ধর্ম যদি ঠিক থাকতো তাহলে তারা আমাদের রসুলকে (সা) মেনে নিত। ইহুদিরা রসুলকে (সা) হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করেছে। কোরআনে ইহুদি আর নাসারাদের নিয়ে বহু আয়াত আছে। অনেক সহি হাদিস আছে যেখানে ইহুদিদের কু কর্মের অনেক বর্ণনা আছে। তাই ইহুদি আর খ্রিস্টানদের দাবিকৃৎ বইগুলির কোনটাই বিকৃতির হাত থেকে বাচে নাই। তারা সঠিক রাস্তায় থাকলে তারা রসুলকে (সা) মেনে নিত। আর রসুল এবং আল্লাহর কিতাব তখনই আল্লাহ পাঠান যখন কোন কওম নবি/ রসুলের পথে না থাকে।

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফারহাদ মাঝার একজন প্রতারক।
সব সুরাহ মানুষের তৈরি।

৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৫৭

অক্পটে বলেছেন: বাংলাদেশের ৯৫% মানুষ মুসলিম। ৯৮% কর্মকান্ড চলছে অনৈসলামিক ভাবে। তাহলে ধর্ম কি দিল আমাদের?
যদি কিছুই না দেয় তাহলে এই ধর্মদিয়া আমরা কি করিব।

৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১:৪২

কামাল১৮ বলেছেন: আনেক দিন আলোচনা করেছি এবং বেশ কয়েক দিন দাবা খেলেছি ।ভালো দাবা খেলেন।তখন তার আদর্শ ছিল ১৮০ ডিগ্রী উল্টো দিকে।

৮| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৫:৪৯

ঈশ্বরকণা বলেছেন: কেউ কেউ দেখি বলছেন ( কোশ্চেন করছেন আসলে ) "বেশ কিছু প্রেরিত গ্রন্থ বিকৃত হল অন্যদিকে শেষ গ্রন্থ অবিকৃত রইল কিভাবে? শেষ গ্রন্থের বিকৃতি হয় নি এটার পক্ষে নিরেট প্রমান কই? কিংবা, আগের গ্রন্থ গুলো ও যে বিকৃত সেটার প্রমান ই বা কি !"

কুরআনের আগের গ্রন্থগুলো বিকৃত সেটার প্রমান ই বা কি !!! এই কোশ্চেন অফ দ্যা গ্রেটেস্ট ব্লগ মাইন্ড শুনে এনসার দেব কি হাসতে হাসতে এমন কাশি এসে গেলো এখন করণাতে ধরলো কিনা সেই ভয় লাগছে । কেউ জেগে ঘুমালে তাকে জাগানো দায়তো হবেই ! ক্যাথলিক বাইবেলের প্রধান চারটা গসপেল লেখক হলেন Matthew, Mark, Luke, and John. বাইবেল বিশেষজ্ঞরা একমত যে মার্কের গসপেল ৬৬-৭০ সালের মধ্যে,ম্যাথিউ আর লুকের গসপেল ৮৫ থেকে ৯০ সালের মধ্যে আর জনের গসপেল ৯০-১১০ সালের মধ্যে লেখা ! অরিজিনালি এগুলো সবই গ্রিক ভাষায়, আরো সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় Koine Greek-এ লেখা। হজরত ঈসার (আঃ) ভাষা ছিল এরামিক ।তাকে গ্রিক ভাষায় লিখিত ঐশ্বরিক গ্রন্থ নিশ্চই দেয়া হয়নি নাকি সেটাই দেয়া হয়েছিল? এগুলোর কোনোটাই হজরত ঈসাকে দেয়া ইঞ্জিল না। বাইবেল নামে যা এখন আছে সেগুলোর বর্ণনাকারী অন্যরা হজরত ঈসা না । আর একই ঘটনার বর্ণনাতেও এই গস্পেলগুলোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে । সে জন্যই বলা হয় কুরআনের আগের ঐশ্বরিক গ্রন্থগুলো যা এখন দেখা যায় সেগুলো করাপ্টেড হয়েছে ।আর তাছাড়া এখন স্কলাররা যেই বাইবেল বেশি প্রেফার করেন সেই বাইবেলের টাইটেল হচ্ছে The New Revised Standard Version !!

সবচেয়ে পুরোনো, কর্বোনডেট করে যাকে বলা হচ্ছে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশো বছর আগের, যে কুরআনের অংশ পাওয়া গেছে সেখানে কুরআনের পাঁচটা সূরা আছে। সেই পাঁচটা সূরা আর এখন আমরা সেই সূরাগুলো যেভাবে পড়ি তা হুবুহু এক ! কুরআনের এই অংশবিশেষ আছে বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরিতে । তাছাড়া ব্রিটিশ মিউজিয়ামেও কুরআন শরীফের যেই কপিটা আছে সেটা প্রায় তেরোশো বছরেরও বেশি পুরোনো । কয়েক বছর আগে (সম্ভবত ২০০৭ সালে) ইয়েমেনের সানায় একটা প্রাচীন মসজিদ খননের সময় কুরআন শরীফের যেই কপিটা পাওয়া যায় ইউরোপিয়ান এক্সপার্টরা কার্বন্ডেট করে সেই কুরানশরীফের সময় নির্ধারণ করেছেন প্রায় চৌদ্দশো বছর।এখনকার কুরআন শরীফের সাথে কোনো পার্থক্য নেই কোনো সূরার। মুটামুটি প্রায় হাজার বছরের পুরোনো ছয়টা কুরআন শরীফের প্রায় পুরো অংশ বা উলেলখযোগ্য অংশ এখনো সংরক্ষিত আছে এশিয়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। যাদের সাথে এখন আমরা যে কুরআন শরীফ পড়ি তার কোনো পার্থক্য নেই লেখার স্টাইল ছাড়া (বিভিন্ন হরফে লেখা।মানে আমাদের দেশে যেমন নূরানি টাইপ ও আরো বিভিন্ন ধরণের হরফে লেখা কুরআন শরীফ দেখা যায় সে'রকম)। এ থেকে প্রমান করা গেলো ? কিছু নাকি এখনো সেই তিমিরেই রয়ে গেলেন ব্লগার জানা গেলে ভালো হতো ।

৯| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৬:৫১

সাসুম বলেছেন: যাক, প্রচুর ধর্ম বিজনেস ম্যান দের দেখা গেল পোস্টের কমেন্টে।

ধর্ম একটা চমৎকার বিজনেস। জেনোসাইড করা, সেক্স স্লেভ বানানো, ধরে ধরে জবাই করা, দাস দাসী লাগানো, মানবতা বিরোধী অপরাধ করা- ধর্মের আফিমে সব জায়েজ।

হাজার হাজার ধর্ম থাকলেও, দুনিয়ারে সব ধর্ম বিজনেস ম্যানের কাছে, তার ধর্ম সত্য আর সুন্দর। বাকি সব ধইঞ্চা।

কেউ গরুর মূতে অমরত্ব পায়, কেউ উটের মূত্রে সেফা পায়। বাইরের জোব্বা বা ধুতি ভিন্ন ভেতরে সবই ভন্ড।

১০| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:১৪

বিটপি বলেছেন: ছাগলটা লেদিয়ে ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছে। এটার পাছায় গদাম দিয়ে ব্লগ থেকে বের করে দেয়া হোক।

১১| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:০৫

বিদুৎ বলেছেন: বিটপি বলেছেন: ছাগলটা লেদিয়ে ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছে। এটার পাছায় গদাম দিয়ে ব্লগ থেকে বের করে দেয়া হোক।

ঠিক বলেছেন ভাই, সব জায়গাতেই উনার চুলকানি দেখছি। সব কমেন্টেই উনি ইসলামকে কটাক্ষ করেই যাচ্ছে। উনারেই আবার বলবে সবার মতামতকে রেস্পেক্ট করতে। হিপোক্রেসি

১২| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: আত্মবিশ্বাস আর আত্মমর্যাদাটুকু ধরে রাখতে পারলে জীবনে আর কিছু লাগে না।

১৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১:৩৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
অনান্য ধর্মগ্রন্থের মত কোরান লিখিত আকারে নাজেল হয় নি।
বিচ্ছিন্ন ভাবে সময়ে সময়ে বিভিন্ন স্থানে নাজেল হয়েছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে বিভিন্ন তরুন মোগস্তবিদ্যায় পারদর্শি কিছু যোদ্ধা সাহাবি তথা 'হাফেজ' এগুলো মনে রাখতো, এরা কেউ কমপ্লিট হাফেজ ছিলনা, খুব অল্প কিছু হাফেজ পুরোনো মাক্কি আয়াত মুগস্ত (ফেফজ) রাখতো, নামাজের জন্য। আর বেশীরভাগ হাফেজ যে আয়াতগুলো বিচারে বা যুদ্ধে বেশীকাজে লাগতো সেগুলাই মুগস্ত (ফেফজ) করতো
কারনটা স্পষ্ট। সবটা কোরান একত্রে নাজেল হয় নি। বহু বছর ব্যাপি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কারনে কোরানের আয়াতগুলো নাজেল হয়েছিল।
আর বিভিন্ন হাদিস ও ইতিহাস বলে হজরত মুহম্মাদ (স) জীবিতকালে সবটা কোরান লেখে নিজে ভেরিফাই করে যেতে পারেন নাই।
বিভিন্ন হাফেজদের মুখে মুখে থাকা আয়াতগুলো একত্র করে কোন আয়াতগুলো আগে পরে হবে সেটাও বলে যেতে পারেন নাই।
জিবিরাইলও আবার উদয় হয়ে সবটা কোরান রিপিট করে গায়েবি আওয়াজ করে ভেরিফাই করেন নি।

হজরত মুহম্মাদ (স) মৃত্যুর পর গোত্রবিবাদ গৃহযুদ্ধে ব্যাস্ত থাকায় খলিফা আবুবকর আয়াতগুলো একত্র করে লিখিত ভার্শান করার চেষ্টা করেন নি। বা সময় পান নি।
এরপর খলিফা ওমরের সময়কালের শেষদিকে শিক্ষিত লেখক যোগার করে আয়াতগুলো একত্র করে লিখিতকরার চেষ্টা করেও পারেন নি। কোন আয়াত আগেপরে হবে, আয়াতের বাক্য ভুল ইত্যাদি কারনে, হাফেজদের ভেতর মতবিরোধ দেখা দেয়ায় বা অজ্ঞাত কারনে লিখিতকরার চেষ্টা সফল হয় নি।

এরপর উচ্চশিক্ষিত হজরত ওসমান খলিফা হয়েই কোরান লিপিবদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
মসজিদের ভেতর বিশাল এক খাতা নিয়ে দিনের পর দিন আয়াতগুলো সংকোলিত করে যাচ্ছিলেন, আর নামাজ শেষে হাফেজদের সাথে মতবিনিময়।

বছর শেষে অর্ধেকের মত লেখার পর মসজিদের কিছু কুচক্রিদের বিরোধিতা শুরু হয়ে যায়।
অনেক বাকবিতন্ডার পর আবুবকর পুত্রের নেতৃত্বে একদল বিরোধী গোষ্ঠি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মসজিদে ঢুকে হজরত ওসমানকে লেখালেখি করতে বিরত থাকতে বলে, এরপর বিভিন্ন অভিযোগ করে হট্টগোলের ভেতর হজরত ওসমান কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার কোন বিচার হয়েছে বলে যা না যায় না।
এরপর আরবে আর কোরান লেখা সম্ভব হয় নি, শত শত বছর পর আজারবাইজান/তুর্কমেন এলাকায়, আফ্রিকায়, ও মিশরে ভিন্ন ভিন্ন সময়কালে কোরানকে লিখিত করা হয়েছিল। মিশরে সংকলিতটাই বর্তমানে চালু লিখিত কোরান।
এত পরে লেখা কোরান কোন আয়াত বাদ বা ভুলভাল যোগ হয়েছে কি না, পুরোনো হাফেজদের দ্বারা ভেরিফাই হয়েছে কি না, কিছুই যানা যায় না। কল্লা হারানোর ভয়ে কেউ জানতেও চায় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.