![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবী আজ তার বার্ধক্যে এসে পড়েছে, শৈশব পেড়িয়ে যৌবন ও সে হারিয়েছে, তাই বৃথা আনন্দ করো না, ক্ষণিকের সময় হাতে, নশ্বর এ পৃথিবী যেন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। সে মৃত্যু আসার আগে আজ তীর্থে ভ্রমণ করো, পবিত্র জলে হে পৃথিবী তুমি অবগাহন করো। ধুয়ে ফেলো তোমার গায়ের শত কালিমা, সাজিয়ে নাও বিদায়ের আগে আবার আঙিনা।
*সামিয়ার মন আজ খুব খারাপ। ওর বেস্ট ফ্রেন্ড হাসবেন্ড নিয়ে কাশ্মীর ঘুরতে গেছে এবং সেখান থেকে ফেসবুকে ছবি আপলোড করেছে। কিন্তু সামিয়ার হাসবেন্ড অঢেল টাকা পয়সা থাকার পরও ওকে সহজে কোথায় নিয়ে যাওয়ার সময় করতে পারে না। বড় পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সব দায়িত্ব সামিয়ার হাসবেন্ডকেই দেখতে হয়। সামিয়া তার ফ্রেন্ড এর হাসবেন্ড এর একটা দিক দেখেই নিজের হাসবেন্ডকে নিয়ে হতাশ হয়ে গেছে। অথচ সামিয়া এটা জানে না যে, তার ফ্রেন্ডের হাসবেন্ড এক দুশ্চরিত্র লোক। মাঝে মাঝে সে তার স্ত্রীকে নিয়ে দেশ বিদেশে ঘুরতে যায় আর স্ত্রীর অগোচরে অন্য মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে।
* সোহান এস এস সি, এইচ এস সি তে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া স্টুডেন্ট। সবার আশা সে অবশ্যই ঢাবিতে ভালো সাবজেক্টে চান্স পাবে। কিন্তু একটুর জন্য সোহান ঢাবিতে চান্স পেল না। ওর অন্য বন্ধুরাও চান্স পেয়েছে। এবার সোহান ভীষণ হতাশায় ভুগছে। রাতের অন্ধকারে সোহান বিছানায় শুয়ে একবার সিলিং ফ্যানের দিকে তাকায় আরেক বার মোবাইলের স্ক্রিনে মায়ের ছবির দিকে তাকায়।
* রেজার জীবনের সবচেয়ে বিভীষিকাময় সন্ধ্যা এটা। একটা উপযুক্ত চাকরি পায়নি বলে দীর্ঘ সাত বছরের প্রেমিকাকে তার পরিবার আজ অন্য কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ রেজার মনে পড়লো তার গ্রামের এক বড় ভাইয়ের কথা যার জীবনেও এরূপ ঘটনা ঘটেছিল। সহ্য করতে না পেরে সে আজ চরম পর্যায়ের মাদকাসক্ত। মাদকের জন্য প্রয়োজনে চুরি ছিনতাইও করে। এসব ভেবে রেজা আরো বেশি হতাশ হয়ে গেল।
* লাবনীর হাসবেন্ড একজন জুয়ারি। দুই সন্তান জন্মের পর লাবনী এটা জানতে পারে। ততদিনে অনেক জায়গা থেকে কর্জ নেয়া হয়ে গেছে। এই কর্জের টাকা শোধ করার জন্য লাবনীও চাকরি শুরু করে। ভালোমন্দ বাচ্চাদের মুখে না দিয়ে সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করতে থাকে। আবার সময় অসময়ে হাসবেন্ডের মারও খেতে হয়। ঋণ পরিশোধ প্রায় শেষ। গতানুগতিক ধারার কোন এক অজুহাতে তার হাসবেন্ড আবারও মারধর করে এবং সন্তানদের নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। লাবনীর আজ কষ্টে দমবন্ধ হয়ে আসছে। যার জন্য সে এতো কষ্ট করলো সেই তাকে এতো বড় আঘাত দিলো। হতাশায় ওর আজ বাঁচতে ইচ্ছে করছে না।
* রূপার গায়ের রং শ্যাম বর্ণের। সামাজিক দৃষ্টিতে রূপার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওর বন্ধু বান্ধব, কাজিন সবার বিয়ে বাচ্চা হয়ে গেছে। কিন্তু ও এখনও সিঙ্গেল। লোকজনের প্রশ্ন এড়ানোর জন্য রূপা সহজে কোথাও আসা যাওয়া করে না। আত্মীয় স্বজন পরিবারের লোকজনের কটু কথায় রূপার কাছে জীবনটা এখন বোঝা মনে হয়। এক বুক হতাশা নিয়ে ও আর বেঁচে থাকতে চায় না।
* জাহিদ মাস্টার্স পাশ করে বেশ কয়েক বছর হয়েছে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আজও সে অবিবাহিত। পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে করতে কখন যে এতো বয়স হয়ে গেছে সে টেরই পায়নি। বন্ধুদের সাথে আর সে এখন কোথাও ঘুরতে যায় না। কারণ সবাই পরিবার নিয়ে বের হয়। সকলের মাঝে জাহিদ নিজেকে খুব একা মনে করে। কোন মেয়ের সাথে যেহেতু কখনো কোন সম্পর্ক ছিলোনা তাই লোকজনের টিপ্পনীর ধরনটা অন্য রকমই বটে। এসব ভেবে জাহিদ আজ খুব হতাশ হয়ে গেছে।
* রাবেয়ার বাবা ভীষণ অসুস্থ। মেডিকেলে তার আর কোন চিকিৎসা নেই। লোকজন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না আর রাবেয়া কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা থাকার পরও তার বাবার জন্য কিছুই করতে পারছে না। নিজেকে ওর খুব অসহায় মনে হচ্ছে। বাবার দিকে তাকিয়ে রাবেয়া হতাশায় ভেঙে পড়ে।
* নাজমা প্রেম করে বিয়ে করে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তার আজ তিন সন্তান। হঠাৎ স্বামীর পরকীয়ার কথা শুনে নাজমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তার স্বামীর কাছে স্ত্রী সন্তান এখন বিশাল বোঝা মনে হয়। কিন্তু নাজমার স্বামীর বাড়ি ছাড়া আর কোন আশ্রয় নেই। হতাশায় একেকবার সে তার সন্তানদের নিয়ে বিষ খাওয়ার কথা চিন্তা করে।
আমাদের চারপাশে আজ হতাশা নামক রোগটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। সামিয়া, সোহান, রেজা, জাহিদ, লাবনী, রূপা, রাবেয়া, নাজমা এরা আমাদের আশেপাশেই ঘুরছে। তারা নিজেরাও জানে না যে তারা কত ভয়াবহ একটা রোগে আক্রান্ত। ঘুণ পোকার মতনই হতাশা তাদের জীবনকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে অথচ তারা উপলব্ধি করতে পারছে না। সময়মত নিরাময় করা না গেলে হতাশা নামক রোগটি মরণব্যাধি হয়ে যায়। যার অন্তিম ফলাফল মস্তিষ্ক বিকৃতি বা আত্মহত্যা, কখনও বা হত্যা। হতাশাগ্রস্ত রোগীর লক্ষণ সমূহ ঃ
* সবসময় একা থাকার প্রবণতা
* ক্ষুধামন্দা কিংবা অতিভোজন
* অনিদ্রা রাত্রি যাপন
* বিষন্ন গান শোনা
* অতিমাত্রায় ধূমপান করা
* অল্পতেই রেগে যাওয়া
* দিনের বেলা অন্ধকার করে শুয়ে থাকা
* মোবাইলে অতিমাত্রায় সময় কাটানো
* মলিন মুখ করে থাকা
* কাজকর্মে অনাগ্রহ
* জীবনটা দুর্বিষহ মনে হওয়া
* নিজের কষ্টটা সবার চেয়ে বেশি তীব্র মনে হওয়া
* আয়না দেখতে অনিহা বোধ
* সব কিছুতে বিরক্তি প্রকাশ
একজন মানুষের মাঝে সব লক্ষণ একসাথে দেখতে পাওয়া জরুরি নয়। একটা লক্ষনীয় বিষয় হলো যাদের মাঝে ধর্মীয় চিন্তা চেতনা কম তাদের মাঝে হতাশার মাত্রা খুব বেশি। ইসলামের আঙ্গিকে হতাশার কারণ, অবস্থা ও প্রতিকার তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে বলেছেন,
"যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন কর্মের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি মহা শক্তিধর, অতি ক্ষমাশীল।"(সুরা মুলক:২)
আল্লাহ মানুষকে কোন কোন বিষয়ে পরীক্ষা নিবেন তা কোরআনে সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন।
"তোমাদেরকে ভয় ও ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি (এসবের) কোনকিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর।(সুরা বাকারা:১৫৫)
উল্লেখ্য আয়াতটি নিয়ে একটু গভীর বিশ্লেষণ করা যাক। আয়াতের প্রথম শব্দ وَلَنَبْلُوَنَّكُمএখানে و এর অর্থ হচ্ছে এবং / আর, শব্দের শেষে كم শব্দটি ক্রিয়ার কর্ম হিসেবে যুক্ত করা আছে ،যার অর্থ তোমাদের সকলকে। আরلَنَبْلُوَنَّ হচ্ছে ক্রিয়া যার মূল হচ্ছে
بَلَا [ن] (بَلَاء) [بلي]
[বালা] পরীক্ষা করা, কষ্ট দেওয়া, বিপদে ফেলা।
ক্রিয়ার শুরুতে অতিরিক্ত ل ও শেষে অতিরিক্ত ن যুক্ত করার জন্য ক্রিয়াটিতে অতিমাত্রায় জোর দেয়া হয়েছে। এতে অর্থ দাঁড়ায়, আমি অবশ্যই সন্দেহাতীতভাবে তোমাদের সকলকে পরীক্ষা করবোই / বিপদে ফেলবোই / কষ্ট দিবোই। এবার পরীক্ষার বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করা যাক। প্রথমে যে বিষয়টা এসেছে তা হচ্ছে
(১) خَوْف
[খাওফ] ভয়, ভীতি, অস্থিরতা, আশঙ্কা, আতঙ্ক, অনিষ্টের সম্ভাবনায় মনে উদিত চিন্তা,
(২) جُو ع
[জূ'] ক্ষুধা, অনাহার, দুর্ভিক্ষ, শূন্যতাবোধ, আগ্রহ, কামনা, বাসনা, অবসর, অবকাশ, অবসাদ
(৩) نَقْص
[নাক্ছ] কমতি, ঘাটতি, হ্রাস, লোকসান, অভাব, স্বল্পতা, ত্রুটি, অবচয়, অপর্যাপ্ত
এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে
مَال ج أَمْوَال [مول]
[মাল] ধন, মাল, অর্থ, পণ্য, সম্পদ, তহবিল
نَفْس ج نُفُوس ، أَنْفُس
[নাফ্স] আত্মা, মন, প্রাণ, প্রবৃত্তি, প্রাণী, মানুষ, ব্যক্তি, স্বয়ং,
ثَمْرَة ، ثَمَرَة ج ثَمَرَات
[ছাম্রাহ, ছামারাহ] ফল, ফলাফল, ফসল, পরিণতি, পরিণাম, লাভ, মুনাফা, উপকারিতা, বংশধর
সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে মানবজীবনের হতাশার মূলে এই বিষয়গুলোই রয়েছে। আর আল্লাহ তায়ালা আয়াতের শেষে তাদের সুসংবাদ দিতে বলেছেন যারা পরীক্ষা / বিপদ / কষ্টের সময়গুলোতে ধৈর্য্য অবলম্বন করে। পক্ষান্তরে মানুষ যদি অধৈর্য্য হয়ে আল্লাহ বিমুখ হয় তাহলে তার জীবন হয়ে ওঠে সংকীর্ণ।
"আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয় এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়"।(সুরা ত্ব হা:১২৪)
আর যদি হতাশায় কারো কাছে জীবন যন্ত্রণাদায়ক বোধ হয়, তাহলে বুঝতে হবে তার কৃতকর্মের দরুণ আল্লাহর তরফ থেকে শাস্তি এসেছে যাতে সে নিজেকে শুধরে নিতে পারে।
"গুরুতর শাস্তির আগে আমি তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করাবো যাতে তারা ফিরে আসে।"(সুরা সাজদাহ:২১)
আল্লাহ মানুষকে এমন শাস্তি দানের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে বলেছেন,
"আর কোন কোন লোক এমনও আছে, যে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, আল্লাহকে ভালবাসার মত তাদেরকে ভালবাসে। কিন্তু যারা মু’মিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালবাসা প্রগাঢ় এবং কী উত্তমই হত যদি এ যালিমরা শাস্তি দেখার পর যেমন বুঝবে তা যদি এখনই বুঝত যে, সমস্ত শক্তি আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর।"(সুরা বাকারা:১৬৫)
এমতাবস্থায় মানুষের উচিত নিজের পরিস্থিতি অবলোকন করে সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের জন্য ভুল কৃতকর্ম শুধরে স্রষ্টার নিকট প্রত্যাবর্তন করা। আল্লাহ বলেছেন,
" আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা চাও, আর অনুশোচনাভরে তাঁর দিকেই ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটা নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তোমাদেরকে উত্তম জীবন সামগ্রী ভোগ করতে দিবেন, আর অনুগ্রহ লাভের যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তিনি তাঁর অনুগ্রহ দানে ধন্য করবেন। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমি তোমাদের উপর বড় এক কঠিন দিনের ‘আযাবের আশঙ্কা করছি।"(সুরা হুদ:৩)
হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সর্বাগ্রে তার জীবনের মূল্য বুঝতে হবে। সুখ দুঃখ কোন কিছুই এই জীবনে চিরস্থায়ী নয়। এটা চিরাচরিত নিয়ম। কারো অবস্থাই এ নিয়মের বহির্ভূত নয়।
হতাশা থেকে মুক্তি পেতে অতিসত্বর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
* সর্বাগ্রে হতাশার কারণ খুঁজে বের করা এবং তা কাটিয়ে তোলার সাহস ও শক্তি সঞ্চয় করা।
* সর্বাবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে শিখা। নিয়মিত মনোযোগের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ও ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা করা।
* রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ভোরে উঠার অভ্যাস গড়ে তোলা। রাতে ঘুম না হলে নফল নামাজ আদায় করা।
* ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে কিছু সময় হাটাহাটি ও হালকা এক্সারসাইজ করা। কথায় আছে, A sound mind lives in a sound body.
* নিজের হতাশার কথাগুলো বিশ্বস্ত কারো কাছে ব্যক্ত করা এতে চাপা কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
* বেভারেজ ও ফার্স্টফুড খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দেওয়া। প্রচুর পানি, ফল, শাক সবজি, সহজ পাচ্য খাবার খাওয়া। নিয়মিত খেজুর, মধু ও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করা।
* নেগেটিভ ভাইবের লোকজন এড়িয়ে চলা। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোথাও ঘুরে আসা।
* নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য কোন শখ পালন করা, যেমন বাগান করা, পাখি পোষা, বিড়াল পোষা,বই পড়া, লিখালিখি করা। সময় সুযোগ থাকলে কোন কোর্সে ভর্তি হয়ে যাওয়া।
* সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটা সম্ভব কম সময় দেওয়া। পজিটিভ চিন্তাশীল ও ধৈর্যশালী লোকদের সাথে অধিক সময় কাটানো।
* নিজের দায়িত্বগুলো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে যত্নসহকারে পালন করতে সচেষ্ট হওয়া।
* বিনাস্বার্থে মানুষকে সহযোগিতার অভ্যাস গড়ে তোলা। এমনকি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনও আশা না করা।
* নিজের জীবনকে মূল্যায়ন করতে শিখা এবং অদৃষ্টকে সহজভাবে মেনে নেয়ার প্রবণতা গড়ে তোলা।
* হাসিখুশি ও প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করা। অন্যের মুখে হাসি এনে দেয়া।
* 24/7 কানে ইয়ারফোন গুঁজে দেয়ার অভ্যাস থাকলে পছন্দনীয় কোন কারীর তিলাওয়াত শোনা।
* অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার ও অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস করা। সকাল সন্ধ্যার যিকিরগুলো নিয়মিত করা। প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক ও সুরা বাকারাহ'র শেষ দুই আয়াত পাঠ করা।
পরিশেষে বলতে চাই, এই জগৎ সংসার যেরূপ ক্ষণস্থায়ী তদ্রূপ এর মাঝের সুখ দুঃখ স্বাদ আহ্লাদ স্বপ্ন সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। তাই আনন্দে আত্মহারা হওয়া যেমন বোকামি তেমনি কোন কষ্ট যন্ত্রণায় বিমর্ষ হওয়াও সময়ের অপচয়। কোন অনুভুতিই দীর্ঘস্থায়ী নয়, এক সময় তা অবশ্যই কেটে যাবে। সুখ দুঃখের পুনরাবৃত্তি চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। শত চেষ্টা করেও সুখকর সময় গুলো স্থির করে রাখা যায় না আবার কষ্টের মুহূর্তগুলো তড়িৎ গতিতে পার করা যায় না। তারা নিজ নিজ গতিতে চলতে থাকে। তাই পরিস্থিতি যেরূপ আকারই ধারণ করুক, নিজের মানসিকতাকে কোন অবস্থাতেই বিহ্বল হতে দেয়া যাবে না। মনের গতিকে সর্বাবস্থায় শান্ত ও অবিচল রাখতে পারলেই পরিস্থিতি মনকে কাবু করতে পারবে না। depression বা হতাশার সময়টা হল একটা টানেলের মত। কষ্ট করে একটু সাহস রাখুন। ধৈর্য্য ধরে এই সময়টা অতিক্রম করতে পারলে দেখবেন এক আলোকিত পৃথিবী আপনার অপেক্ষায় আছে।
কোরআনের সবচেয়ে আশাজাগানিয়া একটি আয়াতঃ
"বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর সীমালংঘন/বাড়াবাড়ি করেছো, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু"।(সুরা যুমার:৫৩)
Special thanks to:
Mansour al salimi
Al- wafi Dictionary
Universal dict box
Quran.com
Muslim Bangla app
Google research
Motivationaldoc
(١ محرم ١٤٤٥)
২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:০০
আরোগ্য বলেছেন: আরে বাপরে, এতো গুলো প্লাস। আমি পুরো অভিভূত। সত্যি এ উপায়গুলো পরীক্ষিত। কোন ব্যাক্তি যদি উল্লেখিত কাজগুলো টানা ২১/ ৪০ দিন করে একটা অভ্যাস গড়তে পারে তাহলে জীবনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি অনেক পজিটিভ হবে।
প্রথম মন্তব্য ও প্রথম লাইকের জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
২| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:০১
আরোগ্য বলেছেন: এত বছরে আমার কোন পোস্টে আপনারা প্রথম মন্তব্য সেই সাথে লাইকও। অন্যরকম ভালো লাগছে। স্বাগতম আরোগ্য ব্লগে। অনেক ধন্যবাদ রইলো।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৫
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল লেখা- অনেক সময় লাগলো পড়তে। ভাল লিখেছেন।
তবে এয়ারফোন কানে গুঁজে গান শোনায় আপত্তি কোথায়?
কিছু বাহ্যিকভাবে সৎ চরিত্রবান মানুষও কেন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে? এর উত্তর কি আপনার জানা আছে?
চরিত্রবান বলতে আমরা বুঝি নিজের অসীম যৌন আকাঙ্খাকে যে যত বেশী কন্ট্রোল করতে পারে।- শুধু নিজের যেই সঙ্গী আছে সে যত অপ্রিয় বা অসহ্যকর হোক না কেন তাকে নিয়ে শারিরিকভাবে সন্তুষ্ট থাকা। এই কারনেও প্রাচ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ হতাষায় ভুগছে সেটা কি আপনি মানেন?
বিজ্ঞান বলে, সমকামীতা কোন রোগ নয় এটা ন্যাচারাল ব্যাপার- অথচ আমরা সমকামীদের বাধ্য করছি বিপরীত লিঙ্গের সাথে সম্পর্ক করতে। তারা সে কারনে ভয়ঙ্কর মানসিক যন্ত্রণা বা হতাশায় ভুগে। সেই অবস্থা থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
আরোগ্য বলেছেন: বিশাল পোস্টের আলোকে বিশাল মন্তব্য। পোস্ট আরো বড় করা যেত কিন্তু পাঠকের সুবিধার্থে ইতি টানলাম। কষ্ট করে সময় নিয়ে পুরোটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনার প্রশ্নগুলোর বিস্তারিত উত্তর লিখতে গেলে প্রায় পোস্টের সমান হয়ে যাবে। যতটা সম্ভব অল্প কথায় উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি।
সারাক্ষণ ইয়ারফোন কানে গুঁজে গান শোনা মানে escapism. বাস্তবতা থেকে দুরে থেকে কেউ হতাশা থেকে মুক্তি পেতে পারে না। তাছাড়া অধিক পরিমাণে গান শোনা মন ও মস্তিষ্ক বিরূপ প্রভাব ফেলে।
আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর পোস্টে আছে। আয়াতগুলো খেয়াল করলে দেখতে পাবেন। ইসলাম মানুষকে একাধিক বিয়ে করার সুযোগ দিয়েছে সেই সাথে তালাকের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। জোর করে কোন সম্পর্ক বয়ে বেড়াতে ইসলাম বাধ্য করে না বরং এক্ষেত্রে দায়ী আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি।
একটা উপমা দেই। ধরুন আপনার ইনকাম কম তাই আপনি মাংস কিনে খেতে পারেন না, অপরদিকে আপনার প্রতিবেশী প্রতিদিন মাংস খায়। এবার কি আপনি তার বাসায় চুরি করবেন নাকি নিজের মনকে বুঝিয়ে আপন পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করবেন? (আশা করি আমার উত্তরটি ভুল ভাবে নিবেন না)
বিজ্ঞান কখনোই সম্পূর্ণ নির্ভুল নয়। তবুও ধরে নিলাম সমকামিতা ন্যাচারাল ব্যাপার। এক্ষেত্রে এটা স্রষ্টার পক্ষ থেকে পরীক্ষা হিসেবে ধরে নিতে হবে। জবরদস্তি আরেকজনের সাথে জীবন জুড়ে দিয়ে উভয়কে শাস্তি দেয়ার কোন মানে হয় না। ধৈর্য ধরে একাকী জীবনযাপন করাই একমাত্র উপায় আমার কাছে মনে হয়।
আবারও ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য। এ ধরনের মন্তব্য লিখতে উৎসাহ যোগায়।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:১৬
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব ভাল পোষ্ট ।আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
আরোগ্য বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। কষ্ট করে পোস্ট পড়ে লাইক করেছেন। সেই সাথে মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য আল্লাহ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিক।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৯
মুক্তা নীল বলেছেন:
অনেকদিন পর লেখা পেলাম । একটু ফ্রি হয়ে আসি তারপর মন্তব্য করবো ।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫
আরোগ্য বলেছেন: হা হা ফাঁকিবাজি মন্তব্য। ইতোমধ্যে আমার একটি পোস্ট গতমাসে এসেছে আপনার চোখ এড়িয়ে।
অবশ্যই মু্ক্তাআপু ফ্রী হয়ে মন দিয়ে পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন কিন্তু। । আমিও এ ফাঁকে ফ্রী হয়ে আসি।
৬| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:০১
রাজীব নুর বলেছেন: আমি জীবনে কখনও হতাশ হইনি। হবোও না।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:১০
আরোগ্য বলেছেন: ভালো তো, তা ই যেন হয়।
৭| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:০২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
হতাশ হলেও হতাশা যেন চরম পর্যায়ে না পৌছে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সমাজের বাস্তব চিত্র।++++
২০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:১৩
আরোগ্য বলেছেন: ঠিক বলেছেন। সাময়িকভাবে মানুষ হতাশ হতেই পারে তবে তা যেন মন ও মস্তিষ্ক আচ্ছন্ন না করে।
মন্তব্য ও লাইকের জন্য ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।
৮| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৩৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে ++++।এই কমেন্টটা আমি ডেক্সটপে করছি।কাজেই ছোট হচ্ছে কিছু মনে করবে না প্লিজ।
।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫১
আরোগ্য বলেছেন: মন্তব্যের ঘরে যখন তোমার নাম দেখলাম, বড় মন্তব্যের আশা নিয়েই স্ক্রোল করছিলাম । তোমার মন্তব্য দেখে হাবিব স্যারের কথা মনে পড়ে গেল। আমার কারাগার পোস্টে হাবিব স্যার নয় পয়েন্টের জন্য নয় প্যারা মন্তব্য করেছিল আর আমি প্রতিমন্তব্যে নয়টা বাক্যও লিখিনি কারণ ল্যাপটপে টাইপ করেছিলাম।
। তাই তোমার সমস্যাটা আমি বেশ বুঝতে পেরেছি।
এই পোস্টটি লিখতে আমার বেশ কদিন সময় লেগেছে। উপরে উল্লেখিত ঘটনাগুলোও বেশ চেনা জানা। আয়াতগুলোর জন্য একটু বেশি পড়তে হয়েছে। লক্ষণ আর প্রতিকারগুলো নিজস্ব আর চারপাশের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া। পোস্টের ছবিগুলোও খুব চিন্তা করে বাছাই করেছি। পোস্ট লিখার অনুভূতিটা তোমার সাথে শেয়ার করলাম।
এই নাও আমিই বড় প্রতিউত্তর করে দিলাম। হয়তো এর মধ্যে তোমার কিছু জিজ্ঞাসার উত্তর আছে।
ছোট মন্তব্য করার জন্য ছোট ধন্যবাদ।
৯| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৪২
মুক্তা নীল বলেছেন:
নাজমা সামিয়া লাবনী এদের জীবনের ঘটনা গুলো আমার চোখের সামনে দেখা আছে । বাস্তবিক জীবনের উদাহরণ টেনে অসাধারণ একটি লেখা লিখেছো । নিজের উপর আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য্য এবং সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা ও বিশ্বাস থাকাটা খুব জরুরী ।
অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে লেখা খুব ভালো হয়েছে ।
২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫৯
আরোগ্য বলেছেন: পোস্টটা অর্থবহ করার জন্যই ছোট ছোট ঘটনাগুলো শেয়ার করা। নাজমার ঘটনাটি প্রথমে ছিল না। পরে যোগ করি। নাজমার ঘটনাটি আমার খুব কাছের মানুষের। এ ঘটনাটা শুনার পর আমি বেশ মর্মাহত হই। জানিনা নাজমার সামনের দিনগুলো কিরকম হবে। অধিকাংশ ঘটনাই আমার চোখের সামনে হওয়া।
চারপাশে হতাশার ভয়াবহ অবস্থা দেখেই এ পোস্ট করতে আগ্রহী হলাম। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আপনাদের ভালোলাগা আমার অনুপ্রেরণা। অনেক ধন্যবাদ আপু।
১০| ২২ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: , তুমার উত্তরটা খুব ভালো হয়েছে++
২২ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
আরোগ্য বলেছেন: তুমি তাড়াতাড়ি তোমার ব্লগিং সমস্যা সমাধান করো। আমার এতো পিচ্চি পিচ্চি মন্তব্য ভালো লাগে না। পরবর্তী পোস্টে অবশ্যই বড় মন্তব্যের আবদার রাখছি।
১১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আশাকরি ভালো আছো। গতকাল ট্রেনের টিকিট কেটেছি।২৪/১০ এ বাংলাদেশে ঢুকছি। নওগাঁ ও বদরগঞ্জে তোমার ভাবির আত্মীয় স্বজন আছে। ওখানে দুদিন কাটিয়ে ঢাকাতে যাবো। এখানে একরাত্রি কাটিয়ে সিলেটে যাবো। ওখানে দুরাত্রি কাটিয়ে আবার ঢাকা ফিরবো।ঢাকাতে আবার একরাত্র কাটিয়ে নওগাঁতে ফিরবো।পরের দিন রাতে বালুরঘাটে হোটেল নিবো। কারণ পরেরদিন ভোর ৫:২৫ এ বালুরঘাট শিয়ালদা ট্রেন।ফাইনালী ১/১১/২৩ এ সন্ধ্যায় বাড়িতে ঢুকছি। এবার তুমি তোমার ফোন নম্বরটা কীভাবে দেবে জানাও। ফেসবুক থাকলে তোমাকে ম্যাসেঞ্জারে কল করতে পারতাম।
০৯ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:৫৮
আরোগ্য বলেছেন: ভাইটি মেইল চেক করো। দুটো পাবে। ভাগ্যিস আজ ব্লগে এসেছিলাম, নয়তো কি ভাবতে!
১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:০৭
ভুয়া মফিজ বলেছেন: হতাশাগ্রস্ত রোগীর লক্ষণ সমূহের মধ্যে দ্বিতীয় পয়েন্টটাই ক্ষুধামন্দা। কিন্তু আরেকটা বড় পয়েন্ট বাদ পড়ে গিয়েছে, সেটা হলো অতিভোজন। একটা বড় সংখ্যক হতাশাগ্রস্ত মানুষ ক্ষুধা লাগুক আর না লাগুক, প্রচুর খায়। সেখান থেকেই স্থুলতা বা ওবেসিটিতে আক্রান্ত হয়ে হতাশা আরো বাড়ায়।
ইসলামকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলে হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ, যদিও আজকের জমানায় কঠিন আত্মনিয়ন্ত্রণ না থাকলে এটার বাস্তব রুপায়ন প্রায় অসম্ভব। এই ব্যাপারে আপনার দেয়া রেফারেন্সগুলো আর To do list খুব কাজে দিবে।
তবে ব্লগে যেসব হতাশাগ্রস্তরা বিচরণ করে, তাদের ব্যাপারে স্পেসিফিক্যালি ভালো-মন্দ কিছু বললে ভালো হতো।
আপনের এই লেখাটা পোষ্ট করনের কিছুদিন পরেই অফলাইনে পড়ছি। ওইসময়ে এমুন ব্যস্ত ছিলাম যে পরে মন্তব্য করমু চিন্তা করছিলাম। তারপরে গেলাম ভুইলা, বুড়া হইলে যা হয় আর কি!! তারপরে দুই/তিনদিনের লাইগা একটু হাল্কা হইলাম। একটা পোষ্টও বিয়াইলাম। বহুদিন দেখা-সাক্ষাৎ নাই দেইখা আপনের বাড়িত গেলাম খোজ-খবর লওনের লাইগা। তখন পোষ্ট দেইখা মনে পড়লো, আয় হায়...........এইটাতে তো কমেন্ট করা হয় নাই! বড়ই শরমের কথা!!!
ওহ্ বাই দ্য ওয়ে...........আমার সাইকোপ্যাথের পোষ্টে আপনের কমেন্টের উত্তর দিছি। মনে কইরা দেইখা লইয়েন। আর নতুন পোষ্ট দেখনের আমন্ত্রণ রইলো।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:০৭
আরোগ্য বলেছেন: বিলম্ব অইলেও আপনের অদৃশ্য দর্শনে ধন্য অইলাম। লন দেহেন আপনার দেয়া " অতিভোজন " ও যোগ কইরা দিসি দুই নম্বরেই। মোদ্দা কথা এইটা তো আমার মাথায়ই আহেনা পেরেশানির টাইমে গলা দিয়া খাওন কেমনে নামে, অতিভোজন তো আমার কল্পনার বাইরে। আমার ভাইটারে জিগাইলাম, কইলো ওই ও বলে ডিপ্রেশনে বেশি খায় । ওর ওবিসিটির তাইলে এইটাই কারণ। আপনে থাকেন ব্রিটেনে আর আমরা গরীব দেশ বাংলাদেশে থুক্কু এইটা তো সিঙ্গাপুর / থাইল্যান্ড এহন। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি এই দেশের মানুষের হতাশার আরেক কারণ এহন। এই অবস্থায় যদি কেউ হতাশায় অতিভোজন করে? ইন্না-লিল্লাহ
।
আমার ব্যক্তিগত মত ও অভিজ্ঞতা, ইসলাম ব্যতিত যে কোন দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় নেই। মানুষ যত বেশি সমাজ আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে তত বেশি রসাতলে যাবে। যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করা উচিত। আমার লিখা to do list ঠিকমত ফলো করলে আর উল্লেখিত আয়াতগুলোর মর্মার্থ অনুধাবন করতে পারলে, আমার বিশ্বাস হতাশা আর কখনো কাবু করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
ব্লগারগো লয়া আর কি কমু, ভদ্রভাবে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধির পরিচয় মনে হয় ।
আপনার পোস্টটা আমি দেখসি, আলাঝিলা ওই টাইমই কিছুটা পড়সি কিন্তু পুরাটা সময় করবার পারিনি। গত মাসে অনেক পেরেশানি গেছে, আম্মুর হসপিটালাইজেশন আবার এই সময় আমার কোর্স ইয়ার ফাইনাল। দৌড়ের উপর সময় পার হইসে। আমার মনে আছে আপনার পোস্টের কথা, ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই পড়ে মন্তব্য করার চেষ্টা করবো।
সবশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই, আমার খোঁজ খবর লইতে বাড়ি আইসেন। পিঠাপুলি পরে খায়েন। আর আপনের পোস্টের রিপ্লাই আমি দেখসি। রিপ্লাইর আশায় যাইতে যাইতে বিরক্ত হইয়া আমি রিপ্লাই পাওয়ার আশাই ছাইড়া দিসিলাম । আপার কেউ কোন কমেন্ট করলে ব্লগ বা হোয়াটসঅ্যাপ, আমি দ্রুত উত্তর দেওনের চেষ্টা করি। মাথার উপর বোঝা লাগে। আচ্ছা রাখি আজকা। আমার আম্মুর জন্য বিশেষভাবে দোআপ্রার্থী। আল্লাহ হাফিজ।
১৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: এই ভয়ঙ্কর রোগটি নিয়ে জাফরুল মবীন কয়েকটা চমৎকার পোস্ট লিখেছিলেন। কিন্তু এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে তিনি যেন কোন খেয়ালে তার সবগুলো পোস্ট সরিয়ে ফেলেছেন।
সংক্ষেপে উল্লেখিত আপনার এই আটটি কেস-হিস্ট্রির সবগুলোকেই আমরা আমাদের চারপাশে হরহামেশা দেখতে পাই। মনে হতাশার অতল গহ্বর সৃষ্টির জন্য আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকটি প্রসঙ্গই যথেষ্ট। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, হতাশাগ্রস্ত মানুষকে শনাক্ত করবার কিছু উপসর্গ আপনি উল্লেখ করেছেন এবং সেই সাথে হতাশা থেক্তে মুক্তিলাভের উপায়ও বাৎলে দিয়েছেন। ওগুলো একটু আলাদা করে মন্তব্যের ঘরে উল্লেখ করলে আমরা কপি-পেস্ট করে সংরক্ষণ করতে পারতাম, প্রয়োজনে প্রচারও করতে পারতাম।
ছবিতে দেয়া কথাগুলো খুব সুন্দর, আশা ও প্রেরণাদায়ক।
পোস্টে অষ্টম প্লাস। + +
১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৮
আরোগ্য বলেছেন:
ব্লগে পুনরায় আগমনের পর আমার কোন পোস্টে আপনার প্রথম মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে। যেহেতু আগের পোস্টগুলো নেই তাই মন্তব্যগুলোও নেই। ব্লগার জাফরুল মবীন এর কোন লেখা হয়তো আমি পড়েনি, ঠিক মনে পড়ছে না।
এত দীর্ঘ পোস্টটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। জীবনপথে চলতে চলতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে। কয়েকদিন আগে এ লিখাটা আমার বেশ উপকার করেছে। আমি তো প্রতিকারগুলোর একটা স্ক্রিনশট নিয়ে রেখেছি যাতে সময় সময়ে চোখ বুলাতে পারে। একটা রিমাইন্ডার এর কাজ করে এবং সেই সাথে একটা স্পৃহা তৈরি করে। আপনার পরামর্শ মোতাবেক হতাশার উপসর্গ আর প্রতিকারগুলো এই প্রতিমন্তব্যের ঘরেই আবার উল্লেখ করে দিচ্ছি, আশা করি কাজে আসবে।
পোস্টটিতে লাইক ও মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করার জন্য আবারও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সময়মত নিরাময় করা না গেলে হতাশা নামক রোগটি মরণব্যাধি হয়ে যায়। যার অন্তিম ফলাফল আত্মহত্যা, কখনও বা হত্যা।
হতাশায় আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ সমূহ ঃ
* সবসময় একা থাকার প্রবণতা
* ক্ষুধামন্দা বা অতিভোজন
* অনিদ্রা রাত্রি যাপন
* বিষন্ন গান শোনা
* অতিমাত্রায় ধূমপান করা
* অল্পতেই রেগে যাওয়া
* দিনের বেলা অন্ধকার করে শুয়ে থাকা
* মোবাইলে অতিমাত্রায় সময় কাটানো
* মলিন মুখ করে থাকা
* কাজকর্মে অনাগ্রহ
* জীবনটা দুর্বিষহ মনে হওয়া
* নিজের কষ্টটা সবার চেয়ে বেশি তীব্র মনে হওয়া
* আয়না দেখতে অনিহা বোধ
* সব কিছুতে বিরক্তি প্রকাশ ।
হতাশা থেকে মুক্তি পেতে অতিসত্বর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
* সর্বাগ্রে হতাশার কারণ খুঁজে বের করা এবং তা কাটিয়ে তোলার সাহস ও শক্তি সঞ্চয় করা।
* সর্বাবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে শিখা। নিয়মিত মনোযোগের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ও ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা করা।
* রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ভোরে উঠার অভ্যাস গড়ে তোলা। রাতে ঘুম না হলে নফল নামাজ আদায় করা।
* ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে কিছু সময় হাটাহাটি ও হালকা এক্সারসাইজ করা। কথায় আছে, A sound mind lives in a sound body.
* নিজের কথাগুলো বিশ্বস্ত কারো কাছে ব্যক্ত করা এতে চাপা কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
* বেভারেজ ও ফার্স্টফুড খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দেওয়া। প্রচুর পানি, ফল, শাক সবজি, সহজ পাচ্য খাবার খাওয়া। নিয়মিত মধু, খেজুর ও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করা।
* নেগেটিভ ভাইবের লোকজন এড়িয়ে চলা। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোথাও ঘুরে আসা।
* নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য কোন শখ পালন করা, যেমন বাগান করা, পাখি পোষা, বিড়াল পোষা,বই পড়া, লিখালিখি করা। সময় সুযোগ থাকলে কোন কোর্সে ভর্তি হয়ে যাওয়া।
* সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটা সম্ভব কম সময় দেওয়া। পজিটিভ চিন্তাশীল ও ধৈর্যশালী লোকদের সাথে অধিক সময় কাটানো।
* নিজের দায়িত্বগুলো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে যত্নসহকারে পালন করতে সচেষ্ট হওয়া।
* বিনাস্বার্থে মানুষকে সহযোগিতার অভ্যাস গড়ে তোলা। এমনকি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনও আশা না করা।
* নিজের জীবনকে মূল্যায়ন করতে শিখা এবং অদৃষ্টকে সহজভাবে মেনে নেয়ার প্রবণতা গড়ে তোলা।
* হাসিখুশি ও প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করা। অন্যের মুখে হাসি এনে দেয়া।
* অল্পে তুষ্টির মনোভাব পোষণ করা ও পরশ্রীকাতরতা মুছে ফেলা।
* 24/7 কানে ইয়ারফোন গুঁজে দেয়ার অভ্যাস থাকলে কোন কারীর তিলাওয়াত শোনা।
* অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার ও অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস করা। সকাল সন্ধ্যার যিকিরগুলো নিয়মিত করা। প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক ও সুরা বাকারাহ'র শেষ দুই আয়াত পাঠ করা।
পরিশেষে বলতে চাই, depression বা হতাশার সময়টা হল একটা টানেলের মত। কষ্ট করে একটু সাহস রাখুন। ধৈর্য্য ধরে এই সময়টা অতিক্রম করতে পারলে দেখবেন এক আলোকিত পৃথিবী আপনার অপেক্ষায় আছে।
১৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার অনুরোধে (পরামর্শ নয়) সাড়া দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৪৫
আরোগ্য বলেছেন: আপনি সবদিক দিয়ে আমার চেয়ে সিনিয়র ব্লগার তাই সম্মান জ্ঞাতার্থে পরামর্শ শব্দটি প্রতিত্তোরে লিখেছি। অনুরোধ শব্দটি উল্লেখ করতে বিব্রত বোধ করছিলাম। পুনরায় আগমনের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
১৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার প্রতিমন্তব্যে নিজেকে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। আপনার বিনয়াচরণে মুগ্ধ।
অনেক ধন্যবাদ।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৯
আরোগ্য বলেছেন: এটা আপনার মহানুভবতা যে, আপনি ব্লগারদের পোস্ট খুঁজে খুঁজে পড়েন এবং গঠনমূলক মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করেন। আপনার মত গুণী ও তীক্ষ্ণ ব্লগারের মন্তব্য পাওয়া আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। নিঃসংকোচে একটা অনুরোধ করছি স্যার, কখনো যদি আবার সময় করতে পারেন, আমার মুখবন্ধ নামক পোস্টটি পড়ে দেখবেন। আশা করি ভালো লাগবে।
পুনরায় মন্তব্যে আসার জন্য আবারও কৃতজ্ঞতা।
১৬| ২২ শে জুন, ২০২৫ রাত ১০:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
খুব ভালো লিখেছেন। জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।
২৩ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:৪১
আরোগ্য বলেছেন: ওয়া ইয়্যাকুম!
এ লেখায় আপনার অনুপ্রেরণা পেয়ে ভালো লাগছে। যখন আমিও বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ি এ পোস্ট আমার উৎসাহ যোগায়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৩১
ঢাবিয়ান বলেছেন: পোস্টে +++++++++। খুব সুন্দর পোস্ট। ইসলাম ধর্মের আলোকে হতাশা দূর করার যে উপায়গুলো বলেছেন তা একেবারে পরীক্ষিত ।