নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মুসলিম ও তালিবুল ইলম

আরোগ্য

পৃথিবী আজ তার বার্ধক্যে এসে পড়েছে, শৈশব পেড়িয়ে যৌবন ও সে হারিয়েছে, তাই বৃথা আনন্দ করো না, ক্ষণিকের সময় হাতে, নশ্বর এ পৃথিবী যেন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। সে মৃত্যু আসার আগে আজ তীর্থে ভ্রমণ করো, পবিত্র জলে হে পৃথিবী তুমি অবগাহন করো। ধুয়ে ফেলো তোমার গায়ের শত কালিমা, সাজিয়ে নাও বিদায়ের আগে আবার আঙিনা।

আরোগ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে নারীর মর্যাদা (পর্ব ২)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০৩

কন্যাসন্তান :



প্রাক ইসলামি যুগে আরবের কিছু কিছু গোত্রে কন্যাসন্তান হলে জীবন্ত পুতে ফেলা হতো সেটাতো সবারই জানা। তারা কন্যাসন্তান জন্ম নিলে অপমান বোধ করতো। তবে মেয়েদের প্রতি এহেন নৃশংস আচরণ যে সেই যুগে বা সেই এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলো তা কিন্তু নয়। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, কন্যাসন্তানের প্রতি অবিচার সবযুগে সব স্থানেই কমবেশি ছিলো এবং এখনও বিদ্যমান আছে। আধুনিকতার নামে কেবল ভিন্ন মোড়কে আবির্ভূত হয়েছে।

প্রাচীন রোমে স্ত্রী যদি বধির বা অন্ধ সন্তান জন্ম দিত অথবা কন্যা সন্তান জন্ম দিত তাহলে পিতা প্রচলিত প্রথার আলোকে তাকে হত্যার অধিকার রাখত। কারণ তাদের দৃষ্টিতে পুত্র সন্তান হচ্ছে পরিবারের জন্য শক্তি ও মর্যাদার প্রতীক, তারা যুদ্ধের সময় দেশের হয়ে যুদ্ধ করতে পারে। অন্যদিকে নারী হচ্ছে যুদ্ধের সময় পুরুষদের জন্য বোঝা এবং বন্দি হলে তারা শত্রুপক্ষের দাসী হয়ে যায় যা সমাজের জন্য লজ্জাজনক! রোমে শিশুকে জন্মের পর মাটিতে রাখা হত এবং পিতাকে ডাকা হত,। পিতা যদি শিশুকে দেখে বেঁচে থাকার যোগ্য মনে করত, সে তাকে মাটি থেকে তুলে নিত। এখান থেকেই আমরা ইংরেজি ‘rearing up the child’ বাক্যাংশটি পেয়েছি।  একইভাবে প্রাচীন গ্রীসে এথেন্সের পুরুষদের দৃষ্টিতে স্ত্রী রাখার একমাত্র লাভজনক দিক হল তারা পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। পুত্র সন্তান জন্ম দিলে জয়তুন পাতার তৈরি মুকুট ঘরের কাছে রাখা হত ও তা নিয়ে গৌরব করা হত। কিন্তু কন্যা সন্তানের জন্ম হলে তাদের মন খারাপ হয়ে পড়ত ও কন্যার পিতা নিজেকে জনগণের কাছ থেকে আড়াল করে রাখতেন। অন্যদিকে পুত্র সন্তান ক্ষমতা ও যোদ্ধার প্রতীক হিসেবে হত মহাসমাদরে সমাদৃত। (ParsToday)

চীনে কন্যাশিশু হত্যার ইতিহাস ২,০০০ বছর বিস্তৃত। ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে যখন খ্রিস্টান মিশনারিরা চীনে আসেন, তখন তারা নবজাতকদের নদীতে বা আবর্জনার স্তূপে ফেলে দিতে দেখেন।সপ্তদশ শতাব্দীতে Matteo Ricci নথিভুক্ত করেন যে চীনের বেশ কয়েকটি প্রদেশে এই প্রথা প্রচলিত ছিল এবং এই প্রথার প্রধান কারণ ছিল দারিদ্র্য । উনিশ শতকে, এই প্রথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ডুবিয়ে মেয়ে শিশুদের হত্যা করা সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি ছিল। অন্যান্য পদ্ধতি ছিল শ্বাসরোধ এবং অনাহার।আরেকটি পদ্ধতি ছিল: শিশুটিকে একটি ঝুড়িতে রেখে একটি গাছে ঝুলিয়ে রাখা হত। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা " শিশুদের টাওয়ার " তৈরি করত যাতে মানুষ তাদের সন্তানদের রেখে যেতে পারে। ১৮৪৫ সালে, জিয়াংসি প্রদেশে , একজন ধর্মপ্রচারক লিখেছিলেন যে এই শিশুরা দুই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতো এবং পাশ দিয়ে যাওয়া লোকেরা চিৎকার করা শিশুটিকে উপেক্ষা করতো।  চীনা সমাজে, বেশিরভাগ বাবা-মা ছেলে সন্তান ধারণ করতে পছন্দ করতেন, তাই ১৯৭৯ সালে যখন সরকার এক-সন্তান নীতি তৈরি করে, তখন কন্যা সন্তানদের গর্ভপাত বা পরিত্যক্ত করা হত।  যদি বাবা-মায়ের একাধিক সন্তান থাকত, তাহলে তাদের জরিমানা করা হত। মেয়ে সন্তানের তুলনায় ছেলে সন্তানের উপার্জনের সম্ভাবনা অধিক হওয়ায় বাবা-মায়েরা বিশ্বাস করতো যে মেয়ে সন্তান ধারণ করা একটি অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার বিষয় হবে, যার ফলে কন্যাসন্তান হত্যা আরও কাঙ্ক্ষিত সমাধান হয়ে ওঠে। (Female infanticide in china)


ঐতিহাসিক ইউরোপে শিশুহত্যা ও কন্যাসন্তানের প্রতি অবহেলার সরাসরি প্রমান পাওয়া যায় না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এমনটি হতো না। সেই সময় শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি ছিলো এবং শৈশবে স্বাভাবিক মৃত্যু ও অবহেলার কারণে কন্যাসম্তানের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য করা বেশ কঠিন ছিলো। ধারণা করা হয়, শ্বাসরুদ্ধ করে , ঠান্ডা আবহাওয়ায় অযত্নে ফেলে রেখে , সন্তানদের মধ্যে খাবার ও যত্নের বৈষম্যের কারণে কন্যাদের হত্যা করা হতো যা মা বাবা-মা সমাজের সামনে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করতো। বায়োলজিকালি কন্যাসন্তানের তুলনায় পুত্র সন্তানের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এবং ঐতিহাসিক ইউরোপে পুত্রসন্তানের তুলনায় কন্যাসন্তানের মৃত্যুর আনুপাতিক হার অধিক হওয়ার জন্য কন্যাসন্তান হত্যা করার সন্দেহ আরো প্রবল হয়। এই পর্যন্ত প্রাপ্ত প্রমাণের আলোকে জানা যায় যে, লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের দিকে কন্যাশিশু মৃত্যুর হার অধিক। ঐতিহাসিক ইউরোপে লিঙ্গ বৈষম্যের কতিপয় কারণ নির্ণয় করা হয়েছে। যেমন, প্রাক শিল্প ইউরোপে কৃষিভিত্তিক জীবনব্যবস্থায় শ্রমের দিক দিয়ে নারীরা পুরুষের অধীনস্থ ছিলো। প্রোটোশিল্প কারখানাগুলো নারীদের সীমিত পরিসরে কর্মসংস্থানের সুযোগ দান করে কিন্তু তাদের মজুরী পুরুষের তুলনায় কম ছিলো যার ফলে তারা পরিবারে অর্থনৈতিকভাবে সামান্য অবদান রাখতে পারতো। জটিল পারিবারিক কাঠামো যেখানে পুত্রসন্তানকে প্রাধান্য দেয়া হত এবং কন্যাসন্তানের জন্য বিনিয়োগকে প্রতিবেশির বাগানে পানি সেঞ্চনের সাথে তুলনা করা হতো। এছাড়াও, যৌতুক প্রথা মেয়েদের পরিবারের উপর অতিরিক্ত বোঝা করে তুলেছিল তার প্রমাণ ঐতিহাসিক ইউরোপের অনেক অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রীক এবং ইতালীয় উৎসগুলিতে পাওয়া গেছে । পোলিশ, বেলারুশিয়ান, বাল্টিক, গ্রীক, আর্মেনিয়ান, তুর্কি এবং কাল্মিক হিসাবে সংজ্ঞায়িত গোষ্ঠীগুলিতে ছেলে শিশুদের স্পষ্ট আধিক্য ছিল, যা সম্ভবত শক্তিশালী পিতৃতান্ত্রিক নিয়মের উপস্থিতির সাথে সম্পর্কিত ছিল। বিতর্ক রয়েছে যে, সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুত্রসন্তান পছন্দের আধিক্য ছিলো, কারন ছেলেদের  এই ধরণের প্রেক্ষাপটে কার্যকর রক্ষক হিসেবে দেখা হয়, যেখানে কন্যাদের দায়বদ্ধ বলে মনে করা হয় কারণ তাদের সুরক্ষার প্রয়োজন। কন্যাসন্তানের মারাত্মক পরিণতি সহ বৈষম্যমূলক অনুশীলনগুলি প্রাক-শিল্প ইউরোপের একটি গোপন বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যার ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক 'নিখোঁজ মেয়ে' হিসেবে ধরা হয় অর্থাৎ, জন্মের পরপরই অবহেলার কারণে অথবা শৈশবকালে বিরূপ আচরণের কারণে মারা গিয়েছিল। ( 'Missing girls' in historical Europe)

আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্থাৎ প্রাচীন বাংলায় কন্যাসন্তানের প্রতি আচরণ জানতে চাই তাহলে দেখতে হবে প্রাচীন ভারতবর্ষে কন্যাদের প্রতি কিরূপ আচরণ করা হত। প্রাচীন ভারতবর্ষে পুত্র জন্মালে শাঁখ বাজত, কন্যা জন্মালে নয়। তাছাড়া ভাইফোঁটা, জামাই ষষ্ঠী, সবই পুরুষকেন্দ্ৰিক অনুষ্ঠান। ঐতরেয় ব্রাহ্মণ-এ বলা হয়েছে: যে নারী পুত্রের জন্ম দেয় সেই শ্রেষ্ঠ নারী। যে নারী কন্যার জন্ম দেয় তাকে বারো বছর পরে ত্যাগ করা যায় (৬:৩:১৭:১৩)৷ বৌধায়ন ধর্মসূত্র (২:৪:৬) ও আপস্তম্ব ধর্মসূত্র (১:১০:৫১-৫৩; ২২:৫:১১,১৪) অনুযায়ী প্রাচীন সমাজ কন্যার জন্মে হতাশ হত। শিশুকন্যাদের জন্মের পর মাটিতে রাখা হয়, শিশুপুত্রদের তুলে ধরা হয়।’ (৬:৫:১০:৩)। মনুসংহিতা-য় বলা হয়েছে, পুৎ নামক নরক থেকে উদ্ধার করে বলে ‘পুত্ৰ’ বলা হয়। পিতার মুখাগ্নি করার মৌলিক অধিকার পুত্রেরই আছে, মৃত পিতাকে পিণ্ডদান ও পিতামাতার শ্রাদ্ধেরও অধিকার আছে। কারণ সমাজে বাল্যবিবাহের অনুপ্রবেশ ঘটার পর বিবাহের সময়ে বালিকা কন্যার গোত্রাস্তার হত, তাই ভিন্ন গোত্রের পিতামাতার জন্য তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার অধিকার ছিল না। কিন্তু পিতামাতার সঙ্গে একই গোত্র হওয়ায় পুত্রের সেই অধিকার ছিল। পিতা যেহেতু পরলোকে তার মঙ্গলের জন্য শ্ৰাদ্ধানুষ্ঠান করার বিষয়ে পুত্রের উপর নির্ভরশীল ছিল, পুত্রের সামাজিক মূল্য কন্যার চেয়ে বেশি, কন্যা সেই অনুপাতে উপেক্ষিত। গর্ভাবস্থায় ‘পুংসবন’ অনুষ্ঠান করা হত, যাতে নবজাতক পুত্রসন্তানই হয়, কন্যা নয়। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীর আশপাশে রচিত ঐতরেয় ব্রাহ্মণ-এ বলা হয়েছে, ‘নারী অমঙ্গলজনক, কন্যা অভিশাপ।’ (৬:৩:৭:৩)  মহাভারত-এ স্পষ্টই বলা হয়েছে, পূর্বজন্মের পাপের ফলে নারী হয়ে জন্মাতে হয়। (৬:৩৩:৩২) এক নারীর আত্মত্যাগে সন্তুষ্ট হয়ে বুদ্ধ এক সময়ে তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন, সে যেন পরজন্মে পুরুষ হয়ে জন্মায়। পুরুষকেন্দ্ৰিক সমাজে কন্যা অবাঞ্ছিত অতিথি। রাজস্থানে জন্মের পরেই কন্যা হত্যার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এখনও ওই রাজ্যে এমন কিছু গ্রাম আছে যেখানে কোনও কন্যাসন্তান নেই; গ্রামবাসীরা প্রতিবেশী গ্রাম থেকে স্ত্রী জোগাড় করে। এ অঞ্চলে অন্তত ২৫০০ বছর ধরে দৃঢ়মূল ধারণা আছে যে কন্যা অমঙ্গল। কন্যাপণ যখন ধীরে ধীরে অথচ সাধারণ ভাবে যৌতুকে পরিণত হল, যা আবশ্যিক এবং আকাশচুম্বী, যাতে পিতামাতা সর্বস্বান্ত হয়ে যায়, সমাজ যে তখন এই যন্ত্রণার মূল কন্যাকে দৈব নিষ্ঠুরতা হিসেবে দেখেছিল, তা আশ্চর্য নয়। পরিবারে পুত্র ও কন্যার প্রতি যত্ন ও স্নেহের তারতম্য এখনও অনেক ক্ষেত্রেই চমকে দেয়। সমাজত্যুত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকদের গবেষণা দেখিয়েছে যে অপুষ্টির অনুপাত ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যে অনেক বেশি। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অবহেলা অনেক বেশি হয় এবং অনেক বেশি দিন ধরে হয়। যে মায়ের শুধু মেয়ে আছে, সে সঙ্কুচিত হয়ে থাকে, অপরাধবোঁধে ভোগে। শাস্ত্ৰে এই দৃষ্টিভঙ্গি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যার ফলে বহু শতাব্দী ধরে তাকে কোথাও জন্মের পরেই হত্যা করা হয়েছে, কোথাও অবহেলা করা হয়েছে এবং সারা দেশেই পরিবারে ও সমাজে নীচু চোখে দেখা হয়েছে। সে অস্বাস্থ্যে ভোগে, রোগের সময়ে অবহেলিত হয় এবং অবহেলা ও অপুষ্টির কারণে তার ক্ষেত্রে মৃত্যুর আনুপাতিক হার অনেক বেশি। (প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ)

আধুনিক যুগে জীবন্ত কন্যা সন্তানকে হত্যা বা পুঁতে ফেলার সামাজিক প্রথা না থাকলেও কন্যার প্রতি জাহেলি মনোভাব আজও রয়ে গেছে। তাই অনেক না বাবা যখন বুঝতে পারেন গর্ভের সন্তানটি কন্যা তখন তারা গর্ভপাত ঘটিয়ে ভারমুক্ত হন। Proceedings of the National Academy of Sciences of the United States of America  এর একটি বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে, ২০১৯ সালের একটি জরিপ অনুযায়ী, লিঙ্গ-নির্বাচনী গর্ভপাতের ফলে কমপক্ষে ২ কোটি ৩০ লক্ষ কম কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। এই "নিখোঁজ" কন্যাদের বেশিরভাগই চীন এবং ভারতে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কতিপয় শিক্ষক ১৯৭০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত একটি মডেলিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০২টি দেশের জন্ম তথ্য সংশ্লেষণ করেন। এই সময়কালে, তারা দেখতে পান যে আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, চীন, জর্জিয়া, হংকং, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, মন্টিনিগ্রো, তাইওয়ান, তিউনিসিয়া এবং ভিয়েতনামে কয়েক বছরে অতিরিক্ত ছেলে সন্তান জন্ম হয়েছে।
অন্যান্য দেশের মতো, ডেটার অভাবের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লিঙ্গ-নির্বাচিত গর্ভপাত নির্ণয় করা কঠিন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ পিতামাতা লিঙ্গ-নির্বাচনী গর্ভপাতের অনুশীলন করেন না, তবে অবশ্যই ছেলে সন্তান পছন্দের দিকে একটি প্রবণতা রয়েছে। নারী স্বাধীনতার ফেরিওয়ালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর এক লাখেরও বেশি কন্যা শিশুকে যৌন দাসত্বের কারণে কেনা-বেচা করা হয়। এরা প্রাপ্ত বয়স্ক নয় তথা এদের বয়স ১৮ বছরেরও কম এবং অনেক ক্ষেত্রে মাত্র ১৩ বছর। ইউরোপে যৌন দাসীদের বিক্রি করা হয় একটি সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি বা একটি স্মার্ট ফোনের চেয়েও কম দামে! পাচার হয়ে যাওয়া নারীদেরকে মূলত পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে তথা ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মত দেশগুলোতে পাঠানো হয়। নানা গবেষণা সংস্থা ও সামাজিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী শিশুদেরকে যৌন শোষণে ব্যবহার করে আয় করা হয় ২০০ কোটি ডলার। (Wikipedia)


আল কোরআনের আলোকে কন্যা সন্তানের প্রতি অবিচারের জবাব:

# বাদশাহ যেমন নিজ অনুগ্রহে তার প্রজাদের কিছু দান করলে, তা প্রত্যাখ্যান করার কোন সুযোগ নেই বরং সাদরে গ্রহন করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করাই প্রকৃত প্রজার বৈশিষ্ট্য। তদ্রূপ সন্তানও সর্বশক্তিমান আল্লাহর দান, তিনি যাকে যা ইচ্ছা তাই দান করেন।

لِّلَّهِ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَـٰثًۭا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ ٤٩ أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًۭا وَإِنَـٰثًۭا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۭ قَدِيرٌۭ ٥٠

আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। তিনি তো সর্বজ্ঞ। (সুরা শুরা :৪৯.৫০)

# মানুষ নিজেদের বিদ্যমান দারিদ্র্যের কারণে সন্তানকে হত্যা করে যার বহু প্রমান অতীতে পাওয়া যায় এবং বর্তমানেও আছে। অথচ রিজিকের মালিক আল্লাহ তায়ালা সন্তান দুনিয়ায় ভূমিষ্ট হওয়ার পূর্বেই তার মায়ের বুকে আহারের বন্দোবস্ত করে রাখেন এবং সন্তান সারা জীবনের ভাগ্য নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখেন।

۞ قُلْ تَعَالَوْا۟ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ ۖ أَلَّا تُشْرِكُوا۟ بِهِۦ شَيْـًۭٔا ۖ وَبِٱلْوَٰلِدَيْنِ إِحْسَـٰنًۭا ۖ وَلَا تَقْتُلُوٓا۟ أَوْلَـٰدَكُم مِّنْ إِمْلَـٰقٍۢ ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ ۖ وَلَا تَقْرَبُوا۟ ٱلْفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ ۖ وَلَا تَقْتُلُوا۟ ٱلنَّفْسَ ٱلَّتِى حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلْحَقِّ ۚ ذَٰلِكُمْ وَصَّىٰكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ ١٥١

বল, ‘এসো, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য যা নিষিদ্ধ করেছেন তা পড়ে শোনাই, তা এই যে, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর, দরিদ্রতার কারণে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না, আমিই তোমাদেরকে রিজিক দেই আর তাদেরকেও দেই, প্রকাশ্য বা গোপন কোন অশ্লীলতার কাছেও যেয়ো না, আল্লাহ যে প্রাণ হরণ করা হারাম করেছেন তা ন্যায় সঙ্গত কারণ ছাড়া হত্যা করো না। এ সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা চিন্তা- ভাবনা করে কাজ কর। ( সুরা আনআম :১৫১)

# আধুনিক যুগে মানুষ ভবিষ্যতের আশঙ্কা করে সন্তান মেরে ফেলে, তারা আশঙ্কা করে হয়তো সন্তানের রিজিকের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না করতে পারার জন্য তাদেরকে সহজ জীবন দিতে পারবে না উপরন্তু নিজেরাও কাঠিন্যের মুখোমুখি হয়ে পড়বে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সন্তানের রিজিকের মাধ্যমে পিতামাতা আরো স্বচ্ছল জীবন লাভ করেন।

وَلَا تَقْتُلُوٓا۟ أَوْلَـٰدَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَـٰقٍۢ ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ ۚ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْـًۭٔا كَبِيرًۭا ٣١

অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিয্ক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। (সুরা বনী ইসরায়েল : ৩১)

# মানুষ নিজের পরিকল্পনা মোতাবেক ভাবে যে, পুত্র সন্তান তার পরিবারের জন্য কল্যান বয়ে আনবে, কিন্তু একমাত্র আল্লাহই জানেন কিসে মানুষের কল্যান নিহিত আছে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় কন্যারা পুত্রের তুলনায় নিজ পিতামাতা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

فَلَمَّا وَضَعَتۡہَا قَالَتۡ رَبِّ اِنِّیۡ وَضَعۡتُہَاۤ اُنۡثٰی ؕ وَاللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا وَضَعَتۡ ؕ وَلَیۡسَ الذَّکَرُ کَالۡاُنۡثٰی ۚ

অতঃপর যখন তার কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করল তখন সে (আক্ষেপ করে) বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি যে কন্যা সন্তান জন্ম দিলাম! অথচ আল্লাহ ভালো করেই জানেন, তার কী জন্ম নিয়েছে। আর সেই (কাঙ্ক্ষিত) ছেলে তো এই মেয়ের মত না’।
—আলে ইমরান - ৩৬

# নির্বোধ মানুষের কন্যার জন্মের কথায় মনঃক্ষুণ্ন হয় কিন্তু আল্লাহ স্বয়ং কন্যার জন্মের সংবাদকে সুসংবাদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ কন্যা সম্তান কোন মন খারাপের কারণ নয় বরং তা আল্লাহর তরফ থেকে বান্দার জন্য সুসংবাদ।

وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِٱلْأُنثَىٰ ظَلَّ وَجْهُهُۥ مُسْوَدًّۭا وَهُوَ كَظِيمٌۭ ٥٨ يَتَوَٰرَىٰ مِنَ ٱلْقَوْمِ مِن سُوٓءِ مَا بُشِّرَ بِهِۦٓ ۚ أَيُمْسِكُهُۥ عَلَىٰ هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُۥ فِى ٱلتُّرَابِ ۗ أَلَا سَآءَ مَا يَحْكُمُونَ ٥٩

আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সুসংবাদ দেয়া হয়, তার গ্লানির কারণে সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে হীনতা সত্বেও কি তাকে রেখে দেবে, নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে । সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে তা কত নিকৃষ্ট! (সুরা নাহল : ৫৮,৫৯)

# যে সব কন্যা সন্তানকে জন্মের পর কিংবা গর্ভে প্রাণ সঞ্চারের পর পিতামাতা নিজেদের ইচ্ছায় হত্যা করেছে, সে সব কন্যাদের বিচারের দিন আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞাসা করবেন, কোন অপরাধের জন্য তাদের মেরে ফেলা হয়েছিলো। ফলে নিষ্ঠুর মা বাবা বিচারের মুখোমুখি হয়ে পড়বে।

وَإِذَا ٱلْمَوْءُۥدَةُ سُئِلَتْ ٨ بِأَىِّ ذَنۢبٍۢ قُتِلَتْ ٩

আর যখন জীবন্ত কবরস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। (সুরা তাকবির ; ৮,৯)

# কন্যা সন্তানের সাথে অন্যায়ের অন্যতম একটি মূল কারণ হচ্ছে যৌতুক প্রথা। কিন্তু ইসলাম বরং উল্টো দিকে রয়েছে। শরীয়তে বিয়ের সময় কন্যাকে পাত্রপক্ষ মহর দিবেন যা পাত্রের উপর ফরজ। বিয়েতে পাত্রী পক্ষের খরচের কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

وَءَاتُوا۟ ٱلنِّسَآءَ صَدُقَـٰتِهِنَّ نِحْلَةًۭ ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَىْءٍۢ مِّنْهُ نَفْسًۭا فَكُلُوهُ هَنِيٓـًۭٔا مَّرِيٓـًۭٔا ٤

আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও। (সুরা নিসা :৪)

# কন্যা সন্তানকে হত্যার একটি কারণ হচ্ছে তারা পুরুষের তুলনায় কম উপার্জনক্ষম। অথচ ইসলাম নারীর উপর উপার্জন করা ফরজ করে নি, না ওয়াজিব, না সুন্নত বরং পুরুষের দায়িত্ব তার পরিবারের নারীদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করা।

ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ وَبِمَآ أَنفَقُوا۟ مِنْ أَمْوَٰلِهِمْ ۚ

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। (সুরা নিসা :৩৪)৷

হাদিসের আলোকে কন্যা সন্তানের মর্যাদা :

সৌভাগ্যের প্রতীক : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ওই নারী বরকতময়ী ও সৌভাগ্যবতী, যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়। কেননা কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন।’ (কানজুল উম্মাল, ১৬: ৬১১)
কন্যা সন্তান জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যা সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে সেই কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড়াল হবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হওয়ার মাধ্যম : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুইজন কন্যা সন্তানকে লালনপালন ও দেখাশুনা করল (বিয়ের সময় হলে ভালো পাত্রের কাছে বিবাহ দিল) সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ একসঙ্গে প্রবেশ করব যেরূপ এ দুটি আঙুল। তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৪)
জান্নাত লাভের উপায়: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান বা তিনজন বোন আছে অথবা দু’জন কন্যা সন্তান বা বোন আছে। সে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করেছে। তার জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৬) 


প্রিয় দ্বীনি বোন, একবার নিজেকে সেই নিষ্ঠুর পরিবেশে কল্পনা করুন যেখানে আপনি সেই নিষ্পাপ শিশুটি যাকে জীবিত হত্যা করা হচ্ছে, ডুবিয়ে বা শ্বাসরোধ করে বা মাটিতে পুঁতে বা গাছে ঝুলিয়ে কিংবা অনাহারে, অযত্নে ফেলে রেখে, অথবা আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান আপনার মায়ের গর্ভে হাত পা নাড়াচাড়া করছেন আর আপনাকে ছুরি কাচি দিয়ে কেটে হত্যা করা হচ্ছে । অথবা আপনি সেই পাষান মায়ের ভূমিকায় আছেন যে কিনা নিজেই তার নাড়ী ছেঁড়া ধনকে নির্মমভাবে হত্যা করছে। অথচ আপনার ধর্ম আপনাকে রাণীর আসনে বসিয়েছে যেখানে আপনার পূর্বপুরুষদের বৈশিষ্ট্য ছিল নারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও হেয় প্রতিপন্ন করা, অমঙ্গল ও অভিশাপ হিসেবে গণ্য করা।
প্রিয় দ্বীনি ভাই, আপনার কন্যা, আপনার বোন আপনার জান্নাতের টিকেটের মত। আপনার জান্নাতের টিকেটের মূল্যায়ণ করুন, তাকে অবহেলা বা অযত্নে ফেলে রাখবেন না। আসন্ন বিশ্ব বেহায়া দিবসে কেউ যাতে আপনার জান্নাতের টিকেট ছিড়ে না ফেলে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন। আপনার কন্যা আপনার সৌভাগ্যের প্রতীক, জাহান্নামে যাওয়ার পথের অন্তরায়, তাই নিজের কন্যাকে খুব আদর যত্নে রাখুন, সকল প্রকার ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন। নিজে সচেতন হন এবং অপরের মাঝেও সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩২

কামাল১৮ বলেছেন: তাহলে নবী এতোগুলো বিবাহ করলো কিভাবে।খলিফাদের গন্ডায় গন্ডায় বৌ ছিলো।এটা মিথ্যা প্রচার।ইসলামকে মহান করার জন্য।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৩৭

নিমো বলেছেন: ঐ সময় নিশ্চয়ই পোলারা গর্ভধারণ নইলে আরব জাতির টেকার কথা না।

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৫২

আহরণ বলেছেন: ইসলাম ধর্মে নারী মানেই যৌন দাসী।............ @ ভাইয়া?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.