![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবেগপ্রবন, ভয়ডরহীন, লড়ে যেতে প্রস্তুত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, আমি তরুন ভোটার হিসেবে কিম্বা নতুন ভোটার হিসেবে প্রথম ভোট দিয়ে ছিলাম।
এ দেশে নির্বাচন একটি সার্বজনীন উৎসবের মতো। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি সে উৎসবে শামিল হয়ে ছিলাম। একজন তরুনের জন্য প্রথমবারের মতো এ উৎসবে শামিল হওয়াটা কয়েকটি দিক থেকে বিশেষায়িত-
প্রথমত. ভোট প্রদান শুধু প্রাপ্ত বয়স্করাই করতে পারে। অর্থাৎ কৈশোর থেকে যৌবনে পর্দাপন করা তরুনের জন্য এটি একটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি যে, তুমি বড় হয়ে গেছো, বোঝা শিখেছো, এবং মতামত দিতে পারছো।
দ্বিতীয়ত. ভোটাধিকার একটি ক্ষমতা। যে ক্ষমতা প্রয়োগ করে তুমি একটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তন করতে পারো।
এ জন্যই তরুন ভোটারেরা তাদের প্রথম ভোট নিয়ে অন্যরকম পুলক অনুভব করে। যে অনুভুতি আমাকে আচ্ছন্ন করে ছিলো ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে । যে নির্বাচনে আমি উৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছিলাম এবং ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সবাইকে আমার বৃদ্ধাঙ্গুলীতে লাগানো অমোচনীয় কালী দেখিয়েছিলাম, পরোক্ষভাবে বুঝিয়েছিলাম- দেখ, আমি ম্যাটিউড এবং পাওয়ার ফুল, আর এটাই যার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। সত্যিই সেদিন আমি খুব আনন্দিত এবং গর্বিত ছিলাম।
ইতিমধ্যেই ৫ টি বছর পেরিয়ে গেছে এবং আরেকটি জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে এসেছে। এ ৫ বছরে আমার বয়স আরো ৫ বছর বেড়ে গেছে। অর্থাৎ ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সেই তরুন ভোটার ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে আরো বড় হয়েছে, আরো বোঝা শিখেছে, মতামত প্রকাশে কিম্বা ক্ষমতা প্রয়োগে আরো শানিত হয়েছে।
কিন্ত হায়! করুন পরিহাস.....
১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে আমাকে ভাবতে হচ্ছে, এ নির্বাচনে আমি ভোট দেবো কিনা!
কিন্তু কেন?
৯ম সংসদ নির্বাচনের সেই কৈশোর পেরুনো উন্মাদনা কেন এ যৌবনের ১০ম সংসদ নির্বাচনে মিলিয়ে গেলো?
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনীত এক সাংসদের একটি আলোচিত গান আছে- “যৌবন একটি লাল টমেটো, টিপ্পা দিলে গইলা যাইবো, রস গইলা পইরা যাইরো.....”।
গানটি হয়তো কুরুচিপূর্ণ। তবে এর শ্রোতাও নিশ্চয়ই আছে। এবং এর বড় শ্রোতা সম্ভবত. শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ। ফলে তারা এই লাল টমেটোওয়ালি মমতাজকে সংরক্ষিত আসনে এমপি বানিয়েছে, এবং লাল টমেটো প্রীতিতেই নির্বাচনকে লাল টমেটো বানিয়ে ফেলেছে। “নির্বাচন এখন লাল টমেটো, আওয়ামীলীগের টিপ্পুনিতে যেটা গলে যাচ্ছে এবং রস গুলো পড়ে যাচ্ছে।”
পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো সুন্দর এবং মীমাংসিত পদ্ধতি বাতিল করে একতরফা এবং একগুয়েমির যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যেখানে ১৫৪ আসনে প্রার্থীরা ভোট বিহীনভাবে নির্বাচিত হয়ে গেছে! প্রায় ৬০% ভোটের তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সে নির্বাচনকে লাল টমেটো ছাড়া আর কি বলবো? এ নির্বাচনে আমি ভোট কেনই বা দেবো? আওয়ামীলীগের স্বৈরাচারী টিপা খেয়ে রস ঝরে যাওয়া টমেটোকে আপেল বানানোর জন্য!
ভোট এবং ভোটাধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নির্বাচন নিয়ে যে ছেলেখেলায় আওয়ামীলীগ মেতেছে, সেখানে জনগণ এবং জনমতকে তারা শিশুজ্ঞান করছে!
শিশুদের আবার ভোট কি? তাই একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুন হিসেবে এ শিশুতোষ নির্বাচনে আমি ভোট দেবো না।
আমার ভোটে যদি আমার ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটে, কারো নোংড়া গেম বাস্তবায়ন করে, তবে আমার ভোট দেবার দরকার কি! যে নির্বাচনে আমি পরিবর্তনের জন্য ভোট দিতে পারবো না। আমার ভোটটা আমার মতামতের প্রতিফলন হবে না, শুধু একটি অন্যায় নির্বাচনকে বৈধ করবে, সে নির্বাচনে আমি ভোট দেবো না।
সবচেয়ে বড় কথা, ভোট দিলে আঙ্গুলে অমোচনীয় নামের যে কালি লাগিয়ে দেবে, তা হয়তো একদিন পরেই মুছে যাবে। কিন্তু একটি একতরফা এবং অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনে যদি আমি ভোট দেই, আমার বিবেকে যে অমোচনীয় কালি লেগে যাবে তা কখনোই মুছবে না। তা আমার কলংকিত বিবেককে প্রতিনিয়ম দংশন করবে।
এ দেশের তরুন সমাজ কোনো পোষা বাদর নয়! তারা স্বৈরাচারের টিপা খাওয়া লাল টমেটোকে আপেল বানানোর প্রচেষ্টায় শামিল হবে না, এ নির্বাচনে ভোট দেবে না। যেমন এ তারুণ্যের অংশ হিসেবে এ নির্বাচনে ভোট দেবো না আমি.....
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫
মেনন আহমেদ বলেছেন: ভাই ভোট টা আমাকে দিয়েন